somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় ঠিক কোন জিনিষগুলি আমাদের আধুনিক মানুষ হয়ে উঠতে সাহায্য করেছে? - ১

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ৮:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পৃথিবীর অন্য যে কোন প্রাণীর চাইতে আলাদা মনে হলেও একটা ব্যাপারে কোন সন্দেহ নাই যে আমরা নিজেরাও প্রাণী। অন্য সব প্রাণীর মতই আমাদের রয়েছে অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, জিন, কিংবা জৈবিক অণু। আমরা এটাও জানি আমরা ঠিক কি ধরণের প্রাণী - স্তন্যপায়ী প্রাণী । বাহ্যিক দিক থেকে আমাদের শিম্পাঞ্জীর প্রচুর সাথে মিল আছে তবে আমাদের বেশ কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা অন্যসব প্রাণীদের থেকে অনেক বেশী আলাদা যেমন, কথা বলতে পারা, লিখতে পারা, জটিল মেশিন তৈরি করতে পারা ইত্যাদি। আমরা জীবন ধারণের জন্য আমাদের দুহাত ছাড়াও যন্ত্রপাতির উপর পুরোপুরি ভাবে নির্ভরশীল। কিছু আদিবাসী ছাড়া আমরা অধিকাংশ মানুষই জামাকাপড় পড়ি, শিল্পকলা উপভোগ করি এবং কোন একটি ধর্ম বিশ্বাস লালন করি। আমাদের মধ্যে আবার কিছু খারাপ গুণাবলীও আছে যা অন্য কোন প্রাণীর মধ্যে দেখা যায় না যেমন, গণহত্যা করা, অত্যাচার করে আনন্দ পাওয়া, ড্রাগ ব্যবহার করা এবং অন্য প্রজাতির প্রাণীদের নির্বংশ করা। যদিও এ সকল বৈশিষ্ট্যের অনেকগুলিই অন্যান্য বেশ কিছু প্রাণীর মধ্যে দেখা যায় তবে এ ব্যাপারে আমরা অন্য যে কোন প্রাণীকে ছাড়িয়ে এক নূতন উচ্চতায় পৌছাতে সক্ষম হয়েছি।

যদি কিছু মানুষের পোশাক খুলে, ব্যবহার্য্য সব জিনিষ সরিয়ে ফেলে, কথা বলার ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে - শুধু মুখ দিয়ে কিছু আওয়াজ করার মত সীমাবদ্ধ ক্ষমতা দিয়ে এবং দৈহিক কাঠামোতে কোনরকম পরিবর্তন না করে চিড়িয়াখানায় শিম্পাঞ্জীদের খাঁচার পাশে থাকতে দেয়া হয় তবে মানুষকে এক প্রজাতির শিম্পাঞ্জী ছাড়া আর কিছুই মনে হবে না। পার্থক্য শুধু তাদের শরীরে লোমের সংখ্যা খুবই অল্প এবং তারা সোজা হয়ে হাটতে পারে। অন্য কোন গ্রহ থেকে আসা প্রাণী বিজ্ঞানীরা আমাদের সরাসরি তৃতীয় প্রজাতির শিম্পাঞ্জী হিসাবে চিহ্নিত করবে। অন্য দুটি প্রজাতি হল জায়ারের পিগমি শিম্পাঞ্জী বা বনবো এবং ট্রপিক্যাল আফ্রিকার সাধারণ শিম্পাঞ্জী। শিম্পাঞ্জীরা শুধুমাত্র আমাদের মত দেখতেই না ওরা আমাদের মত ব্যবহারও করে থাকে। ওরা টুল তৈরি এবং ব্যবহার করতে পারে। সেগুলো আবার তাদের বাচ্চা কাচ্চাদের শিখিয়েও থাকে। অন্য প্রাণী শিকার করে, কখন কখনও নিজেদের মধ্যে খুনোখুনিও করে। ওদের নিজস্ব সংস্কৃতি আছে। কথা বলতে সক্ষম না তবে সাংকেতিক ভাষা এবং বিভিন্ন ধরনের প্রতীক ব্যবহার করে একে অন্যের সাথে ভাব-বিনিময় করতে সক্ষম। এবং কখনও কখনও বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ করে কয়েক ধাপের জটিল কিছু সমস্যার সমাধানও করতে পারে।

