somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রচলিত ইসলামী পোষাকের নামে যে সকল পান্জাবী-পায়জামা পরিধান করা হচ্ছে তা ইসলামী পোষাক নয়

০৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বর্তমানে একদল ধর্মান্ধ মৌলভী ও তাদের অনুসারীরা প্রকৃত কুরআন ও হাদিস চর্চা না করেই খুঁটি-নাটি বিষয় নিয়ে বিশাল ফিৎনা-ফাসাদ এবং সমাজ ও পরিবারে অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছে । কথিত ইসলামী পোষাকের নামের পান্জাবী-পায়জামা না পড়লে মাদরাসাগুলো শিশু ছাত্রদের উপর নির্যাতনের স্ট্রীম রোলার চালিয়ে দিচ্ছে্। দেশের কওমী ও তাবলীগপন্থীরা এ ব্যাপারে প্রচন্ড গোড়ামীতে লিপ্ত। তারা মূলত কুরআন-হাদিস চর্চার চাইতে তাদের পীর, হুজুর, ও তাবলীগওয়ালারা পূর্ব হতেই ধর্মের নামে দলীল প্রমাণ বিহীন অন্ধ বিশ্বাসে লিপ্ত । সমাজ এবং পরিবার সমূহে দেখা যাচ্ছে যে, এসব কওমী ও তাবলীগ পন্থীরা যদি দেখে যে কেই পান্জাবী-পায়জামা অথবা টুপি পড়ছে না, বা দাড়ি একটু ছোট করে রেখেছে তাদের কে শত্রু ভাবা শুরু করে, তাদের কে কাফের বা কুফুরী পর্যন্ত ঠেলে দিতে পরওয়া করে না । অথচ কুরআন-হাদীসের কোথায়ও ইসলামী পোষাক হিসেবে অথবা সুন্নাহ হিসেবে পান্জাবী-পায়জামা পরিধান করার কথা বলা হয় নি । তাহলে আসুন দেখে নেওয়া যাক পোষাক এর ব্যাপারে ইসলাম কি বলে।
পবিত্র কুরআন পোষাকের ব্যাপারে এসেছে যে,


আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনের সূরা আরাফের ২৬ নং আয়াতে ঘোষনা করেছেন,
হে বনী আদম আমি তোমাদের জন্য পোষাক অবতীর্ণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জ্বাস্থান আবৃত করে এবং অবতীণ করেছি সাজ – সজ্জ্বার বস্ত্র, এবং পরহেজগারীর পোষাক, এটি সর্বোত্তম। এটি আল্লাহর কুদরতের অন্যতম নিদর্শন, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে ।
উক্ত আয়াতে তিন প্রকারের পোষাকের উল্ল্যেখ করা হয়েছে, যথা:
প্রথম, لباسا يوارى سوءاتكم এখানে يواري শব্দটি موارة থেকে এসেছে, এর অর্থ মানুষের ঐসব অঙ্গ, যেগুলো খোলা রাখাকে মানুষ স্বভাবতই খারাপ ও লজ্জ্বাকর মনে করে। উদ্দেশ্য এই যে, আমি তোমাদের মঙ্গলার্থে এমন একটি পোষাক সৃষ্টি করেছি, যা দ্বারা তোমরা গুপ্তাঙ্গ আবৃত করতে পার।
দ্বিতীয়ত, এরপর বলা হয়েছে, وريشا সাজ-সজ্জার জন্যে মানুষ যে পোষাক পরিধান করে, তাকে ريش বলা হয়। অর্থ এই যে, গুপ্তাঙ্গ আবৃত করার জন্যে তো সংক্ষিপ্ত পোষাকই যথেষ্ট হয়; কিন্তু আমি তোমাদেরকে আরও পোষাক দিয়েছি, যাতে তোমরা তা দ্বারা সাজ-সজ্জ্বা করে বাহ্যিক দেহাবয়বকে সুশোভিত করতে পার।
তৃতীয়ত, গুপ্তাঙ্গ আবৃতকরণ এবং আরাম ও সাজ-সজ্জার জন্যে দু’প্রকার পোষাকের বর্ণনা করার পর তৃতীয় এক প্রকার পোষাকের কথা উল্ল্যেখ করে বলা হয়েছে لباس التقوى ذلك خيير অর্থাৎ আমি তৃতীয় একটি পোষাক তাকওয়ার পোষাক অবতীর্ন করেছি। এটি সর্বত্তোম পোষাক। হযরত ইবনে আব্বাস ও ওরওয়া ইবনে যুবায়র (রা:)এর তফসীর অনুযায়ী তাকওয়ার পোষাক বলে সৎকর্ম ও খোদাভীতিকে বুঝানো হয়েছে।–(রুহুল-মা’আনী)
উদ্দেশ্য এই যে, বাহ্যিক পোষাক যেমন মানুষের গুপ্তাঙ্গের জন্যে আবরণ এবং শীত-গ্রীষ্ম থেকে আত্বরক্ষা ও সাজ-সজ্জার উপায় হয়, তেমনি সৎকর্ম ও খোদাভীতিও একটি আধ্যাত্বিক পোষাক । এটি মানুষের চারিত্রিক দোষও দুর্বলতার আবরণ এবং স্থায়ী কষ্ট ও বিপদাপদ থেকে মুক্তিলাভের উপায় । এ কারণেই এটি সর্বোত্তম পোষাক।
বাহ্যিক পোষাকের আসল উদ্দেশ্য তাকওয়া অর্জন করা: لباس التقوى শব্দ দ্বারা এদিকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, বাহ্যিক পোষাক দ্বারা গুপ্তাঙ্গ আবৃত করা ও সাজ-সজ্জা করার আসল উদ্দেশ্য তাকওয়া ও খোদাভীতি। এখোদাভীতি পোষাকের মধ্যেও এভাবে প্রকাশ পাওয়া উচিত যেন গুপ্তাঙ্গ সমূহ পুরোপুরি আবৃত হয়।
পোশাক ব্যবহারের উদ্দেশ্য বিশ্লেষণ করলে নিচের কারণগুলো আমাদের
সামনে স্পষ্ট হয়ে ওঠে ।

