somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

That's the best deal you're gonna get.. ভাললাগা ফিল্ম No Country for Old Men (জন্ম, রিভিউ, ডা লো লিঙ্ক)

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১২ ভোর ৬:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



No Country for Old Men - একটি ফিল্মের নাম। দেখুন আর নাই দেখুন, একবার হলেও প্রায় সবাই এর নাম শুনে থাকবেন সম্ভবত। ২০০৭ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমাটির ডিরেক্টর হচ্ছেন যৌথভাবে Joel Coen আর Ethan Coen । এই কোয়েন ভ্রাতাগণ তাঁদের প্রথম সিনেমা “Blood Simple.” থেকেই একসাথে কাজ করে আসছেন। তাদেরকে একসাথে "The Two-Headed Director". হিসেবে অভিহিত করা হয়। এই দুমুখো ডিরেক্টররা এই পর্যন্ত পূর্ণদৈর্ঘ্য ছায়াছবি বানিয়েছেন মোট ১৫ টি। যার মধ্যে আমি এই পর্যন্ত ১২ টি দেখেছি। সুতরাং, পুরোপুরি না হলেও আমি একজন ছোটখাট কোয়েন বিশেষজ্ঞ :P :P

তো, এইসব প্রাককথন আনার কারণ এই যে, আমি Alejandro González Iñárritu কে নিয়ে লেখা পোস্টের মতই আরেকটা মুভি-ডিরেক্টর রিভিউ পোস্ট লিখতে বসছিলাম। কিন্তু, কিছুক্ষণ লেখার পর দেখলাম শুধুমাত্র এই একটি সিনেমা নিয়েই বিশাল পোস্ট হয়ে যাবে। এক ডজন সিনেমা একটু বেশিই হয়ে যায়। আর, প্রায় কোনরকম বিতর্ক ছাড়াই No Country for Old Men কয়েন ব্রাদারস দের করা শ্রেষ্ঠ সিনেমা। তো, আসুন কিছুক্ষণ “বুড়াদের কোন দেশ নাইক্কা” সিনেমা নিয়ে পড়ালেখা করি।



প্লট-

প্লট খুব জটিল কিছু না। ধাওয়া, পালটা ধাওয়া এর কাহিনী। টম এন্ড জেরী। টেক্সাস এর জনবিরল এক এলাকায় একটা ড্রাগ ডিলিং এ ম্যাসাকার হয়। সেখানে উপস্থিত প্রায় সবাই খুন হয়। আর, সেই ম্যসাকার একটা লটারির টিকেট জেতার মত হাতে চলে আসে Llewelyn Moss এর। হরিণ শিকার করতে গিয়ে Llewelyn Moss হাতে পেয়ে যায় ২ মিলিওন ডলার। আর, রিপুবশেই হোক কিংবা ভাগ্য গণনায় ভুলই হোক, সেই টাকার কথা সে পুলিশকে না জানিয়ে নিজে বাগিয়ে নেয়। আর, এই টাকা উদ্ধারের দায়িত্ব পরে Anton Chigurh এর ঘাড়ে। তারপর থেকেই, ধাওয়া পালটা ধাওয়া। Anton Chigurh কে আমরা “psychopathic killer” তকমা টা লাগাতে পারি। বরফের মত ঠান্ডা মাথার খুনী, ডেডলী। তার পথে সে কোন বাধা না রাখার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আরেকটা চরিত্রের উপস্থিতির ব্যাপারে একটু বলতে হয়, সে হচ্ছে Ed Tom Bell, শেরিফ। সাহসী এবং সে Anton Chigurh কে ধরার জন্য অতি উৎসাহী। তো, মোটামুটিভাবে খুব সাদামাটা কাহিনী এতটুকুই। শেরিফ ধাওয়া করছে Anton Chigurh কে, Anton Chigurh ধাওয়া করছে Llewelyn Moss কে। Llewelyn Moss টাকার বাক্স নিয়ে দৌড়াচ্ছে। এই তিনজনকে ঘিরেই আসলে পুরো সিনেমা।