বাকী দুই ধরণের শিম্পাঞ্জীর সাথে আমাদের জেনেটিক মিল ৯৮ ভাগেরও বেশী। যে দুইভাগ অমিল আছে সে গুলোই আমাদের মধ্যে যাবতীয় পার্থক্য সৃষ্টিকারী বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী বলে ধারণা করা যেতে পারে। বিবর্তনের ইতিহাসের খুব স্বল্প সময়ে আমরা বেশ কিছু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গেছি যার ফলাফল আপাতদৃষ্টিতে অনেক বড়। বস্তুত পক্ষে এক লক্ষ বছর আগেও ভিনগ্রহের প্রাণী বিজ্ঞানীরা কিছু কিছু কৌতূহলোদ্দীপক আচরণ সত্ত্বেও আমাদের একটি বড় আকারের স্তন্যপায়ী প্রাণী ছাড়া আর কিছুই ভাবত না। সেই সব আচরণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল আগুন জ্বালানো এবং হাতিয়ার ব্যবহারের ক্ষমতা। ভিনগ্রহ বাসীদের কাছে এই আচরণগুলোও বিভার কিংবা বাওয়ার পাখীর আচরণের তুলনায় খুব বেশী কিছু অদ্ভুত বলে মনে হত না। কিন্তু গত এক লক্ষ বছরের মধ্যেই আমাদের মধ্যে এমন কিছু পরিবর্তন ঘটেছে যার ফলে আমরা অন্য প্রাণীদের সাথে পার্থক্য সৃষ্টিকারী এইসব অভিনবত্ব অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।

কী ছিল সেই সব গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন সমূহ?

গরিলা, ওরাং উটান, বনবো, এবং শিম্পাঞ্জীর সাথে মানুষের মিল খুঁজে পেতে জীববিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন নেই। তাদের সাথে মানুষের অস্বাভাবিক মিলগুলি একটি বাচ্চার দৃষ্টিতেও ধরা পরে। গ্রেট এপসরা আমাদের মত দক্ষতার সাথে হাতের ব্যবহার করতে পারে যা অন্যান্য প্রাণীদের ক্ষেত্রে দেখা যায় না। সবচাইতে লক্ষণীয় ব্যাপার হল তাদের মুখে বিভিন্ন রকমের আবেগের যে ছাপ পড়ে তা আমাদের কাছে খুবই পরিচিত। শুধুমাত্র বাহ্যিক সাদৃশ্যই নয় তাদের মধ্যেও সামাজিক ক্রমাধিকারতন্ত্র আছে এবং আমরা যাকে সংস্কৃতি বলি সেসবের কিছু আভাসও তাদের মাঝে দেখা যায়। এতসব মিল থাকা সত্ত্বেও আমাদের জিনোমে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কিছু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পার্থক্যই তৈরি করেছে আমাদের যত বৈসাদৃশ্যগুলো। কৃষিকাজ, ভাষা, শিল্পকলা, সঙ্গীত, প্রযুক্তি, দর্শন -- এই সব সাফল্য যা আমাদের শিম্পাঞ্জীদের থেকে খুব পরিষ্কার ভাবেই আলাদা করেছে - সেগুলো আমাদের বংশানুগতি সংকেতের মধ্যে কোন এক ভাবে আবদ্ধ হয়ে গেছে। খুব সাম্প্রতিক অতীতেও আমাদের পক্ষে এই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য গুলির কারণ নির্ণয় করা সম্ভব ছিল না। ঠিক কি কারণে আমরা সোজা হয়ে হাটতে পারি বা আমাদের জটিল মস্তিষ্কের পেছনের কারণই বা কী? এর সাথে সাথে সাথে আমদের বেশ কিছু রোগ যেমন নির্দিষ্ট ধরণের ম্যালেরিয়া, আলঝেইমার, যেগুলো শিম্পাঞ্জীদের আক্রান্ত করে না -- এগুলো আমাদের কাছে রহস্য। কিন্তু খুব দ্রুতই সেই অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। ডারউইনের সময়েরও বহু আগে থেকে প্রত্নতত্ত্ববিদরা ফসিল সংগ্রহ করে প্রাণীদের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যের এক বিশাল তথ্য ভাণ্ডার গড়ে তুলতে সমর্থ হন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল দুপায়ে হাঁটা, মস্তিষ্কের আকার, করোটির আকৃতি, মুখমণ্ডল, পেষণ দাঁত, এবং অপোজিবল বৃদ্ধাঙ্গুলি ইত্যাদি। এই সমস্ত বৈশিষ্ট্যের তুলনামূলক গবেষণা এবং বিভিন্ন প্রকার বয়স নির্ধারণী পদ্ধতি ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা এই বৈশিষ্ট্যগুলির উদ্ভবের এবং বিলুপ্ত হওয়ার সময়কাল বের করতে সমর্থ হয়েছেন এবং তৈরি করেছেন একটি বিস্তারিত জীবন বৃক্ষ যা কিনা বন মানুষ, মানুষের পূর্ব পুরুষ, এবং মানুষের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে।



