একই বিষয় নিয়া ব্লগে/ফেইসবুকে বেশ কিছু পোস্ট পাওয়া যায়। তয় সবগুলাই মনে হয় আউটডেটেড। নিজের ফ্রেশ অভিজ্ঞতা থেইকা জনকল্যাণে কিছু জ্ঞানদান দরকার মনে করতেছি।
1। প্রথমেই passport.gov.bd থেকে অনলাইনে পাসপোর্টের ফরম পূরণ কইরা নেন। আপনার নিজের ছবির স্ক্যান কপির কোনো প্রয়োজন নেই। ফরম পূরণ করা হয়ে গেলে PDF আকারে ডাউনলোডের অপশন পাবেন। অনলাইনে ফরম পূরণ করলে পরে পাসপোর্ট অফিসে আপনার অনেকটা সময় বেচে যাবে। (ছাত্ররা অবশ্যই ফরমের অভিভাবকের ডিটেইলসের ঘরটা পূরণ করবেন)
2। সাধারণ+নতুন পাসপোর্টের বেলায় PDF এর দুইটা প্রিন্ট নেবেন। দুটোতেই আপনার নরমাল পাসপোর্ট সাইজের দুটো ছবি আঠা দিয়ে লাগিয়ে নেবেন (বিশ্বাস রাখেন -এই ছবির দিকে কেউ ফিরাও তাকাবে না)। সত্যায়িত নিজের এলাকার কাউকে দিয়ে করিয়ে নেবেন,পাসপোর্ট অফিসের কাউকে দিয়ে সত্যায়িত করানোর চিন্তাও মাথায় আনবেন না। ছবির ওপরও সত্যায়িত করতে হবে। (ছাত্রদের ক্ষেত্রে অন্যান্য সব ডকুমেণ্টের সাথে নিজের স্টুডেন্ট আইডি এর সত্যায়িত কপিও সাথে রাখবেন এবং ফরমের সাথে জমা দেবেন)
3। যদি সম্ভব হয় তবে আগেই সোনালী ব্যাংকে 3000 টাকা পাসপোর্টের ফি হিসেবে জমা দিয়ে স্লিপটা নিজের কাছে রাখবেন। 5 টাকা ব্যাংক ফি হিসেবে রাখবে। ব্যাংক থেকে স্লিপের একটা অংশে সিরিয়াল নম্বর লিখে আপনাকে ফেরত দেবে। এই সিরিয়াল নম্বরটা প্রিন্ট করা ফরমের 25 নম্বর ঘরে লিখতে হবে।
4। এবার স্লিপটি ফরমের দু'কপির যে কোনো একটিতে ওপরের দিকে আঠা দিয়ে লাগিয়ে নিন। খেয়াল রাখবেন - স্লিপটি ফরমের বারকোডের ওপরে লাগাবেন না।
5। সপ্তাহের প্রথম দিকে (শেষ দিকে ভিড় বেশি হয়) সকাল ৯টার ভেতর পাসপোর্ট অফিসে চলে যাবেন। বিল্ডিং এর নিচে দেখবেন ২-৩ জন আর্মি পারসন টেবিল নিয়ে বসে আছেন। তাদের থেকে সিল নিয়ে সোজা তিনতলায় ৩০৪ নম্বর রুমে চলে যান। যত দেরি করবেন - ৩০৪ এর সিরিয়ালে তত পিছনে পড়বেন। ৩০৪ এ একজন এসিসটেন্ট ডিরেক্টর আপনার কাগজ চেক করবেন - তিনি কিছু প্রশ্নও করতে পারেন মিলিয়ে দেখতে। তারপর আপনার যে ফর্ম এ ব্যাংক স্লিপ লাগিয়েছেন - সেটাতে তিনি তেরছা ভাবে 'আবেদিত' লেখা একটা সিল মেরে দেবেন। দুই কপি ফরমের এই কপিটাতেই পাসপোর্ট অফিসের সবাই লেখাজোকা করবে, অন্য কপিটা পরে লাগবে। সেটা একটু পর বলছি।
6। এটা নিয়ে চলে যান নিচ তলায় সিড়ির পাশে টেবিল পেতে বসে থাকা আর্মিম্যানের কাছে (এটাই রুম নম্বর ১০২)। তিনি ব্যাংক স্লিপ লাগানো ফরমের নিচের দিকে একটা সিল মেরে সিরিয়াল নম্বর লিখে ছবি তুলতে ৪ তলায় যেতে বলবে।
7। এতক্ষণে দেখবেন সিড়িতে ছবি তোলার বিশাল লাইন। পাবলিক যা ইচ্ছা বলুক - লাইনে দাড়াবেন না, সব ইগোনোর করেন। সোজা 4 তলায় উঠে সিড়ির বা পাশে 402 নম্বর রুমে ঢুকে যান। দরজা লক করা থাকে - ভয় পাবেন না - সোজা দরজা খুলে ঢুকে যান। ভেতরে দেখবেন ম্যাক্সিমাম 3-4 জনের ছবি তোলার লাইন। এই রুমে 4 টা ছবি তোলার বুথ আছে এবং এটা শুধুমাত্র অনলাইন আবেদনকারীদের জন্যে। এখানে কোন একটা বুথে আপনাকে ডেকে নেবে - ছবি তুলবে, সিগনেচার নেবে, এবং চার আঙ্গুলের ছাপ নেবে। এরা আপনার কাছ থেকে ফরমের দুটো কপিই রেখে দেবে। সবশেষে আপনাকে আপনার সব তথ্য সংবলিত এক পাতার একটা কাগজ ধরিয়ে বিদায় দেবে। আপনার আগারগাও পাসপোর্ট অফিস ভ্রমণের এখানেই সমাপ্তি।
২০ দিনের ভেতর পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন।
কোনও অবস্থাতেই দালাল ধরবেন না। ব্যাংকের কাজটাও নিজে করবেন - অযথা রিস্ক নেয়া বোকামি।
উপরের পুরোটাই আমার পাসপোর্ট অফিসে ৫ ঘন্টার এক্সপেডিশনের রেজাল্ট। আমার মত ভুল+বোকামি+তথ্যের জন্যে হাহাকার যেন অন্য কাউকে না করতে হয় - তাই এখানে পোস্ট দিচ্ছি।
ধন্যবাদ
ফুলিশ ভেরিফিকেশন (পাসপোর্ট করা বিষয়ক জ্ঞানদান মূলক পোস্ট) পার্ট - 2
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৬ ভোর ৫:৪৫