somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞানের আলোকে মানবদেহে রুহ ও আত্মার ইতিকথা(চতুর্থ পর্ব)

১৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ৯:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞানের আলোকে মানবদেহে রুহ ও আত্মার ইতিকথা(প্রথম পর্ব)
বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞানের আলোকে মানবদেহে রুহ ও আত্মার ইতিকথা(দ্বিতীয় পর্ব)
বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞানের আলোকে মানবদেহে রুহ ও আত্মার ইতিকথা( তৃতীয় পর্ব)

(চতুর্থ পর্ব)

মস্তিষ্ক(Brain)

মানব মস্তিষ্ক চর্বির তৈরি তুলতুলে এবং স্পঞ্জ ধরণের এক বস্তু। বিশ্বাস করা কষ্ট যে, আঙ্গুলের সামান্য ছোঁয়ায়ও আকার পরিবর্তিত হতে পারে, এতোটাই স্পর্শকাতর মানব মস্তিষ্ক। অথচ এই স্পর্শকাতর বস্তুটিই মানবদেহের প্রধান নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র।(৩২)মানব মস্তিস্ক প্রায় ১০০ বিলিয়ন স্নায়ু কোষ ধারণ করে এবং সহস্র বিলিয়নেরও বেশী স্নায়ুতন্তু ধারণ করে যাদেরকে বলা হয় সিনোপসিস্ (synapses)। ইহা এক লক্ষ ঘটনাকে একসাথে এবং সারাজীবনে কোটি কোটি ঘটনা ধারন করতে পারে।(৩৩)

আমরা মেমোরি কার্ড, আইপ্যাড, ল্যাপটপ, আইপড, কম্পিউটার হার্ডডিস্ক ইউএসবি ফ্লাস ড্রাইভ ইত্যাদির মেমোরি ক্যাপাসিটি বা ধারণক্ষমতা নিয়ে আলাপ করি। প্রথমে এক গিগাবাইট, এরপর দুই গিগাবাইট- এভাবে আমরা বলতে পারবো সর্বোচ্চ পেনড্রাইভে হয়তবা ১২৮ গিগাবাইট এবং কিছু কিছু হার্ড ডিস্কে ১ বা ২ টেরাবাইট বা ১০০০ থেকে ২০০০ গিগাবাইট পর্যন্ত মেমোরি ধারণ করতে পারে।বহুমাত্রিক গবেষণা ও অংক কষেও মানুষের ব্রেইনের ক্যাপাসিটি বা ধারণ ক্ষমতা নির্ণয় করতে সক্ষম হননি বিজ্ঞানীরা। তবে বিজ্ঞানীরা মানুষের মস্তিষ্কের মেমোরি ক্যাপাসিটির যে হিসাব দিয়েছেন তা জানলে বিস্মিত হতে হয়।বিজ্ঞানীরা বলছেন, আপনি যদি ৩০ লাখ ঘণ্টা বা ৩৪২ বছর এক নাগাড়ে মস্তিষ্কের মেমোরি কার্ডে সারাক্ষণ ভিডিও ধারণ করেন তাতেও আপনার মস্তিষ্ক নামের সুপার কম্পিউটারের মেমোরি স্পেস পূরণ হবে না।

মস্তিষ্কের মেমোরি স্পেস নিয়ে গবেষণা তথ্যে নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজির অধ্যাপক ড. পল রেবার উল্লেখ করেছেন, মানুষের মস্তিষ্কে রয়েছে ১ শত কোটি বা এক বিলিয়ন নিউরন। প্রতিটি নিউরন একে অপরের সঙ্গে গড়ে তুলেছে ১ হাজার সংযোগ যার গাণিতিক সংখ্যা হবে এক ট্রিলিয়নের বেশি।"The human brain consists of about one billion neurons. Each neuron forms about 1,000 connections to other neurons, amounting to more than a trillion connections.” বিজ্ঞানীরা বলছেন, যদি প্রতিটি নিউরন একটি করে মেমোরি ধারণ করে তাহলেও কারও জীবদ্দশায় কখনো মেমোরি স্পেস শেষ হবে না। বরং এক একটা নিউরন অসংখ্য মেমোরি ধারণ করতে সক্ষম। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ব্রেইনের মেমোরি ধারণ ক্ষমতা কমপক্ষে ২ দশমিক ৫ পেটাবাইট অথবা ১ মিলিয়ন জিবি বা ১০ লাখ গিগাবাইট ধারণ ক্ষমতা রয়েছে মস্তিষ্কের মেমোরি কার্ডের। মস্তিষ্কের মেমোরি স্পেসের ব্যাপারে আগেই উল্লেখ করা হয়েছে অন্তত ৩৪২ বছর লাগবে এই মেমোরি কার্ড পূর্ণ হতে। এব্যাপারে অধ্যাপক পল রেবর উল্লেখ করেছেন, ব্রেইন যদি কোন সর্বাধুনিক ডিজিটাল ভিডিও রেকর্ডারের মত মেমোরি ধারণ করে তাহলে সেই মেমোরি যদি কোন টিভিতে অবিরাম সম্প্রচার করা হয় তাহলে ৩ শতাধিক বছর লাগবে তা প্রচার করতে।(৩৪)


বলুনঃ আমার পালনকর্তার কথা, লেখার জন্যে যদি সমুদ্রের পানি কালি হয়, তবে আমার পালনকর্তার কথা, শেষ হওয়ার আগেই সে সমুদ্র নিঃশেষিত হয়ে যাবে। সাহায্যার্থে অনুরূপ আরেকটি সমুদ্র এনে দিলেও।
Say: "If the ocean were ink (wherewith to write out) the words of my Lord, sooner would the ocean be exhausted than would the words of my Lord, even if we added another ocean like it, for its aid."
[সূরা কাহাফ ১৮/১০৯]
উপরের আয়াতের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা হল-পৃথিবীর সব পানি যদি কালি হয়,সব গাছের ডালপালা যদি কলম হয়, আরও দ্বিগুণ নিলেও সব পানি ও কালি শেষ হয়ে যাবে, তবু আল্লাহর মহিমা লিখে শেষ করা যাবে না।
খোদার সৃস্ট মানব মস্তিষ্ক এমনই একটি অঙ্গ যে যুগ যুগ ধরে গবেষণার পরও বিজ্ঞানীরা এর কাজকর্মের পুরো ফিরিস্তি আজও শেষ করতে পারছে না।একুশ শতকের বিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মানুষের মস্তিষ্ককে সঠিকভাবে জানা ও বোঝা। কারণ মানব মস্তিষ্ক এমনই এক রহস্যময় অঙ্গ যে বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়তই মস্তিষ্ক সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য পাচ্ছে, যাতে পুরনো ধারণাকে বাতিল করে নতুন জ্ঞান আবিস্কৃত হচ্ছে।বলা হয়ে থাকে পৃথিবীর সমস্ত বই যদি হার্ড ডিস্কে ভরা হয় তাহলে নাকি ৭০ টেরা বাইট জায়গা লাগবে।আর মানুষের ব্রেইন এর ধারণ ক্ষমতা ৩০০ থেকে ১০০০ টেরা বাইট. একটা পিপড়ার জন্য সুপার কম্পুটার বুঝা আর মানুষের বর্তমান জ্ঞান দিয়ে ব্রেইন এর রহস্য বুঝা একরকম।