৬০ লক্ষ বছর আগে মানুষের পূর্বপুরুষ শিম্পাঞ্জী এবং গরিলাদের পূর্বপুরুষ থেকে আলাদা হয়ে যায়। শুরুর সেই পূর্ব পুরুষদেরকে বন মানুষেরই আরেকটি প্রজাতি ছাড়া অন্য কিছু ভাবার অবকাশ নেই। কিন্তু পরবর্তীকালে পরপর তিনটি পরিবর্তন আমাদের কে আধুনিক মানুষ হিসাবে বিবর্তিত হওয়ার দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। প্রথমটি পরিবর্তনটি ঘটে প্রায় ৪০ লক্ষ বছর আগে যখন হাত পায়ের ফসিলের গঠন থেকে বুঝতে পারা যায় যে আমাদের পূর্ব পুরুষেরা স্বভাবগত ভাবেই দুই পায়ের উপর সোজা হয়ে হাটতে অভ্যস্ত ছিল। দ্বিতীয় পরিবর্তনটি আসে ৩০ লক্ষ বছর আগে যখন আমাদের বংশানুক্রম অন্তত: দুটি ভিন্ন ধারায় বিভক্ত হয়ে যায়। এরা হল Australopithecus Robustus - যার মাথার খুলি ছিল অত্যন্ত শক্ত এবং ভারী এবং বৃহদাকার চোয়ালের দাঁত ছিল এবং Australopithecus Africanas - যার মাথার খুলি অনেক হাল্কা ছিল এবং দাঁতগুলোও ছিল ছোট আকারের। তৃতীয় এবং বড় পরিবর্তনটি যা কিনা আমাদের পূর্ব পুরুষদের বেশী করে আধুনিক মানুষের মত এবং বনমানুষদের থেকে আলাদা করে তুলতে শুরু করে তা হচ্ছে পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার।

