এত এত ধর্ষন, এর কারন কি?
অনেকে অনেক ভাবে বিশ্লেষণ করেছে। আমার মতামত, অতিরিক্ত যৌন আবেদন।
সেক্স আমাদের দেশে এখনো একটা ট্যাবু। এটাকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারিনা আমরা।
প্রসেসটা একেবারেই স্বাভাবিক। সামাজিকভাবে হয়ে আসছে। তারপরেও সেক্স শব্দটা শোনা মাত্রই মাথার মধ্যে নিয়ে আসি নোংরা চিন্তা।
সব কিছুর পেছনে আমি নিদৃষ্ট সংখ্যক বস্তুকে দায়ী করবো।
১। সংস্কৃতিঃ আসছে ১৪ই এপ্রিল। বাঙ্গালী সংস্কৃতি শো অফ করার দিন। এই দিনটা নিয়ে আমার বিশেষ কিছু কথা রয়েছে। যেমনঃ
*এই দিনটাতে এত উপচে পড়া ভিড়। ভিড়ের অধিকাংশই থাকে তরুন যুবকরা। এবং এই দিনটাতেও কিছু কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। মজার ব্যাপার হল, এই দিনে আপনি মেয়েদের বাইরে বেড়ানো বন্ধ করে দিন, দেখুন ফলাফল কি হয়। আশ্চর্য্যজনকভাবে এটাই সত্য, এই একটা দিনেও আমরা অধিকাংশরা সংস্কৃতি শো অফ করতে যাইনা বরং নোংরা মেন্টালিটি নিয়ে যাই। আমার মনে হয়না একটা মানুষও ঘর থেকে বের হবে যদি মেয়েরা না আসে।
তার মানে কি সমস্যাটা মেয়েদের! এমন প্রশ্ন যদি আপনার মনে এসে থাকে তবে আপনিই আসল কালপিট। আপনি আসছেন বৈশাখে সংস্কৃতি প্রদর্শনে যদি মেয়েরা আসে তবে। আর আপনিই আসছেন না বৈশাখে সংস্কৃতি প্রদর্শন করতে যদি মেয়েরা না আসে। সমস্যাটা কি মেয়েদের নাকি আপনার?
২। কালচারাল ডিফিউশনঃ খুব তেতো হলেও সত্য যে আমাদের কোন সংস্কৃতি নেই বললেই চলে। আমাদের সংস্কৃতি ছিল, কিন্তু তা পাশের দেশের কালচারের প্রভাবে হারিয়ে গেছে। এটাকে বলা হয় কালচারাল ডিফিউশন। অর্থাৎ এক সংস্কৃতির উপর অন্য কোন দেশের সংস্কৃতির ওভারল্যাপ।
তো তাদের কালচার অনুযায়ী তারা শরীর প্রদর্শনে অনেক পারদর্শী। এজন্যে রেকর্ড সংখ্যক ধর্ষন তাদের দেশেই হয়। তাদের দেশে সেক্স একটা আর্ট। তো আমরা তাদেরই ফলো করছি। মাথা বিগড়ে যাচ্ছে তাদের দেখেই।
৩। পশ্চিমা সংস্কৃতিঃ আমরা হচ্ছি হুজুগে বাঙ্গালী। ভাত জুটেনা কপালে ফ্যাশনের ঠেলায় জাইঙ্গা পড়ি। দুঃখিত এভাবে বলার জন্যে। পশ্চিমাদের ফলো করা দোষের নয়। তাদের যখন ফলো করেন তবে ভাল করেই করেন। শুধু খারাপ দিকটা কেন ফলো করবেন?
আজ তারা সবদিক থেকে এগিয়ে, শিক্ষা, চিকিৎসা, অস্র সবদিক থেকে। আপনি আগে তাদের মত পরিবেশ তৈরি করুন। এরপর না হয় তাদের চেয়েও বেশি শো করুন কোন সমস্যা নেই। কারন অতটা উন্নত হলে এমনি মানুষিকতা উন্নত হবে।
পশ্চিমা মেয়েদের কাছে এসব কোন কিছুই না। তাদের শরীরে কেউ হাত না দিলে বরং তারা কষ্ট পায় (কথার কথা)। আপনার শরীরে অনিচ্ছাকৃতভাবে স্পর্শ লাগলেও আপনি চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করতে ছাড়েন না।
হ্যা, কারন তাদের কাছে এসব তেমন কিছু ভেরি করে না। এটা তাদের ওখানে খুব ইজি। কারন এটাই তাদের সংস্কৃতি। কিন্তু আপনার সংস্কৃতি কি এটা বলুন? ওখানের মানুষ আর এখানের মানুষের ধ্যান ধারণা কি এক?