চিন্তা করুন সে সময়ের কথা, যখন মানুষ আগুন দেখে ভয়ে পালাতো, মানুষের বসবাসের জঙ্গলগুলো আগুনে পুড়ে হতো ছারখার। ডালে ডালে ঘর্ষণে যে আগুনের স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি হত, শুকনো পাতায় ছড়িয়ে পড়ে সে আগুনের ফুলকি থেকে সর্বগ্রাসী দাবানল কেড়ে নিতো মানুষের প্রাণ, স্থান আর সঙ্গবদ্ধতা, তাকে ভয় না পেয়ে উপায় কি ছিল? তবু সেইকালে মানুষ চিন্তা করেছে, কেন এই আগুন? কেন আকাশ থেকে আসে বজ্রের গর্জন। তারা জানেনা কিছুই, জানার কোন উপায়ও নেই। কিন্তু প্রশ্নটা ঠিকই করে ফেলেছে। অজ্ঞতা থেকে হয়ত সেদিন আগুনের আক্রোশ মেটাতে পূজো দিয়েছে আগ্নিদেবকে, সে মানুষের ব্যর্থতা নয়, বরং সাফল্য এইখানেই, মানুষ প্রশ্নটা করে ফেলেছে নিজেদের কাছে, খুঁজতে শুরু করেছে উত্তর! আর এইভাবেই কোন এক অতি আদিম যুগে ঘটেছিল বুদ্ধির উন্মেষ। সেই মানুষ, আজ জ্ঞান বিজ্ঞান সভ্যতা, সংস্কৃতি, সমাজ কতকিছুর ধারক ও বাহক! সেই আদিম এক বুদ্ধির উন্মেষ কোথায় নিয়ে এসেছে মানুষকে। কিন্তু কই, আর কোন প্রাণীতো পারেনি এই উত্তোরণে সামিল হতে। বনে আগুন লাগলে আজো বন্যপশুরা প্রাণ বাঁচাতে ছুটে পালায়, কিন্তু হাজার হাজার বছর ধরে তারা কেবল ছুটেই পালালো, আগুনে কাঁচা ফল-মাংস রান্না তো করে খেতে পারল না। তাই স্বাভাবিকভাবেই সমগ্র প্রাণীজগতের কথা বলার পরেও আলাদা করে বলতে হয় মানুষের কথা, তার বৌদ্ধিক বিকাশের কথা, সভ্যতার উত্তরণের কথা, প্রকৃতিকে ব্যবহার করতে পারার কথা। আর এইসবই মানুষ পেরেছে কেবল মাত্র অন্যসব প্রাণীর চেয়ে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন মস্তিষ্কের জোরে, মস্তিষ্কের ভিন্ন গঠনের জোরে।(৩৫)শ্রেষ্ট হওয়ার বাসনা মানুষের মধ্যে একটি সহজাত ব্যাপার।মানুষ সবসময় নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে চায়।মানুষের মধ্যে এই চ্যালেঞ্জিং মনোভাব কেবল ঐ মস্তিষ্কের কল্যাণে।
মানব মস্তিষ্ক এমনই একটি অঙ্গ যে যুগ যুগ ধরে গবেষণার পরও বিজ্ঞানীরা এর কাজকর্মের পুরো ফিরিস্তি আজও শেষ করতে পারছে না। Dr. BD Chaurasia যথার্থই বলেছেন, স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্রম আমাদের শরীরের সবচেয়ে জটিল পদ্ধতি(Nervous system activities are the most complex of our body)।সাথে যোগ করে বলতে হবে, মস্তিষ্ক দেহের একটি জটিল আর রহস্যময় অঙ্গ।মানব মস্তিষ্ককে এ পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ দেখে স্রষ্টার ‘পারফেক্ট ডিজাইন’ হিসেবে। আল্লাহ নিজেও কোরানে ঘোষনা করেছেন-“মানুষকে রুহ সম্পর্কে সামান্য জ্ঞান দেওয়া হয়েছে।”[সুরা বনী ইসরাইল ১৭/৮৫] তবে কি মানব মস্তিষ্কই রুহের আবাসস্থল?

শিশুর ভ্রুণ অবস্থায় মস্তিষ্ক সুষুম্নাকান্ডের(Spinal cord)অগ্রভাগে থাকে।সুষুম্নাকান্ডের অগ্রবর্তী দন্ডাকার অংশ ভাঁজ হয়ে ক্রমান্বয়ে পর পর ৩টি বিষমাকৃতির স্ফীতি তৈরী করে৷ভ্রূণের বৃদ্ধির সাথে সাথে মস্তিষ্কের মধ্যবর্তী স্ফীতি বাইরের স্তরের দিকে নানা ধরনের রাসায়নিক দ্রব্যাদি পাঠাতে থাকে। এর দ্বারা নলাকার স্নায়ুকোষ (Neurons) গঠিত হয়। স্নায়ুকোষের কথায় পরে আসছি।

(৩৬)
মাতৃগর্ভে ভ্রূণের ১০০ দিন অতিক্রম করার পর মস্তিষ্ক অংশ দৃশ্যমান হয়ে উঠে। এই সময় মস্তিষ্কের ওজন দাঁড়ায় ১ আউন্স। আর ২৭০ দিন পর শিশুর মস্তিষ্কের ওজন দাঁড়ায় ১৪ আউন্স।


The photograph of an embryo on the left, below, is that of a mouse and links to an article titled "How Genes Orchestrate Facial Expressions," from the University of Utah. The Gray's Anatomy illustration on the right is of a human embryo at 18-21 days of development (image links to source).-


Primary and Secondary Vesicle Stages of Development.The embryonic brain develops complexity through enlargements of the neural tube called vesicles; (a) The primary vesicle stage has three regions, and (b) the secondary vesicle stage has five regions.

(৩৬)
By the eighth week, which is the end of the embryonic period, all of the organ systems are established - the blue prints have been laid out - and from this time forward the organ systems will continue to develop and refine. Well defined finger and toe joints are present, and there is visible ossification of the ulna, and radius, the illium, and of the fibula and tibia. The two halves of the hard palate have been growing toward each other and begin to unite in this week, and any failure to do so correctly by the tenth week may result in a cleft palate. (A congenital fissure in the median line of the palate, often associated with cleft lip. Often occurs as a feature of a syndrome or generalized condition, e.g., diastrophic dwarfism or spondyloepiphyseal dysplasia congenita; its general genetic behavior resembles that of cleft lip).


মস্তিষ্ক সুরক্ষিত থাকে অস্থিময় একটি আবরকের ভিতরে। একে সাধারণভাবে মাথার খুলি বলা হয়।মানুষের মাথার খুলি কতকগুলো ছোট ছোট হাড়ের টুকরোর সাহায্যে গঠিত। ফ্রন্টাল, প্যারাইটাল, টেম্পোরাল ইত্যাদি নামের এই হাড়গুলো এমনভাবে খাপে আটকে থাকে যে মনে হয় যেন কেউ সুঁচ সুতা দিয়ে মজবুত করে সেলাই করে দিয়েছে। এই সন্ধিগুলোকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে স্যাচুরাল জয়েন্ট। শিশুর মাথার এই হাড়গুলি থাকে খুবই নরম।(৩৮)খুলির নীচে এক ধরনের ঘন তরলে (সেরেব্রো স্পাইনাল ফ্লুয়িড) মস্তিষ্ক ভেসে থাকে। খুলিবিহীন মস্তিষ্ক যেটির আকার দেখতে ছোট একটি ফুলকপির মত!
মানব মস্তিষ্ক সম্পর্কে জানতে হলে আগে স্নায়ু তন্ত্র সম্পর্কে জানতে হবে।নিউরোন বা স্নায়ুকোষ সমন্বিত যে তন্ত্রের সাহায্যে দেহ বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ উদ্দীপনায় সাড়া দেয় এবং একই সাথে বিভিন্ন দৈহিক ও শারীরবৃত্তিক কাজের সামঞ্জস্য রক্ষা করার মাধ্যমে দেহকে পরিচালিত করে, তাকেই স্নায়ুতন্ত্র বলা হয়।(৩৯)আমাদের হাতের উপর যদি একটি মশা কামড় দেয় অথবা পায়ে যদি কাঁটা ফুঁটে তাহলে আমরা ব্যথা পাই। কারও স্পর্শ পেলে তাকিয়ে দেখি অথবা নাকে সুঘ্রাণ-গন্ধের অনুভূতি পাই কারণ আমাদের পুরো শরীরে একটা সিস্টেম কাজ করে, যার নাম স্নায়ুতন্ত্র বা নার্ভাস সিস্টেম।
স্নায়ুতন্ত্রের গঠনমূলক ও কার্যকরী একককে নিউরন বা স্নায়ুকোষ বলে।যার মাধ্যমে মস্তিষ্ক পর্যবেক্ষণ করছে আমাদের পুরো শরীরকে। মস্তিষ্ক কোটি কোটি স্নায়ুকোষ (নিউরন) দিয়ে তৈরি।একটি মাত্র মানব মগজে রয়েছে ১০,০০০ কোটি স্নায়ুকোষ বা নার্ভ সেল। আর এগুলো একটি আরেকটির সাথে সংযুক্ত রয়েছে তেমনি শত শত কোটি স্নায়ুতন্তু দিয়ে।(৪০)


