আজকে অফিসে আসার সময় পিএম এর দপ্তর এর অপজিট রাস্তায় (বাম পাশের লেন) প্রায় পৌঁনে এক ঘন্টা প্রখর রোদ্রের মধ্যে বাসে বসে থাকতে হলো! কিন্তু পিএম তাঁর অফিসে আসার কোনো ধরণের উপলক্ষ দেখতে পেলাম না। অথচো জাহাঙ্গীর গেট বনাম ফার্মগেট অভিমুখের দুই রাস্তায় বাস-মিনি বাস চলাচল করছে! এ যেনো ট্রাফিকের এক অদ্ভুত আচরণ বাম দিকের লেনে অবস্থান করা বাসগুলোর যাত্রীর সাথে। একটা সময় বাম দিকে অবস্থান করা প্রতিটি গাড়ী থেকে যাত্রী এক এক করে নেমে যেতে লাগলো আর কিছুক্ষণ পরেই দেখি প্রায় গাড়ীগুলো খালি হয়ে গেলো; হাতে গোনা কয়েকজন যাত্রী বাদে অর্থাৎ মানুষ পাঁয়ে হেঁটে শাহীন কলেজ/রাওয়া এবং মহাখালীর উদ্দেশ্যে রওনা হলো।
বিশ্বাস করুন আর নাই বা করুন, আমার মনে হয় কষ্ট পেলে কেউ স্বয়ং তার খোদাকে ছেড়ে কথা বলেছে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। অর্থাৎ আমরা মাঝে মাঝে মহান আল্লাহ কে অপরাধী বানিয়ে ফেলি কিংবা গালি দিয়ে বসি! সেখানে মানুষ তো দূরছাঁয় ব্যাপার। পৌঁনে এক ঘন্টা এই প্রখর রোদ্রে বাসে বসে থাকার পর কোনো স্বাভাবিক সুস্থ মানুষ মুখ বন্ধ করে বসে ছিলো এটা ভাবা অস্বাভাবিক। অনেকে তখন বলতে ছিলো- ওরা মরার পর যদি এই দেশের মানুষ একটু শান্তি পায়! কেউ বলছে-ওনাদের সময়ের দাম আছে আমাদের নাই! কেউ বলছে-যারা বোম মারবে তারা তো এমন ফাঁকা যায়গায় মেরে দিবে তার জন্য কোনো নিরাপত্তায় কাজে দিবে না! কেউ বলছে-সারা পৃথিবীর প্রেসিডেন্টরা মনে হয় এই রাস্তায় দিয়ে যাবে, আগেও তো দেখেছি পিএম অফিসে আসতে; এমনটা তো আগে কখনো মনে হয় নি! কেউ বলছে-আমরা ওনাদেরকে ভোট দেয়, ওনারা আমাদের কষ্টগুলোকে বাড়িয়ে আরো পাহাড়সম করে দেয়ার জন্য!
কেউ বলছে-বাম দিকে ট্রাফিক আইনে কখনো সিগন্যাল থাকার কথা না অথচো বাম দিকেই বেশির ভাগ সময় আমরা সিগন্যাল পেয়ে থাকি। ড্রাইবারদের উদ্দেশ্যে বললেন, আপনারা মাঝে মাঝে দুই-একটি ট্রাফিক কে বাসের নিচে চাপা দিবেন। তাহলেই দেখবেন সব ঠিক হয়ে গেছে! তখন অন্য আরেক যাত্রী ড্রাইবারের উদ্দেশ্যে যোগ করে বলছে-ট্রাফিক কখনো বাম দিকে সিগন্যাল দিলে আপনারা তা পালন করবে না। যদি ঝামেলা করে তবে আপনারা তাদের এই সিদ্ধান্তকে স্যালেঞ্জ করবেন। দেখবেন পরের দিন থেকে সব সোজ হয়ে গেছে! একজন যাত্রী খুব উত্তেজিত হয়ে বলে ফেললেন- ওনি (পিএম) কালো কাঁচের গাড়ীর ভেতরে বসে আছেন আবার সেই গাড়ীর ভেতরে তিনি কালো গ্লাস চোখে পরিহিত অবস্থায় পৃথিবী দেখেন; তাহলে তিনি জগতের ভালো-মন্দ পরিষ্কার ভাবে দেখবেন কিভাবে? কারণ তিনি তো তাঁর জগতকেই অন্ধকার করে রেখেছেন!
বিশ্বাস করুণ আমার মনে হয়, ওদের থেকে আমারও রাগ কম হয়নি। আমি অন্য যাত্রীদের মতো রাগের স্বরে বলে ফেললাম, বাজ পড়ে তো কত হতদরিদ্র কিংবা সাধারণ মানুষ মারা যায়। কিন্তু যারা মানুষকে বিনা কারণে কষ্ট দেয়, দু-চারটি বাজ কেনো এদের উপর পড়ে না!!!
মানুষ যখন বিনা কারণে কষ্ট ভোগ করে তখন জগতের সঠিক মানুষটিও খারাপ দৃষ্টি থেকে বাদ যায় না। যেখানে স্বয়ং সৃষ্টিকর্তাকে মানুষ বিনা কারণে মাঝে মাঝে গালি দিয়ে বসে! তাই বলবো, আপনারা যদি আপনাদের সময়ের ব্যাপারে দৃঢ় জ্ঞান রাখেন এবং যথা সময়ে অফিসে আসেন তাহলে আপনার পথের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাক্তিদের (প্রশাসনিক) কে নিশ্চয় নির্দেশ দিয়ে রাখবেন, অহেতুক যেনো যাত্রী কিংবা অতিব সাধারণের কষ্টের কারণ আপনার পথ চলা না হয়। কারণ গণমানুষের অভিশাপ হয়তো আপনার এই আরাম-আয়েশ কে ধ্বংস করে দিতে পারে।
ছবি : গুগল।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:০৬