somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালবাসা দিবসের গল্পঃ যে কারণে ভালবাসি বলা হয় না {শেষ পর্ব}

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের পর্বগুলার জন্য এখানে ক্লিকানঃ

প্রথম পর্ব

দ্বিতীয় পর্ব

শেষ পর্ব

দশ।
আগমন।

দুপুর ৩.১৫।
হঠাৎ চাচ্চু ছুটতে ছুটতে আসে।
-রাফসান।
-কি?
-ভদ্রমহিলা এসেছেন।
-কে?
-কে আবার? যাকে তোর বাপ দেখতে চাইছে।
-ও। কই উনি?
-ওইতো।চাচ্চু আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে।
আমি মহিলার দিকে তাকাই।বয়স হয়ত আব্বুর মত, তবে আব্বুর চেয়ে তরুণ মনে হয়। পাশে একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। উনার ছেলে? হয়তো বা। আমার চেয়ে দুতিন বছরের ছোট হবে।দুজন হাসপাতালের এক কোনায় দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছেন।
-যা।চাচ্চু বলল।
-কোথায়?আমি অবাক হয়ে জানতে চাইলাম।
-উনার সাথে কথা বল।
-কেন?
-তো উনি কি একা একা দাঁড়িয়ে থাকবেন?
-জানিনা।
-রাফসান, কথা শোন।
-কি আজিব।আমি উনার সাথে কি কথা বলব?
-পরিচিত হ।
-তাতে লাভ?
-তোদের বিপদের দিনে একজন সাহায্য করতে এসেছেন।তার কাছ থেকেও তুই লাভ চাস?চাচ্চুর কন্ঠে বিস্ময়।
আমি বলার মত কিছু খুজে পাই না।
-রাফসান।
-বল।
-আমি জানি এটা তোর জন্য কত কঠিন।এই মহিলাকে এক সময় তোর বাবা ভালবাসতেন, আজ তিনি দেখতে চাইছেন তাকে, তোর মাকে না – এটা আসলেই মেনে নেয়া যায় না।কিন্তু ওই মহিলার দিকটাও দেখ।নিজের স্বামী সংসার থাকা সত্ত্বেও তিনি তোর বাবাকে দেখতে এসেছেন- এটাও কি কম মনে হয়?
আমি এবারও চুপ।
-তোকে বেশীক্ষণ থাকতে হবে না।আমি জাস্ট ডাক্তারকে গিয়ে বলব তিনি এসেছেন।
-তারপর?
-সেটা ডাক্তারই জানেন।
-আম্মু কই?
-বাইরে?
-কেন?
-তোর মা উনার সামনে থাকবে না।
-চল।
আমি আর চাচ্চু মহিলার দিকে এগোই।
-সোহানা আপু।চাচ্চু ডাকেন।
মহিলা ফিরে তাকান।
-কি খবর? মহিলা হাসার চেষ্টা করেন, কিন্তু সে হাসি খুবই মলিন মনে হয়।
-ভাল।তোমার কি খবর?
-চলছে কোনরকম।
-এটা রাফসান।চাচ্চু আমার দিকে ইঙ্গিত করেন। ভাইয়ার ছেলে।
-কেমন আছ?আমার চুলে হাত বুলিয়ে জানতে চান তিনি।
-ভাল।আমি ছোট্ট করে জবাব দেই।
-আপু আমি আসছি।চাচ্চু বলেন।
-আচ্ছা।তিনি মাথা নেড়ে জবাব দেন।
চাচ্চু চলে যায়।মহিলা আমার দিকে তাকান।
-তুমি রাফসান?
-জ্বি?
-এটা আমার ছেলে জিসান।তিনি তার ছেলের দিকে ইঙ্গিত করেন।এবার এসএসসি দিল।
আমরা দুজন হাত মেলাই।
-তোমার মা কোথায়?
-জানিনা।
আমার জবাব শুনে উনি পুরাই অবাক।সম্ভবত আমার জবাবে উনি দুঃখ পান।উনির মুখ দেখে আমার তাই মনে হয়।