১ . প্রতিকূল আবহাওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করা : আবহাওয়ার প্রতিকূলতায়
প্রকৃতি বিশ্বব্যাপী এক নয় । গরম দেশের পোশাক আর শীতপ্রধান দেশের পোশাক
যে এক হবে না তা ব্যাখ্যার অপেক্ষা রাখে না । তাই প্রাথমিকভাবে মানুষ তার
পরিবেশ অনুসারে পোশাক বেছে নেয় ।
২ . লজ্জাস্থানকে ঢাকা : লজ্জাস্থানের পরিমাণ বোধ ভিন্ন হতে পারে ;
কিন্তু লজ্জাস্থানকে আবৃত করা মানুষের একটি সহজাত প্রবৃত্তি ।
৩ . সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা : বেশভূষা মানুষের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে ।
সমাজজীবনকে করে সুশৃঙ্খল ।

পোশাকের কুরআনিক মৌলিক বিধান :

১ . লজ্জাস্থান তথা সতর আবৃতকারী পোশাক হতে হবে :

قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ

(মুমিনদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থানসমূহ
হেফাজত করে । নূর : ৩০

২ . পোশাক অপচয় ও অহমিকাপূর্ণ হবে না :

يَا بَنِي آدَمَ خُذُوا زِينَتَكُمْ عِندَ كُلِّ مَسْجِدٍ وَكُلُوا
وَاشْرَبُوا وَلَا تُسْرِفُوا ۚ إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِينَ

হে বনী আদম ! প্রত্যেক ইবাদাতের সময় তোমরা নিজ নিজ সুন্দর সাজে সজ্জিত
হও ৷ আর খাও ও পান করো কিন্তু সীমা অতিক্রম করে যেয়ো না , আল্লাহ সীমা
অতিক্রমকারীদেরকে পছন্দ করেন না ৷ আ’রাফ : ৩১

৩ . মহিলাদের পোশাকে মাথা, বক্ষ এবং গ্রীবা আবৃতকারী কাপড় থাকতে হবে :

وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ
فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ
وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ

আর হে নবী ! মু’মিন মহিলাদের বলে দাও তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত করে
রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানগুলোর হেফাজত করে আর তাদের সাজসজ্জা না দেখায়,
যা নিজে নিজে প্রকাশ হয়ে যায় তা ছাড়া ৷ আর তারা যেন তাদের ওড়নার আঁচল
দিয়ে তাদের বুক ঢেকে রাখে ৷ তারা যেন তাদের সাজসজ্জা প্রকাশ না করে ৷ আন
নূর : ৩১
কোরআনিক বিধানের পর আমরা পাই রাসুল স . সুন্নাহ থেকে পোশাকের ব্যবহারিক
সীমা । অনেকে মনে করেন রাসুলের স . পোশাক ছিল ৬ষ্ঠ শতাব্দীর আরবের
প্রচলিত পোশাক । প্রকৃত ঘটনা তা নয় ।
রাসুলের স . পোশাক এক ছিল না ।
রাসুলুল্লাহর স . পোশাক ছিল এক আল্লাহতে বিশ্বাসী তাকওয়ার পোশাক ; কিন্তু
একই আবহাওয়া ও দেশে বাস করার পরও কাফিরদের পোশাক ছিল মুশরিকি চিন্তায়
সিক্ত ।
রাসুলুল্লাহ স. এবং সাহাবিগণ যে একটিমাত্র ডিজাইনের পোশাক পরতেন এমন নয় ।
হাদিস শাস্ত্র অধ্যয়ন করলে আমরা অনেক ধরনের পোশাকের নাম দেখতে পাই । যেমন
কামিস (জামা), কাবা বা কোর্তা (কোট জাতীয় জামা), ইজার (সেলাইবিহীন
লুঙ্গি). রিদা (চাদর), তুব্বান (হাফ প্যান্ট বা হাফ পায়জামা, জাঙ্গিয়া),
জুব্বা, সারাবিল (পায়জামা, ফুলপ্যান্ট, সালোয়ার), খিমার (ওড়না), জেলবাব
ইত্যাদি । রাসুল সা. নিজেও যুদ্ধে, সফরে, অনুষ্ঠানে, ঈদগাহ, মেহমানদের
সাথে সাক্ষাতের সময় সুবিধাজনক পোশাক পরিধান করেছেন ।

রাসুল সা. কর্তৃক নির্দেশিত পোশাকের আবশ্যিক বিধান :

১ . পোশাক-পরিচ্ছদ টাইট বা আঁটসাঁট হওয়া চলবে না : অর্থাৎ পোশাক হতে হবে
ঢিলে ঢালা । এমন পোশাক পরিধান করা যাবে না, যে পোশাক পরিধান করার পরও
লজ্জাস্থানের অবয়ব বোঝা যায় । রাসূলুল্লাহ সা : ওই সব লোকদের অভিসম্পাত
করেছেন যারা পোশাক পরার পরও উলঙ্গ থাকে । পোশাক টাইট, ফিট হতে পারবে না ।
২ . এমন পাতলা বা ফিনফিনে কাপড় পড়া যাবে না যে কাপড় পরার পরও
লজ্জাস্থান দেখা যায় :
হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, যেসব মহিলা অত্যন্ত পাতলা কাপড় পরিধান করেন,
কাপড়ের ওপর দিয়ে শরীর দেখা যায় তারা জাহান্নামের কঠোর শাস্তি ভোগ করবেন ।
কাপড় পরিধান করা সত্ত্বেও তারা উলঙ্গ । সুতরাং এ ধরনের কাপড় পরিধান করলে
উলঙ্গ ও বেপর্দা থাকার গোনাহ হবে । আর এ ধরনের কাপড় পরে নামাজ পড়লে নামাজ
সহি হবে না । শামি ২/৭৭, আহসানুল ফাতাওয়া ৩/৪০৩ পোশাক পাতলা হতে পারবে না