কিন্তু, শুধু কাহিনী দিয়ে তো আর সিনেমা হয় না। এই সিনেমার সবচাইতে আকর্ষণীয় হচ্ছে – সংলাপ, প্রেজেন্টেশন আর অবশ্যই অবশ্যই অভিনয়। Llewelyn Mossচরিত্রে অভিনয় করেছেন Josh Brolin । এমনিতে তিনি খুব বড় মাপের অভিনেতা না হলেও এই সিনেমায় তিনি নিঃসন্দেহে তার সেরাটা দিয়েছেন। Ed Tom Bell চরিত্রটি করা Tommy Lee Jones কোন দ্বিধা ছাড়াই একজন শক্তিশালী অভিনেতা। তার কখনো ফসকায় না। আর, যার কথা না বললে পুরা পোস্টই একটা গার্বেজ সেটা হল, Anton Chigurh চরিত্রে অভিনয় করা Javier Bardem । অন্যান্য সিনেমার খুনীদের সাথে কোন ভাবেই মেলানো যায় না যাকে। অন্যান্য সিনেমায় খুব দেখা যায়, একটা গ্যাং নিয়ে এই জাতীয় খুনীরা ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু, Anton Chigurh works alone, always alone. তার আগে, পিছে কোন সহকারী কিংবা বস নাই। সে সিগারেট খায় না, মদ খায় না, নারীদের নিয়ে ফূর্তি করে না। কিন্তু, পুরো সিনেমা দেখার পর হয়তো আপনিও আমার মত বলবেন – “the deadliest killer ever appeared in a film out of all the films I have seen ”.



এইখানে একটা মজার কথা বলি, Anton Chigurh চরিত্রে অভিনয়ের জন্য যখন বার্ডেমকে কয়েন ব্রাদারস ডেকেছিলেন, তখন বার্ডেম বলেছিলেন – “Listen, I'm the wrong actor. I don't drive, I speak bad English, and I hate violence”। আর জবাবে কোয়েন হাসতে হাসতে বলেছেন “Maybe that's why we called you”, মানিক নিজে মানিককে না চিনলেও আরেক মানিক ঠিকই বুঝে ফেলেছেন, বার্ডেম কী জিনিস!!!

বিপুল পরিমাণ পুরষ্কারের কথা আর বললাম না। এই সিনেমাটা ৪টি বিভাগে অস্কার জিতে নিয়ে ২০০৮ সালে ৮০ তম অস্কার নিজের করে নিয়েছে। শুধু, এটুকু জানলেই বোঝা যায় সিনেমাটিতে কত বিয়াফুক সৌন্দর্য বিদ্যমান।



যারা কোয়েন ব্রাদারস এর সিনেমার সাথে তেমন পরিচিত না, তারা সিনেমার ফিনিশিং দেখে শকড হতেও পারেন। তবে, আমার কাছে অসাধারণ মনে হয়েছে। হয়তো, আগে থেকেই কিছুটা পরিচয় থাকার ফলে আমি প্রস্তুত ছিলাম। যাই হোক, শেষ করার আগে, সিনেমার জন্ম নিয়ে কিছু কথা বলি – এই সিনেমাটির নাম এবং কাহিনী নেয়া হয়েছে একই নামের Cormac McCarthy এর উপন্যাস থেকে। আবার, ঐ উপন্যাস এর নাম নেয়া হয়েছে বিখ্যাত আইরিশ কবি ইটসের এই কবিতা থেকে। আগহীরা কবিতাটি পড়তে পারবেন এখান থেকে।

আর, আমার পোস্টের শিরোনাম কেন এমন – তা জানতে হলে সিনেমাটা কষ্ট করে দেখতে হবে ভ্রাত। তাহলেই, বুঝে ফেলবেন। ও আরেকটা কথা, যারা স্লো সিনেমা বিদ্বেষী তারা একটু সাবধান। সিনেমাটা বেশ স্লো, তবে একবার সিনেমাটির ইন্দ্রজালে আটকা পড়ে গেলে আর সমস্যা হবে না।

প্রয়োজনীয় লিঙ্কস -

imdb link

ডা লো লিঙ্ক টরেন্ট (সিড কম, প্রিন্ট ভাল)

ডা লো লিঙ্ক টরেন্ট (সিড বেশি, ডিভিডিরিপ)

ডিরেক্ট ডাউনলোড (এইটাও ডিভিডিরিপ)

একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার দিতে ভুলে গেসিলাম। সেইটা হল JAMES HARLEMAN এর বর্ণনা করা No Country For Old Men এবং theology এর আধাঘন্টার একটা অডিও ক্লিপ , কেন No Country For Old Men একটি অতিমানবীয় পর্যায়ের অসাধারণ সিনেমা তার পক্ষে যুক্তি প্রদর্শন। আশা করি, আপনাদের ভাল লাগবে।

হ্যাপি "No Country for Old Men" টাইম।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৯
৪৮টি মন্তব্য ৪৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×