-রাফসান।
-বলেন।
-তুমি কি আমাকে ঘৃণা কর?
-ঘৃণা করার মত কিছু কি ঘটেছে?
-হয়ত ঘটেছে, হয়ত ঘটে নাই।তুমিই জান।
-জ্বি না। আমি আপনাকে ঘৃণা করি না।
-কেন?
-কারণ আমি আপনার সম্পর্কে জানলাম মাত্র একটু আগে।কারো সম্পর্কে ঘৃণা তৈরী হওয়ার জন্য একটা সময়ের দরকার।সেই সময়টাই আমি এখনো পাই নাই।
-তার মানে আরো আগে জানলে কি তুমি আমাকে ঘৃণা করতা?
-জানিনা।ভালবাসা, ঘৃণা- এগুলো সবসময় যুক্তি মানে না।
-আর তোমার মা কি আমাকে ঘৃণা করেন?
-এটা কি খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু? আমার বাবা একসময় আপনাকে ভালবাসতেন, হয়ত এখনো ভালবাসেন, তাই এখন তিনি আপনাকে দেখতে চেয়েছেন- এটাইতো আসল ব্যাপার।
মহিলা চুপ হয়ে যান।চাচ্চু দৌড়ে আসে।
-সোহানা আপু।
-বল।
-ভাইয়ার জ্ঞান ফিরছে।আস আমার সাথে।
-চল।
চাচ্চু আর মিসেস সোহানা সিসিইউতে ঢুকে পড়েন। আমি আম্মুর খোজে বাইরে বেরিয়ে আসি।
আম্মু বাগানে একা একা হাটছিল।
-আম্মু।আমি ডাকি।
আম্মু ফিরে তাকায়।
-এখানে একা একা কি কর?
-কিছু না। আয় একটু বসি।
আমি আর আম্মু বসে পড়ি।
-রাফসান।
-বল।
-ওই মহিলা আসছে?
-হ্যা।
-সাথে কেউ ছিল?
-ওনার ছেলে।
-কি বলল?
-তেমন কিছু না।
-কোথায় উনি এখন?
-সিসিইউতে।
-তোর বাপের কাছে?
-হ্যা।
-ওর জ্ঞান ফিরছে?
-চাচ্চু তো তাই বলল।
-ও।তুই ভিতরে ঢুকলিনা কেন?
-জানিনা।
-রাফসান।
-বল।
-তুই কি তোর আব্বু কে ঘৃণা করিস?
-না।
-তুই কি জানিস আজকে আমি কেন তোর পক্ষ হয়ে তোর বাপের সাথে ঝগড়া করলাম?
-না।কেন?
-কারণ তোর বাপ আমাকে না-ওই মহিলাকে ভালবাসত।যেকোন কারণেই হোক তাদের বিয়ে হয় নাই।যখন আমার বিয়ে হয় তখন আমার বয়স অনেক কম।অনেক স্বপ্ন ছিল,কিন্তু যেদিন তোর বাপ বলল সে আগে আরেকটা মেয়েকে ভালবাসত তখন যে আমার কেমন লাগছিল আমি বলে বোঝাতে পারবনা।সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল।না দেখেই ওই মহিলার প্রতি তীব্র ঘৃণা তৈরী হয়েছিল।প্রতিনিয়ত মনে হত লোকটা আমাকে না, আরেকজনকে ভালবাসে।এই অনুভূতি যে কত কষ্টের সেটা তুই বুঝতে পারবি না।সেই অনুভূতি নিয়ে আজ ২৫ বছর ধরে তার সংসার করছি।
আমি চুপ করে থাকি।
-আমার সারাটাজীবন অনেক কষ্টে কাটছে।আম্মু হঠাৎ কেদে ওঠে।তোর বাপ যখন বলল তুই সায়মাকে বিয়ে করতে পারবি না তখনই আমার মনে হল তুই যদি সায়মাকে বিয়ে না করে অন্য কোন মেয়েকে বিয়ে করিস তাহলে সেই মেয়েটাও সারাজীবন আমার মত কষ্ট পাবে।এই একই অনুভূতি নিয়ে তাকেও বছরের পর বছর কাটাতে হবে।আমি সেটা চাই না।
আমি বলার মত কিছু খুজে পাই না। কি বলব?