নিউরণের এক অংশ থেকে অন্য অংশে ইলেক্ট্রিক সিগ্যনাল পরিবহনের মাধ্যেমে কাজ করে নিউরণ, আর সব শেষে এই ইলেক্ট্রিক সিগ্যনাল পরিবহনের ফলাফল হিসেবে নিউরণ থেকে নিঃসৃত হয় নিউরোট্রান্সমিটার নামের একধরণের রাসায়নিক বার্তাবাহক, যা আরেকটি নিউরণ পৌছে দেয় এই নিউরণের বার্তা। সর্বোপরি, এইভাবেই নিউরণের অভ্যন্তরে রাসায়নিক ক্রিয়া-বিক্রিয়ার মাধ্যমে, নিউরণ কাজ করে মানবদেহের ইন্টিগ্রেটর বা বিভিন্ন কাজের সমষ্টিকারক -সমন্বয়কারক হিসেবে। এই কাজটা করার জন্যই আমাদের মস্তিষ্কে, মেরুরজ্জুতে(ইংরেজি: Spinal cord) কিংবা মাংশপেশীর নীচে পেরিফেরাল নার্ভ হিসেবে লুকিয়ে আছে তিন ট্রিলিয়ন নিউরাল সংযোগ।

ছবিঃ নিউরণ(৪১)
এজন্যই পায়ে ছোট্র একটা কাটা ফুটলেও তৎক্ষণাৎ তার সংকোচনটা পৌছে যায় মস্তিষ্কের চেতনায়।মানুষ এবং সেসব প্রাণী যাদের মেরুদণ্ড এবং শিরদাঁড়া আছে তাদের স্নায়ুতন্ত্রের দুইটি ভাগ রয়েছে, সেন্ট্রাল স্নায়ুতন্ত্র (সিএনএস) এবং পেরিফেরাল স্নায়ুতন্ত্র(পিএনএস)।
১- কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র [Central Nervous System]:- মস্তিষ্ক, সুষুম্না কাণ্ড এবং চোখের রেটিনা মিলে কেন্দ্রীয় স্নায়ু তন্ত্র বা সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম, সংক্ষেপে সিএনএস নামক অংশ গঠিত।মস্তিষ্ক আমাদের আলোচ্য বিষয় আর সুষুম্নাকাণ্ড বা মেরুরজ্জু (ইংরেজি: Spinal cord) একটি দীর্ঘ, সরু, নলাকার স্নায়ুগুচ্ছ। সুষুম্নাকান্ড অ্যাফারেন্ট (অন্তর্বাহী) ও ইফারেন্ট (বহির্বাহী) স্নায়ুর সাহায্যে দেহের বিভিন্ন যন্ত্রের মধ্যে সমন্বয়সাধন করে এবং সরল প্রতিবর্ত ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে । অর্থাৎ সুষুম্নাকাণ্ডের মূল কাজ মস্তিষ্ক ও প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের মধ্যে স্নায়বিক ইনপুটের সঞ্চারণ করা। মানুষের সুষুম্না কাণ্ডে প্রায় ১৩.৫ মিলিয়ন নিউরন রয়েছে।

Parts of Spinal Cord.(৪২)
“Human nervous system is responsible for judgement, intelligence & memory. Nervous system is highly evolved at the cost of regeneration. The activities of nervous system are linked with every aspect of our lives, that the physical, psychological & intellectual. It is the most complex system of the body.”(৪৩)

OUR ORGAN SYSTEM IS CALLED THE CENTRAL NERVOUS SYSTEM(৪৪)
২- প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র [Peripheral Nervous System] :-মানবদেহের সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম বাদে অন্যান্য স্নায়ুতন্ত্রের অংশ পেরিফেরাল নার্ভাস সিস্টেম বা পিএনএস এর অন্তর্ভুক্ত। সিএনএস এর সঙ্গে শরীরের যোগাযোগ রক্ষা করতে পিএনএস সাহায্য করে।এই স্নায়ুতন্ত্র মস্তিষ্ক থেকে নির্গত 12 জোড়া ক্রেনিয়াল নার্ভ(Cranial Nerves)বা করোটিক স্নায়ু এবং সুষুম্নাকান্ড থেকে নির্গত 31 জোড়া স্পাইনাল নার্ভ(Spinal Nerves) বা সুষুম্না স্নায়ু নিয়ে গঠিত ।

12 জোড়া ক্রেনিয়াল নার্ভ(Cranial Nerves)বা করোটিক স্নায়ু(৪৫)

31 জোড়া স্পাইনাল নার্ভ(৪৬)
পি এন এস বা প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে মানবদেহের সকল ধরণের অভ্যন্তরীণ অথবা বহিরাগত উদ্দীপনায় সাড়া দিয়ে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের সংযোগ প্রদান করে- প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের নিউরন বা স্নায়ুকোষ বিভিন্ন ধরণের, যা বৈদ্যুতিক সংকেত ও নিউরোট্র্রান্সমিটারের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করে । যেমন একটা মশা আপনার শরীরে বসেছে এবং তা তাড়াবার জন্য এই প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে খবরটি কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে ( মস্তিষ্কে ) পৌঁছে দেওয়াই তার কাজ এবং সেখান থেকে আবার তা তাড়ানোর জন্য যে খবরটি আসে তাও প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের কাজ – একইভাবে হজম শক্তি , তাপমাত্রা ইত্যাদি সহ বাহ্যিক সব কিছুই পরিচালনা করার দায়িত্ব প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের এবং তা নিয়ন্ত্রন করবে সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম বা কেন্দ্রীয় স্নায়ু তন্ত্র ।(৩৯)
বলে এসেছি শিশুর ভ্রুণ অবস্থায় মস্তিষ্ক সুষুম্নাকান্ডের(Spinal cord)অগ্রভাগে থাকে।সুষুম্নাকান্ডের অগ্রবর্তী দন্ডাকার অংশ ভাঁজ হয়ে ক্রমান্বয়ে পর পর ৩টি বিষমাকৃতির স্ফীতি তৈরী করে৷এই জন্য বলা হয় মানুষের মস্তিষ্ক ৩ভাগে বিভক্ত৷ অগ্র মস্তিষ্ক(Forebrain),মধ্য মস্তিষ্ক(Midbrain) ও পশ্চাৎ মস্তিষ্ক(Hindbrain)

(৪৭) human fetal brain; prenatal development Profile of the brain of a human fetus at 10 weeks ১০ সপ্তাহে মানব মস্তিষ্কের তিন অবস্থা Forebrain, Midbrain & Hindbrain.
অগ্র মস্তিষ্ক(Forebrain):-মানব মস্তিষ্কের সবচেয়ে বড় অংশ হলো এর অগ্রমস্তিষ্ক।দেহের ২০% অক্সিজেন মস্তিষ্ক ব্যবহার করে।পক্ষান্তরে মস্তিষ্কে প্রাপ্ত মোট অক্সিজেনের ৯৫% ব্যবহৃত হয় এই ধূসর অংশে।অগ্র মস্তিষ্কটি তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত, যথা: (ক)সেরেব্রাম কর্টেক্স বা গুরু মস্তিষ্ক ( cerebral cortex ) (খ) থ্যালামাস – Thalamus (গ) হাইপোথ্যালামাস – Hypothalamus.

