somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

“মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুন---হাজার হাজার ডলার উপার্জন করুন” থামুন! সব কিছু জেনেশুনে ভর্তি হোন ।(একটি জনসচেতনতা মূলক পোষ্ট)

২৮ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এইচ এস সি পরীক্ষা দেবার পর সবাই চোখে রঙ্গিন চশমা দিয়ে স্বপ্ন দেখে তাড়াতাড়ি প্রতিষ্ঠা লাভ করতে । সেক্ষেত্রে অনেকেরই পছন্দে থাকে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া । পত্রিকায় রংচটা বিজ্ঞাপন দেখে আর মেরিন প্রফেশন সম্পর্কে ধারনা না থাকার কারনে অনেকেই ভর্তি হয় । দ্রুত প্রতিষ্ঠার জন্য অনেক ছাত্র বুয়েট , মেডিকেল , ঢাকা ভার্সিটির মত স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে চান্স পেয়েও ভর্তি হয় মেরিন একাডেমিতে এবং ভুল করে ।


আসুন জেনে নিই মেরিনে পড়ার খুটিনাটি---

মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং কীঃ
সমুদ্রগামী বানিজ্যিক জাহাজগুলোর নেভিগেশন, চলাচল এবং ইঞ্জিন প্রপালশন সম্পর্কিত ইঞ্জিনিয়ারিং মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং নামে পরিচিত ।এই ইঞ্জিনিয়ারিং এর ২টি ভাগ রয়েছে---
১)নটিক্যালঃ জাহাজের নেভিগেশন, স্ট্যাবিলিটি নিয়ে পড়াশুনা ।এই শাখায় পড়ে ধাপে ধাপে হয় ক্যাপ্টেন ।
২)ইঞ্জিনিয়ারিংঃ জাহাজের ইঞ্জিন প্রপালশন , মেইনটেনেন্স নিয়ে পড়াশুনা ।এই শাখায় পড়ে ধাপে ধাপে হয় চীফ ইঞ্জিনিয়ার ।
এখানে একটা ব্যাপার পরিষ্কার করা দরকার যে – বাংলাদেশ নেভী আর মেরিন এক না । মেরিনে পরে কোনো ডিফেন্স বা ফোর্সে যোগদানের কোনো সুযোগ নেই ।



কোথায় পড়া যায়ঃ
মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার একমাত্র সরকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেরিন একাডেমী । এছাড়া বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে ।মেরিন একডেমীতে চান্স না পেলে বেসরকারীতে ভর্তি হয় অনেকে ।কিন্তু সেখানে পড়তে হলে আপনাকে গুনতে হবে কমপক্ষে ১২-১৪ লাখ টাকা যেখানে সরকারীতে লাগে ৪-৫ লাখ টাকা । এরপর চাকরীর নিশ্চয়তা নিয়ে আশঙ্কা আছেই ।
কেমন পেশা মেরিনঃ
কথায় আছে “ marine profession is not for mama’s boy” । এককথায় এই পেশাটা অনেক ঝুকিপুর্ন , বিপদজনক আর থাকে অনেক মানসিক চাপ । একারনে বেতনও তুলনামুলুক বেশি । একাডেমিক লাইফে তাই সেভাবেই একজন ক্যাডেটকে প্রস্তুত করা হয় । মুলত একাডেমিক লাইফ ও জাহাজে ক্যাডেট লাইফটাই বেশি কষ্টের । তারপর মোটামোটি আরাম পাওয়া যায় । ট্রেইনি হিসেবে জাহাজে কাজ করতে মেরিন একাডেমির ৪৭ তম ব্যাচের এক ক্যাডেটের চোখ নষ্ট হয়ে যায় ।ক্যাডেট লাইফ সম্পর্কে জানতে নিচের লিঙ্ক দেখতে পারেন ।
লিংক ১
লিংক ২

চাকরীর বাজারঃ
অতীতে মেরিন প্রফেশন ছিল দারুন । চাকরীর সংকট বা বেতন নিয়ে কোনো সমস্যা ছিল না ।কিন্তু বর্তমানে অর্থনৈতিক মন্দা সহ বিভিন্ন কারনে বেতন ও চাকরীর সংখ্যা কমে গিয়েছে ।বর্তমানে মেরিন প্রফেশন যে কারণে সংকটের সম্মুখীন তা হল চাকরীর সমস্যা । বিশেষ করে একাডেমি থেকে পাশ করে বের হয়া ফ্রেশ ক্যাডেটরা চাকরী পাচ্ছেনা । সরকারী সহ বিভিন্ন বেসরকারী একাডেমী থেকে প্রতিবছর প্রায় ৮০০-১০০০ ক্যাডেট বের হচ্ছে । কিন্তু সে তুলনায় চাকরীর সংখ্যা নগন্য ।তাই পাশ করে বের হয়ে অনেকের বেকার বসে থাকতে হয় ।তাছড়া বিভিন্ন ভুয়া এজেন্ট দ্বারা প্রতারনা-ভোগান্তিতো আছেই ।
সম্প্রতি বিভিন্ন অবৈধ প্রতিষ্ঠান থেকে ভুয়া সার্টিফিকেট ইস্যু করার অভিযোগ করেছে আইএমও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে । যদি এই অভিযোগ সত্য প্রমানিত হয় তবে বাংলাদেশকে ‘হোয়াইট লিস্ট’ থেকে বাদ দিবে আইএমও । ফলে বাংলাদেশি সার্টিফিকেটধারী মেরিনারদের জন্য কোনো বিদেশী জাহাজে চাকরী করা সম্ভব হবেনা । তখন মুখ থুবরে পরবে এই প্রফেশন ।
তাছাড়া ভিসা জটিলতা তো আছেই । নিচের লিংকে দেখেতে পারেন ।
দুর্নীতি, অনিয়ম ও বিপর্যয়ঃ মেরিটাইম বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ

কারা পড়বেঃ
বেশিরভাগ পিতামাতাই মেরিন সম্পর্কে পূর্ণ ধারনা না থাকার কারণে সামর্থ্য না থাকা সত্বেও সন্তানকে পাঠান মেরিনে পড়তে । অনেকে সন্তানের দিকে তাকিয়ে জায়গা জমি বেচে দেন । পরে যখন দেখেন চাকরীর এই করুন অবস্থা তখন হতাশা আর কপাল চাপরানো ছাড়া কিছুই করার থাকেনা ।এত টাকা খরচ করে পড়ানোর পর আর অন্য কোথায়ও পড়ানো সম্ভব হয় না অনেকেরই । তাই সামর্থ্যবান পিতামাতারাই পারবেন সন্তানদের মেরিনে পড়াতে ।
অন্যান্য সব জায়গার মত এখানেও লবিং , দুর্নীতি আছে ।মামা-চাচা বা পরিচিত কেউ থাকলে জব নিয়ে কোনো টেনশন থাকেনা । তাই অর্থনৈতিক সাপোর্ট থাকলে পেশা হিসেবে মেরিন ভাল ।
দ্রুত প্রতিষ্ঠার আশায় না বরং সবকিছু জেনেশুনে যাচাই করে মেরিনে ভর্তি হোন ।

সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:২২
৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×