somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলা সাহিত্যে ননসেন্স্-এর প্রবর্তক শিশু সাহিত্যিক সুকুমার রায়

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলা সাহিত্যে ননসেন্স্-এর প্রবর্তক শিশু সাহিত্যিক সুকুমার রায়ঃ
সুকুমার রায় (১৮৮৭ - ১৯২৩) একজন বাঙালি শিশু সাহিত্যিক ও বাংলা সাহিত্যে ননসেন্স্ এর প্রবর্তক। তিনি ছিলেন জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর সন্তান এবং তাঁর পুত্র খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়। তাঁর লেখা কবিতার বই আবোল তাবোল, গল্প হযবরল, গল্প সংকলন পাগলা দাশু, এবং নাটক চলচিত্তচঞ্চরী বিশ্বসাহিত্যে সর্বযুগের সেরা "ননসেন্স" ধরণের ব্যঙ্গাত্মক শিশুসাহিত্যের অন্যতম বলে মনে করা হয়, কেবল অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড (Alice in Wonderland) ইত্যাদি কয়েকটি মুষ্টিমেয় ক্লাসিক-ই যাদের সমকক্ষ। মৃত্যুর ৮৫ বছর পরও তিনি বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয়তম শিশুসাহিত্যিকদের একজন।
জীবন : সুকুমার ছিলেন বাংলা শিশুসাহিত্যের উজ্বল রত্ন উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর ছেলে। সুকুমারের মা বিধুমুখী দেবী ছিলেন ব্রাহ্মসমাজের দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের মেয়ে। ১৮৮৭ সালে সুকুমার রায়ের জন্ম। সুবিনয় রায় ও সুবিমল রায় তাঁর দুই ভাই। এ ছাড়াও তাঁর ছিল তিন বোন।
সুকুমার রায় জন্মেছিলেন বাঙ্গালী রেঁনেসার স্বর্ণযুগে। তার পারিবারিক পরিবেশ ছিল সাহিত্যনুরাগী, যা তার মধ্যকার সাহিত্যিক প্রতিভা বিকাশে সহায়ক হয়। পিতা উপেন্দ্রকিশোর ছিলেন শিশুতোষ গল্প ও জনপ্রিয়-বিজ্ঞান লেখক, চিত্রশিল্পী, সুরকার ও শৌখিন জ্যোতির্বিদ। উপেন্দ্রকিশোরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, যিনি সুকুমারকে সরাসরি প্রভাবিত করেছিলেন। এছাড়াও রায় পরিবারের সাথে জগদীশ চন্দ্র বসু, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় প্রমুখের সম্পর্ক ছিল। উপেন্দ্রকিশোর ছাপার ব্লক তৈরির কৌশল নিয়ে গবেষণা করেন, এ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান এবং মানসম্পন্ন ব্লক তৈরির একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। মেসার্স ইউ. রয় এন্ড সন্স নামে ঐ প্রতিষ্ঠানের সাথে সুকুমার যুক্ত ছিলেন।
সুকুমার কলকাতা থেকে ১৯০৬ সালে রসায়ন ও পদার্থবিদ্যায় বি.এসসি. করার পর মুদ্রণবিদ্যায় উচ্চতর শিক্ষার জন্য ১৯১১-তে বিলেতে যান। সেখানে তিনি আলোকচিত্র ও মুদ্রণ প্রযুক্তির ওপর পড়াশোনা করেন এবং কালক্রমে তিনি ভারতের অগ্রগামী আলোকচিত্রী ও লিথোগ্রাফার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ১৯১৩-তে সুকুমার কলকাতাতে ফিরে আসেন। উপেন্দ্রকিশোর ঠিক সেই সময়েই শুরু করেছিলেন ছোটদের মাসিক পত্রিকা 'সন্দেশ'। সুকুমার ফিরে তাতে লিখতে শুরু করেন। উপেন্দ্রকিশোর জীবিত থাকতে সুকুমার লেখার সংখ্যা কম থাকলেও উপেন্দ্রকিশোরের মৃত্যুর পর সন্দেশ পত্রিকা সম্পাদনার দায়িত্ব সুকুমার নিজের কাঁধে তুলে নেন। শুরু হয় বাংলা শিশুসাহিত্যের এক নতুন অধ্যায়। পিতার মৃত্যুর পর আট বছর ধরে তিনি সন্দেশ ও পারিবারিক ছাপাখানা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন।
সুকুমার রায়ের স্বল্পস্থায়ী জীবনে তাঁর প্রতিভার শ্রেষ্ঠ বিকাশ লক্ষ্য করা যায়। সন্দেশের সম্পাদক থাকাকালীন সময়ে তার লেখা ছড়া, গল্প ও প্রবন্ধ আজও বাংলা শিশুসাহিত্যে মাইলফলক হয়ে আছে। তার বহুমুখী প্রতিভার অনন্য প্রকাশ তার অসাধারণ ননসেন্স ছড়াগুলিতে। তাঁর প্রথম ও একমাত্র ননসেন্স ছড়ার বই আবোল-তাবোল শুধু বাংলা সাহিত্যে নয়, বরং বিশ্বসাহিত্যের অঙ্গনে নিজস্ব জায়গার দাবিদার।
প্রেসিডেন্সী কলেজে পড়বার সময় তিনি ননসেন্স ক্লাব নামে একটি সংঘ গড়ে তুলেছিলেন। এর মুখপাত্র ছিল সাড়ে বত্রিশ ভাজা নামের একটি পত্রিকা। সেখানেই তার আবোল-তাবোল ছড়ার চর্চা শুরু। পরবর্তীতে ইংল্যান্ড থেকে ফেরার পর মানডে ক্লাব নামে একই ধরণের আরেকটি ক্লাব খুলেছিলেন তিনি।
সুকুমার রায় কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মাত্র সাঁইত্রিশ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
গ্রন্থতালিকা : আবোল তাবোল, পাগলা দাশু, খাই খাই, অবাক জলপান,
লক্ষণের শক্তিশেল, ঝালাপালা, হযবরল, চলচ্চিত্তচঞ্চরী।
সূত্র : উইকিপিডিয়া।

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:১১
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×