সেরেব্রাল(সেরেব্রাম)কর্টেক্স বা গুরু মস্তিষ্ক হল মস্তিষ্কের সবচেয়ে বড় অংশ এবং করোটির প্রায় বেশির ভাগ অঞ্চল জুড়ে অবস্থিত। সেরেব্রাল কর্টেক্স মস্তিষ্কের জটিল বিশ্লেষণের রাজ্য। এখান থেকেই আমরা বুদ্ধি এবং প্রেরণা পাই। এটা দিয়েই লিখি, পড়ি, অংক কষি, বা গান করি। এখানেই মনুষ্যত্বের বসবাস। শিল্প এবং বিজ্ঞানের উৎস এটাই। সভ্যতার উৎপত্তি সেরেব্রাল কর্টেক্স থেকেই।The cerebral cortex is the largest region of the mammalian brain and plays a key role in memory, attention, perception, cognition, awareness, thought, language, and consciousness.(৪৮)
অবস্থান অনুসারে সেরেব্রাল কর্টেক্স বা গুরু মস্তিষ্ক চারটি অংশে বিভক্ত।১.অগ্র খণ্ড (the Frontal lobe) ২.পশ্চাৎ খণ্ড (the Parietal lobe) ৩.দর্শন খণ্ড (the Occipital lobe) ও ৪.টেম্পরাল খণ্ড (the Temporal lobe). এই অংশগুলো মস্তিষ্কের ডান ও বাম, উভয় গোলার্ধ বা হেমিস্ফেয়ারেই অবস্থিত।

(৪৯)
টেম্পোরাল লোব(Temporal Lobe):- Temporal Lobe নিয়ে একটু বেশি করে আলোচনা করার দাবি রাখি।টেম্পোরাল লোবকে বলা হয় মানবদেহের নতুন মস্তিস্ক বা চিন্তাভাবনার মস্তিস্ক। মস্তিস্কের এই অংশটাই আমাদেরকে উন্নত প্রাণী হিসেবে নিম্ন প্রাণী থেকে পৃথক করেছে; আর এই সুবাদেই আমাদের মন গভীর ভাবে ভাবতে পারে ও বিশ্বাসের ভিতকে শক্তিশলী করতে পারে।The temporal lobes sit behind the ears and are the second largest lobe. They are most commonly associated with processing auditory information and with the encoding of memory. The temporal lobes are also believed to play an important role in processing affect/emotions, language, and certain aspects of visual perception.(৪৯)
Temporal lobe consists of all the tissue that lies below the Sylvian fissure and anterior to the occipital and parietal cortex—
- Brodmann identified 10 temporal lobe areas, but there are many more
- Regions on the lateral surface can be divided into those that are auditory
- Brodmann's areas 41, 42, and 22
- Also divided into areas that form the visual stream on the lateral temporal lobe
- Areas 20, 21, 37, and 38


- Connections of the temporal cortex
- 4 distinct types of cortico-cortical connections
- Hierarchical progression of connections from primary and secondary auditory and visual areas, ending in temporal pole
- Series of parallel projections from the visual and auditory association areas into the polymodal regions of the superior temporal sulcus
- Projection from the auditory and visual association areas into medial temporal regions
- Series of parallel projections from the association areas to the frontal lobe
- Theory of temporal lobe function
- Does not have a unitary function
- 3 basic functions
- Processing auditory input
- Visual object recognition
- Long-term storage of sensory input
- Matching visual and auditory information- cross-modal matching
- Also involves the cortex of the STS
- Asymmetry of temporal lobe function
- Sensitive to epileptoform abnormalities
- Surgical removal of the abnormal temporal lobe is beneficial in treating epilepsy
- Damage to the left temporal lobe- deficits in verbal memory
- Damage to the right temporal lobe- - deficits in nonverbal memory
- Disorders of auditory perception
- Bilateral damage to the auditory cortex produces cortical deafness
- Little disruption of sensitivity to changes in sound frequency or intensity
- Study by Tallal and Piercy- found that cortical lesions appear to increase the time needed between sounds to discriminate the sounds
- Related to common complaint of people with left temporal lobe damage that people are speaking too quickly
- Disorders of visual perception
- Do not normally have large deficits in visual perception
- Milner- found that patients with right temporal lobectomies had trouble interpreting cartoon drawings
- McGill Picture- Abnormalities test- can't find anything abnormal about the pictures
- Perform poorly on the Mooney Closure test and related tests(৫০)
আত্মা সম্পর্কে আধুনিক বিজ্ঞানের মতামত অস্পষ্ট। আধুনিক বিজ্ঞানীরা ‘আত্মা’ শব্দটিকে মনের কাব্যিক সংস্করণ বলে মনে করেন।নানা পরীক্ষা নীরিক্ষায় বিজ্ঞান মনে করছে আত্মা বিষয়টি মানুষের একটা বিশ্বাস মাত্র। মানুষের মস্তিস্কের ক্রিয়াকলাপই হল আত্মার কাজ। মস্তিস্ক বেঁচে থাকাই হল আত্মার উপস্থিতি। মস্তিস্কের সম্মিলিত ক্রিয়াকর্মেই আত্মার অবস্থান।

তবে অধুনা বিজ্ঞানে এক শাখার উদ্ভব হয়েছে যা মানুষের ধর্মীয় অনুভুতি নিয়ে গবেষণা করছে। যার কাজ হল ধর্মীয় স্নায়ু প্রাণীবিজ্ঞান(neurobiology of religion,) গবেষণা করে মস্তিষ্কের আধ্যাতিক চক্রের ক্রিয়াকলাপ ব্যাখ্যা করা।
কোন কোন বৈজ্ঞানীক বলছেন মানুষের মস্তিষ্কে বিধাতার বিন্দু (“God-spot”) বা আধ্যাতিকতার কেন্দ্র রয়েছে এবং তার অবস্থান হল মস্তিষ্কের টেম্পোরাল লোব কেন্দ্রে-(টেম্পরাল খণ্ড)। এই লোবের সাথে সংযোগ রয়েছে সম্মুখ কর্টেক্স এর যা মানুষের অনুভূতির কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। সুখের বিষয় এই যে, স্রষ্টায় বিশ্বাসী না হলেও তাঁকে(স্রষ্টাকে) নিয়ে ভাববার মত বিশেষ স্থান মানুষের মস্তিস্কে রয়েছে।(৩৩)


একটা মানুষ যখন কোমাতে থাকে, তার শরীরের মস্তিস্ক ছাড়া সব কটা অঙ্গ স্বাভাবিক ভাবে চলে. তার কিডনি, লিভার, হার্ট, ফুসফুস- সব একদম সুন্দর ভাবে কাজ করবে. শুধু ব্রেইন ঘুমিয়ে গেছে. ব্রেইন কোনদিন জেগে উঠতেও পারে, তবে সাধারনত তেমন দেখা যায় না. তাহলে কি রুহ ব্রেইন এ থাকে? ব্রেইন এর রহস্য মানুষের পক্ষে বের করা অনেক দূর পথ. পৃথিবীর সমস্ত বই যদি হার্ড ডিস্কে ভরা হয় তাহলে নাকি ৭০ টেরা বাইট জায়গা লাগবে, আর মানুষের ব্রেইন এর ধারণ ক্ষমতা ৩০০ থেকে ১০০০ টেরা বাইট. একটা পিপড়ার জন্য সুপার কম্পিটার বোঝা আর মানুষের বর্তমান জ্ঞান দিয়ে ব্রেইন এর রহস্য বোঝা একরকম।

