somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুক্তিযুদ্ধ, নয়া জামানার দেশপ্রেম ও আমাদের বিভক্ত চেতনা

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কোনো একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকার সময় আমার অধঃস্তন একজন নিম্নপদস্থ কর্মচারী ছিলেন। অফিসের ডেকোরাম অনুযায়ী আমাকে দেখলেই তিনি সশব্দে একটা স্যালুট দিতেন।
অফিসের একজন উচ্চমান কেরানীর প্রতি তার এই প্রোটোকল মানিয়ে গেলেও আমি বড্ড কুঞ্চিত বোধ করতাম।
আমার বলতে খুব কুন্ঠা লাগে, তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।

একজন মুক্তিযোদ্ধার কাছ হতে আমার মতো অর্বাচীনের স্যালুট পাবার বিপরীতে, আমার মনে হয়, একজন মুক্তিযোদ্ধাকে সামনে বসিয়ে তার জুতা মুছে দেবারও যোগ্য আমি নই।

মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখার মতো যোগ্যতা আমার নেই বলেই মনে করি। মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে লিখবার জন্যে আমি অতি তুচ্ছ।

যখনি এই নিয়ে কিছু লিখতে বসি তখনি মনে হয়, এতবড় একটি ঘটনাকে আমার মতো ক্ষুদ্র মানুষ কিভাবে একটি ফ্রেমে বাঁধতে পারে যেখানে মুক্তিযুদ্ধ নিজেই কোনো ফ্রেমে বন্দী নয়?

মুক্তিযুদ্ধ তো ক্যাজুয়ালী একটি শীতের বিকেলে বারান্দায় চা খেতে খেতে লিখে ফেলার মতো কোনো টপিক না। লিখতে বসেও তাই বহুবার থেমে গেছি। মুছে ফেলেছি লেখা। আবার পরক্ষনেই মনে হয়, আমি তো মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লিখব না। আমি লিখব আমার অনুভূতি নিয়ে। আমার কিছু প্রশ্নকে নিয়ে।

মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে সমসাময়িক বাংলাদেশের অদ্ভূৎ মানসকে নিয়ে। প্রাণহীন আবেগ নিয়ে। আকাশকে বা সমুদ্রকে নিয়ে হয়তো লেখা যায় না কিন্তু তাদের দেখে ক্ষুদ্র মানবের মনের অনুভূতি নিয়ে লিখতে তো পারিই। সেই ভরসাতেই শুরু করলাম।
গল্প লেখাটা আমার আসে না, প্রবন্ধও না।
আমি পারি শুধু যা ভাবি সেটাকে কাগজে লিপিবদ্ধ করতে।

এমন একজন লিপিকারের কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধের ৪৬ বছর পরে নিশ্চই নতুন কিছু শোনার আশা আপনি করেন না? আমিও ঠিক ওই রকম কোনো ইতিহাস বা প্রবন্ধ লিখিনি। আমি শুধু মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা, শহীদ ও স্বাধীনতা নিয়ে আমার কিছু পর্যবেক্ষণ ও প্রশ্ন এখানে লিপিবদ্ধ করেছি। আমি দুঃখিত যে, স্বাধীনতা’র চেতনাকে কিংবা মুক্তিযুদ্ধের বিশাল ক্যানভাসকে দুই তিন প্যারায় ব্যাখ্যা করা আমার পক্ষে সম্ভব না। বিধায় আমার লেখাটি বিশাল হয়ে গেছে হয়তো। জানিনা, আপনার ভালো লাগবে কিনা।

অবশ্য আজকাল মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে কথা শুনতে আমাদের নতুন প্রজন্মের খুব একটা ভাল এমনিতেই লাগে বলে মনে হয়না। আবেগের বহুধাবিভক্তি আমাদের আবেগকে এমনিতেই ভোঁতা করে দিয়েছে। আমি যেহেতু কোনো স্কলার নই, আমি শুধু আমার মনের কথাগুলোই বলে গেছি।

পাশাপাশি লেখার শেষে কিছু বিষয়ে কিছু প্রাজ্ঞ মানুষদের লেখার লিংক দিয়েছি যাতে আপনি তথ্য ও সত্যটাকে বিস্তারিত জানতে পারেন।