৩ . নারী-পুরুষের এবং পুরুষ-নারীর পোশাক পরিধান করা যাবে না : এখন অনেক
ছেলেদের দেখা যায় যারা হাতে বিভিন্ন রকমের বালা পরিধান করে,কানে দুল
দেয়,গলায় মালা বা চেইন পরে, পাঞ্জাবির সাথে ওড়না পরে ইত্যাদি । অন্য
দিকে মেয়েরা তাদের নিজস্ব পোশাক পরিধানের পরিবর্তে জিন্সের প্যান্ট,
টিশার্ট, স্কিন টাইট গেঞ্জি, পাঞ্জাবি ইত্যাদি পরিধান করছে । রাসূলুল্লাহ
সা: ওই সব পুরুষকে লা’নত করেছেন যারা নারীর বেশ ধারণ করে এবং ওই সব
নারীকে লা’নত করেছেন যারা পুরুষের বেশ ধারণ করে ।
মহিলাদের পোশাক পা পর্যন্ত ঢাকা হবে । সর্বোপরি পুরুষ এবং মহিলার পোশাক
পৃথক বৈশিষ্ট্যের হতে হবে ।
৪ . পুরুষের স্বর্ণের অলঙ্কার পরা যাবে না : স্বর্ণ পুরুষের জন্য হারাম ।
অনেক ছেলেদের দেখা যায় গলায় স্বর্ণের চেইন ব্যবহার করে । হাতে স্বর্ণের
আংটি পরে । বিশেষ করে বিয়েতে মেয়ে পক্ষ ছেলেকে স্বর্ণের আংটি ও গলার
চেইন দেয় । হজরত আবু হুরাইয়া রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূল সা:
পুরুষকে স্বর্ণের আংটি পরতে নিষেধ করেছেন । শুধু আংটি নয়, পুরুষের জন্য
স্বর্ণের যেকোনো অলঙ্কার হারাম ।
৫ . পুরুষের রেশমি কাপড় পরিধান করা যাবে না : এটা পুরুষের জন্য হারাম ।
রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি দুনিয়াতে রেশমি কাপড় পরিধান
করবে আখেরাতে তার জন্য কোনো অংশ নেই । অন্য একটি হাদিসে ইরশাদ হয়েছে,
রেশমি কাপড় দুনিয়াতে কাফেরদের জন্য আর মুমিনদেরজন্য পরকালে । তাই কোনো
মুসলিম পুরুষ রেশমী পোশাক পরিধান করতে পারবে না ।
৬ . বিজাতীয় পোশাক পরিধান করা যাবে না : অন্য ধর্মাবলম্বীদের নির্ধারিত
ধর্মীয় প্রতীক ব্যবহার করে এমন পোশাক পরিধান করা জায়েজ নেই । যেমন
খ্রিষ্টানদের ক্রুশ অঙ্কিত পোশাক, হিন্দুদের মতো উল্কি আঁকা, সিঁদুর পরা
ইত্যাদি ।
রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি অন্য কোনো জাতির
অনুসরণ করবে সে সেই জাতির উম্মত হিসেবে গণ্য হবে । রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ
করেছেন, লা’নত বর্ষিত হোক সেই সব নারীর ওপর যারা উল্কি এঁকে নেয় এবং
যারা উল্কি আঁকায়, যারা চুল উঠিয়ে ফেলে, ভ্র প্লাক করে, সৌন্দর্য
বৃদ্ধির জন্য দাঁত কেটে চিকন করে, দাঁতের মধ্যে ফাঁক সৃষ্টি করে যা
আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে পরিবর্তন এনে দেয় । এক কথায় অন্য ধর্মের ধর্মীয়
পোশাক পরিধান করা যাবে না । অন্য ধর্মের ধর্মীয় পোশাক নয় এমন যে, কোনো
পোশাক ইসলামের বিধান মেনে পরিধান করা জায়েজ আছে । যেমন : শাট,প্যান্ট,
কোট , কমপিলিট ডেরেছ ইত্যাদি ।
৭ . বেশি চাকচিক্য পোশাক পরিধান করা যাবে না, যাতে বিপরীত লিঙ্গকে আকৃষ্ট
করে : নারী-পুরুষ উভয়ই পর নারী বা পর পুরুষকে আকৃষ্ট করার জন্য বেশি
চাকচিক্য পোশাক পরিধান করা যাবে না । বিশেষ করে নারীরা এ ব্যাপারে সতর্ক
থাকবে । মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘তারা যেন (নারীরা) যা সাধারণত
প্রকাশমান এমন সৌন্দর্য ছাড়া অতিরিক্ত সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে বেড়ায়
।’ আল-কুরআন পোশাক এমন হবে না যে ইবাদতের সময় মনোযোগ আকর্ষণ করে । কাপড়ে
কোনো প্রাণীর ছবি রাখা যাবে না ।
৮ . পুরুষের টাকনুর নিচে পোশাক পরিধান করা যাবে না : আজকাল অধিকাংশ
পুরুষকে দেখা যায় তারা তাদের প্যান্ট পায়ের পাতা পর্যন্ত ঝুল দেয় । এর
মধ্যে যারা নামাজি তারা নামাজের সময় তাদের প্যান্ট টাকনু পর্যন্ত
গুছিয়ে নেয় । আসলে টাকনু পর্যন্ত কাপড় পরা পুরুষদের সব সময়ের জন্য
আবশ্যক, শুধু নামাজের সময় নয় । রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, ‘যেসব
পুরুষ অহঙ্কারের (ফ্যাশনের) জন্য টাকনুর নিচে কাপড় পরে মহান আল্লাহ
কিয়ামতের দিন তাদের দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না ।’ সহী বুখারী
পুরুষের পোশাক পায়ের গিরার নিচে ঝুলানো যাবে না । পুরুষদের পোশাক পায়ের
গিরার নিচে ঝুলিয়ে পরার ক্ষেত্রে অহংকারকে অনেকে শর্ত হিসেবে মনে করেন ।
বলা হয়ে থাকে, অহংকার না থাকলে ঝুলিয়ে পরা যাবে । কিন্তু বহু হাদিস আছে,
যেখানে অহংকারকে শর্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি ।
পূর্বোক্ত পোশাকের নীতিমালা মেনে চললে বর্তমানে দেশে বিরাজমান অস্থিরতা
অনেকাংশে কমবে । টিনেজার ও যুব সমাজকে তাদের সঠিক পথে চালনা করা সহজ হবে
। তাদেরকে চারিত্রিক অবক্ষয়, ঝরে পড়া সর্বোপরি নেশা থেকে বাঁচানোর
সম্ভব হবে । তা ছাড়া আমরা আমাদের জাতি সত্তা ও ধর্মীয় সংস্কৃতি রক্ষা
করতে পারব । নচেৎ আমাদের ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণুর জন্য অপেক্ষা করতে হবে । অধিক
অস্থিরতার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ।
মহান আল্লাহ সূরা আ’রাফের ২৬ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করেছেন, ‘হে বনি-আদম !
আমি তোমাদের জন্য পোশাক অবতীর্ণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জা স্থান আবৃত করে
এবং অবতীর্ণ করেছি সাজ সজ্জার বস্ত্র এবং পরহেজগারির পোশাক, এটি
সর্বোত্তম ।’ অন্য দিকে বেহায়াপনা, বেল্লাপনা ও উলঙ্গপনাকে হারাম করা
হয়েছে । একই সূরার ৩৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘আপনি বলে দিন,
আমার পালনকর্তা প্রকাশ্য ও গোপন অশ্লীল বিষয়গুলো হারাম করেছেন । এটি
আল্লাহর কুদরতের অন্যতম নিদর্শন, যাতে তারা চিন্তা ভাবনা করে ।