২৫ লক্ষ বছর আগে অস্ট্রালোপিথেকাস আফ্রিকানাসদের থেকে আলাদা হয়ে হোমো গণের প্রথম সদস্য হোমো হ্যাবিলিসদের (man the handyman) উদ্ভব ঘটে। হোমো হ্যাবিলিসরাই প্রথম আদি মানুষ যাদের হাতিয়ার ব্যবহারের সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। একেবারে শুরু দিকের এই হোমিনিনদের মস্তিষ্কের আকার ছিল শিম্পাঞ্জীদের সমান। এদের সবচাইতে বড় বিবর্তনীয় অর্জন ছিল যে এরা সোজা হয়ে দুপায়ের উপর ভর করে হাঁটতে পারত। পরবর্তী দশ লক্ষ বছরে মস্তিষ্কের আকার বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। এরপর দ্বিতীয়বারের মত আমাদের বংশানুক্রমে আরেকবার বিচ্ছিন্নতার ঘটনা ঘটে এবং হ্যাবিলিসের দুটি আলাদা প্রজাতির সৃষ্টি হয়। এদের মধ্যে হোমো হ্যাবিলিস নিজে একটি প্রজাতি আর অন্যটি হল রহস্যময় "তৃতীয় মানুষ" (The third man)। ফলে ২০ লক্ষ বছর আগে অন্ততপক্ষে দুটি এমনকি তিনটি প্রোটো হিউম্যান প্রজাতির অস্তিত্ব ছিল। সতের লক্ষ বছর আগে হোমো হ্যাবিলিসের বর্ধিত মস্তিষ্ক এবং দেহ সহ শারীরিক বৈশিষ্ট্য এতটাই আলাদা হয়ে যায় যে বিজ্ঞানীরা আমাদের সেই পূর্বপুরুষদের একটি নূতন নাম দেন, হোমো ইরেক্টাস (Homo Erectus)। ১২ লক্ষ বছর আগে অস্ট্রালোপিথেকাস রোবোস্টাসরা বিলুপ্ত হয়ে যায় আর রহস্যময় "তৃতীয় মানব"রাও ততদিনে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। উপরের এই সব ঘটনার পুরোটাই ঘটেছে আফ্রিকা মহাদেশে। এরপর ১০ লক্ষ বছর আগে হোমো হ্যাবিলিসদের উত্তর পুরুষ হোমো ইরেক্টাসরা আফ্রিকা থেকে বেরিয়ে আসে এবং ইউরোপ এবং এশিয়ার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পরে। এদের তৈরি পাথর এবং হাঁড়ের হাতিয়ার থেকে জানা যায় এরা নিকট প্রাচ্য, দূর প্রাচ্য এবং ইউরোপে পৌছাতে সমর্থ হয়েছিল। তখনো এদের মস্তিষ্কের আকার বড় হচ্ছিল এবং করোটির আকৃতি গোলাকার হয়ে আধুনিক মানুষের দিকে ধাবিত হচ্ছিল। বিবর্তনের ইতিহাসে কমপক্ষে দুইবার হোমো ইরেক্টাস এবং তাদের বংশধরদের আফ্রিকা থেকে অভিবাসনের ঘটনা ঘটে। প্রথমবার অভিবাসনের সময় এদের মধ্যে কিছু সংখ্যক যারা আফ্রিকাতেই রয়ে গিয়েছিলো তারা হোমো এরগেস্টর নামেও পরিচিত। এরাই প্রথম আগুনের নিয়ন্ত্রণ এবং আরেকটু উন্নত হাতিয়ার তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল। হোমো ইরেক্টাসরা আফ্রিকা ছেড়ে বেড়িয়ে এসে পুরনো পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পরে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ভিন্ন ভিন্ন ভূ-অঞ্চলে দীর্ঘদিন বসবাস করার ফলে এরা একে অপরের থেকে আলাদা হয়ে যেতে শুরু করে। হোমো ইরেক্টাসদের এই উত্তরসূরিরা পরবর্তীকালে হোমো এন্টিসেসর, হোমো হাইডেলবার্জেনেসিস এবং হোমো নিয়ান্ডারথালেনিস এ বিবর্তিত হয়। এই সময় এশিয়াতে পিকিং মানব এবং জাভা মানবদের অস্তিত্ব ছিল যারা "এশিয়ান" হোমো ইরেক্টাস নামেও পরিচিত । অন্যদিকে, ২ লক্ষ বছর আগে আফ্রিকাতে আধুনিক মানুষের মত দৈহিক বৈশিষ্ট্যের এক নতুন প্রজাতি হোমো সেপিয়েন্সের উদ্ভব ঘটে। প্রথম দিককার হোমো সেপিয়েন্সরা দৈহিক ভাবে আধুনিক মানুষের মত হলেও আচরণগত দিক থেকে আধুনিক মানুষের মত ছিল না। ১ লক্ষ ৩০ হাজার বছর আগে ইউরোপে দীর্ঘদিন যাবত বসবাস করার দরুন দৈহিক দিক থেকে নিয়ান্ডারথালরা ততদিনে এতটাই আলাদা হয়ে পরে যে তাদেরকে একটি আলাদা প্রজাতি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। ৭০ হাজার বছর আগে দ্বিতীয়বারের মত হোমো ইরেক্টাসদের বংশধর হোমো সেপিয়েন্স বা আধুনিক মানুষেরা যখন আফ্রিকা ছেড়ে বেড়িয়ে ইউরোপে আসে তখন ইতিমধ্যে সেখানে নিয়ান্ডারথালরা হাজার হাজার বছর ধরে টিকে আছে। ৫০ হাজার বছর আগে ইউরোপে আধুনিক মানুষদের যে নিদর্শন পাওয়া যায় তা থেকে স্পষ্টত দেখা যায় যে সেই সময় তাদের মধ্যে ভাষা, সঙ্গীত, এবং সংস্কৃতির উন্মেষ ঘটে গেছে। প্রথম প্যালিওলিথিক যুগে ইউরোপে বসবাসকারী হোমো সেপিয়েন্সদের এই দলটিকে জীব বিজ্ঞানীরা ক্রো ম্যাগনন নামেও উল্লেখ করে থাকেন।

এতক্ষণ আমরা জানলাম ফসিল রেকর্ড এবং আর্টিফ্যাক্টস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মানব বিবর্তনের ইতিহাস। এখন দেখা যাক জেনেটিক গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে আমরা কি জানতে পারি। স্মরণ রাখা কর্তব্য যে শুধুমাত্র জেনেটিক পার্থক্যই প্রজাতির সমূহের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করে না। বিজ্ঞানীরা এখন জানেন মলিকিউলার সুইচও কখনো কখনো নির্দিষ্ট জিনকে নির্দেশ দিয়ে থাকে কখন অন এবং কখন অফ হতে হবে যা প্রজাতি সমূহের মধ্যে পার্থক্য তৈরি করতে পারে।