এগারো।
দুপুর ৩.১৫।

হঠাৎ ফোনটা বেজে অঠে।অচেনা নম্বর।
-হ্যালো আসসালামুয়ালাইকুম।
-ওয়ালাইকুমাসসালাম।
-কে বলছেন?
-এটা কি রাফসানের নম্বর?
-জ্বি।
-আপনিই রাফসান?
-জ্বি।আপনি কে?
-আমি সালমান এফ রহমান।সায়মার বাবা।
আমি অবাক।এই লোক আমার নম্বর পাইল কই?
-ওহ সরি আঙ্কেল।আপনাকে চিনতে পারি নাই।
-কোন ব্যাপার না।সায়মাকে দাও।
আমি অবাক।
–জ্বি?
-বললাম সায়মাকে দাও।বাংলা ভাষাতেই তো বললাম। বুঝতে পার নাই।
-জ্বি, বুঝতে পেরেছি।কিন্তু সমস্যা হল সায়মা এখানে নাই।
-তাই?
-জ্বি?
-তোমার এই কথা আমাকে বিশ্বাস করতে হবে?
-ইচ্ছা হলে করেন, নাহলে নাই।
-দেখো ছেলে, বেয়াদবী করবা না।
-বেয়াদবী কই করলাম? আপনি প্রশ্ন করলেন আর আমি জবাব দিলাম।ব্যস।
-দেখো ছেলে তোমার কোন ধারণা আমি কে আর আমার ক্ষমতা কদ্দূর সে সম্পর্কে।সায়মা ঘর ছেড়ে চলে গেছে।আজকের মধ্যে যদি ও ফিরে না আসে তাহলে তোমাকে আর তোমার পরিবারকে আমি জীবন্ত দাফন করব।
-ঠিক আছে। পারলে কইরেন।বেস্ট অফ লাক।
আমি লাইন কেটে দেই।
আম্মু বলে, কে?
-সায়মার বাপ।
-কি বলল?
-হুমকি দিল।
-কেন?
-সায়মা ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে গেছে।
-মানে?
-মানে ওর আব্বু বলছিল আমার সাথে কোন রিলেশন রাখলে ও ঘরে থাকতে পারবে না।তাই ও ঘর থেকে বেরিয়ে গেছে।
-ও কই এখন?
-রাস্তায়।
-সে থাকবে কোথায়?
-এখানে আসতেছে।আমাদের কাছে।
-হোয়াট?
এমন সময় একটা টেক্সী এসে থামে।তার থেকে নেমে আসে শরীফ আর সায়মা।
-ওইতো ওরা এসে গেছে।
আমি আম্মুর সাথে ওদের পরিচিয় করিয়ে দেই।ওরা আম্মুকে সালাম দেয়, আম্মু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।
-রাফসান।আম্মু আমাকে ডাকে।এদিকে আসো।
আম্মু আমাকে ওদের থেকে একটু দূরে সরিয়ে নেয়।
-এসব কি?আম্মু রাগী চোখে জানতে চায়।
-এদিকে আব্বু আমাদের রিলেশন মেনে নিবে না, ওদিকে ওর আব্বু মেনে নিবেনা। আমরা কোথায় যাব? বল আম্মু।আমি অসহায়ভাবে বলি।
আম্মু চুপ করে থাকে। আমি সায়মা আর শরীফের কাছে যাই।
-শরীফ। আমি ডাক দেই।
-বল।
-একটা কাজ করতে পারবি?
-বলে দেখ।
-তুই সায়মার ব্যাগটা নিয়ে তোর বাসায় চলে যা।আমি সময় করে ওটা তোর বাসা থেকে নিয়ে আসব।
-কেন?