এক:-
আমার মনে পড়ে, যখন স্কুলে পড়ি, তখন জেলা স্টেডিয়ামে ২৬ মার্চ আর ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠান হত। ওখানে নানারকম অনুষ্ঠান, ডিসপ্লে, কুঁচকাওয়াজ, বক্তৃতা দেখে মনে করতাম, স্বাধীনতা যুদ্ধ’র চেতনা বোধহয় এগুলোই। ডিসপ্লেতে বড় ভাইয়েরা মুক্তিযোদ্ধা, রাজাকার, হানাদার পাক সেনা-এসব নিয়ে নাট্যাংশ প্লে করত। সবটা না বুঝলেও বইয়ে লেখা ভাসা ভাসা মুক্তিযুদ্ধ, মা-চাচীদের মুখে গল্প, নিজেদের কল্পনা-সব মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধ’র একটা নিজস্ব চিত্র মনে তৈরী করে নিয়েছিলাম।

ওই সময়ে সমাজের একটা বড় অংশের মুরব্বীদেরকে (কখনো কখনো এমনকি তরুনদেরও) বলতে শুনেছি, ”৭১ এ গন্ডগোলের বছর”............................।
আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে, যেই দেশ তার ৩০ লক্ষ ভাই ও বোনের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন দেশ পেয়েছে, সেই দেশের একটা বিরাট সংখ্যক মানুষ ঠিক কোন বিবেকের অনুসমর্থনে হৃদয়হীন এই প্রশ্ন করতে পারে,
“সত্যিই কি আর ’৭১ সালে ৩০ লক্ষ লোক শহীদ হয়েছে নাকি?”
কিংবা সেই দেশের আপামর ১৭ কোটি মানুষ কিভাবে স্বাধীন হবার সাথে সাথেই তার ৩ লক্ষ সভ্রম হারানো মা বা বোনকে দূরে ঠেলে দিতে পারে ’অচ্ছুৎ’ আখ্যা দিয়ে।

দুই:-
আমি নিজে কোনো রাজনৈতিক দর্শনে বিশ্বাস করি না। কারো বিরুদ্ধেও না। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তো কোনো রাজনৈতিক দর্শনের একক মহামানব নন। তিনি তো এই বাংলাদেশ নামক দেশের পিতা। কেউ মানুক আর না মানুক। কী বিশ্বাসঘাতক এক জাতিকেই না ভালবেসে একটি দেশ এনে দিয়েছিলেন তিনি! এমন এক জাতি, যে তার স্বাধীনতা ও জন্মের জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে স্বাধীন দেশ পাবার মাত্র ৪ বছরের মধ্যে নৃশংসভাবে খুন করলো। অথবা বলব, খুন করার পরে গোটা দেশের ৭ কোটি মানুষ নিরবে তা মেনে নিল। (অল্প সংখ্যক বীর নিমকহালাল আদম সন্তান বাদে।)

আজকে ২০১৭ সালে স্বাধীন দেশের বুকে দাড়িয়ে নব্য দেশপ্রেমিক কত বাঙালী সন্তান অবলীলায় বলে দেয়, “আরে, জানো না তো, অনেক ব্যাপার ছিল!”..................... ধিক, ধিক তোদের। পিতাকে হত্যার কোনো যুক্তি আমাকে দিবি না দুরাচার। পিতাকে খুনের কোনো লজিক আমি শুনব না। তোরা মানিস আর না মানিস, তিনি আমার দেশ ও জাতির পিতা। লজিক যা দিবি, সবই তোদের দুষ্কর্মের গোঁজামিল ব্যাখ্যা। সেই জাতির পরের প্রজন্মই আজকে যেকোনো ঘটনায় রব তোলে, “গেল, গেল, দেশের স্বাধীনতা গেল।” স্বাধীনতা কী ও তার মূল্য কত-সেটাই কি বুঝেছে বাঙালী কোনোকালে? স্বাধীনতা কবে হতে চাওয়া শুরু হল তা কি জানেন?

