তাঁবু খাটাতে খাটাতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। চারটা তাঁবু! খাম খেয়ালির কথা না। তবে চার জোড়া মানুষ এই জঙ্গলে পৌঁছে, চারটা তাঁবু দুই ঘন্টার মধ্যে খাটানো আসলেই টিম স্পিরিট। আখতার জলদি করে মাইক্রো থেকে কাঠ বের করে আগুন জ্বালিয়ে দিল আমাদের ক্যাম্পের মাঝখানে, ঠিক সিনেমার মতো!
আমরা চার বন্ধু সস্ত্রীক। হঠাত্ প্লানটা হয়েছে। আমাকে রীতিমতো রিমি হুমকি দিয়ে নিয়ে এসেছে, আমি যদি না আসি তাহলে আমাদের একবছরের বিয়ে শেষ! সোজা ডিভোর্স। বেচারা আমি বিয়ে বাঁচানোর দায়ে এসেছি!
জঙ্গলের চারদিকে ততক্ষণে ঘন অন্ধকার নেমে গেছে। আমাদের ক্যাম্পের জায়গাটা একটু খোলামেলা। পেছনে বড় গাছের সারি। যেন কালো ক্যানভাসের ছবি।
আমি ক্লান্ত, হাঁপাতে হাঁপাতে আগুনের সামনে এসে বসলাম। গাছের ফাঁক দিয়ে লিলুয়া বাতাস গায়ে লাগছে। আমার পাশে এসে রিমি বসল। আমাদের দেখাদেখি সবাই বসল, জোড়ায় জোড়ায়! ঠিক অনেকটা বড় কোনও উত্সবের সময় টিএসসিতে যেমনটা হয়।
হঠাত্ রিমি আহসানকে বলল, ভুতের গল্প বলতে। পাগল নাকি। এই জঙ্গলে ভুতের গল্প!
আহসানও পেয়ে গেল সুযোগ। ও রসিকতা করে বলল,"আমি আমার বিয়ের গল্প বলি! ভুতের গল্পের চেয়েও ভুতুড়ে!"
সবাই হেসে উঠল। ওর স্ত্রী অর্পিতা মুখটা একটু গোমড়া করে আলতো করে আহসানের হাতে মারে হেসে উঠল। আহসান এবার শুরু করল তার ভুতের গল্প, একটা কবরস্থানে প্রতিদিন কান্নার শব্দ শোনা যেত...
আমাদের গল্পের আসরটা নিস্তব্ধ হয়ে আছে। রিমি ভীত চোখে আহসানের দিকে তাকিয়ে গল্প শুনছে। হঠাত্ জঙ্গলের ভিতর থেকে কিসের যেন শব্দ হল! এই রাত্রিকালে জঙ্গলের ভেতর শব্দ হবে এটাই স্বাভাবিক। রিমি ভয় পেয়ে আমার হাত জড়িয়ে ধরল! যাক এই ভুতের গল্প গুলোও মাঝে মাঝে ভীষণ রোমান্টিক...