-কারণ আমরা সবাই এখন হাসপাতালেই থাকব।এখানে এতবড় একটা ব্যাগ নিয়ে সায়মা বসে থাকবে নাকি?
-আচ্ছা।এই বলে শরীফ ব্যাগ নিয়ে নিজের বাসার দিকে রওয়ানা দেয়।
-আঙ্কেলের অবস্থা কিরকম?সায়মা জানতে চায়।
-জ্ঞান ফিরছে।
-তোমরা আঙ্কেলের কাছে না গিয়ে এখানে বসে আছ কেন?
-আব্বুর কাছে ছোট চাচ্চু আছে।
-ও।
-আস।আমি সায়মাকে বলি।
-কোথায়?
-আম্মুর কাছে।
-চল।
আমরা আম্মু কাছে যাই।
-তুমি সায়মা?আম্মু জিজ্ঞেস করে।
-জ্বি।সায়মা জবাব দেয়।
-তুমি রাফসানকে ভালবাস?
-জ্বি।
-গুড।বাসা ছাড়লা কেন?
-আব্বু আমাকে শর্ত দিয়েছিল হয় ঘর নাহয় রাফসান।
-আর তুমি রাফসানকে বেছে নিলা?
-জ্বি।
-তোমার সিদ্ধান্ত নিয়ে তুমি খুশি?
সায়মা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।
-আমি জানতে চাইছি তোমার কি মনে হয় তুমি ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছ?
-জ্বি।
-বাহ, ভালই।তোমার বাবা কেন এই রিলেশনে রাজি না কেন?
-আমার কাছে আব্বু কিছু ব্যাখ্যা করে নাই।তবে যদ্দুর বুঝলাম আব্বু আঙ্কেলকে চেনেন। তাই তিনি রাজি না।
আমি অবাক।বলে কি এই মেয়ে?আমার বাপের কারণে তার বাপ এই রিলেশনে রাজি না??? আব্বুও কি ঠিক একই কারণে রাজি না? তার মানে কি তারা পরস্পরকে চেনেন?
আমি বলি,আম্মু এসব কথা পরে বললে হয় না?
আম্মু বলল, না।শুরুতেই সব কিছু পরিষ্কার করে নেয়া উচিত। এতে পরে কোন ঝামেলা হয় না।
-কিন্তু......।আমি কিছু বলতে যাচ্ছিলাম।আম্মু আমাকে থামিয়ে দেয়।
-আমার কথা আমাকে শেষ করতে দাও।
আমি চুপ হয়ে যাই।
-সায়মা।
-জ্বি।
-তোমার আব্বু কি করেন?
-ব্যবসা।
-হুম।নাম কি উনার?
-সালমান এফ রহমান।
-তোমরাতো ব্যাপক ধনী পরিবার।
সায়মা চুপ।
-তুমি কি আমাদের সাথে থাকতে পারবা?
-অবশ্যই।সায়মা জোরের সাথে বলে।
-তোমার কনফিডেন্স দেখে খুশি হলাম ।
এমন সময় আমার ফোন বেজে ওঠে।চাচ্চু।
-হ্যা চাচ্চু বল।
-তোরা উপরে আয়।তোর বাপ তোদের দেখতে চাচ্ছে।
-আব্বুর অবস্থা কিরকম?
-আগের চেয়ে এখন অনেক স্টেবল।
-আমরা আসতেছি।
আমি ফোন কেটে দেই।
-কে?তোর চাচা?আম্মু জানতে চায়।
-হ্যা।
-কি বলল?
-বলল আব্বু আমাদের দেখতে চাচ্ছে।আমাদের উপরে যেতে বলছে।
আমি সায়মার দিকে তাকাই।
আম্মু বলে, সমস্যা নাই। সায়মাও আমাদের সাথে চলুক।


