মানুষের জীবনে বৈচিত্রের পরিমান খুব কম। এমন যদি হতো, প্রতিটি নতুন দিন নতুনত্বে ভরপুর থাকতো। আজকের সকালের সাথে আগের দিনের সকালের কোনো মিল নেই। তবে দিনের শুরুটা প্রতিদিন বেশ রোমাঞ্চকর হতো। আজকের দিনের শুরুতেই একটু ভিন্নতার গন্ধ পাচ্ছি। এই মোবাইলের যুগে একটা চিঠি পেলে একটু রোমাঞ্চকর অনুভূতি আসলে নিশ্চয়ই দোষ দেয়া যায় না। দরজার নীচ থেকে চিঠিটা তুলে নিলাম। খামের উপরের দিকে গোটা গোটা অক্ষরে খুব সুন্দর করে লিখা...প্রাপক......মৃদুল। আমার আগ্রহ প্রেরকের নামে। খামটা উল্টাতেই নাম দেখে থমকে গেলাম। ঠিকানাটা কিছুতেই বুঝতে পারছিনা। তবে নামটা পরিচিত। সেতু আপু। নিমিষেই একবার ভেবেনিলাম। চিঠির বক্তব্য কি হতে পারে? সেতু আপুর সাথে আজকাল খুব কমই যোগাযোগ হয়। তাই অনুমান করা একটু কঠিন। বিষয়বস্ত অবশ্য কিছুটা অনুমান করতে পারছি। তার সেই সমস্যাই হবে হয়তো। চিঠি পরার আগে নাস্তা করা দরকার মনে হচ্ছে। খুব ক্ষুধা লেগেছে। এইরকম ক্ষেত্রে চিঠি না পরে খেতে যাওয়া খুব কঠিন কাজ। সবার পক্ষে সম্ভব নয়। নিজেকে জয় করার অভ্যেস গড়ে তুলতে হবে। তাই অত্যন্ত অবহেলায় চিঠিটা ছুড়ে ফেলে দিলাম টেবিলে। নিজেকেই বললাম, বিশ মিনিট পরে পরলেও তেমন কোনো তফাৎ হবে না।
সেতু আপু বরাবরই আর্টিস্টিক। খুবই সাজানো গোছানো। সব কিছুতেই তার একটা নিজস্ব ব্যাপার থাকবেই। আমি নিশ্চিত খাম খুলে দেখবো ভেতরে গোলাপের পাপঁড়ি ছড়ানো। একটা খুবই সুন্দর সুবাস ছড়ানো থাকবে পুরো খাম জুড়ে। চিঠিটা কোনো সাধারন কলম দিয়ে লিখা হবে না। অনেক দামি এবং একাধিক কলমের ব্যবহার করা হলেও আমি অবাক হব না। চিঠির শুরু এবং শেষের সম্মোধনে বৈচিত্র্য থাকবেই। আর খুবই ছোট ছোট কিছু ডিজাইন করা থাকবে। এসবই হলো সেতু আপুর বৈশিষ্ট্য। চিঠিটা খুলতে খুলতে মনে হলো, অনেকদিন সেতু আপুর সাথে দেখা হয়না। আর তাই কথাও হয়না।
চিঠি খুলে একটু হতাশ হতে হলো। যা ভেবে রেখেছিলাম তার কিছুই হয়নি। খুবই সাদামাটা একটা চিঠি। যার শুরুটা আরো সাদামাটা, প্রিয় মৃদুল। সেতু আপু আমি হতাশ।
প্রিয় মৃদুল,
কেমন আছিসরে? খুব অবাক হলি নাকি? এই যুগে হাতে লিখা চিঠি পেয়ে। আমার জানি মনে হয় তোর অবাক হবার ক্ষমতা ফুরিয়ে গেছে। তুই সামাজিকতার সেই কঠিন স্তরে পৌছেঁ গেছিস যেখানে মানুষের কাছে সব কিছুই রুঢ় বাস্তবতা। চোখের সামনে যাই ঘটুক না কেন, সে ধরে নেয় যেহেতু এটা হয়েছে, অতএব এটা হতেই পারে। এতে অবাক হবার মতন সে কোনো কিছু খুজেঁ পায় না। হয়তো আমার ধারনা ভুল হতে পারে। যদি ভুল হয় তবে এই চিঠি লিখার উদ্দেশ্য সফল হবে। সুতরাং বুঝতেই পারছিস, তোকে চমকে দেব বলেই এই চিঠি লিখা।
