সব সুন্দরই সুন্দর নয় , মরনঘাতী ও হতে পারে ।
ভয়ঙ্কর সুন্দরতার আড়ালেও লুকানো থাকতে পারে মৃত্যুর পরোয়ানা ।
মেয়েটি যতো বেশী সুন্দরী তার খপ্পরে একবার পড়লে ছ্যাকা খাওয়ার সম্ভাবনাও ততো বেশী আর সেই ছ্যাকার ব্যথাটাও যে কতো বেশী ভয়ঙ্কর তা নিশ্চয়ই ভুলে জাননি !!!!
এই “সুন্দর” এর মুখোশের আড়ালে “ অসুন্দর” এর কতো যে আয়োজন, ভয়ঙ্কর সুন্দরতার আড়ালে লুকানো মৃত্যুর যে কতো হরেক পরোয়ানা ; তারই কেচ্ছা এখানে ।
রূপ দেইখা তার ভুইলোনা
ওরে পোড়ার মন,
কইরোনা রফা গোলেমালে
রূপের মোহে কোনও কালে;
অন্তরের বিষে যাইবে যে জীবন ............
-------------------------------------------------------------চোখ ধাঁধাঁনো ভাইরাস ।
অপরূপ আর ভয়ঙ্কর সব সুন্দরতার মাঝে অমঙ্গলের যে অশনি-সংকেত, কালবৈশাখীর আকাশ চিরে বিজলীর মতো আমাদের জীবনাকাশেও যে ঝিলিক দিয়ে যায় তারই অনুগল্প লিখতে বসেছি আমি। জীবন-মৃত্যুর মাঝখানে সুন্দর-অসুন্দর এর যতো টানাপোড়েন, তার দূতিয়ালীতে সদা ব্যস্ত সব সুন্দর-সুন্দরীদের কাহিনী --------------------
অনুজীব তথা ইনফেকটিভ এজেন্টগুলো মানুষের শরীরে সংক্রমন ঘটায়, এটা আমরা সবাই জানি। আপনার বুকের নিউমোনিয়া থেকে শুরু করে ত্বকে ফোঁড়া হওয়া সবই এই অনুজীব বা ইনফেকটিভ এজেন্টগুলোর কাজ । এইসব ছোটখাটো রোগ আপনার জীবনকে দূর্বিসহ করে তোলে নিঃসন্দেহে । তেমনি আবার ডায়রিয়া, কলেরায় আপনার লাইফের “ওয়ারেন্টি” কার্ডের মেয়াদ এক ঝটকায় উত্তীর্ণ হয়েও যেতে পারে ।
এইসব রোগগুলোকে আমরা জানি, চিনি । শুধু জানিনে এইসব হলিউড –বলিউড সুন্দরীদের কার কার কারনে আমাদের শরীরে ঘূণ পোকাদের এই বাসা ।
তোমার চোখে দেখেছিলাম
আমার সর্বনাশ ......
--------------------------------------------------রক্তের ভেতরে প্রবাহমান সর্বনাশ....
------------------------ক্রায়ো ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপের চোখে সর্বনাশীর রূপের ছটা....
-----------------------কাছ থেকে দেখা ক্রায়ো-ইলেক্ট্রোমাইক্রোগ্রাফে মরনঘাতী অপ্সরা....
উপরের ঐ অনিন্দ্য সুন্দর ছবিগুলো হলো এইচ-আই-ভি ভাইরাস এর । নামটি শোনেননি এমন কেউ হয়তো নেই এখানে । এই ভাইরাসের কারনে যে রোগটি হয় তার নামটিও কি বলে দিতে হবে ? এটা হলো “ বাঁচতে হলে জানতে হবে”র এইডস । সর্বনাশের আর এক নাম । আপনি এটাও জানেন যে, এইডস রোগটি হওয়া মানে ওপারের টিকিট প্রায় হাতে পেয়ে যাওয়া ।
ডাকসাইটে সুন্দরীদের পাল্লায় পড়লে এমনটাই হয় । তিলে তিলে মরন ................
-----------------------------------------------জীবন সায়াহ্ণে নিভু নিভু প্রদীপখানি ........
আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে ....................
------------------------------------------ভেরিসিলা যোষ্টার (বসন্ত) ভাইরাস । ইলেক্টোমাইক্রোগ্রাফ ।
------------------------------------বসন্ত ভাইরাসের ডিজিটাল ইলাষ্ট্রেশান ।
বসন্তে ফোঁটা ফুলের মতো এর রূপের ছটা । অথচ এটাও একটা বালা-মুসিবত । মুক্তোর মতো জ্বলজ্বলে এ মুসিবত আপনার শরীরেও ফুঁটিয়ে তুলবে টলটলে মুক্তোদানার কারুকাজ । তখন সত্যি সত্যিই “বসন্ত” জাগ্রত হবে আপনার দ্বারে .............
--------------------------------------------আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে ........