২০০৮ সালে পেনসেলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যানসেল স্টেটম্যান এবং তার সহকর্মীরা ক্রোমোজোম ৭ এর একটি জিনে খুব ছোট্ট একটি মিউটেশন চিহ্নিত করেন যা মায়োসিন নামের একটি প্রোটিন উৎপাদন করে। এই প্রোটিনটি মাংসপেশি সংকোচনে সাহায্য করে। চোয়ালের মাংশপেশিতে এই বিশেষ মিউট্যান্ট জিনটির মায়োসিন ভ্যারিয়্যান্ট MYH16 এর অভিব্যক্তিতে বাঁধা দেয়। পেশীটি কামড় দেয়া এবং চর্বণের কাজে ব্যবহৃত হয়। গবেষকদের মতে ২০ লক্ষ বছর আগে ঘটা ছোট্ট এক মিউটেশন আমাদের চোয়ালের পেশীকে ছোট হতে সাহায্য করে যা পরবর্তীতে মস্তিষ্কের কুঠুরি এবং মস্তিষ্কের আকার বড় হতে সাহায্য করে। তবে কিছু বিজ্ঞানী এ ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করেন। তাদের মতে চোয়ালের পেশী ছোট হওয়ায় মস্তিষ্ক বড় হয়নি বরং মস্তিষ্ক বড় হয়েছে প্রাকৃতিক নির্বাচনের নিয়ম মেনে, বড় মস্তিষ্কের অধিকারীরা অতিরিক্ত বংশধর রেখে যেতে সক্ষম হয়েছে বলে। The American Journal of Human Genetics এ প্রকাশিত এক গবেষণায় ডেনভারের কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের জেমস সিকেলা এবং তার সহকর্মীরা উচ্চতর কগনিটিভ কার্য সম্পাদন এবং জটিল ও বৃহৎ আকারের মস্তিষ্কের বিবর্তনের কারণ হিসাবে DUF1220 নামে একটি প্রোটিন একককে বা প্রোটিন ডোমেইনকে চিহ্নিত করেছেন। অন্যান্য প্রাইমেটদের তুলনায় মানুষের মধ্যে এই প্রোটিন এককটির অনেক বেশী সংখ্যক অনুলিপি পাওয়া যায়। মানুষের জিনোমে DUF1220 এর ২৭০টিরও বেশী অনুলিপি আবদ্ধ থাকে। মানুষের সাথে যে প্রজাতির যত বেশী মিল সেই প্রজাতির মাঝে এই প্রোটিনটির তত বেশী অনুলিপি পাওয়া যায়। শিম্পাঞ্জিদের মাঝে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক অনুলিপি দেখা যায় যা হল ১২৫। এরপর গরিলাদের মাঝে দেখা যায় ৯৯ টি অনুলিপি। মারমোসেটস ৩০ এবং ইঁদুরের মাঝে পাওয়া যায় ১টি অনুলিপি। গবেষণায় একটা জিনিষ অত্যন্ত পরিষ্কার, তা হল যে প্রাণীর মাঝে যত বেশী DUF1220 এর অনুলিপি পাওয়া যায় সেই প্রাণীর মস্তিষ্ক তত বড় হয়। এবং এটা প্রতিটা প্রজাতির ক্ষেত্রে সত্যি এমনকি মানুষের ক্ষেত্রেও।

নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত আরেকটি গবেষণা পত্রে বিজ্ঞানীরা আরেকটি জিন চিহ্নিত করেছেন যা মস্তিষ্কের উন্নয়নে সাহায্য করে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জীব-পরিসংখ্যানবিদ ক্যাথরিন পোলার্ড এবং সোফি সালামা মানুষ সহ শিম্পাঞ্জী, এবং অন্যান্য মেরুদণ্ডী প্রাণীদের জিনোমের উপর গবেষণা চালিয়ে ৪৯টি সুনির্দিষ্ট অঞ্চল চিহ্নিত করেছেন যার নাম দিয়েছেন HARS (Human accelarated Regions)। শিম্পাঞ্জী এবং মানুষের মাঝে যে অঞ্চলটিতে সবচাইতে বেশী পার্থক্য দেখা সেটি হল HAR1। জিনের এই অংশটি মায়ের পেটে ৭ থেকে ১৯ সপ্তাহের মধ্যে শিশুর মস্তিষ্কের টিস্যুতে কার্যকর (একটিভ) থাকে। যদিও এই জিনটির সুনির্দিষ্ট কাজ এখনও পুরোপুরি জানা যায়নি তবে লক্ষণীয় ব্যাপার হল ঠিক ঐ সময়টাতেই Reelin নামক একটি প্রোটিন মানব শিশুর সেরেব্রাল কর্টেক্স গঠনে সাহায্য করে। ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলোজি (Caltech) এর একদল গবেষক National Academy of Sciences (PNAS) এ একটি গবেষণা প্রকাশ করেছেন যাতে তারা দেখাতে সক্ষম হয়েছেন যুক্তি বিন্যাস (reasoning) এবং আচরণ (behavioral) নিয়ন্ত্রণ ফ্রন্টাল লোবের বিভিন্ন অংশের উপর নির্ভরশীল। ফ্রন্টাল লোবস হল মানব মস্তিষ্কের সবচেয়ে বড় অংশ যা মানব বিবর্তনে সবচাইতে বেশি প্রসারিত হয়েছে।

এই পর্যন্ত পড়ে পাঠক যদি ভেবে থাকেন যে দৈহিক গঠন এবং বৃহদাকৃতির মস্তিষ্কই আমাদের আজকের এই উন্নতির পেছনের মূল কারণ তাহলে ভুল করবেন। তখন পর্যন্ত এটা আসলে তেমন কোন ঘটনা হয়ে ওঠেনি। গুহাচিত্র, বাড়ী বানানো, তীর ধনুক বানানো এসব তখনো লক্ষ লক্ষ বছর পরের কথা। গত দশ লক্ষ বছর আগে থেকে হোমো ইরেক্টাসরা যে সাধারণ পাথরের হাতিয়ার বানিয়ে আসছিল সেগুলোই টিকে ছিল আরও অনেকদিন। তখন পর্যন্ত হোমো সেপিয়েন্সের বর্ধিত মস্তিষ্কের আকার আমাদের জীবন ধারণে কোন রকম নাটকীয় পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়নি। আফ্রিকা মহাদেশের বাইরে সেই পুরো সময়টা হোমো ইরেক্টাস এবং হোমো সেপিয়েন্সদের কোন সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ছিল না বললেই চলে। বস্তুতপক্ষে, সেই লম্বা সময়ের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ উন্নতি ছিল আগুনের নিয়ন্ত্রণ করতে সমর্থ হওয়া। আধুনিক মানুষ হিসাবে আমাদের উত্থান আমাদের জেনেটিক পরিবর্তনের সাথে একশ ভাগ সরাসরি সম্পর্কিত না। আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যোগ করা তখনো বাকী ছিল যা কিনা তৃতীয় শিম্পাঞ্জীকে পরবর্তী কালে সিস্টিন চ্যাপেলের ছবি আঁকতে সাহায্য করবে।

