somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শ্রাবন ও বৃষ্টির গল্প

২৪ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জানালার গ্রীল গলে একমুঠো রোদ
শ্রাবনের মুখের উপর পড়লো।রোদ পড়তেই
ওর ঘুম ভেঙ্গে গেল।আজ নাকি
শ্রাবনের বিয়ে।বাড়ির চারপাশে
লোকজনে গিজগিজ করছে।ঘুম
ভাঙ্গলেও শ্রাবনের বিছানা ছেড়ে
উঠতে মন চাইলো না।তাই ও শুয়ে শুয়ে
ভাবছে।কত চড়াই উৎরাই পার হয়ে
তারা আজ এক হয়ে যাবে।সেই ছোট্ট
থেকে একজন আর একজনের পাশে
থাকা,সুখ-দুঃখ,মান অভিমানের পালা
পেরিয়ে বাধা পড়বে চিরবন্ধনে,যে
বন্ধন অবিচ্ছেদ্দ্য,একই সুতোই বাধা দুটো
গিঁট।যা আগলে রাখবে দুজন দুজনাকে
আমৃত্য পর্যন্ত।
.
.
শ্রাবন তখন ক্লাস ফোর এ পড়ে।অন্য একটা
স্কুল থেকে এসে এই স্কুলে ভর্তি হয়ছে।
সম্পুর্ন নতুন একটা পরিবেশ।তাই সব কিছুর
প্রতি ভাললাগা,কৌতুহল ইত্যাদি শিশু
বুকের মধ্যে দানা বাধেঁ ঘুরে বেড়াত।
শ্রাবন পড়ালেখায় ভাল ছিল।তাই অল্প
কয়েক দিনের মধ্যেই অনেক বন্ধু হয়ে
গেলো ওর।একদিন শ্রাবন বন্ধুদের সাথে
টিফিন টাইমে ক্রিকেট খেলছিলো।
হঠাৎ ওর চোঁখ যায় দুরে কয়েকটা
মেয়ের সাথে খেলারত একটা মেয়ের
প্রতি।কিরকম হাসি হাসি মুখ,চন্ঞ্বল,
হাসলে গালে ঢোল পড়ে,সমস্ত মুখে
মায়ার ছড়াছড়ি।
শ্রাবনের ভাল লেগে যায়
মেয়েটিকে।মনের মাঝে একটা অন্যরকম
অনূভুতি কাজ করে।
.
শ্রাবনের এক বন্ধু আবার এই সব বিষয়ে
ছিলো সবার থেকে এগিয়ে। তার নাম
ইমন। ইমন নাকি তখন তিন-চারটা মেয়ের
সাথে প্রেম করতো।স্কুলের সব মেয়ের
খোজ খবর ও রাখতো।নাম,বাবার
নাম,দাদার নাম সব কিছুই ছিলো ইমনের
নখদর্পনে।
শ্রাবন,ইমনকে ডেকে বলল,
--দোস্ত ঐই মেয়েটাকে আমার খুব ভাল
লাগছে।প্লিজ ওর সাথে আমার প্রেম
করাই দে।
--কোন মেয়েটা?
শ্রাবন আঙ্গুল উচিয়ে দেখিয়ে বলল,
--ওই যে ওইখানে কয়েকটা মেয়ের
সাথে খেলছে।নীল ড্রেস,মাথার
চুলগুলো সুন্দর করে বেনী করা।
--আরে ওকে তো আমি চিনি।ক্লাস
থ্রিতে পড়ে ।নাম: বৃষ্টি,বাবার
নাম:ডা.হারুন বিশ্বাস.......
--যাই হোক।তুই আমার প্রেমটা করাই দে।
--টেনস লস না বেটা।দাড়া আমি
দেখছি।
.
.
শ্রাবনের বন্ধুরা বৃষ্টিকে শ্রাবনের
কথা বললেও ওর কখন সাহস হয় না
বৃষ্টিকে ওর মনের কথা বলার।ওর কাছে
গেলেই শ্রাবনের কথা হারিয়ে যায়।
তাই আর বলাও হয় না।বন্ধুরা শ্রাবনকে
এই নিয়ে তিরষ্কারও করে।বলে,যা
বেটা,তোর সাথে আমরা নাই।বলতে
পারে না,প্রেম করতে আসছে।
.
