ঘটনা_১ : পরিবেশ এবং জীবন যাত্রার মানের দিক থেকে বসবাসের অযোগ্যতার দিক দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শহরের একটি তালিকা তৈরি করেছে প্রভাবশালী বৃটিশ সাময়িকী ‘দ্যা ইকনোমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট‘ (ইআইইউ )।এই মন্দ তালিকায় বিশ্বে বসবাসের সবচেয়ে অযোগ্য শহর হয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। গত বছরও তালিকায় ঢাকার অবস্থান ছিল দ্বিতীয়।
অর্থাৎ পরিবেশের দিক থেকে পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ শহর হচ্ছে ঢাকা। বাংলাদেশ হচ্ছে পৃথিবীর খারাপ দেশগুলোর অন্যতম (পরিবেশের দিক থেকে)। তাই এই দেশে কোন বিদেশী পর্যটক আসতে চায় না। পরিবেশের কারনে যে দেশে কোন পর্যটক আসতে চায়না, সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী পান পরিবেশের ওপর পুরস্কার।কি হাস্যকর ! যে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার অনেক মাঠ খেয়েছেন, ঘাট খেয়েছেন,দেশের অনেক খাল খেয়েছেন, নাল খেয়েছেন, খাস জমি খেয়ে মনের সুখ মিটাইয়া লইছেন; যে প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের শ্লোগান দিয়ে ঢাকার জলাবদ্ধতা আর দূষণ উত্তরোত্তর বাড়াচ্ছেন; যে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের ফুসফুস খ্যাত বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনকে ধ্বংস করার প্রায় সকল ব্যবস্থা করে ফেলেছেন। যে প্রধানমন্ত্রী পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি জেনেও এবং ইউনেসকো থেকে শুরু করে বড় বড় আন্তর্জাতিক মাধ্যমের বিরোধিতা সত্ত্বেও রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের বিধ্বংসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ;সেই প্রধানমন্ত্রীকে এই পুরস্কারটা দিয়ে জাতিসংঘ সম্মানিত করলো নাকি অসম্মানিত করলো দেশের মানুষ সেটা বুঝতে না বুঝতেই বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ২২৭ জনের বহর নিয়ে হাসিনা গেলেন জাতিসংঘ সম্মেলনে পুরস্কার নিতে। দেশের পরিবেশবাদীরা যতই বলুক, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল না করে এই পুরস্কার গ্রহণ করা তার উচিত নয় ,তাতে কি-বিদেশে বেড়ানোর ক্ষেত্রে ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ হাসিনার নাচুনি থামেনি!
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানের অংশগ্রহণে কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকলেও এ নিয়ে মোট ১০ বার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যোগ দিয়ে বিশ্বরেকর্ড তিনি করে ফলেছেন ! সর্বাধিক ২২৭ জন সফরসঙ্গী নিয়ে জাতিসংঘ গিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসেও সৃষ্টি করেছেন আরেক নতুন রেকর্ড। এ ছাড়া ২২৭ সদস্যের সাধারণ পরিষদের কোনো দেশেরই রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানের প্রতি বছর সাধারণ পরিষদে যোগদানেরও কোনো নজির নেই। এ ক্ষেত্রেও যোগ হবে আরেকটি রেকর্ড। ভাগ্যিস নিউইয়র্কে বিমান নামতে দেয় না, তাহলে বাপের রেকর্ডটাও বোধহয় ভাঙতো হাসিনা। এখন বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তার জন্য আর কতগুলো সংবর্ধনার আয়োজন করা হবে আর এজন্য কি পরিমাণ চাঁদাবাজি হবে তাই ভাবছি।
ঘটনা_২ : জঙ্গি ইস্যুতে অস্ট্রেলিয়ার পর এবার "ব্রিটিশ নাগরিকদের বাংলাদেশে চলাচলের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাজ্য "।
অর্থাৎ বাংলাদেশকে বিশ্বে জঙ্গি দেশ হিসাবে প্রমানে সফল হয়েছেন শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়। বিশ্বাস করুন আর নাই করুন বাংলাদেশকে সারা বিশ্বের কাছে জঙ্গি হিসেবে উদ্ভাসিত করার সবচেয়ে বেশি ক্রেডিট হচেছ হাসিনা ও তার পুত্র জয়ের।অবৈধ প্রধানমন্ত্রী পুরো দুনিয়া ঘুরে বলে বেড়ান বাংলাদেশ জঙ্গিতে ভরে গেছে। তার ছেলেও এ বিষয়ে নিয়মিত প্রবন্ধ নিবন্ধ লিখে থাকেন।দেশে জঙ্গি থাক বা না থাক কিন্তু তাদের মুখে যখন-তখন ,যেকোন অনুষ্ঠানে দেশ জঙ্গিতে ভরে গেছে, জঙ্গি হামলা হতে পারে বলতে শুনা যায়।আপনাদের নিশচয় মনে আছে,অনেক বছর আগে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন যখন মাত্র কয়েক ঘন্টার জন্য বাংলাদেশ এসেছিলেন, তখন বাংলাদেশের জঙ্গিদেরকে নিয়ে ভয়াবহ বই ছাপিয়ে তা ক্লিনটনের হাতে তুলে দিয়েছিলেন হাসিনা।গত জাতিসংঘ অধিবেশনেও পৃথিবীর সব দেশের প্রতিনিধিদের কাছে এই সংক্রান্ত নতুন আরেকটি বই বিতরণ করেছেন।এইতো কিছুদিন আগেও ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, বাংলাদেশী ব্রিটিশ নাগরিকরা ইংল্যান্ড থেকে বাংলাদেশের জঙ্গিদের সহায়তা করছে। মানে হলো বাংলাদেশে জঙ্গি আছে! আছেই আছে! আন্তর্জাতিক প্রভাবশালী একটি গণমাধ্যমে যে দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজে কবুল করেন তার দেশে জঙ্গি আছে সেখানে বিদেশীদের আর বলার কি আছে? মা-ছেলের এ প্রচার কাজ আজ সার্থক হয়েছে। তাদের মাধ্যমে বিশ্ববাসী জানতে পেরেছে বাংলাদেশ একটি জঙ্গি দেশ!