হোমো সেপিয়েন্সরা এক লক্ষ পঁচিশ হাজার বছর আগে আফ্রিকা থেকে ইউরোপে এসে পৌছায়। প্রায় এক লক্ষ বছর আগে মানুষের শিকার করবার দক্ষতা সম্পর্কে পরিষ্কার প্রমাণ পাওয়া যায়। কিন্তু তখনও তা ছোট প্রাণী শিকারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। পরবর্তীকালে বড় প্রাণী শিকার শুরু করার কারণে আদিম মানুষদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, ভাষা, দলবদ্ধ জীবন যাপন, এবং খাদ্য ভাগাভাগির মত জিনিষগুলি ঘটতে শুরু করে। ৪০-৫০ হাজার বছর আগে ক্রো ম্যাগনন এবং নিয়ান্ডার্থালরা ইউরোপ এবং পশ্চিম এশিয়ায় সহাবস্থান করত। দলবদ্ধ হয়ে বসবাস এবং খাদ্য ভাগাভাগির চর্চা, এমনকি মেয়েদের শারীরিক কিছু বৈশিষ্ট্যও বড় প্রাণী শিকারের সাথে সাথে পরিবর্তিত হতে শুরু করে। অন্যান্য মেয়ে প্রাইমেটরা ওভুলেশনের সময় যে রকম বাহ্যিক শারীরিক উপসর্গ প্রদর্শন করে মানুষের ক্ষেত্রে তা গোপন হতে শুরু করে যাতে করে পুরুষদের মধ্যে যৌন প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে না যায় এবং শিকারের সময়ে পারস্পরিক সহযোগিতা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। ইউরোপের বিভিন্ন স্থানে বসবাসকারী মানব প্রজাতির মাঝে অল্প স্বল্প সাংস্কৃতিক বিকাশ দেখা গেলেও আধুনিক বুদ্ধিমত্তার বিকাশ এবং দ্রুত সাংস্কৃতিক বিপ্লব ঘটতে শুরু করার প্রমাণ পাওয়া যায় ৫০-৬০ হাজার বছর আগে। পৃথিবীর বুকে মানব ইতিহাসের এই সময়টাকে ‘গ্রেট লিপ ফরোয়ার্ড’ বলেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। 'গ্রেট লিপ ফরওয়ার্ডের' ঠিক আগে আগে পুরনো পৃথিবীর ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে কমপক্ষে তিনটি পৃথক মনুষ্য প্রজাতির বসবাস ছিল। এরা ছিল সত্যিকার অর্থেই শেষ আদিম মানুষ যারা 'গ্রেট লিপ ফরওয়ার্ডের' সময় আধুনিক মানুষ দ্বারা অপসারিত হয়ে যায়। কোথায় এদের বাস ছিল? পশ্চিম ইউরোপ থেকে শুরু করে দক্ষিণ ইউরোপের রাশিয়া এবং নিকট প্রাচ্য থেকে মধ্য এশিয়ার উজবেকিস্থান এবং আফগানিস্তানের সীমান্ত পর্যন্ত এদের বিস্তৃতি ছিল। একই সময় দেখা পাওয়া যায় নিয়ান্ডার্থালদের। এদের পেশী ছিল আজকের দিনের যে কোন মিস্টার ইউনিভার্সের তুলনায়ও অনেক বেশী শক্তিশালী বিশেষ করে কাঁধে এবং ঘাড়ে। নিয়ান্ডার্থালদের মস্তিষ্কের আকার ছিল আধুনিক মানুষের তুলনায়ও বেশ কিছুটা বড়। কিন্তু তারপরও ওরা আমাদের মত হয়ে উঠতে পারেনি। এদের হাতিয়ারগুলি ছিল খুবই সাধারণ ধরণের যা কোন বিশেষ উদ্দেশ্যকে মাথায় রেখে বানান হতনা। কোন হাঁড়ের তৈরি হাতিয়ার কিংবা তীর-ধনুক ছিল না। বড় প্রাণী শিকারে খুব সিদ্ধহস্ত ছিল না বলেই প্রমাণ পাওয়া যায়। এমনকি সেই সময় আফ্রিকায় বসবাস করা আরও আধুনিক দেহের অধিকারী হোমো সেপিয়েন্সরাও শিকারি হিসাবে খুব একটা ভাল ছিল না। ক্রো ম্যাগননদের তুলনায় জনসংখ্যার ঘনত্ব ছিল অনেক কম। তবে নিয়ান্ডার্থালরাই প্রথম নিয়মিত আগুনের ব্যবহার করত এ ব্যাপারে সন্দেহ নাই। এবং তারাই সম্ভবত প্রথম নিয়মিত ভাবে মৃতদেহ কবর দেয়া শুরু করে এবং অসুস্থ এবং বয়স্কদের দেখাশোনা করত। নিয়ান্ডারথালদের পাথুরে হাতিয়ার গুলিও ছিল খুবই বিশেষত্বহীন। তাই আধুনিক মানুষদের মত দৈহিক গঠন, বৃহদাকার মস্তিষ্ক, এবং আধুনিক জিনম থাকা সত্যেও সেগুলো কিন্তু আজকের দিনের মানুষের মত আচার-ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট ছিল না। আধুনিক মানুষের কথা ভাবলেই যে জিনিষগুলি আমাদের মানস পটে ভেসে ওঠে এরকম অনেক জিনিষেই অস্তিত্ব নিয়ান্ডার্থালদের মধ্যে অনুপস্থিত ছিল। যেমন ওরা কোন শৈল্পিক বস্তুর নিদর্শন রেখে যায়নি। ঠাণ্ডার হাত রক্ষা পাওয়ার জন্য পোশাক ব্যবহার করত তবে সেগুলোর মধ্যে কোন সৃজনশীলতা ছিল না। অনেক সময় সমুদ্রের কিংবা জলাধারের খুব কাছাকাছি বসবাস করা সত্যেও নৌকার মত কোন কিছুর প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই এটা খুব স্পষ্ট যে বৃহদাকার মস্তিষ্ক থাকা সত্বেও নিয়ান্ডার্থালদের মধ্যে নিঃসন্দেহে এমন কিছু একটার অভাব ছিল যা তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতার বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়নি।

