somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসা দিবসে ছিনতাই (একটি সতর্কতামূলক লেখা)

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি ছিনতাইকারী ছাইফুল খান । বুঝতেই পারছেন আমার প্রধান কাজই হচ্ছে ছিনতাই করা ।


আমার এই কাজে সহযোগিতা করবার জন্য আমার একটা ছোট্ট টিম আছে । দুইটা মাত্র লোক সেখানে ।


একজন তুফাইন্না । আমি তারে কোপা শামসু কইয়া ডাকি । সে না কোপাইলেও কোপানোর ভয় খুব ভালো দেখাইতে পারে ।


আর আরেকজন হইলো ছুরাইয়া । এও বেশ কঠিন একটা মাইয়া ।


আজ এসব বিষয়ে কিছু সত্য কথা আপনাদের বলব । আজ বলব কিভাবে কিভাবে আমরা ছিনতাইর মত কঠিন কাজটা করি ।


ঐ যে বললাম কোপা শামসু আর ছুরাইয়া । এরা দুজনই কিন্তু সমবয়সী ।


সিনিয়র হওয়াতে গ্রুপ পরিচালনার দায়িত্ব আমার উপরে থাকে । আর ওরা আমাকে হেল্প করে । যা পাই তা আমরা তিনজনে ভাগ বাটোয়ারা কইরা খাই ।


বিশেষ বিশেষ দিনগুলোতে আমরা ছিনতাই করতে নেমে পড়ি । তার মধ্যে ভালবাসা দিবস কিন্তু অন্যতম । বলতে গেলে আমাদের সবচেয়ে বেশি ইনকাম হয় এইদিনেই ।


আমরা অনেক আগে থেকে ঐদিনের জন্য নিজেদের চেঞ্জ করে ফেলি । আমি এবং শামসু আগে থেকে চুল দাঁড়ি মোচ বড় করে রেখে দিই ।


আর কালো রঙের মোটা চশমা তো তিন জনেরই অপারেশন চলাকালীন চোখে থাকে । সুতরাং এটা মোটেও সহজ না যে পরবর্তীতে আমাদেরকে কেউ চিনতে পারবে !


চলুন, আমাদের অপারেশনের সিস্টেমটাও আপনাদেরকে একটু করে বলি । তবে খবরদার কাউরে এবিষয়ে কিচ্ছু কইবেন না কিন্তু ।


আমি আমার সহযোগীদেরকে প্রত্যেকবার এমনভাবে অ্যাক্টিং করতে বলি যাতে লোকে তাদেরকে প্রেমিক প্রেমিকা বলে মনে করে । ওরা সেটাই করে ।


তবে সিরিয়াসলি কিনা জানিনা । মাঝে মাঝে আমার ওদের ঐ পিরিতিকে আমার বাস্তবিকই মনে হয় ।


সে যাই হোক, আমি ওসব নিয়া মাথা ঘামাই না । গলি, ঝোঁপঝাড় আর চিপাচাপা খোঁজার কাজটা থাকে আমার ।


যখনই কোনো গলিতে কিংবা চিপাচাপাতে কোনো কপোত-কপোতীরে দেখি সাথে সাথে তুফাইন্নারে ফোন করে ঐখানটার ঠিকানা বলে আসতে কই । ওরা আমার কথামত তখন ঐখানে চলে যায় ।


আমি জায়গাটা চোখে চোখে চেক রাখি । যাতে আমার লোকদ্বয় কোনো অসুবিধায় পড়লে সাথে সাথে হেল্প করতে পারি ।


আমার লোক দুইটা কপোত-কপোতীদের কাছে গিয়েই সাথে সাথে অ্যাটাক করেনা ।


সাধারনত যুগলরা তাদের সুবিধার জন্য নির্জন স্থান বেছে নেয় । তাতে অবশ্য আমাদেরও লাভ বেশ ।


সেখানে গিয়ে শামসু যদিও কোপায় না, তবে কোপানের ভয় দেখায় মারাত্মকভাবে ।


প্রথমে যুগলদের দেখে একটা হাসি দেয় । ক্যারি অন ব্রো, বলে খুব সাবধানে কপোতীর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কপোতীর চুল শক্ত করে ধরে পকেট থেকে ধারালো চাকুটা বের করে গলার উপরে ধরে ফেলে ।


আর সাথে সাথে হুমকি স্টাইলের বানী, খবরদার একদম চিত্‍কার করবিনা । নইলে এক্কেরে মাইরালাম কইলাম । ভালোয় ভালোয় টাকা পয়সা যা আছে সব দিয়ে দে । নইলে তো বুঝিস !


কপোতের অবস্থা তখন দেখার মত । অত্যন্ত শংকিত ।


আমরা সাধারনত মেয়েটাকেই অ্যাটাক করি । আর তখন ছেলের কাছে ভালবাসা বড় না টাকা বড় তা আমরা বুঝি ।


কপোতীটার চোখের দিকে তাকিয়ে কপোতকে সব বিসর্জন দিয়ে দিতে হয় তখন ।


তবে মাঝে মাঝে বিপরীতও হয় । যেহেতু আমরা শুধু কপোতীকে অ্যাটাক করি সেহেতু কপোত মুক্ত থাকে । আর ঐ সুযোগে অনেক কপোতকে চোখের সামনে কপোতীকে বিপদের মধ্যে রেখে দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখেছি ।


প্রথম প্রথম এরকমটা দেখে আমরা হাসলেও এখন আর হাসিনা । আমরা তখন কপোতীর গায়ের গয়না নিতেও ভুল করিনা ।


শামসু চাকু কপোতীর গলায় ধরে রাখে আর ছুরাইয়া টাকা, পয়সা, গয়নাপাতি মোবাইল সবকিছু নিয়ে নেয় ।


আর এভাবেই চলে আমাদের ধান্ধা । খাই এরকম ধান্ধা কইরা ।

...
...
লেখাটা আমি কল্পনা থেকে লিখলেও বাস্তবিক এরকমটা অহরহ ঘটে ।

অনেকে আছেন যারা এরকম পরিস্থিতির শিকার ।

রেডিও এবিসির 'যাহা বলিব সত্য বলিব' তে একবার এক লোকে এরকম একটা ঘটনা বলে যেখানে সে এরকম কাজটাই করতো ।

আমার লেখাটা লিখার উদ্দেশ্য মোটেও খারাপ না ।

সচেতনতার জন্যই ব্লগটা লিখলাম ।

সবাই সবধান থাকুন এবং নিরাপদেই থাকুন । এটাই কাম্য ।
...
...
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:০০
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×