somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোটা বিবেচনায় নেয়া উচিত দেশ ও জাতির উন্নয়নের স্বার্থে

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দেশে কোটা নিয়ে গতকালকে রাত আনুমানিক ৩টার দিকে শাহবাগ এবং টিএসসি’তে যা ঘটে গেলো তা অকল্পনীয়! আমাদের বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে যে, আমরা সবাই মেধাকে মূল্যায়ন করতে চাই কিন্তু একজন মেধাবীকে যায়গা তৈরি করে দিতে কখনোই প্রস্তত নই! যদিও পুলিশি আচরণে ডিএমপি কমিশনার দুঃখ প্রকাশ করেছেন তথাপি এটা কি পুলিশের কাজ ছিলো?!

আমাদের দেশের নির্বাহীরা কিংবা প্রশাসনে থাকা কর্তাব্যক্তিরা কি এই ব্যাপারে ছাত্র/ছাত্রীদের সাথে আলাপ করে সমস্যার সমাধান করতে পারতেন না? কিন্তু সেটা না করে বরং রাতের আঁধারে একটি মেধাবী গোষ্ঠীর উপর বর্বর আচরণ করা হলো, এটা কি পাকিস্তানিদের পক্ষ থেকে বাঙ্গালীদের উপর চালানো বর্বরতার চেয়ে কোনো অংশে কম হবে কি?!

যাই হোক পরিশেষে আন্দলোনরত সকল ছাত্র/ছাত্রীদের আশা জাগিয়ে কোটা প্রথা নিয়ে কেবিনেট সবিচ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছিলেন ব্যাপারটা পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। কিন্তু বিধিবাম ছাত্র/ছাত্রীদের তথা মেধাবীদের প্রতি কোটা প্রথার মূল্যায়ন সরকার এই মুহুর্তে করতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিলো!!!

অধ্যাপক আসিফ নজরুলের ভাষ্যমতে- ১৯৭২ সালের সংবিধানে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা সম্পর্কে কিছু বলা নেই। এই সংবিধান প্রণীত হয়েছিল যে গণপরিষদে, সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চাকরিতে কোটা প্রদানের কথা উত্থাপিতই হয়নি।

গণপরিষদে কেবল সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদের অধীনে নাগরিকদের সামাজিক নিরাপত্তা প্রদান প্রসঙ্গে পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা ও নিহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয় (বাংলাদেশ গণপরিষদের বিতর্ক, দ্বিতীয় খণ্ড, ১৯৭২, পৃষ্ঠা ৪৭০-১)।
সামাজিক নিরাপত্তার উদার ব্যাখ্যা করলে শুধুমাত্র পঙ্গু বা নিহত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের জন্য চাকরিতে কোটা সংরক্ষণ বৈধ হতে পারে, অন্যদের জন্য নয়। জনসংখ্যার অনুপাতে এই কোটা হতে পারে বড়জোর ১ শতা‌ংশ। বাকী ৯ শতাংশ হতে পারে নারী, প্রতিবন্ধী আর ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য।

কোটা কোনভাবেই মোট চাকরীর ১০ শতাংশের বেশী হোয়া উচিত না। এটাও উচিত না, কোটা পুরন না হলে পদ শুন্য রেখে দেয়া। মুক্তিযোদ্ধারা এজাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের সম্মানিত করতে হবে অন্যভাবে। আমি দৃঢভাবে বিশ্বাস করি, ঢালাও ভাবে কোটা বরং অসম্মানিত করে তাঁদের।

এখন দেখা যাক এই দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা কত জন মেধাবী কোন খাতে তাদের ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে কোটা বাঁধার সম্মুখীন হতে পারেন...

পরিকল্পণা মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুযায়ী দেশের মোট জনসংখ্যা এই মুহুর্তে ১৫,২৫,১৮১৫০ জন। তবে ওয়ার্ল্ডওমিটার ইনফোর হিসেব অনুযায়ী বাংলাদেশের এই মুহুর্তে মোট জনসংখ্যা ১৬,৬৩,৬৮১৪৯ জন। যদি আমরা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুযায়ী কোটার শতকরা হিসেব দেখি তাহলে কি দাঁড়ায় নিচে দেখা যাক...

দেশের মোট জনসংখ্যা = ১৫,২৫,১৮১৫০ জন।
----------মুক্তিযোদ্ধা = ২ লাখ। কোটা = ৩০%
প্রতিবন্ধী = ২০লাখ ১৬ হাজার। কোটা = ১%
উপজাতি = ১৫ লাখ ৮৬ হাজার। কোটা = ৫%
-------------- দেশের মোট নারীর কোটা = ১০%
--------------------------- জেলা কোটা = ১০%
------------------ সংরক্ষিত মোট কোটা = ৫৬%

৯৭.৩৭% মানুষের জন্য কোটা ৪৪%! আর মাত্র ২.৬৩% মানুষের জন্য কোটা ৫৬%! এখন মনে করুন ৩৮ তম বিসিএস-এ সরকারীভাবে ২০২৪ জন ক্যাডার নিয়োগ দেয়া হবে। তাদের ইন্টারভিউ কল করা হয়েছে। যারা উত্তীর্ণ হবেন তাদের মধ্যে-
মুক্তিযোদ্ধা =২ লাখের জন্য =৩০% কোটা
প্রতিবন্ধী =২০লাখ ১৬ হাজারের জন্য =১%
উপজাতি =১৫লাখ ৮৬ হাজারের জন্য =৫%
নারীদের জন্য =১০% এবং
বিশেষ জেলার জন্য =১০% নির্ধারিত, তাহলে থাকলো বাকি কত?

সর্বমোট ২.৬৩% মানুষের জন্য = ৫৬% কোটা = ১১৩৪ টি বিসিএস ক্যাডার পদ বরাদ্দ। আর সাধারন প্রতিযোগী মেধাবী ৯৭.৩৭% মানুষের জন্য ৪৪% কোটা = ৮৯০ টি পদ বরাদ্দ।

এর মানে আপনি যত মেধাবীই হোন না কেন, চাকরি পাবেন না। আপনার চেয়ে কম মেধাবী, তার জন্য কোটা খালি থাকার কারনে চাকরি পেয়ে যাবে অনায়াশেই।

২.৬৩% লোক ১১৩৪ টি পদ পাবে বিনা কন্ট্যাস্টে। আর ৯৭.৩৭% লোক ৮৯০ টি পদের জন্য লড়তে হবে। এরপর ঘুষ, মামা, খালু তো লাগবেই।

তাই কোটা সংস্কার সময়ের দাবী বলে মনে করি। অথচ সেদিন দেখলাম এক ব্যক্তি জাফর ইকবালের উপর হামলা করল! আর সাথে সাথে কিছু ঢেউটিন মার্কা পাবলিক চেতনারদন্ড খাড়া কইরা টাইমলাইনে ভাসাই দিয়েছিল...এ বলিই য়া যে-
"যে জাতি গুণির কদর করে না; সেখানে গুনির জম্ম হয় না"! কিন্তু গতকাল রাতের আঁধারে এতোগুলি গুণির উপর নির্বিচারে হামলা হইলো, অথচ তাদের চেতনারদন্ড আজ নিথর হয়ে আছে!
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৫
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×