কোর্ট ও টাই পড়ার হুকুম :

যদি বুখারী বা মুসলিম শরীফের পোষাক পরিচ্ছেদ অধ্যায় পড়েন তাহলে দেখবেন
কোর্ট পোষাক হিসাবে ব্যবহার করা যাবে । আর যারা বলছেন কোট পড়া যাবে না
তারা যদি বুখারি বা মুসলিম শরীফের পোষাক পরিচ্ছেদ অধ্যায় পড়েন দেখবেন
তাদের মা বোনেরা বিপদে পরে গেছেন কারন ঐ পোষাক পরিচ্ছেদ অধ্যায় এর সাথে
শাড়ী কোন ভাবে মিলাতে পারবেন না । আর সৌদি আরবে জুব্বা পরে বালুর কারনে
– (নবী সাঃ এর সময়) বালির মধ্য নামায পড়ে নামায শেষে জুব্বা ঝারা দিলে
বালু নিমিষেই চলে যেত । টাই সর্বপ্রথম ব্যাবহিত হয় চায়না ও রোমে ।
১৬১৮ – ১৬৪৮ সালে Croatian Military Frontier ফ্রান্সে এইটা ব্যবহার করা
হয় যাতে করে তারা তাদের সৈন্য চিনতে পারে । যা আজ মানুষ পোশাক হিসেবে
ব্যবহার করছে । তাই ইসলাম যে পোশাকের মূলনীতি দিয়েছে তা মেনে কোর্ট ও টাই
পড়া যায়েজ ।


সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:২৮
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×