যদি একই হত, তবে আমাদের বাবা-মা ও ১৭ বছর এর সময় ঘর থেকে বের করে দিত কর্মের সন্ধানে। ছেলে-মেয়ে উভয়কেই। আপনিতো এগুলো করেন আপনার বাবার টাকায়।
৪। আইটেম সং এবং সুড়সুড়ি মিডিয়াঃ ভাই, শিক্ষিত মানুষ ধর্ষন করে? কারা করে? তাদের উত্তেজনা সৃষ্টি হয় কোথা থেকে? অনেকগুলো প্রশ্ন। আইটেম সংগুলো একটা মানুষকে কতটা উত্তেজিত করে?
এই সং গুলো বানানোই হয় উত্তেজনা সৃষ্টি করর জন্যে। একটা পুরুষের মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রনের বাইরে রাখার জন্যে।
তাদের কাছে আইটেম সং এবং মেয়েদের শরীর একটা ফ্যান্টাসী মনে হয়। শুরুর চুলকানীগুলো এখান থেকেই শুরু হয়।
আরো অনেক কিছু লেখার ইচ্ছে থাকলেও শারীরিক অসুস্থতার কারনে পারছিনা। কিন্তু কথা একটাই। জীবনটা সিনেমা নয়। নায়ক নিষ্পাপ, আর গুন্ডা এই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ খারাপ লোক। এমনটা সিনেমায় হয়। বাস্তবে, প্রত্যেকটা মানুষের মধ্যেই ভাল এবং খারাপ গুন দুটোই আছে। কারো মধ্যে বেশি, কারো মধ্যে কম। এসব মিলিয়েই মানুষ।
একটা ঘটনায় দুটো পার্ট থাকে। এক হাতে তালি হয়তবা বাজে। কিন্তু এই তালি বাজানোর জন্যে একটা উস্কানী প্রয়োজন হয়। নারীর পোষাক ধর্ষনের জন্যে দায়ী থাক বা না থাক। ধর্ষক মন এত কিছু বিচার করে না। তার বিচার করার ক্ষমতা থাকলে ৯বছরের বাচ্চাকে ধর্ষন করতে পারেনা।
সমস্যাটা অন্য কোথাও। আর সেই সমস্যাটার যোগান দিচ্ছি আমরাই। নিজের সংস্কৃতিকে কবর দিয়ে। পাশের দেশের সংস্কৃতিকে বুকে লালন করে। কিছু অসভ্য (ব্যাক্তিগত মতামত) ছেলে এবং মেয়েদের পশ্চিমা সভ্যতা প্রমোট করে। আইটেম সং, যৌন উত্তেজক মিডিয়ার বিষয়বস্তু দিয়ে নিম্নশ্রেণীর মানুষদের নিম্ন মেন্টালিটিকে উস্কে দিয়ে।
সবাই মহাত্মা গান্ধী হতে পারেনা। সবার সামনে খাবার খুলে রেখে দিলে বসে থাকতে পারেনা। কারন এক একজন মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি এক এক ধরনের। সবার দৃষ্টিভঙ্গি আপনি কিভাবে পরিবর্তন করতে পারবেন?
এজন্যেই তৈরি হয় বিধান, এজন্যেই তৈরি হয় নিয়ম। যে নিয়মটা উচু, নিচু সব মেন্টালিটির মানুষরা মেনে নেয় শান্তির জন্যে। শুষ্ঠভাবে সমাজকে চালানোর জন্যে। তাই উচু মেন্টালিটির মানুষরা যখন নিয়ম ভঙ্গ করে, নিচুরাও একই কাজটা করে। দোষটা স্পেসেফিকলি কাউকেই দিতে পারবেন না, যদি আপনি নিরপেক্ষ হন তবে।
১৭কোটি আলুতে ১৭টা পচা আলু থাকবেই। তবে এই ১৭টা পচা আলুই ১৭কোটিকে নষ্ট করার জন্যে যথেষ্ট।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৪৫