হাসিনাকে অপসারনে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের উদ্যোগে কাজ চলছে যখন,ঠিক তখনই বাংলাদেশের সবচেয়ে সুরক্ষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত গুলশানের কূটনৈতিক পাড়ায় রাস্তার লাইট বন্ধ করে ইতালির নাগরিক ত্রাণকর্মী তাবেলা সিজারকে হত্যা করার পরে লাইট জ্বলানো হলো, এরপরে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আইএসকে দোষ দেওয়া হলো- ইইউকে বলা হলো আইএস ঢাকায় ঢুকে গেছে। কাজেই হাসিনাকে অপসারন করা ঠিক হবে না, বরং জঙ্গী নির্মুলে তার শক্তি বাড়ানোর জন্য সাহায্য দরকার। তা না হলে ইতালির ওই নাগরিক'কে হত্যা করা হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ঘোষণা আসার এক দিন পর। অস্ট্রেলিয়ার ওই ঘোষণা আসার পরও বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী কেন গুলশান, বারিধারাসহ যেই এলাকা গুলোতে বিদেশিরা বেশি পরিমানে থাকে, সেখানে নিরাপত্তা বাড়ালো না? সুতরাং পরিষ্কার বিষয় কারা এসব করে দেশ কে বিদেশীদের কাছে জঙ্গি প্রমাণ করছে,কারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করছে!
জঙ্গি - জঙ্গি খেলায় আওয়ামীলীগ নিজেদের পক্ষে সহানুভূতি আদায়ের হীন চেস্টায় আজ পুরো বাংলাদেশ প্রশ্নবিদ্ধ । মা - ছেলে জঙ্গিবাদের ধুঁয়া তুলবে আর পারিপার্শ্বিক অন্যরা তা অস্বীকার করবে এই পুরানো খেলায় বাংলাদেশের আগামীর আকাশে কালো মেঘ তা কি সচেতন জনগণ উপলব্ধি করছেন ? এই জঙ্গি -জঙ্গি খেলার পর আমাদের দেশে যে একদম জঙ্গি নেই সেই দাবি করাটা বোধহয় এখন আর ঠিক হবে না।অবৈধ সরকারের লোকজনই জঙ্গি।আর এই সন্ত্রাসী জঙ্গিরা ভয়াবহ শক্তিশালী। জঙ্গীনেতা শায়খ আবদুর রহমান ছিলো আওয়ামী লীগ মন্ত্রী মীর্জা আজমের দুলাভাই। জঙ্গি হত্যাকারী চাপাতি সাদ আওয়ামী প্রতিমন্ত্রী চুন্নুর ভাতিজা। অবৈধ অস্ত্র সহ প্রায় প্রতিদিন ধরা পড়ছে ছাত্রলীগ, যুবলীগের কর্মীরা। দেশ জুড়ে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের কাছে পাওয়া যাচ্ছে দেশী ও বিদেশী অস্ত্র ।যখন- তখন যে কোন জায়গায় নিজেদের সুবিধাজনক সময়ে যে কোন খানে বোমা ফুটে যেতে পারে।
অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল বাংলাদেশ আসছে না। অস্ট্রেলিয়ান সরকার বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে শেষ মুহূর্তে প্রশ্ন তোলায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ড। সরকারের প্রতিনিয়ত জঙ্গীবাদ নাটক মঞ্চস্থ প্রথম সাফল্যটা ক্রিকেটের উপর দিয়ে গেলো, দ্বিতীয় সাফল্য হয়তো আমাদের প্রবাসীদের উপর দিয়ে যাবে, বিমানবন্দর গুলোতে বাংলাদেশী শুনলেই অহেতুক হয়রানি শুরু করবে, আর দাড়ি টুপি থাকলেতো কথাই নাই সিধা জঙ্গি টাইটেল লাগিয়ে পাকড়াও করে ধরে নিয়ে যাবে। জয় বাংলা।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৫