somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আইয়ুব বাচ্চু: একজন রক স্টারের বিদায়

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী
আইয়ুব বাচ্চু বাংলাদেশের একজন রক স্টার ছিলেন। তাঁর গীটারের প্রাণের মোর্ছনা ভেসে উঠতো। তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি ছিলেন জনপ্রিয় ব্যান্ড শিল্পী। আধুনিক বাংলা রকে তিনি ছিলেন এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। আইয়ুব বাচ্চু শুধু একজন গায়কই ছিলেন না গানের একনিষ্ট ভক্তও ছিলেন। জীবদ্দশায় অসংখ্য রিয়্যেলেটি শোতে বিচারকের আসনে দেখা গেছে তাঁকে। তিনি যে সব ধরণের গানের ভক্ত-শ্রোতা ছিলেন তা বিভিন্ন সময়ে পরিলক্ষিত হয়েছে। তিনি গান গাইতেন, গান নিয়ে গবেষণা করতেন, গানের প্রতি উৎসাহ যোগাতেন। একাধারে রক স্টার আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন গায়ক, লিডগিটারিস্ট, গীতিকার, সুরকার, প্লে­ব্যাক শিল্পী। এল আর বি ব্যান্ড দলের লিড গিটারিস্ট এবং ভোকাল বাচ্চু বাংলাদেশের ব্যান্ড জগতের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সম্মানিত ব্যক্তিত্বদের একজন। তাঁর চলে যাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুক ছিল বিদায় বার্তায় সরব। গুনী ওই শিল্পীকে নিয়ে নানা জনের নানা অভিব্যক্তি উঠে আসে লিখনীতে। সারা বাংলাদেশের শিল্পী-গায়ক, শ্রোতাদের মুখে শোনা যায় শোকের করুন সুর। আইয়ুব বাচ্চু হয়তো মহান রবের ঢাকে সাড়া দিয়ে চলে গেছেন পরপারে। কিন্ত তাঁর রেখে যাওয়া কর্মের কারণে তিনি আজীবন বেঁচে থঠশবেন আমাদের মাঝে।
উল্লেখ্য, সঙ্গীতজগতে আইয়ুব বাচ্চুর যাত্রা শুরুহয় ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে। অত্যন্ত গুণী এই শিল্পী তাঁর শ্রোতা-ভক্তদের কাছে এবি নামেও পরিচিত। তার ডাক নাম রবিন। মূলত রক ঘরানার কন্ঠের অধিকারী হলেও আধুনিক গান, ক্লাসিকাল সঙ্গীত এবং লোকগীতি দিয়েও শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন। আইয়ুব বাচ্চু ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দের ১৬ আগস্টে চট্টগ্রাম জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার কন্ঠ দেয়া প্রথম গান হারানো বিকেলের গল্প। ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে তিনি সোলস ব্যান্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত রক্তগোলাপ আইয়ুব বাচ্চুর প্রথম প্রকাশিত একক অ্যালবাম। এই অ্যালবামটি তেমন একটা সাফল্য পায়নি। আইয়ুব বাচ্চুর সফলতার শুরু তার দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ময়না এর মাধ্যমে।
গিটারে তিনি সারা ভারতীয় উপমহাদেশে বিখ্যাত ছিলেন। জিমি হেন্ড্রিক্স এবং জো স্যাট্রিয়ানীর বাজনায় তিনি দারুনভাবে অণুপ্রাণিত।
তাঁর একক অ্যালবাম গুলো হচ্ছে-রক্তগোলাপ (১৯৮৬), ময়না (১৯৮৮), কষ্ট (১৯৯৫),সময় (১৯৯৮), একা (১৯৯৯), প্রেম তুমি কি! (২০০২), দুটি মন (২০০২), কাফেলা (২০০২), প্রেম প্রেমের মতো (২০০৩), পথের গান (২০০৪), ভাটির টানে মাটির গানে (২০০৬), জীবন (২০০৬), সাউন্ড অব, সাইলেন্স (ইন্সট্রুমেন্টাল, ২০০৭), রিমঝিম বৃষ্টি (২০০৮), বলিনি কখনো (২০০৯), জীবনের গল্প (২০১৫)। এছাড়াও ব্যান্ড অ্যালবাম, এলআরবি (১৯৯২), সুখ (১৯৯৩), তবুও (১৯৯৪), ঘুমন্ত শহরে (১৯৯৫), ফেরারি মন (১৯৯৬), স্বপ্ন (১৯৯৬), আমাদের বিস্ময় (১৯৯৮), মন চাইলে মন পাবে (২০০০), অচেনা জীবন (২০০৩), মনে আছে নাকি নেই (২০০৫), ¯পর্শ (২০০৮), যুদ্ধ (২০১২), নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী, লাল বাদশা (১৯৯৯), আম্মাজান (১৯৯৯), গুন্ডা নাম্বার ওয়ান (২০০০), ব্যাচেলর (২০০৪), রং নাম্বার (২০০৪), চাঁদের মত বউ (২০০৯), চোরাবালি (২০১২), টেলিভিশন (২০১৩), এক কাপ চা (২০১৪) প্রভৃতি। ২০১২ খ্রিস্টাব্দের ২৭ নভেম্বর আইয়ুব বাচ্চু ফুসফুসে পানি জমার কারণে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসা গ্রহণের পর তিনি সুস্থ হন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর বৃষ্পতিবার ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে সকাল ৯টায় তিনি মারা যান। তাঁর চলে যাওয়াতে বাংলা আধুনিক রকে যে শুণ্যতা সৃষ্টি হয়ে তা কখনো পূরণ হবার নয়। আমি এই গুনী কন্ঠ শিল্পীর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:৪৭
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×