আমরা আজকে যাকে কুল-বৃদ্ধাদের সেবা এবং বৃদ্ধ বয়স বলি সেটাও নিয়ান্ডার্থালদের মধ্যে অনুপস্থিত ছিল। তাদের ফসিল রেকর্ড থেকে বোঝা যায় পূর্ণবয়স্ক নিয়ান্ডারথাল ৩০ কিংবা ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচত। কিন্তু কোনভাবেই ৪৫ বছরের বেশী না। আমরা যদি আজকে লিখতে না পারতাম এবং আমরা কেউই যদি ৪৫ বছরের বেশী না বাঁচতাম তাহলে কল্পনাই করতে পারব না আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় জ্ঞানের সংরক্ষণ এবং তার উত্তরণ ঠিক কতটুকু হত! নিয়ান্ডার্থালদের সাথে তুলনীয় ছিল সমসাময়িক কালের আফ্রিকা থেকে আসা হোমো সেপিয়েন্সদের বর্তমান সময়ের আধুনিক মানুষের মত করোটি ছিল। এর মানে কি এই যে ১ লক্ষ বছর আগে আফ্রিকাতে মানুষের সংস্কৃতির উদ্ভব ঘটেছিল? শুনতে অবাক লাগলেও উত্তরটা হল, না। এই আধুনিক দেখতে মানুষগুলোর হাতিয়ারও ছিল নিয়ান্ডার্থালদের মত অতি সাধারণ। আর যে কারণেই তাদেরকে মধ্য প্রস্তর যুগের আফ্রিকান মানব হিসাবে উল্লেখ করা হয়। তাদের মাঝেও হাঁড়ের তৈরি হাতিয়ার, তীর ধনুক, মাছ ধরার জাল, বড়শি, শৈল্পিক বস্তু এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের অভাব ছিল। তাদের আধুনিক মানুষের মত দৈহিক বৈশিষ্ট্য থাকা সত্যেও এমন কিছু একটার অভাব ছিল যা তাদের "পরিপূর্ণ" মানুষ হয়ে ওঠা থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিল। আধুনিক জিন থাকা সত্যেও আমাদের মত আধুনিক মানুষ হতে পারেনি তারা।

১ লক্ষ বছর আগে থেকে ৫০ হাজার বছর আগে পর্যন্ত মানুষের উপস্থিতি থেকে আমরা জানি যে উত্তর ইউরোপ, সাইবেরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, সামুদ্রিক দ্বীপ সমূহ, এবং পুরো নূতন পৃথিবীতেই মানুষের কোন উপস্থিতি ছিল না। ইউরোপ এবং পশ্চিম এশিয়াতে নিয়ান্ডার্থালরা বসবাস করত। আফ্রিকায় আমাদের মত দৈহিক গড়নের এবং এশিয়াতে আফ্রিকান হোমো সেপিয়েন্স এবং নিয়ান্ডার্থালদের থেকে আলাদা ধরনের মানুষের বসবাস ছিল। এই তিন প্রজাতির মানুষই আচার আচরণ, হাতিয়ার, এবং উদ্ভাবনী শক্তির দিক থেকে খুবই সীমাবদ্ধ ছিল। তবে তৈরি হয়ে গিয়েছিল দ্য গ্রেট লিপ ফরোয়ার্ডের মঞ্চ। এদের মধ্যে থেকে কারা নিয়েছিল পরবর্তী পদক্ষেপটি

চলবে....... পর্ব ২

তথ্যসূত্র:

1. The Third Chimpanzee : The Evolution and Future of the Human Animal By Jared M. Diamond
2. How Man Began – Time Magazine March, 1994
3. Origins of Modern Humans: Multiregional or Out of Africa? – By Donald Johanson
4. What Makes us Different? By MICHAEL D. LEMONICK
5. মানুষের আয়ুষ্কালের বিবর্তন - (বিবর্তন উইকি স্পেস ডট কম)
6. Evolution of Human Brain By Ralph Holloway
7. Evolutionary Genetics: Is brain evolution still continuing in modern humans?
8. Brain's Code for Pronouncing Vowels Uncovered:
9. The Evolution of Human Speech - Its Anatomical and Neural Bases by Philip Lieberman; Brown University (Providence, RI)
10. Evolutionary Increase in Size of the Human Brain Explained:
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ২:১২
২৩টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×