somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফুলিশ ভেরিফিকেশন (পাসপোর্ট করা বিষয়ক জ্ঞানদান মূলক পোস্ট) [পার্ট - 2]

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার মতো নিরীহ যারা পাসপোর্ট এর এপ্লিকেশন জমা দেয়ার পর (এ বিষয়ে আগের পোস্টে ব্যাপক জ্ঞান দিছি) কি করতে হয় সেটা বুঝে উঠতে পারছেন না - তাদের জন্যেই এই পোস্ট।

যদি পাসপোর্ট অফিসে কাগজপত্র ভালোয় ভালোয় জমা দিতে পারেন - তাহলেই অর্ধেক কাজ শেষ। বাকি থাকলো তথাকথিত পুলিশ ভেরিফিকেশন।

কাগজপত্র পাসপোর্ট অফিসে জমা দেয়ার সপ্তাহখানেকের ভেতর হঠাত্‍ একদিন ফোনে কল পাবেন।

আমার আর তেনার কথোপকথন এর বিবরণটা নিচে দিলাম:

(বেলা আড়াইটা, গোছল কইরা মাত্র বের হইছি - এমন টাইমে ফোন বাজলো, অচেনা নম্বর)

আমি: হ্যালো স্লামলাইকুম। (আমি ভাবছি কোনো চাকরির ইন্টারভিউয়ের জন্যে ফোন দিছে)
তিনি: ঘ্যের ঘ্যের ঠুস ঠাস ধাম (নেটওয়ার্ক ফল করছে+লগে মালপত্র সরানোর শব্দ)...বলছি (শুইনা স্পীকার হইয়া গেলাম)
আমি: সরি বুঝতে পারি নি - কে বলছেন?
তিনি: (আবার সেই ধুম ধাম শব্দ)
আমি: নেটওয়ার্কে সমস্যা হচ্ছে - কাইন্ডলি আবার বলুন
তিনি: আমি (...বোঝা যায় নি) অফিস থেকে বলছি
আমি: (না বুঝেই) ও হ্যা হ্যা, বলুন
তিনি: আমি এসবি অফিস থেকে বলছি (আমি তখনো এসবি কথাটার মর্মার্থ উধার করতে পারি নাই)
আমি: জ্বি বলেন।
তিনি: আপনে পাসপোর্টের এপ্লাই করছেন?
আমি: জ্বি, করেছি (ভাবলাম পাসপোর্ট অফিস থেইকা কল দিছে ভেরিফিকেশনের জন্যে)
তিনি: আপনে কি করেন?
আমি: স্টুডেন্ট।
তিনি: আপনার ঠিকানা বলেন, এইটা কোথায়?
আমি: ডিটেইল বললাম
তিনি: কালকে সকাল ৯টায় এসবি অফিসে চইলা আসবেন। সাথে বার্থ সার্টিফিকেট, বাবা মার ভোটার আইডি এর কপি, স্টুডেন্ট আইডি এর কপি নিয়া আসবেন। আমার নাম (....), আইসা আমাকে কল দিবেন - দেরি কইরেন না।

এইটুকু বলে কল কেটে দিছে। পুরা টাইম কথা বলছে খুব ভারিক্কি গলায়।

এদিকে আমার জানা ছিলো না যে পাসপোর্টের ভেরিফিকেশন এসবি করে - আমি গেছি নার্ভাস হইয়া। ভাইবেরাদারদের কাছে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনে আসা পুলিশ দেইখা ভয় পাওয়া জাতীয় কিছু হাস্যকর গল্প আগেই শুনছিলাম। সেই থেইকা ধারনা হইছিলো ভেরিফিকেশনে বুঝি ইউনিফর্মড কনস্টেবল আসে।
চিন্তা পইড়া গেলাম - আমারে এসবি অফিসে যাইতে কয় কেন! ভেরিফিকেশনে তো তেনারই আসার কথা। কোনো ক্যাচাল লাগলো নাকি!

কিছুক্ষণ টেনশন কইরা আবার তারে ফোন দিলাম। কল দিয়া এক্কেবারে লিকুইড গলায় কইলাম যদি তেনার অসুবিধা না থাকে তাহলে তিনি যেনো এই গরিবের বাসায় পদধূলি দিয়া যান, চায়ের দাওয়াতটাও কবুল কইরা যাইতে কইলাম।
আমি ইনভাইট করা মাত্র তার ভয়েসের সকল ভারিক্কি ভাব চইলা গিয়া উষ্ণতার পরশ পাইলাম - তিনি কবুল করিলেন।

এর পরের অংশ তেমন কিছু না - সন্ধায় তিনি পদধূলি দিলেন। হালকা চা (টা সহকারে) - নাস্তার ব্যবস্থা ছিলো - তিনি গল্প করিতে করিতে উপরে বর্ণিত ডকুমেণ্ট্স নিয়া সব ফরমালিটি (ফরমালিটি মানে এক ফর্মে আমার একটা সিগনেচার) শেষে প্রস্থান করিলেন।


মোরাল অব দ্যা স্টোরি:

১। পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন শহর এলাকায় এসবি করে।
২। যদি আপনার ঠিকানা সংক্ষিপ্ত/দুর্বোধ্য/অপরিচিত হয় - তাহলে ইন্সপেকটর নিজে না এসে আপনাকেই এসবি অফিসে যেতে বলতে পারে। যদি এসবি অফিসে যান - সাথে বাড়তি টাকা নিয়ে যাবেন। (জাস্ট ইন কেস)
৩। ঢাকায় এখন ভেরিফিকেশনের স্ট্যান্ডার্ড রেট নাকি ১০০০। আমার পরিচিত এক বড়ভাই ৩০০ দিয়েই কাজ করে ফেলেছিলো। এভারেজ সম্ভবত ৫০০
৪। এসবি/ইউনিফর্মড পুলিশ দেখে ভয় পাবেন না - এরা খুবই ফ্রেন্ডলি হয়।
৫। যদিও ইন্সপেকটরকে টাকা দেয়ার একটা ট্রেন্ড চালু আছে (আমি নিজেও এর থেকে বের হতে পারি নি), তবু আমি বলবো এই অন্যায়টা না করাই উচিত।






গুড লাক


এডিট: যাদের স্থায়ী ঠিকানাতে নিজেরা থাকেন না (যেমন গ্রামের বাড়ির ক্ষেত্রে) - তারা অবশ্যই পাসপোর্টের আবেদন করেই নিজের বার্থ সার্টিফিকেট আর চেয়ারম্যানের সনদপত্র গ্রামে আত্মীয়স্বজনের কাছে পাঠিয়ে দেবেন। এই ডকুমেন্টসগুলো স্থায়ী ঠিকানায় ভেরিফিকেশনে লাগবে।


ক্যামনে আগারগাও অফিস থেইকা নতুন পাসপোর্ট এর জন্যে আবেদন করবেন (একটা হাউ টু মার্কা পোস্ট) পার্ট - ১
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:৩৫
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×