তিন:-
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খানের একটা টকশো বক্তব্য হতে আমার বেশ পুরোনো একটা প্রশ্ন মনে পড়ে গেল। সেটা হল, বাংলাদেশ কেন কমোনওয়েলথ সদস্যভুক্তি ধরে রেখেছে যেই কমোনওয়েলথ আমার মতে দাসস্ব ও গোলামীর জিঞ্জিরের সাক্ষ্যবহ? ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ পাকিস্তান হতে আলাদা হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে-এটা অফিশিয়াল ইতিহাস।

কিন্তু আমি মনে করি, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস আরো অনেক পুরোনো। যার সূচনা ফকির বিদ্রোহ, সিপাহী বিদ্রোহ হতে। বিপ্লবী সূর্যসেনের বিপ্লব হতে, তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা হতে। বাংলা নামক স্বাধীন ভূখন্ড পরাধীনতার কালিমায় আচ্ছন্ন হয় মুঘলদের বা তারও আগে থেকে। বৃটিষরা নবাব সিরাজদ্দৌলা হতে বাংলাকে অফিশিয়ালী কেড়ে নেয়। সেই হতে বাংলায় স্বাধীনতার বীজ বোনা হতে থাকে। ১৯৪৭ সালে বর্তমান বাংলাদেশ আর আরো অন্যান্য বাংলাভাষী জাতিসত্ত্বাকে নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ গঠিত হওয়াই ছিল ইতিহাসের গন্তব্য কিন্তু তা না হয়ে বৃটিষরা কৌশলে আমাদের স্বাধীনতাকে আরো ২৪ বছর পদানত করার ব্যবস্থা করে আমাদের পাকিস্তান নামক অদ্ভূৎ এক বিকলাঙ্গ রাষ্ট্রের অংশ করে বিদায় নেয়।

যেই বিকৃত রাষ্ট্র পাকিস্তানের অংশ আমরা মানসিকভাবে কোনোকালে ছিলামও না, হতে চাইও নি। আবার শুরু হল স্বাধিকার ও পরবর্তিতে কার্যত স্বাধীনতার সংগ্রাম। ফাইনালি ১৯৭১ সালে আমরা আমাদের বহু আগে লুপ্ত স্বাধীনতা, বহু এলিজিবল স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনি।

অথচ বাংলাদেশে আপনি প্রায় শুনতেই পাবেন না, বাংলাদেশের অন্যতম শত্রূ ও দখলদার হিসেবে বৃটিষের নাম, যে হাজার হাজার মানুষ বৃটিষের হাতে শহীদ হয়েছে বাংলাকে স্বাধীন করতে, তাদের কোনো মর্যাদা/স্বীকৃতি নেই। খুব অবচেতন বা সচেতনভাবে বৃটিষ দখলদারিত্ব, অন্যায় ও শোষনের সময়কাল, তাদের তাড়ানোর সংগ্রাম, শহীদ সংগ্রামীদের ইতিহাস-সব মিলিয়ে ওই সময়কালটিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার কোনো প্রেক্ষাপট হিসেবেই ধরা হয় না।

পাকিস্তানকে তাও কিছু সচেতন দেশপ্রেমিক মানুষ আজও শত্রূ ভাবে কিন্তু বৃটেন যেন কোনোকালেই দৃশ্যপটে ছিল না। আমরা বরং অত্যন্ত আনন্দের সাথে বৃটিষ কমোনওয়েলথের সদস্য হই।

আমি মনে করি, আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধে মূলত দুটি প্রতিপক্ষ-বৃটিষ ও পাকিস্তান। ১৯৪৭ সালে আমাদের স্বাধীনতা পাবার কথা। অত্যন্ত সুকৌশলে সেই স্বাধীনতাকে অপমান করে বৃটিষরা আমাদের আরেক দখলদারের হাতে গছিয়ে দিয়ে যায়।
আরো ২৪ বছর পরে আমরা যুঝে বুঝে নিই নিজেদের বহুল কাঙ্খিত স্বাধীনতা। স্বাধীনতার প্রেক্ষিতে আমি বৃটিষ ও পাকিস্তান-দুটি আমলের ২২৪ বছরকে একই ইতিহাসের দুটি চ্যাপ্টার মনে করি। মীর কাসিম, মীর জাফর আর গোলাম আযমকে আমি একই তালিকার রাজাকার মনে করি।

ঠিক বিপরীতে মোহনলাল, মীর মর্দান, ভাষা আন্দোলনকর্মী ও শহীদ, ৩০ লক্ষ মুক্তিযুদ্ধ শহীদকে একই স্বাধীনতার সংগ্রামে সূর্য সৈনিক হিসেবে হৃদয়ের প্রণতি নিবেদন করি। (চলবে। তিন পর্বে সমাপ্য)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৮
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×