বার।
শেষের গল্প।

বিকাল ৪.০০।
আমি ,আম্মু আর সায়মা সিসিইউতে ঢুকি।

আব্বু বিছানায় শুয়ে আছেন।তার মুখ হাসিহাসি।তার পাশে বসে আছে চাচ্চু।তার মুখও হাসিহাসি। দুই ভাইয়ের হাসির আলোয় যেন আজ পুরা পৃথিবী আলোকিত।

আমার হঠাৎ প্রচন্ড রাগ লাগে।পুরনো প্রেমিকাকে আজ উনি দাত কেলিয়ে হাসছেন।যত্তসব। বুড়ো বয়সে এসব করতে কি লজ্জাও লাগে না?

মহিলা দাঁড়িয়ে আছেন তার ছেলে নিয়ে। আমরা ঢোকার সাথে সাথে তিনি আমাদের দিকে তাকালেন। সায়মা আর উনি চোখাচোখি হতেই হঠাৎ দুজন স্থির হয়ে গেল।

আমি অবাক। কি হল?
সায়মা হঠাৎ “আম্মু” বলে মহিলার কোলে ঝাপিয়ে পড়ল।

আমি পুরাই অবাক।এটাই তাহলে সায়মার মা??? যিনি একদা আমার বাপের প্রেমিকা ছিলেন আজ তিনি আমারই প্রেমিকার মা?

আশ্চর্য।একদিন আব্বু এই মহিলাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন,সেদিন তার বাবা রাজি ছিলেন না।আজ আমি সায়মাকে বিয়ে করতে চাই, আজ তার বাবা রাজি নয়। এভাবেই কি বারবার ইতিহাস ফিরে আসে?

সায়মার বাবা-মায়ের অনেক আগেই ডিভোর্স হয়ে গিয়েছিল।সায়মা ছিল তার বাবার কাছে আর ছোট ভাইটা তার মায়ের কাছে।মায়ের সাথে সায়মার কোন যোগাযোগ ছিল না।তাই তিনি আমাদের ব্যপারগুলো কিছুই জানতেন না। সায়মা তাকে সব খুলে বলে।মুখ দেখেই বোঝা যায় এই সম্পর্কে তার কোন আপত্তি নেই।

সায়মা বলতে থাকে। আব্বু, সায়মার আম্মু আর ছোট চাচ্চু সব মনযোগ দিয়ে শুনতে থাকে। তাদের মুখ দেখেই বোঝা যায় আমাদের সম্পর্কে আর কোন বাধা আসবে না। সালমান সাহেব যতই চেষ্টা করুন তিনি আর আমাদের কিছুই করতে পারবেন না।
আব্বুর জ্ঞান ফিরেছে,অবস্থা স্টেবল।চাচ্চুর মুখে হাসি।সায়মা তার মার কোল ফিরে পেয়েছে, তার থাকার জায়গা নিয়েও আমার এখন আর কোন টেনশন করতে হবে না।আমাদের সম্পর্ক নিয়েও কারো আর আপত্তি নাই।অবশেষে সবই আমার অনুকূলে।হ্যাপী এন্ডিং যাকে বলে।

কিন্তু এখানেই কি গল্প শেষ?
না। একজনের কথা তো আমি ভাবিইনি। আমার মা।

আমি আম্মুর দিকে ফিরে তাকাই।দুচোখ বেয়ে তার আঝোর ধারায় বৃষ্টি হতে থাকে।

কি আশ্চর্য।যে মহিলাকে আম্মু প্রাণপণে ঘৃণা করেন, যার জন্য আম্মুর সংসার কখনো সুখের হয়নি, তারই মেয়েকে কিনা আমি ভালবাসলাম, তারই জন্য আম্মু কিনা আব্বুর সাথে ঝগড়া করেছিল!!! নিয়তির কি নির্মম পরিহাস।

আম্মু হয়তো আমার জন্য সায়মাকে মেনে নেবে, সায়মার মাকে বেয়াইন ডেকে তার সাথে হাসি মুখে কথা বলবে, কিন্তু আসলেই কি আম্মু সায়মা বা তার মাকে মেনে নিতে পারবে?তাদের দেখলেই আম্মুর নিজের জীবনের সবচেয়ে কষ্টকর অধ্যায়ের কথা মনে পড়বে না?

আমি একবার সায়মার দিকে, আরেকবার আম্মুর দিকে তাকাই।দুজনকেই বলতে চাই “আমি তোমাদের প্রচন্ড ভালোবাসি” কিন্তু জীবনের এই মোড়ে দাঁড়িয়ে কাউকেই তা বলা হয় না।

সমাপ্ত


===========================================


আমার লেখা আরও কিছু গল্পঃ


গল্পঃ যে কারণে ভালবাসি বলা হয় না

গল্পঃ ভালবাসার বৃষ্টি

গল্পঃ প্রিয়তমা, তোমার জন্য... ...

গল্পঃ তোমার বসন্ত দিনে ... ...

গল্পঃ তামাশা

গল্পঃ অতিথি

সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:০৭
২৯টি মন্তব্য ৩২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×