সেদিন হঠাৎ তোর লিখা একটা চিঠি খুজেঁ পেলাম। তোর চিঠি লিখার খুব শখ ছিল। প্রায় আমাকে চিঠি লিখতি। আগা মাথা ছাড়া সব চিঠি। মাঝে মাঝে চিঠি ভর্তি থাকতো উদ্ভট সব কবিতা কিংবা ছড়ায়। মাঝে মাঝে চিঠির কোনো বিষয় বস্তু আমি বুঝতাম না। তখন তোকে ডেকে এনে চিঠির মর্মাথ্য বুঝে নিতাম। অনেকটা নাসিরুদ্দিন হোজ্জার গল্পের মতন। পার্থক্য একটাই। তার সমস্যা ছিল পায়ে আর তোর মাথায় হা হা হা। তোর এই চিঠিটা আমি যে কতবার পড়েছি তার হিসেব নেই। অসংখ্য অসংখ্য বার পরেছি। যতবার পরেছি মনে হয়েছে তুই একটা ভয়ংকর কষ্ট চাপা দিয়ে রেখেছিস। আমার যখন খুব মন খারাপ হতো আমি তখনই তোর চিঠিটা পড়তাম। এই চিঠির মাঝে একধরনের শীতলতা আছে। গাঢ় একটা স্পর্শ আছে। যা প্রচন্ড আবেগ দিয়ে জড়িয়ে ধরে রাখে। যখন খুব কষ্টে থাকি, তখন এই অনুভূতিটাকে মনে হয় স্বর্গীয় একটা আশ্রয়। তোর এই চিঠির ঋণ শোধ করা আমার পক্ষে কখনো সম্ভব নয়। এটা নিয়ে তোর সামনে দাঁড়িয়ে কখনো কিছু বলা বা করা সম্ভব হবে না। তাই শুকনো ধন্যবাদ দিচ্ছি।
তোর একটা কালো রঙের ডায়রী ছিল। তোর কোনো এক জন্মদিনে আমি তোকে উপহার দিয়েছিলাম। সাথে একটা সুন্দর কলম। তুই এত পাগল ছিলি যে ঠিক করলি এই ডায়রীতে কখনো কোনো কিছু লিখবিনা। কারন তুই কখনো উপহারের জিনিষ ব্যবহার করিস না। পরে আমার চাপে পড়ে তুই লিখতে শুরু করলি। তোর লিখা পড়তে আমার ভালো লাগতো। তাই আমি চাইতাম তুই আরো লিখ। কিন্ত তোকে দিয়ে চিঠি ছাড়া আর কিছু লিখাতে পারিনি। বেশ কিছুদিন পর হঠাৎ তোর সেই কালো ডায়রীটা আমার হাতে আসে। কিভাবে সেটা মনে পরছে না। খুলে দেখি খুব ছোট ছোট কিছু কথা লিখা। লিখা গুলো পরার পর একটু চমকে গেলাম। কিছু কিছু কথা পরার পর ধাক্কা না খেয়ে উপায় ছিল না। তারপর একদিন শুনলাম তুই তোর ডায়রীটা হারিয়ে ফেলেছিস। তাই আজ তোর জন্য একটা চমক, আগেই বলে রাখছি ক্ষমা করে দিস। তোকে না বলে তোর ডায়রী পড়েছি।
১. নিজের কাছ থেকে ছাড়া আর কারো কাছ থেকে কিছু আশা করোনা। আশা করে তা পাওয়ার আনন্দ যদি এক হয়, আশা করে তা না পাওয়ার কষ্ট পাচঁ।
২. কোনো মানুষের সাথে সম্পর্ক ততটা গভীর না হওয়াই ভাল যাতে করে তার স্বার্থপর চরিত্রটা বের হয়ে পড়ে। কারন সব মানুষই স্বার্থপর। আর অন্যের স্বার্থপরতায় কষ্ট পেও না, দুদিন পরে তুমি আবিষ্কার করবে তুমিও একটা স্বার্থপর।
৩. তোমাকে যদি কেউ ভুল বুঝে তবে তার ভুল ভাঙ্গাতে যেন সর্বনিন্ম সময় ব্যয় হয়। তুমি যদি কাউকে ভুল বোঝ তবে অপেক্ষা কর কিংবা বাধ্য কর, সে যেন এসে তোমার ভুল ভাঙায়। কোনো সম্পর্কে যদি গন্তব্যটা স্থির হয়ে যায় তবে সম্পর্কে স্থবিরতা নেমে আসে। তাই সম্পর্কের মাঝে একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন বোধহয় মন্দ নয়।
৪. কাউকে যদি ভুলে থাকতে চাও তবে কখনই তাকে ভুলে থাকার চেষ্টা করোনা। এতে সবসময় শুধু তার কথাই মনে পড়বে। দিন যেতে দাও। সময়ের প্রলেপে বোধহয় কখনো মরিচা ধরে না।
৫. মানুষের সবচেয়ে বড় ক্ষমতা কিংবা অক্ষমতা এক জায়গায় কেন্দ্রীভূত। তা হলো নিজের উপর নিয়ন্ত্রন।