স্নায়ুবিজ্ঞান (Neuroscience) এখন স্বীকার করে যে, মানুষের মস্তিষ্ক অভিযোজন ক্ষমতা সম্পন্ন। অর্থাৎ, অভিজ্ঞতা লাভের মধ্যদিয়ে মস্তিষ্কে পরিবর্তন ঘটে এবং আমরা যা দেখি, শুনি বা জানি, তার সবকিছুর সাথেই মস্তিষ্কের সংযোগ গড়ে ওঠে।(৫১)
সকল মস্তিষ্ক একই রকম এটা ভাবার কোন অবকাশ নেই।এমন কি সাইজও নয়।আলবার্ট আইনস্টাইন সর্বকালের সেরা বিজ্ঞানীদের একজন ছিলেন।আইনস্টাইনের অসাধারণ মেধার নেপথ্য কারণ সম্পর্কে বিশ্বের অনেক মানুষ কৌতূহলী ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ও গবেষক টমাস হার্ভে ১৯৫৫ সালে আইনস্টাইনের মৃত্যুর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর তাঁর মস্তিষ্ক আলাদা করে এর একটি বড় অংশ সংরক্ষণ করে গবেষণা শুরু করে দেন। প্রথমেই তিনি লক্ষ্য করেন আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের ওজন ১২৩০ গ্রাম, অপর পক্ষে সাধারণ মানুষের মস্তিষ্কের ওজন ধরা হয় ১৩০০ গ্রাম।মৃত্যুর পর আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের গঠন নিয়ে বেশ কয়েক দফা গবেষণা হয়েছে। তবে স্বাভাবিক মস্তিষ্কের সঙ্গে তাঁর মস্তিষ্কের বড় কোনো পার্থক্য পাওয়া যায়নি।
তবে সম্প্রতি চীনের একদল গবেষক দাবি করছেন, আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের গঠন ব্যতিক্রমী ছিল। আর এ কারণেই তিনি অনন্যসাধারণ মেধার অধিকারী ছিলেন। বিজ্ঞান সাময়িকী ব্রেন এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।


চীনের সাংহাইয়ে অবস্থিত ইস্ট চায়না নরম্যাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক উইউই মেনের নেতৃত্বে একদল গবেষক নতুন একটি কৌশল প্রয়োগ করে কাজ শুরু করেন আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের ছবি নিয়ে। মার্কিন গবেষকদের কাছ থেকে এসব ছবি সংগ্রহ করা হয়েছিল। চীনা গবেষকেরা আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের মধ্যবর্তী তন্তুময় অংশটি (করপাস কলোসাম) বিশদভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। করপাস কলোসামই মস্তিষ্কের ডান ও বাঁ অংশের মধ্যে যোগাযোগ বা সমন্বয় রাখে। তুলনামূলক পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আইনস্টাইনের করপাস কলোসাম সুগঠিত ছিল। হয়তো এটিই তাঁর ব্যতিক্রমী মেধার মূল রহস্য।(৫২)

Thomas Harvey, is believed to have taken Einstein's brain, without permission, and sliced it up. Harvey. who died in 2007, is seen with Einstein's brain in 1994(৫৩)
প্রকৃতিও তাই বলে।বলে এসেছি আমেরিকান কলেজ অফ অবসটেট্রিশিয়ান এন্ড গাইনেকোলজিস্ট (ACOG) মতামত। তাদের মতে, গর্ভাবস্থার প্রথম মাসে বাচ্চার হৃদপিণ্ড ও ফুসফুসের গঠন হওয়া শুরু হয়। এই সময়েই বেবির হাত, পা, মস্তিষ্ক, স্নায়ুরজ্জু এবং স্নায়ুর গঠন ও শুরু হয়ে যায়। ভ্রূণের আকার তখন হয় একটি মটর দানার মত। দ্বিতীয় মাসে ভ্রূণের আকার বৃদ্ধি পেয়ে শিমের বিচির মত হয়। গোড়ালি, কব্জি, আঙ্গুল ও চোখের পাতা গঠিত হয়। হাড়ের প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথে যৌনাঙ্গ এবং অন্তঃকর্ণ এরও বিকাশ শুরু হয়।(৫)
আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের ওজন ১২৩০ গ্রাম, অপর পক্ষে সাধারণ মানুষের মস্তিষ্কের ওজন ধরা হয় ১৩০০ গ্রাম। গবেষনায় দেখা যায়, মানুষ বেশী বেশী মস্তিষ্কের চর্চা করলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আইনস্টাইন সমস্যা নিয়ে ভাবতে ভালোবাসতেন তাই মাথা খাটাতেন প্রচুর এবং এই কারনেই তাঁর মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে (তাঁর গবেষণার একটি বড় অংশ ছিল থট এক্সপেরিমেন্ট)। বিষয়টা অনেকটাই শরীর চর্চার মতো। আপনি যদি নিয়মিত শরীর চর্চা করেন তাহলে আপনার পেশী সুগঠিত হবে। মস্তিষ্কের সুগঠনের জন্যও তাই মস্তিষ্ক চর্চা করতে হয়। মস্তিষ্কই মানুষের শরীর ও মনের চালিকাশক্তি। অথচ তাকে অভিজ্ঞতা দিয়ে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হয়।একই সাথে জন্ম নেয়া দুই শিশুর একটিকে বনে অন্যটিকে আধুনিক মানব সমাজে ছেড়ে দিয়ে দেখুন দু’জনের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কেমন হয়।

মধ্য মস্তিষ্ক(Midbrain):-অগ্র ও পশ্চাদ মস্তিষ্কের মাঝখানে মধ্য মস্তিষ্ক অবস্থিত।মধ্য মস্তিষ্ক মানবদেহের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের অংশ।মধ্য মস্তিষ্কের প্রধান অংশগুলি হল –ক্রুরা সেরিব্রাই, টেগমেনটাম এবং টেকটাম।

Hindbrain and Midbrain
The midbrain is located above the brain stem and is responsible for the recognition of stimuli and the subsequent communication with the right and left hemispheres to process this information. It is important to awaken the midbrain so as to boost the potential of the human brain as it strengthens the brain as a whole.
The midbrain is in charge of controlling the entire human organism including the viscera.
Once the midbrain is accessed, the secret potential of the brain is unleashed. To awaken this part of the brain, a special vibration needs to be delivered to the midbrain for it to release a hormonal discharge that is responsible for its awakening.

Dr Walter Hess: The Nobel Prize winner in Physiology or Medicine 1949, for his discovery of the functional organization of the midbrain as a coordinator of the activities of the internal organs, in the field of neurophysiology.(৫৪)
পশ্চাৎ মস্তিষ্ক(Hindbrain):-মস্তিষ্কের পশ্চাৎদেশে এর অবস্থান। The hindbrain or reptilian brain is the oldest part of the human brain. This is a piece of our brain anatomy that we share with reptiles and is most important. This part of the brain is in charge of instincts and the most basic functions. For example survival, dominance, mating, respiration, and heartbeat all come from this section. Within the hindbrain there are four different parts; one would be the Spinal Cord, the Medulla Oblongata, the Pons, and the Cerebellum.(৫৫)
মাথা ছাড়াই ১৮ মাস বেঁচে ছিলো মাইক
মাইক একটা মোরগের নাম।১৯৪৫ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর আমেরিকার কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের ফ্রুইটা শহরে বাসকারী এক কৃষক দম্পতির পরিবারে ঘটে যায় এক অবিশ্বাস্য ঘটনা।কৃষক দম্পতির নাম লয়েড ওলসেন এবং ক্লারা ওলসেন।ক্লারার মা অর্থাৎ লয়েডের শাশুড়ি মুরগির গলা খেতে খুব পছন্দ করতেন।শাশুড়ির এ পছন্দের কথা লয়েডেরও অজানা ছিলো না। তাই তিনি নিজের ফার্ম থেকে দেখেশুনে সাড়ে পাঁচ মাস বয়সী একটা মুরগীর বাচ্চাকে বেছে নিলেন জবাইয়ের জন্য। বাচ্চা এ মোরগটির নাম ছিলো মাইক।

