somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কারওয়ানবাজারের কলু কামার কেন কা কা করছে?

২৬ শে নভেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একবার ফাহমিদুল হকের একটা লেখায় একটি মন্তব্য করেছিলাম খুব রাখঢাক করে, যা একমাত্র ফাহমিদ ভাইয়েরই বোঝার কথা। কর্মক্ষেত্রে তার এক পর্যালোচনা প্রতিবেদন আমাকে যে কিঞ্চিৎ বিপদে ফেলে দিয়েছিল, সেকথাই বলেছিলাম হাস্যরসের ভঙ্গিতে। তিনি বুঝেছেনও ঠিকই। এটা যখনকার কথা, ফাহমিদের মনে আছে নিশ্চয়ই, তখন মাহবুব মোর্শেদ এক আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার বিজ্ঞাপন বিভাগের কর্মী। তারও পরে মুমূর্ষু আজকের কাগজ আর মৃতপ্রায় যায়যায়দিনে। কি না কী করতো, আমি তেমন জানিও না। স্বাভাবিকভাবেই বড়ো কাগজের কাজকর্ম, এটিকেট- এইসব তার মাথার ওপর দিয়েই যাওয়ার কথা।

দাঁড়কাক যখন কোকিল হয়ে ওঠে
হঠাৎ দেখা গেল, গত দু-তিন দিনে দেওয়া আমার কয়েকটি পোস্ট প্রথম আলো ব্লগের অন্যতম মডারেটর মাহবুব মোর্শেদের পশ্চাৎদেশে বেশ খানিকটা আঘাত হেনে ফেলছে। ব্যথাতুর মন নিয়ে তিনি দীর্ঘ একটি লেখা পয়দা করেছেন গতকাল। সেই লেখার প্রায় পুরোটাই লোকালটককে নিয়ে। এটা এমন একজন লিখেছেন, কারওয়ানবাজারের সিএ ভবনে কাক গোত্রের যে প্রাণীটিকে গণ্য করা হয় "পিকিউলার জীব" হিসেবে। বিচিত্র ধরনের অদ্ভূত হাস্যকর আচরণ তার- চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। খোদার কসম, মিথ্যা বলছি না। তবে এটা হাস্যকর হতে পারে, কিন্তু অন্যায় বলতে পারি না।

কখনো যা বলা হয়নি
কখনো বলা হয়নি, এখন বলছি। প্রথম আলোর যারা নীতিনির্ধারক, শুরুতে তাদের অনেকেই জানতেন, প্রথম আলো ব্লগের দায়িত্ব নিচ্ছেন সচলায়তনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এসএম মাহবুব মুর্শেদ, যিনি প্রযুক্তিবিদ এবং উচ্চশিক্ষিত। পরে যায়যায়দিনফেরত মাহবুব মোর্শেদকে দেখে বেশিরভাগই চরম হতাশ হন। টেকনিক্যাল জ্ঞানশূন্য একজন লোক যখন একটা ব্লগের দায়িত্ব পেয়ে যায়, তখন বুঝতে কারোরই অসুবিধা হয়নি যে, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ঘাপলা ছিল, প্রতারণাও ছিল। তবে মাহবুব মোর্শেদ তার পুরো চাকরিজীবনে একমাত্র এই প্রথম আলোতে এসে নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন, বাসা ভাড়াটা তার বাকি পড়ছে না- সত্যি বলতে কী এটা তো আমার কাছে আনন্দের খবরই ছিল। কিন্তু প্রথম আলোর (আসলে ঠিক প্রথম আলোরও না, ব্লগ এবং জবস হল প্রায় আলাদা কনসার্ন) সর্বনিম্ন পদে যোগ দিয়ে মাহবুব মোর্শেদ যদি এতো উচ্চকণ্ঠে কথা বলেন, তাহলে কি হয়! সবচেয়ে বড়ো কথা, লোকালটক প্রথম আলোর কর্মী কিনা- তা মাহবুব মোর্শেদ বিচার করছেন কোন্ যোগ্যতায়, আমার খুব জানার ইচ্ছা। এই প্রথমবারের মতো বিনয়ের সঙ্গেই বলছি, আমার যে অবস্থান, সেই অবস্থানে যাওয়া মাহবুব মোর্শেদের পক্ষে বোধহয় সম্ভব হবে না এই ইহজনমে।

ক্যান্টিন বয়ও তাহলে সাংবাদিক!
মাহবুব মোর্শেদ বেসিক্যালি সাংবাদিক নন। দৃষ্টিভঙ্গি খুব উদার করলেও তাকে সাধারণ বিভাগের কর্মচারী বলা যেতে পারে। তার যে কাজ, সর্বশেষ সপ্তম ওয়েজ বোর্ডের বিবরণীতেও এই কাজ সংবাদপত্রের কাজ বলে গণ্য হচ্ছে না। মাহবুব মোর্শেদ যদি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেয়, তাহলে সেটা হবে চরম অসততা। অনেকেই বোধহয় জানেন না, মূল প্রথম আলোর সঙ্গে সত্যি বলতে কী, প্রথম আলো ব্লগের কোনো যোগ নেই। প্রথম আলো জবসের মতো ব্লগটাও আলাদা উদ্যোগ। এহেন মাহবুব মোর্শেদ যদি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেয়, তাহলে তো ক্যান্টিন বয়ও সাংবাদিক!