শ্রাবনের বন্ধুরা বললেও বৃষ্টি রেসপনজ
করত না।মেয়েরা নিজে থেকে কখন
কিছু বলবে না বা সাড়া দেবে না
যতক্ষন না কাংক্ষিত মানুষটা তাকে
ভালবাসার কথা বলে।তার জন্য
অপেক্ষার জাল বুনতে থাকে।এতে যদি
সারা জীবন কেটে যায় তবুও তারা
অপেক্ষা করতেই থাকে।
.
এভাবেই একটা বছর কেটে গেল।ক্লাস
5-এর তখন শেষের দিকে।শ্রাবন সাহস
করে বলে প্রোপোজ করে বৃষ্টিকে।
প্রথমে না না করলেও কয়েকদিন পরে
রাজি হয়ে যায়।
শুরু হয় দুটি অবুঝ মনের একসাথে পথ চলা।
যারা ভালবাসা কি তাই জানে না।
.
হাই স্কুল,কলেজ,ভার্সিটির গন্ডি পার
হয়ে যায় দুজনার একসাথে কাটানো
মুহুর্তের মাঝে।সুখের সময়গুলি পার হয়ে
যায় খুব তাড়াতাড়ি।ভালবাসার
মানুষটা কাছে থাকলে থাকলে যুগ যুগ
সময়কে মনে হয় এক মুহুর্ত।
.
তবে এর মাঝে যে দুঃখের সময়
আসেনি তা নয়।পারিপারিক চাপ
আসছিলো ওদের খুব।মাঝে মাঝে
একমাস দুমাস কেউ কাউকে দেখেই নি।
তবুও তাদের ভালবাসাটা কমে যায়
নি।ভুলে যায় নি কেউ কাউকে,ছেড়ে
দেই নি চলার পথে দুজনার হাতখানা।
পরম মমতায়,ভালবাসায় আগলে
রেখেছে দুজন দুজনাকে। তবে সেটা
ঘটেছে হাই স্কুল লাইফে।কলেজ,ভার্
সিটিতে তেমন কোন সমস্যা হয় নি
ওদের।পারিবারিক চাপ টাও আসেনি
তখন।
.
ভার্সিটি শেষ করার পর শ্রাবন একটা
মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে
চাকরি পাই।তারপর বৃষ্টির বাবার
কাছে ওর বাবা মায়ের পাঠিয়ে দেয়
বিয়ের প্রস্তাব দিতে।তারা রাজিও
হয়ে যায়।শুরু হতে যায় নতুন একটা জীবন।
.
.
--এই শ্রাবন!কত সকাল হয়ে গেল আর তুই
এখন উঠিস নাই?ফ্রেস হবি কখন,গোসল
করবি কখন আর সবাই যাবেই বা কখন?
তাড়াতাড়ি উঠ।
মায়ের ডাক শোনে শ্রাবনের ভাবনার
ছেদ পড়লো।ভাবতে ভাবতে কখন যে
ঠোটের এক কোনায় একটা সোনালী
হাসি ফুটে উঠেছে ও বুঝতেই পারে
নি।শ্রাবন বলল,
--আসছি আম্মু।তুমি যাও।
.
*********************************************
*******************************
[বিঃদ্রঃ-> গল্পটা বাস্তব।আমি শুধু একটু
কল্পনার টাচ দিছি।আর ক্লোজ
ফ্রেন্ডের লাইফ স্টোরি থেকে
নেওয়া।যদিও তাদের এখন বিয়ে হয় নি
তবুও এখনও প্রেম টিকে আছে।এরকমই বা
থাকে কয়জনের।দোয়া করি তাদের
লাইফের বাকি অংশ যেন গল্পটার মতই
হয়।দুজন দুজনার হাতে হাত রেখে একই
ছাদের নিচে কাটাতে পারে
জীবনের বাকি অংশটুকু।আপনারাও
দোয়া করবেন প্লিজ]
.
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:৪৯
১১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×