শাশুড়ি যাতে গলার পুরোটাই খেতে পারেন তাই শুধুমাত্র মাথাটিই মাইকের দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেললেন লয়েড ওলসেন।কিছুক্ষণ পর মৃত মোরগ প্রসেস করতে এসে দেখেন মাথাহীন মাইক দিব্যি ঘুরে বেরাচ্ছে।মাইকের এ অবস্থা দেখে দয়া হলো লয়েডের।কাটা গলার খাদ্যনালীর ছিদ্র দিয়ে একটি চোখের ড্রপারের সাহায্যে মাইককে ওষুধ মিশ্রিত তরল খাবার খেতে দিলেন তিনি।

কাটা গলার খাদ্যনালীর ছিদ্র দিয়ে ড্রপারের সাহায্যে মাইককে তরল খাবার খাওয়ানো হচ্ছে।
পরদিন সকালে অনেকটা কৌতুহল নিয়েই মাইককে দেখতে আসলেন লয়েড।ভেবেছিলেন রাতের মধ্যেই মাইক মরে গেছে। কিন্তু তাকিয়ে যা দেখলেন তাতে বিস্ময়ের সীমা রইলো না। মাইক তার কাটা মাথাটি পাখার নিচে নিয়ে দিব্যি ঘুমিয়ে আছে!

মাথা ছাড়াই দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে মাইক!
এবার লয়েড মাইককে বাঁচাতে সত্যি সত্যিই তৎপর হয়ে উঠলেন।তাছাড়া বিষয়টির একটি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও চাই।ততক্ষণে খবরটি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে বিদ্যুৎ তরঙ্গের মত।

মাইককে সাথে নিয়ে লযেড চলে গেলেন সল্ট লেক সিটির উতাহ বিশ্ববিদ্যালয়ে(University of Utah)। সেখানকার বিজ্ঞানীরাও অপেক্ষা করছিলেন মাইককে দেখার জন্য, বুঝতে চাচ্ছিলেন মাথা ছাড়াও একটি মোরগের বেঁচে থাকার রহস্য নিয়ে।অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তারা বুঝতে পারলেন, লয়েড মাইকের মাথা কাটতে পারলেও কাটতে পারেনি Brainstem বা মস্তিষ্কমূল।তাছাড়া মাইকের গলার একটি বড় রক্ত নালীসহ একটি কানও অক্ষত আছে।তাই তাৎক্ষণিকভাবে জমাট বেঁধে যাওয়া রক্ত অবিরাম রক্তক্ষরণে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছে মাইককে। তবুও মস্তিষ্কের বেশিরভাগ অংশ এবং সেই সাথে সেরেব্রাম(cerebrum) না থাকার পরও মাইকের বেঁচে যাওয়ায় বিজ্ঞানীরা বিস্ময়ে হতবাগ হয়ে যান।
Rumour has it that university scientists surgically removed the heads of many other chickens to see whether any would live.
What happens when a chicken's head is chopped off?
 Beheading disconnects the brain from the rest of the body, but for a short period the spinal cord circuits still have residual oxygen.
 Without input from the brain these circuits start spontaneously. "The neurons become active, the legs start moving," says Dr Tom Smulders of Newcastle University.
 Usually the chicken is lying down when this happens, but in rare cases, neurons will fire a motor programme of running.
"The chicken will indeed run for a little while," says Smulders. "But not for 18 months, more like 15 minutes or so." (৫৬)

দাঁড়িয়ে আছে মাইক।সামনে কাঁটা মাথা
সকল খ্যাতি ছাড়িয়ে গিনেজ বুক অফ রেকর্ডসে জায়গা করে নিলো মাথাবিহীন মাইক। তাকে নিয়ে ফিচার হলো বিখ্যাত টাইম এবং লাইফ ম্যাগাজিনে।খ্যাতির চুড়ায় থাকা মাইককে দেখতে টিকিট কেটে দলে দলে মানুষ দেখতে আসতে লাগল।মাইককে দেখিয়ে ব্যবসা করে লয়েড পরিবার বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক হয়ে গেল।মাথাহীন মাইক বেঁচে ছিল দীর্ঘ ১৮ মাস।
মাইক মারা গেলেও হারিয়ে যায়নি তার স্মৃতি। আমেরিকার কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের মানুষেরা আজও ভুলতে পারেনি মাইকের কথা।প্রতি বছর মে মাসের তৃতীয় রবিবার তারা আয়োজন করে Mike the Headless Chicken Festival যেখানে খাবারদাবার, গান ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে স্মরণ করা হয় মাইককে।(৫৭)

Troy Waters stands next to a statue of Mike in Fruita, which holds the Headless Chicken festival every year in May
মাইকের ধারাবাহিক আলোচনা আমাদের উদ্দেশ্য নয়।বিজ্ঞানীদের কৌতুহূল তো নয়ই।মাথাহীন মাইক দীর্ঘ ১৮ মাস বেঁচে থেকে লয়েড পরিবারকে বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক করে গেল কিন্তু সেই সাথে বিজ্ঞানীদের কিছু প্রশ্নেরও জন্ম দিয়ে গেল।

আলোচনা করে এসেছি যে, মস্তিষ্কের উপিরভাগে(Forebrain) থাকে Cerebrum (সেরেব্রাম)কর্টেজ।সেরেব্রাম কর্টেজ মস্তিষ্কের চারপাশ থেকে সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী উপযুক্ত রি-অ্যাকশন দেখায়। অর্থাৎ সেরেব্রামের কাজ হল একটা ইনফরমেশন এর সাথে আরেকটা ইন্ফরমেশন মিলানো (তুলনা করা ) এবং সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারন করা ( অর্থাৎ, এখন কি করা উচিৎ সেটা নির্ধারন করা )।এক কথায় সেরেব্রামের কাজ হলো বুদ্ধিমত্তা, বিচারশক্তি, মাংসপেশির ঐচ্ছিক কাজ করার ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করা।


মাইকের দেহে মস্তিষ্কের কেবল ব্রেন স্টেম অক্ষত ছিল।কেবল ব্রেন স্টেম দিয়ে কিভাবে মস্তিষ্কের অপরাপর অংশের কাজ হ’ল এটাই প্রশ্ন।

মোরগের কথা রেখে আবার মানবদেহের কথায় আসি।
মস্তিষ্ক ছাড়াই ১২ বছর জীবিত!
নিউ ইয়র্ক, ০৫ সেপ্টেম্বর- ২০০১ সালে ক্রিসমাসের সন্ধায় জন্ম নিয়েছিল বিরল এক শিশু। মাথার ভেতর সাধারণ মানুষের মতো যেমন মস্তিষ্ক গঠন হওয়া উচিত, তেমন ছিল না।

ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন, শিশুটির ব্রেন বলে কিছুই নেই। তাকে তিন মাসের বেশি বাঁচানো যাবে না। তবে ডাক্তার আমাদের কাছে সৃষ্টিকর্তার দূত হলেও তাদের সব ভবিষ্যতবাণীকে অদূরে রেখে ১২ বছর পৃথিবীর রূপ, রস, গন্ধ আস্বাদন করে ২ সেপ্টেম্বর আমাদের ছেড়ে চলে যান হাইড্রোনেনসেফেলি রোগে আক্রান্ত ট্রেভর জজ ওয়ালট্রিপ।
তিনি চোখে দেখতে পেতেন না। সবকিছু স্পর্শ করে বুঝে নিতেন সম্পর্কের উষ্ণতা, ভালোবাসা। তবে আমাদের মতো সবকিছুর অনুভুতি তার ছিল না। কারণ ডাক্তাররা পরীক্ষা করে দেখেছেন, তার ব্রেন বলে কিছু নেই।
ব্রেনের ভিতর দুই গোলার্ধের বদলে ছিল সেরিব্রোস্পাইনাল তরল থলি। ট্রেভর জন্মেছিল একটি ব্রেন স্টেম নিয়ে যেখানে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে পারত, কিছু অনুভুতি বুঝতে পারত, আর হৃদস্পন্দন হত। এত কষ্টের মধ্যেও তিনি প্রায় একযুগ বেঁচে থাকলেন, তা সত্যি বিস্ময়।(৫৮)


When he was born on Christmas Eve 2001, Trevor Judge Waltrip had only a brain stem and hydranencephaly— a rare condition in which the brain’s cerebral hemispheres are absent and replaced by sacs filled with cerebrospinal fluid.
Because he had a brain stem, he was able to breathe, respond to some stimulus and maintain a heartbeat. However, Trevor was unable to see or verbally communicate.
“He’s so alert and hates to be alone,” his mother Elizabeth told KSLA News 12 in 2003. “He’ll sense that, too.”
Doctors were surprised Trevor survived 17 months, as they were unsure if he’d even make it to 12 weeks. According to the National Institutes of Health, there are no definitive treatments for the condition. Symptoms may include seizures, lack of growth, paralysis and intellectual deficits.
With the help of a feeding tube and therapists who stimulated his muscles and joints, Trevor lived for 12 years. In 2005, Elizabeth told KSLA that he was doing well, gaining weight and had 15 teeth. (৫৯)
Brainstem(মস্তিষ্কমূল)
Stem শব্দের বাংলা অর্থ ডাঁটা, বোঁটা, বৃন্ত বা মূল।অতএব Brainstem শব্দের বাংলা অর্থ দাঁড়ায় মস্তিষ্কমূল।
খুলিবিহীন মানব মস্তিষ্ক যেটির আকার দেখতে ছোট একটি ফুলকপির মত! একটা ফুলকপি তার Stem বা বোঁটার

মানুষের মস্তিষ্ক বা Brain যা দেখতে ছোট্র একটি ফুলকপির মত
দ্বারা মাটি থেকে তার প্রয়োজনীয় উপাদান সংগ্রহ করে।তেমনি আমাদের Brain বা মস্তিষ্ক তার Brainstem দিয়ে ফুসফুসের শ্বাস-প্রশ্বাস, হৃদপিণ্ডের গতি, রক্তের চাপ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। Brainstem এর সাথে সুষুম্নাকাণ্ড (Spinal Cord) যুক্ত থাকে। The brain stem is the stem-like part of the base of the brain that is connected to the spinal cord. The midbrain is considered to be part of the brainstem.শিশুর ভ্রুণ অবস্থায় মস্তিষ্ক সুষুম্নাকান্ডের অগ্রভাগে থাকে।সেই সময় সুষুম্নাকান্ডের অগ্রবর্তী দন্ডাকার অংশই ভাঁজ হয়ে ক্রমান্বয়ে পর পর মস্তিষ্কের অপরাপর অংশগুলি তৈরী হয়৷ সুষুম্নাকাণ্ড (Spinal Cord) দ্বারা বাহিত সকল তথ্য মস্তিষ্ক তার Brainstem দ্বারা গ্রহণ করে।

লেখার শুরুতেই Medical dictionaryতে মৃত্যুর সঙ্গায় বলে এসেছি brain stem এর কথা। ”Death is defined as the cessation of all vital functions of the body including the heartbeat, brain activity (including the brain stem), and breathing”..-- definition of death by Medical dictionary—
উপরে মাইকের (মোরগ)এর ১৮ মাস এবং Trevor ১২ বৎসর বেঁচে থাকার জন্য মস্তিষ্কের brain stem এর অবদানের কথা বলা হচ্ছে।কেননা ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন, Trevor এর ব্রেন বলে কিছুই ছিল না।ব্রেনের ভিতর দুই গোলার্ধের বদলে ছিল সেরিব্রোস্পাইনাল তরল থলি।ট্রেভর জন্মেছিল একটি ব্রেন স্টেম নিয়ে যেখানে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে পারত, কিছু অনুভুতি বুঝতে পারত, আর হৃদস্পন্দন হত।অন্যদিকে মাইকের করুণ পরিণতি আমরা জেনেছি।মাইকের দেহে মস্তিষ্কের কেবল ব্রেন স্টেম অক্ষত ছিল।

বলে এসেছি সেরেব্রাল(সেরেব্রাম)কর্টেক্স বা গুরু মস্তিষ্ক(Forebrain) হল মস্তিষ্কের সবচেয়ে বড় অংশ এবং করোটির প্রায় বেশির ভাগ অঞ্চল জুড়ে অবস্থিত।এর টেম্পোরাল লোবকে বলা হয় মানবদেহের নতুন মস্তিস্ক বা চিন্তাভাবনার মস্তিস্ক।কোন কোন বৈজ্ঞানিক বলছেন মানুষের মস্তিষ্কে বিধাতার বিন্দু (“God-spot”) বা আধ্যাতিকতার কেন্দ্র রয়েছে এবং তার অবস্থান হল মস্তিষ্কের টেম্পোরাল লোব কেন্দ্রে-(টেম্পরাল খণ্ড)।কিন্তু মানুষের মৃত্যুর জন্য ব্রেন স্টেম থেকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।ব্রেন স্টেম মৃত্যু মানেই মানুষের মৃত্যু।বৈজ্ঞানিকভাবে এটাই স্বীকৃত।

কোনও কারণে মস্তিষ্কের সেরেব্রাল(সেরেব্রাম)কর্টেক্স বা গুরু মস্তিষ্ক এলাকা কাজ করা বন্ধ করে দিলে মানুষ অজ্ঞান হয়ে গভীর ভাবে অচেতন হয়ে কোমায় চলে যায়।কোমায় যাওয়া ব্যক্তি জীবিত থাকে কারণ তার দেহের বাকি সব শারীরবৃত্তিয় ক্রিয়া চলতে থাকে। কেবল তার মস্তিষ্ক সচেতনতার সর্বনিম্ন পর্যায়ে অবস্থান করে। পার্থক্য এই যে কোমায় থাকা ব্যক্তিকে নাড়া দিয়ে সজাগ করা যায় না যেমনটি একজন ঘুমিয়ে পড়া ব্যক্তিকে সম্ভব।

Projection areas of the brain.(৬০)
কোমায় যাওয়া ব্যক্তির কিছুকিছু ক্ষেত্রে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। সেক্ষেত্রে আলাদা “ভেন্টিলেটর” যন্ত্রের সাহায্যে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করা হয়। রোগীর শিরায় সুচের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সর্বরাহ করা হয়, কিছু ক্ষেত্রে সরাসরি রোগীর পাকস্থলীতে নল প্রবেশ করানোর মাধ্যমে পানিসহ অন্যান্য খাবার সরবরাহ করা হয়।(৬১)এক্ষেত্রে রোগী মূত্রত্যাগ করে শুধু তাই নয় স্বাভাবিক মানুষের মত শরীরে ঘামও হয়।এভাবে কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস চালিয়ে যে কোনও মানুষকে কয়েক দশকও বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।তবে চিকিৎসকরা যদি তাকে সংবেদন ফেরানো আর সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন তখন তাকে ব্রেইন ডেথ বলে।(৬২)
Brain death is defined as the irreversible loss of all functions of the brain, including the brainstem. The three essential findings in brain death are coma, absence of brainstem reflexes, and apnoea. An evaluation for brain death should be considered in patients who have suffered a massive, irreversible brain injury of identifiable cause. A patient determined to be brain dead is legally and clinically dead.
The diagnosis of brain death is primarily clinical. No other tests are required if the full clinical examination, including each of two assessments of brain stem reflexes and a single apnoea test, are conclusively performed.(৬৩)
গুরু মস্তিষ্ক(Forebrain) মানুষের ইন্দ্রিয়ের সংবেদন ও ঐচ্ছিক পেশি নিয়ন্ত্রণ করে। অর্থাৎ আমরা যা দেখতে পাই, শুনতে পাই, স্বাদ বা স্পর্শ অনুভব করি তা এই অংশের জন্য। এছাড়া আমরা হাত পা নাড়াচাড়া করি তাও এই অংশ দিয়ে।