কামারও পরিচয় জানতে চায়!
"উনি জাস্ট প্রথম আলোর পরিচয় ব্যবহার করে সহব্লগারদের সমীহ আদায় করতে চান"- বলেছেন মাহবুব মোর্শেদ। ব্লগের মতো উন্মুক্ত ফোরামে ব্যক্তিগত পরিচিতি ব্যবহার করে সমীহ আদায়ের চেষ্টাটা যে একেবারেই কামারসুলভ মতামত- এটা বুঝতে আশা করি কারোরই অসুবিধা হবে না। এখানে কে প্রথম আলোর কর্মী, কে ইউনোকলের, কে বেক্সিমকো, কে প্রকৌশলী, কে ছাত্র- এসব প্রশ্ন একেবারেই অবান্তর। ব্লগে এইসব পরিচয়ের কানাকড়ি মূল্য নেই। আমি নিজেও মূল্য দেই না। সেই কারণেই আমি বোধহয় এই উন্মুক্ত ফোরামে সচেতনভাবে কোথাও কখনো বলিনি- আমি কে, কী করি কিংবা কোথায় থাকি? আমি মনে করি, সেটা বলার দরকারও নেই। কারণ ব্লগ আমার কাছে অবসর কাটানোর শ্রেফ একটা মাধ্যম। আর ছদ্মনামেই ব্লগিং করতে পছন্দ করি আমি। এটা অবৈধও নয়।
তারপরও সহ-ব্লগারদের কাছে পরিচয় ব্যবহার করে সমীহ আদায় করেছি- এমন উদাহরণ কেউ দিন তো দুয়েকটা। অপেক্ষায় রইলাম।

প্রথম আলো ব্লগ নিয়ে আমার ক্ষোভ কেন?
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ও স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ে লেখা বিভিন্নজনের অনেক পোস্টই প্রথম আলো ব্লগ কর্তৃপক্ষ মুছে দিয়েছে। এমনকি অনেককে ব্যানও করেছে। এইসব ঘটনায় আমি স্তম্ভিত, ক্ষুব্ধ, ব্যথিত হয়েছি। এটা অনেকেই বোধহয় বুঝতে পেরেছেন, ত্রিভূজ প্রথম আলো ব্লগে কার্যত মডারেটরের দায়িত্ব পালন করছে। সামহোয়্যারে দুজনের অবস্থান এবং প্রথম আলো ব্লগের সাম্প্রতিক করুণ অবস্থা বিশ্লেষণ করে পুনরায় নিশ্চিত করা যায় যে, ত্রিভূজ এবং মাহবুব মোর্শেদ সমমনা, সমমতের অনুসারী। এটা তো স্বাভাবিকভাবে আমার কাছে খারাপ লাগার কথা। আমি মেইলে সেকথা তাকে তৎক্ষণাৎ জানিয়েছি। আর আমার সবচেয়ে বড়ো ক্ষোভ যে কারণে, সেটা হল মাহবুব মোর্শেদের বিতর্কিত ভূমিকা এবং তার অসংলগ্ন আচরণের কারণে ওয়েব ইউজারদের কাছে প্রথম আলোর সম্মানহানি ঘটছে- এটা দিনের মতো পরিস্কার। হাসিবের একটা মন্তব্য আমার বেশ মনে ধরেছিল- সারাজীবনে মাহবুব মোর্শেদ কখনো মাথা তুলে কথা বলার সুযোগ পায় নাই। প্রথম আলো ব্লগের মডারেটর হয়ে সেই ক্ষমতাটা সে এখন উপভোগ করছে শুধু।

আমার কথা স্পষ্ট
সামহোয়্যারে কে কিভাবে ধর্ষিত হয়েছিল, কাকে কিভাবে বলাৎকার করা হয়েছিল, তা নিয়ে আমার ভাবনা নেই। হয়তো ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল সামহোয়্যার কিংবা অন্য কোথাও। কিন্তু সেই দুঃসহ স্মৃতি জাগিয়ে রেখে ধর্ষিতা নারীর মতো মাহবুব মোর্শেদের আচরণটা বড্ড বাজে লাগছে। তার সমস্যাটা মানসিক- এটা আমার আগেই জানা ছিল। জেনেছি পরেও। তার চেয়েও বড়ো সমস্যা হল, এই মানসিক রোগীর সামনের দিনগুলো খুব কঠিন হবে!

প্রয়োজনীয় ঠিকানা
ভালো কথা, মাহবুব মোর্শেদ নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবছেন কখন থেকে? কোমরে ব্যথা হয়? নিচে একটি ঠিকানা দিচ্ছি- কাজে লাগতে পারে।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
শের-ই-বাংলা নগর, ঢাকা।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০১০ ভোর ৪:০৪
৭১টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×