ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর-একটি সার্বজনীন বানী।কিন্তু,কোনও একভাবে এই ধূমপানেরও সুদিক আছে।
এটা মোটামুটি স্বীকৃত যে ধূমপান স্বাদ নষ্ট করে।ধূমপান করার কারণে আপনার স্বাভাবিক স্বাদগ্রহণের সক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্থ হবে এবং আপনার ক্ষুধামান্দ্য দেখা দেবে।এই ব্যাপারটা শুরু হবার সাথে সাথেই আপনার স্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাসে আসবে নেতিবাচক পরিবর্তন অর্থাৎ আপনার খাবার গ্রহণের হার হ্রাস পাবে।এর ফলশ্রুতিতে আপনি ধীরে ধীরে শুকাতে শুরু করবেন।
এখন এজন্য কি আপনার সিগারেট হাতে নিয়ে,ঠোঁটে লাগিয়ে টেনে ধূমপান করতে হবে?না।আপনি প্রচণ্ড ধূমপায়ি বেষ্টিত পরিবেশে থাকলেও ঠিক সেই একই ব্যাপার ঘটবে।এই রকম ধূমপানের অপর নাম "second hand smoking" বা "passive smoking"।আর ঐ সিগারেটটি নিজের হাতে নিয়ে,নিজের ঠোঁটে লাগিয়ে টেনে পান করলে তার নাম "active smoking"।
এত কথা হয়ে গেলো কিন্তু যা বললাম তার পক্ষে প্রমাণ কী তা বললাম না।সেটাও বলছি।মিডল টেনেসি স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির প্রভাষক চার্লস বম এবং ন্যাশনাল ব্যুরো অফ ইকোনমিক রিসার্চের গবেষণা সহযোগী শিন ই চাও একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন যাতে মুখ্য প্রতিপাদ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রধাণতম সমস্যা আর তা হলো স্থূলতা বা মেদবহুলতা।তাঁরা দুইজন ১২,০০০ তরুণের উপর একটি জরিপ পরিচালনা করেন।তাঁরা ঐ তরুণদের বয়স,পেশা,অভিজ্ঞতা,কাজের ধরণ,কাজের পরিবেশ,খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি পরিমাপক হিসেবে ধরেন কিন্তু শুধুমাত্র ঐ ধূমপান ছাড়া আর কোনকিছুর সাথেই স্থূলতার গভীর কোনও সম্পর্ক খুঁজে পাননি।
তাঁরা দেখতে পান যে ঐ যুবকেরা ধূমপান ত্যাগ করার পরে তাদের হারানো রুচি ফিরে পেয়েছে এবং তাদের খাদ্যগ্রহণে ইতিবাচক প্রভাব এসেছে।
এখানে একটি কথা না বললেই নয় আর তা হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৬৪ সালে সার্জন জেনারেলের রিপোর্ট নামে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয় যা সিগারেটের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে এবং এই রিপোর্টই প্রথম "সিগারেট ক্যান্সারের কারণ" এই ধারণার জনক।এই রিপোর্টটি প্রকাশ হবার পরে প্রাপ্তবয়ষ্কদের মধ্যে গড়ে সিগারেট ভোগের মাত্রা কমে আসে।যা ১৯৬৩ তে ছিল ৪২০০,তা-ই হয়ে যায় ১৩০০।
এবং এই অভ্যাসের বাই প্রোডাক্ট হিসেবে আসে স্থূলতা।
ব্যাপারটা সাধারণভাবে দেখলে সিগারেট খেলে স্লিম আর সিগারেট না খেলে ফ্যাট!আমি বলছি না যে সিগারেট খেলেই কেউ শুকিয়ে যাবে,কিন্তু এটার যে উচ্চ সম্ভাবনা আছে তা তো বলাই বাহুল্য!
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৫:৪৭