আমার অভ্যাস হল এদের কে জানা এদের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। মতিঝিল উত্তরা অফিস যাতায়ত ট্রেনে করি বলে এ রকম শিশুর অভাব হয় না। প্রতিদিন কারো না কারো সাথে মিশি ছবি তুলি। আজ এ শিশুটির কাহিনী আমাকে খুব কাদিঁয়েছে মাগরিবের নামাজ পড়ার সময় শুধু চোখের পানিই আসছিল। তার মা নেই step Mother আর তার বাবা তার আপন দু ভাইকে পিটিয়ে ঘর ছাড়া করেছে। সে ট্রেনে উঠে ঢাকায় চলে এসেছে ২মাস হয়। জীবন হল তার নাম। রেল ষ্টেশন এখন তার ঠিকানা। প্রথমে যেভাবে পেয়েছি তার ছবি পরবত্তীতে চুল কেটে গোসল করিয়ে আমার ছোট ছেলের পুরান কাপড় পরিয়ে ভাত খাওয়ালাম। সে এখন খুব খুশী আমার পাশে বসে আছে। তার একটি কথা আমার কান্না এনেছে তা হল রিক্সা করে যখন ষ্টেশন থেকে বাসায় আনছিলাম তখন সে আমাকে বলল মামা আমাকে একটি কাথা দিবেন। আমি বললাম কেন? সে বলল রাত্রে ঘুমানোর সময় ঠান্ড়া লাগে এবং মশায় কামড়ায়। আমি বললাম তুমি এটা কোথায় রাখবে? বলল আমার সাথে সাথে। আমি বললাম এটা নিয়ে তুমি চলবে কিভাবে? তখন সে চুপ হয়ে যায়।চিন্তা করেন কি করুন অবস্তা! আমার গভীর দুঃখ হল তাকে এখন আমার বিদায় দিতে হবে। আমি এখনো তাদের জন্য permanent কিছু করতে পারি নাই।জানিনা কবে করতে পারি? এ রকম অনেককে মনের বিরুদ্তধে বিদায় দিয়েছি। তখন নীজেকে মনে হয় বড় আসামী! মনের খুব ইচছা এদের জন্য কিছু একটা করার। দোয়া করবেন এদের জন্য কিছু করে যেন আল্লাহ এ পৃথিবী হতে আমাকে বিদায় করে।
অবুঝ শিশু জীবন কে অন্ধকার রাতে বিদায় দিলাম;-
আমি এক হিংস্র এ রকম এক অবুঝ শিশুকে অন্ধকার রাত ১০ টার সময় বিদায় দিলাম। আমি অক্ষম এক মানব যে পারেনি এ শিশুকে মায়ার জালে বেধে রাখতে। আমরা সে রকম ভদ্রলোক ২০টাকার বিনিময়ে ৩০ কেজি ওজনের ব্যাগ এ সকল শিশুর মাথায় উঠিয়ে দিয়ে পকেটে হাত ঢ়ুকিয়ে লাট সাহেবের মত হাটি। আবার child labour এর কথাও বলি। আমিও সেই গোত্ররের তাই বিদায়ই দিলাম। কিন্তু বারবার বিবেকের কাছে ধরাশয়ী হই। এই হল আমার গভীর এক যন্ত্রনা।আমার ঔরষের তার মত ছেলে আমার পাশের AC রুমে পাতলা কাথা গায়ে দিয়ে ঘুমাচেছ।বাসা থেকে বিদায়ের জন্য যখন বের হচিছলাম সেই বলল মামা কাথা দিবেন না? পরে বুদ্ধি করে আমার পুরানো একটি লুঙ্গি দিলাম। লিফট্র ভিতর ছবিটি দেখেই বুঝবেন।সাইকেলের পিছনে বসিয়ে ৪ নং সেক্টরের মাঠে নিয়ে গেলাম সেও আমার সাথে ২/১ রাউন্ড় হাটল তারপর তাকে বললাম দোলনায় দুলতে সে খুশীমনে খেলল। দুই এক বন্ধু জিজ্ঞাস করল সে কে আমি বললাম আমার ছেলে বললাম এরকম আমার হাজার হাজার ছেলে আছে। তারা হাসল। এ মাঠে রাত্রে তথাকথিত সাহেবরা তাদের ছেলেমেয়েরা ঢুকতে পারে। এ ধরনের শিশু দেখলে দারোয়ান লাঠি উচু করে ধমক দেয় ঢুকার কোন সুযোগ নেই। কারন দেখলেই বৈষম্য সুস্পষ্ট। আমার সাথে অবুঝ শিশুর মত হাটার ধরন আর তার খুশীমনের আচরণ নিরবেই কাঁদিয়েছে। কারন আমার শিশুর আচরন আর এ শিশুর আচরণে আমি কোন পৃথক মনোভাব পাইনি।অতঃপর ব্যায়াম শেষে সাইকেলে করে নিয়ে গিয়ে রেল শ্টেষন স্ম্মুখে রাত্রে বিদায় দিতে হল। এ হলাম ভদ্রনামধারী সরকারী অফিসার। নীজেকে এ মূহূরতে ঘৃনিত মনে হচেছ। প্রশ্ন হল মাননীয় বিচারপতি মহোদয়গন সমাজের অনেক বিষয় নিয়ে সরকারকে রুল জারি করেন কিন্তু এ ধরনের অবুঝ শিশুদের রক্ষার জন্য কেন রুল হয় না? কেন আপনাদের চোখে এ করুন বিষয় ধরা পড়ে না? অনুরোধ করব, এ ধরনের শিশুদের সুরক্ষার জন্য রুল ইস্যু করুন।
দয়াপূরবক।
গাজী ইলিয়াছ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৩৬