মস্তিষ্কের আর একটি অংশ যা শরীরের অনৈচ্ছিক ক্রিয়া পরিচালনা করে।যেমন মানুষের হৃদস্পন্দন।মানুষ ইচ্ছা করে এক সেকেন্ডের জন্যও তার হৃদস্পন্দন বন্ধ রাখতে পারে না। মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস,হৃদস্পন্দন ও চেতনা নিয়ন্ত্রণকারী অনৈচ্ছিক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণকরে লঘু মস্তিষ্কের Brainstem ।

একটি উদাহরণ দিই।ধরুন,সারাদিন বাহিরে কাজ শেষে রাত্রিতে আপনার তালাবদ্ধ ফ্লাটে প্রবেশ করছেন। লোডশেডিং থাকায় জেনারেটর চালাতে হ’ল।কিন্তু আপনার ঘরের লাইটটির সুইচ দিয়েও লাইট জ্বলছে না। ইলেকট্রেশিয়ান লাইট, সুইচ বোর্ড, SDB পরীক্ষা করে দেখল সব ঠিক আছে।সবশেষে Main DB পরীক্ষা করে দেখা গেল জেনারেটর চলছে কিন্তু তা থেকে উৎপাদিত শক্তি Main DB তে ট্রান্সফর্ম হচ্ছে না। Brainstem মানবদেহের জেনারেটর স্বরুপ।

একজন রোগীকে মৃত ঘোষণা করা একটি স্পর্শকাতর, সংবেদনশীল ও জবাবদিহিতামূলক দায়িত্ব।মৃত ঘোষিত রোগীর জীবিত হওয়ার ঘটনার জন্য মৃত ঘোষণাকারী ডাক্তারের অনভিজ্ঞতা, ঔদাসীন্য ও দায়িত্বহীনতার কারণে বিশ্ব ব্যাপি

Lyudmila Steblitskaya, her daughter Anastasia, and granddaughter Nelli, all had a horrific shock,(৬৪)

Doctors later told the family that the girl had died and the boy was alive but critical and needed ventilator support.(Shutterstock/Representative Photo)(৬৫)

Click This Link
মৃত ঘোষিত রোগীর জীবিত হওয়ার ঘটনা এক সময় বেড়েই চলেছিল।আজ উন্নতসহ পরিশিষ্ট বিশ্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ রোগীর নিশ্চিত মৃত্যু ঘোষণার ক্ষেত্রে মানবদেহের শ্বাস-প্রশ্বাস, হৃদস্পন্দন, চেতনাসহ অনৈচ্ছিক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণকারী লঘু মস্তিষ্কের ব্রেন স্টেমের মৃত্যুর(Brainstem Death) উপর সবচেয়ে বেশি জোর দিয়ে থাকেন।অর্থাৎ মানবদেহের Brainstem তার কাজ বন্ধ করে দিলেই কেবল কারও মৃত্যুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।তাহলে কি মস্তিষ্কের ব্রেন স্টেম অংশেই রূহের অবস্থান?

https://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/e/e0/Blausen_0114_BrainstemAnatomy.png

তথ্য সূত্রঃ--
(৩২)মস্তিষ্কের গঠন এবং বিবর্তনের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা
(৩৩)মস্তিস্কে বিধাতার অবস্থান
(৩৪)স্রষ্টার বিস্ময়কর সৃষ্টিমস্তিষ্কের মেমোরি ক্ষমতা ১০ লাখ গিগাবাইট।।-ডা. মোড়ল নজরুল ইসলাম দৈনিক ইত্তেফাক, ০৭ নভেম্বর, ২০১৪ ইং
(৩৫)মস্তিষ্কে, অনুরণন সংগোপনে
(৩৬)Stages of Brain Development-- by Gregory J. de Montfort and Rosemary Boon Last update of this article 20th March 2004
(৩৭)Primary and Secondary Vesicle Stages of Development.
(৩৮)জানুন নিজের মস্তিষ্ক সম্পর্কে
(৩৯)স্নায়ুতন্ত্র (মানবদেহ) – পর্ব ১ Nervous System- Part 1
(৪০)স্নায়ুকোষএ পৃষ্ঠায় শেষ পরিবর্তন হয়েছিল ১৯:০৮টার সময়, ৩ মে ২০১৮ তারিখে।
(৪১)নিউরণের গল্পলিখেছেন জওশন আরা শাতিল|ডিসেম্বর 3, 2011
(৪২)What is Spinal Cord, Parts of Spinal Cord with Pictures
(৪৩)Introduction to the Brain. —BD Chaurasia’s Human Anatomy Volume 3(Fourth Edition. page 299)
(৪৪)Nervous System
(৪৫)Cranial nerve
(৪৬)Spinal Nerves-Lecture 26
(৪৭)১০ সপ্তাহে মানব মস্তিষ্কের তিন অবস্থা Forebrain, Midbrain & Hindbrain.
(৪৮)Cerebral cortex This page was last edited on 1 November 2017, at 16:33.
(৪৯)Brain Map: Temporal Lobes
(৫০)Neouropsychology Spring 2011 Chapter 13: The Temporal Lobes
(৫১)পর্নোগ্রাফী দেখলে মস্তিষ্ক যেভাবে বদলে যায়
(৫২)আইনস্টাইনের মস্তিষ্ক অন্যরকম?প্রথম আলো ডেস্ক ০৬ অক্টোবর ২০১৩, ০২:০১ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৩, ০২:০২
(৫৩)Slices of Einstein's brain are on DISPLAY in Philadelphia...after pathologist took it without permission
(৫৪) Genius League
(৫৫)Hindbrain
(৫৬)The chicken that lived for 18 months without a head10 September 2015
(৫৭)মাথা ছাড়াই বেঁচে ছিলো যে মোরগটিPublished Fri 25th November 2016 Sub Editor Muhaiminul Islam Antik
(৫৮)মস্তিষ্ক ছাড়াই ১২ বছর জীবিত!
(৫৯)Louisiana boy born without brain dies at age 12Fox New Published September 02, 2014
(৬০)brain death
(৬১)কোমায় যাওয়া আসলে কী?bangladesh24online.com মার্চ ১১, ২০১৬
(৬২)বিভ্রান্তি কাটাতে জানুন বিস্তারিত ব্রেইন ডেথ কী? ব্রেইন ডেথের পরও কি বেঁচে থাকে মানুষ?By Pinaki Bhattacharyya Published: August 8, 2016
(৬৩)The diagnosis of brain deathAjay Kumar Goila and Mridula Pawar Indian J Crit Care Med. 2009 Jan-Mar; 13(1): 7–11. doi: 10.4103/0972-5229.53108
(৬৪)Grandmother 'comes back from the dead just minutes before post-mortem' after spending THREE DAYS in the morgueBy Anna Edwards Published: 16:19 BST, 29 December 2012 | Updated: 16:45 BST, 29 December 2012
(৬৫)Delhi hospital declares twins dead, family finds one alive on way to last rites Hindustan Times, Updated: Dec 02, 2017

(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুন, ২০১৮ রাত ১:০৪
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×