ভেরিসিলা যোষ্টার ভাইরাসের এমন বসন্ত আয়োজনে আপনার ছোঁয়া থেকে দূরে সরে থাকবে আপনার সব আপনজন । ভেরিসিলা সুন্দরী জড়িয়ে থাকবে শুধু আপনাকে।
রঙ্গিয়া রঙ্গে আমি মজিয়াছি রে।
মজিয়াছি রে, আমি ডুবিয়াছি রে।।
হাটিয়া যাইতে খসিয়া যায় বন্ধে অঙ্গে, অঙ্গে।
হাছন রাজায় নাচন করে প্রেমেরি তরঙ্গে........
পাইলে কখন ছাড়িবে না, এই মনে পাঙ্গে রে। ( হাসন রাজা )
----------------------------------- আহা কি সুন্দর... মরি..মরি.............
----------------------------------- ইলেক্টোমাইক্রোগ্রাফিতে টোগা (ডেঙ্গু) ভাইরাস ............
------------------------------------------------------------ডেঙ্গু আক্রান্ত ........
হীরক দ্যুতি ছড়িয়ে যেন এক একটি ক্রিষ্টাল ............মিষ্ট্রাল ক্ষেপনাস্ত্রের মতো আপনার শরীরের হাড়মাংশকে পিষে দিয়ে যাবে । রাগে-দুঃখে আপনার শরীরের মেজাজ ১০৪ ডিগ্রী উত্তাপ ছড়াবে । চোখে মুখে ফেঁটে পড়তে চাইবে রক্ত । ড্যাং ড্যাং করে রাস্তাঘাট চষে বেড়াবেন ? হবেনা । কারন এই ক্রিষ্টাল সুন্দরী আপনাকে নিয়ে ততোক্ষনে বিছানায় চিৎপটাং । আপনাকে যে ডেঙ্গুতে ধরেছে ! ডেঙ্গু সুন্দরীর বাঁধনটা বেশী শক্ত হলে পরপারের বুড়ি ছুঁয়েও ফেলতে পারেন যে কোনও সময়।
সাতনরী হার দেবো
ফুলেরও বাহার দেবো .......
-----------------------------------------ইলেক্টোমাইক্রোগ্রাফিতে ইনফ্লুয়েঞ্জা / ফ্লু ভাইরাস.....
প্রিয়ার মরালী গ্রীবায় অলস পড়ে থাকা সোনার চেইনে ডায়মন্ডের লকেট । কিম্বা দেখতে ঠিক মাথার টিকলী । নজর কেড়ে নেবে সবারই । কেড়ে নেয়ার মতোই রূপের চটক তার । অথচ এই সুন্দরীকে বগলদাবা করলেই সেরেছে । হ্যাপা সামলাতে হবে অনেক । নাকের জল, চোখের জল এক করে ছেড়ে দেবে আপনার । ঘরভর্তি লোকের সামনেই লজ্জায় নাক-কান লাল হয়ে উঠবে । উষ্মায় নাক থেকে ফোঁস ফোঁস করে গরম বাতাসও ছাড়তে পারেন আপনি ।
এই গরমের দিনে আপনার কন্ঠলগ্ন হয়ে উঠতে আপনার চারপাশেই আছে সে । এই সুন্দরী প্রেমিকা একবার বাগে পেলে আপনার পকেট নয়, নাক খসিয়ে ছাড়বেই । এ হলো প্রেমের “ফ্লূ” রোগ ।
-----------------------------------------ফ্লু’র প্রেমে সর্ব অঙ্গ জরজর.........
চিন্তার কোনও কারন নেই । এইসব ছলনাময়ী মারনঘাতকদের হাত থেকে আপনাকে বাঁচাতে মা-বাবার মতো সারাক্ষন আপনাকে পাহারা দিয়ে রাখছে আপনার “ইমিউন সিষ্টেম” । আপনিও যদি একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তাদেরকে, তবে আপনার এই পাহারাদারের হাত শক্তিশালী হয়ে এইসব আপাত সুন্দরের ভয়ঙ্কর খপ্পর থেকে বাঁচিয়ে দিতে পারে আপনাকে ।
দেখুন এখানে - ইমিউনিটির সাথে টিউনিং........
আপনাকে মরনফাঁদে ফেলায় যে সব সুন্দরীরা, তাদেরকে কি শৈল্পিক ভঙিমায় আপনার জীবন থেকে সরিয়ে দিয়ে আপনাকে ছ্যাকা খাওয়ার হাত থেকে আগলে রাখছে একটি ইমিউন কোষ ----
ইলেক্ট্রন মাইক্রোগ্রাফিতে একটি যক্ষার জীবানুকে গিলে ফেলছে একটি ইমিউন কোষ - ম্যাক্রোফেজ .....
কী বিচিত্র এই সৃষ্টিজগৎ আর প্রতি পরতে পরতে কী এর নান্দনিকতা !
চলবে………………………..
ছবির কৃতজ্ঞতা - ইন্টারনেট ।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১১:২৬