অনেক অনেকদিন পর পুরনো একটি পাঠাগারে বৃহস্পতিবার আবার গিয়েছিলাম। একসময় নিয়মিতই যেতাম। খুব সম্ভবত আমার বাবাও তখন বেঁচে ছিল। আজ থেকে আনুমানিক ছয় সাত বছর আগের কথা। ওখানে বই পত্রপত্রিকা পড়তাম। বেশ ভালো লাগতো। পরিচ্ছন্ন পরিপাটি পরিবেশ। মনে পড়ছে, একবার বই পড়তে পড়তে ক্লান্তি থেকে ওখানে বসে বসে ঘুমিয়েই পড়েছিলাম। এ সময় ঘুমের ঘোরে অসাবধানতাবসত হাতের ঝটকা লেগে ভারি পেপার ওয়েটটি মেঝেতে পড়ে যায় তীব্র শব্দ করে। সবাই চমকে উঠে তাকায় আমার দিকে। খুব লজ্জা পেয়েছিলাম। কোনওরকম ‘সরি’ বলে চটজলদি বেরিয়ে এসেছিলাম রুম ছেড়ে। বই পত্রপত্রিকা পাঠের স্মৃতি ছাড়া আর তেমন কোনও স্মৃতি নেই। আর বলতে পারি, ওখানকার লাইব্রেরিয়ান তরুণী মেয়েটির কথা। এখন স্বাভাবিকভাবেই তেমন তরুণী আর নেই সে, যেমন আমিও নেই। কাছাকাছিই বয়স হবে আমাদের। দুজনেই আজ দাঁড়িয়েছি আমাদের মধ্য যৌবনে। মাঝখানের এই ছয় সাত বছর নিশ্চয়ই তার চিহ্ন রেখে গেছে আমাদের মুখাবয়বে ও অনিবার্যভাবে জীবনদর্শনেও। সেই মেয়েটি সে সময় আরও তরুণী, আরও হাসিখুশি ও প্রাণোচ্ছল ছিল। এখন নেই। মুখাবয়বে বয়সগত এক ধরণের গাম্ভীর্য ভারিক্কিভাব এসেছে, মুখেও আগের সেই হাসির লেশমাত্র নেই। আর মাথায় বিরাট একটা স্কার্ফও দেখলাম (আগে পরতো না)। যেমন বলেছি, একটা সময় আমি নিয়মিতই যেতাম সেখানে। তখন থেকেই মেয়েটি আছে। খুব ভালো চেনে সে আমাকে। দুয়েকবার বিভিন্ন প্রয়োজনে কথাও বলেছিলাম আমরা। অনেক অনেকদিন পর সেদিন আবার দেখা হলো। আমি নিশ্চিত জানতাম যে, সে আমাকে পছন্দ করতো।
আমার আরও কিছু বলতে ইচ্ছে করছে ওকে নিয়ে, বলার আছেও কিন্তু বলবো না, উঁহু। কিছু কথা অনুক্তই থাক অব্যক্তই থাক পৃথিবীতে। এই ব্লগেই একটি কবিতায় যেমন একবার লিখেছিলাম,
কোনওদিন তাকে আমি বলবো যে,
রক্তে মাখামাখি তোমার দু’চোখ
রক্ত চুইয়ে নামছে কপোল বেয়ে
রক্ত লেগে যাবে আমার আস্তিনে
ঝকঝকে সাদা আস্তিনে
তোমাকে ছুঁতেই...
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৮