৬. কাউকে ভালোবাসাটা অপরাধ নয়। কিন্ত ভালোবেসে কেউ যখন নিজেকে কষ্ট দেয় সে অপরাধী। তুমি কাউকে ভালোবাস তার মানে এই নয় যে সেও তোমাকে ভালোবাসবে। ভালোবাসা পাওনি বলে তোমার ভালোবাসাতো আর মিথ্যে হয়ে যায়নি। করুনার পাত্র হয়ো না। বরং তার জন্য দুঃখ প্রকাশ কর যে তোমার ভালোবাসা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করল।
কি ভয়ংকর সব কথা কি অবলীলায় তুই লিখে গেছিস। যেদিন আমি তোর এই লিখা গুলো পরলাম তার পর থেকে আমি তোকে যথেষ্ট সমীহ করে চলি। তোর সাথে কথা বলতে আমার কেমন যেন একটা ভয় ভয় লাগতো। তুই যে এত বড় হয়ে গেছিস বুঝতে পারিনি। হঠৎ খেয়াল করলাম, আসলেই তুই একটু একটু করে অনেক বদলে গেছিস। সেই দুরন্ত চঞ্চল মৃদুল আর নেই। সত্যি বলতে কি আজকাল তোকে দেখলেই আমার মনে হয় একটা গবেট। তোর চেহারায় বেকুব বেকুব ভাবটা অনেক বেশি ফুটে উঠেছে। সারাক্ষন কপাল কুচঁকে থাকিস, ভাব নিয়ে কথা শুনিস। চোখের সামনে দিয়ে মানুষের এত পরিবর্তন হয়, আর এতটুকুও টের পাওয়া যায়না। কি অদ্ভুত তাই না?
ডায়রীর শেষ পাতায় জন্মদিনের শুভেচ্ছা দিয়ে লিখেছিলাম সব কিছু নতুন করে শুরু কর, শুধু আমাদের সম্পর্কটাকে বাদ দিয়ে। সম্পর্কের গতির লাগামটা যে আসলে কোথায় জানা নেই। এটাকে ধরে রাখা যায় না। সময়ের সাথে সাথে সম্পর্ক গভীর হবার কথা। অথচ সময়ের সাথে সাথে উলটো অনুভুতিতে মরচে পরে যায়। মানুষের মন যে কতটা বর্তমানবাদী এটা কাউকে বলে বোঝানো সম্ভব নয়। আমাদের জীবনে শুধু মাত্র বর্তমানের অস্তিত্ব থাকে। আর অতীত কে অস্বীকার করা যায়না কিংবা ছুড়ে ডাস্টবিনে ফেলে দেয়া যায়না বলেই এর কিছুটা অংশ থেকেই যায়। এক সময় তুই প্রতিদিন অন্তত একবার আমার সাথে দেখা করতে আসতি। কোনো একদিন না এলেও আমার কেমন জানি মনে হত সারা দিনে কোনো একটা কাজ করা হয়নি। অথচ আজ কতদিন পর তোর সাথে আমার কথা হচ্ছে। এই ব্যাপারটা আমার মধ্যে তেমন কোনো প্রভাবই ফেলছে না।
তুই আমাকে কতটা বুঝতে পারিস জানি না। যদি ঠিক মতন বুঝতে পারিস তবে নিশ্চয়ই এতক্ষনে বুঝে গেছিস যে আমি শুধুমাত্র এসব কথা বলার জন্য তোকে চিঠি লিখিনি। যে কথা বলতে চিঠিটা লিখেছি কেন জানি সেই কথাটা মুখ ফুটে বলতে পারছি না। কথাটা বলার জন্য নিজের সম্পর্কে যে বাক্য কিংবা শব্দগুলো ব্যবহার করতে হবে, খুব সোজা নয় কাজটি। তুই হয়তো খেয়াল করিসনি, প্রেরকের ঠিকানাটা। আমি এখন অনেক দূরে। তোদের ভাষায় ঘর পলাতক মেয়ে। কখনো ভাবিনি এমন কিছু হবে। তাই হবার পর একটু অবাক লাগার কথা। হয়তো সময়টা খুবই অদ্ভুত আর ভয়ংকর ছিল। আমি তোকে বলে বোঝাতে পারবো না মৃদুল। সারাদিন এক জায়গায় চুপ চাপ বসে ছিলাম। মাথা কাজ করছিল না। আমি কি চাই তাও বুঝতে পারছিলাম না। রফিকের সাথে আমার তেমন ভয়ংকর কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্ত আমি কি আসলেই ওকে চাই কিনা আমি নিশ্চিত ছিলাম না। আর ধ্রুব!!! ওকে আমি পছন্দ করি। কিন্ত ভালোবাসি কিনা তাও নিশ্চিত নই। আসলে তখন ভালোবাসা ব্যাপারটা কি সেটা বোঝার মতন অবস্থা আমার ছিল না। কিন্ত এটা বুঝতে পারছিলাম অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে। আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটা এরকম একটা দোটনার মধ্যে এসে যাবে ভাবতে পারিনি। ওই দোটনা থেকে আজ পর্যন্ত যা হয়েছে তার খুব কমই আমি ভাবতে পেরেছিলাম। বিয়ের প্রস্তুতি চলছে জোরে সোরে। এটা ওটা কেনা হচ্ছে। চারিদিকে একটা উৎসব উৎসব ভাব। আর অন্যদিকে ধ্রুব ছট ফট করছে। সব কিছুর মাঝে আমি আমার নিজের জন্য কিছুই ভাবতে পারছিলাম না। সারাক্ষন চোখের সামনে আমার ফ্যামিলি, হয়তো রফিক নয়তো ধ্রুব। ঘন্টা দুয়েক রাস্তায় হেটে বেড়িয়েছি একা একা উদ্দেশ্যহীন।
নাহ্। নাটকীয় কোনো ঘটনার কারনে এই সিদ্ধান্ত বেছে নিইনি। অনেক অনেক ভেবেছি। আমি আসলেই মনে করতে পারছিলাম না রফিকের সাথে আমার সম্পর্কটা কেমন ছিল। এক সময় রফিককে আমি ভালবাসতাম, এই অনুভূতিটার কোনো স্পর্শ পাচ্ছিলাম না। আমি জানি না এটা আমার ব্যর্থতা কিনা। তবে সত্য বলছি রফিকের কোনো দোষ নেই। সব দোষ আমার। আমার সিদ্ধান্তহীনতা, আমার স্বস্তি, আমার ভালোলাগা, আমার নিঃসঙতা, আমার দিনপাত, আমার নির্ঘুম রাত, নিজের সাথে আমার যুদ্ধ... সব সমস্যা আমার। আর আমার একটা সিদ্ধান্তের সাথে জড়িয়ে আছে আরো হাজারো সমস্যা। সব কিছু ছাড়িয়ে আমি ধ্রুবর সাথেই আছি। কেন এটা জিজ্ঞেশ করিসনা। শুধু এটুকু বলতে পারি, ওই পরিস্থিতিতে সবাই নিজেদের কথাটাই ভাবছিল। তাই আমিও নিজের ইচ্ছে বিকিয়ে অন্যের কথা ভাবতে পারিনি। একটা ভয়ংকর চাপ থেকে মুক্তি পাবার আনন্দে আমি ভুলেই গেছি আমি কোথায় ছিলাম, কি ছিলাম?
শেষবার যখন তোর সাথে দেখা হয়েছিল তুই আমাকে একটা কথা বলেছিলি। তোর মনে আছে? তুই বলেছিলি “ জীবেনর গন্তব্য কি জানেন? আমরা কেউই খুব ভালো ভাবে জানিনা। আর একটা সত্য আমরা সবাই জানি। কিন্ত কখনো মনে রাখেতে পারি না। সেটা হলো সব কিছুর শেষে ভালো থাকা। সব সময় ভালো থাকবেন। ” তোর এই কথাকে সম্বল করেই জীবন শুরু করেছি। তুই কি আমাকে খুব খারাপ ভাবছিস? এখানে বসে অনুমান করতে পারছি না। বাসা ছেড়ে আসার পর কারো সাথে এখনো যোগাযোগ হয়নি। তুই হচ্ছিস প্রথম মানুষ যাকে এসব কথা আমি নিজ মুখে বলছি। হয়তো লোক মুখে তুই এতদিনে সব জেনেই গেছিস।
জানিনা আমার অতীত কখনো আমাকে তাড়িয়ে বেড়াবে কিনা? তবে সব ভুলে ভালো থাকতে চাই। যদি সময় পাস তাহলে চিঠির উত্তর দিস। আর হ্যাঁ, আমাকে ভুলে যাস না প্লিজ।
ইতি,
সেতু আপু।
সেতু আপুর জন্য কিছুটা কষ্ট হচ্ছে। উনি সব সময় বলতেন উনার জীবনের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো উনার কোনো সমস্যা নেই। এই চিঠির উত্তর আমার জানা নেই। শুধু প্রার্থনা করতে পারি। আমি সৃষ্টিকর্তার খুব কাছের মানুষ নই। হয়তো আমার প্রার্থনা করা আর না করার মাঝে কোনো তফাৎ নেই। সবসময় ভালো থাকবেন সেতু আপু।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০০৯ রাত ৯:৫৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




