somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আইনস্টাইনের জীবনের মজার কিছু ঘটনা

০৮ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

Special thanks "Edification" for help me.
Closely-knit confers- কাজীর বাড়ী।
ঘটনা ১
আইনস্টাইন বিশ্বখ্যাত তাঁর আপেক্ষিক তত্ত্বের জন্য। কিন্তু কে কী ভাবত তাঁর আপেক্ষিক তত্ত্ব নিয়ে? জার্মান বা ফরাসীরা? ১৯৩০-এর দশকে সরবোনে (Sorbonne) বক্তৃতা দেওয়ার সময় এ বিষয়ে বলেন, ‘যদি আমার আপেক্ষিক তত্ত্ব সত্য প্রমাণিত হয়, তবে জার্মানি আমাকে জার্মান হিসেবে দাবি করবে। আর ফ্রান্স বলবে যে আমি পুরো বিশ্বের নাগরিক। কিন্তু যদি তত্ত্বটা ভুল প্রমাণিত হয়, তবে ফ্রান্স বলবে, আমি একজন জার্মান এবং জার্মানি বলবে আমি হলাম ইহুদি।’
ঘটনা ২
একবার এক অনুষ্ঠানে আইনস্টাইনকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘আপনি একটু সহজ করে আপনার তত্ত্বটা আমাদের বোঝাবেন?’ আইনস্টাইন তখন এই গল্পটা শোনালেন। আমি একবার বন্ধুর সঙ্গে হাঁটছিলাম। বন্ধুটি ছিল অন্ধ। আমি বললাম, দুধ পানকরতে ইচ্ছা করছে। ‘দুধ?’ বন্ধুটি বলল, ‘পান করা বুঝি, কিন্তু দুধ কী জিনিস?’ ‘একটা সাদা তরল পদার্থ।’ বললাম আমি। ‘তরল আমি বুঝি, কিন্তু সাদা জিনিসটা কী?’ ‘বকের পালকের রং।’ ‘পালক আমি বুঝি, কিন্তু বক কী?’ ‘ঘাড় কুঁজো বা বাঁকানো ঘাড়ের এক পাখি।’ ‘ঘাড় সে তো বুঝি। কিন্তু এই কুঁজো কথাটার মানে কী?’ এরপর আর ধৈর্য থাকে, বলুন! আমি তার হাতটা ধরে এক ঝটকায় টানটান করলাম। বললাম, ‘এটা এখন একদম সোজা, তাই না। তারপর ধরো, কনুই বরাবর এটা ভেঙে দিলাম। এবার তোমার হাতটা যেমন আছে সেটাকেই কুঁজো বা বাঁকানো বলে, বুঝলে?’ ‘আহ্!’ অন্ধ বন্ধু বলল, ‘এবার বুঝেছি, দুধ বলতে তুমি কী বুঝিয়েছ।’
ঘটনা ৩
একবার এক ছাত্র আইনস্টাইনকে জিজ্ঞেস করল, ‘গত বছর পরীক্ষায় যেসব প্রশ্ন পড়েছিল, এবারের পরীক্ষায়ও ঠিকঠিক ওই সব প্রশ্নই পড়েছে।’ ‘ঠিক বলেছ।’ আইনস্টাইন বললেন, ‘কিন্তু এ বছরের উত্তরগুলো আগেরবারের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা!’
ঘটনা ৪
আইনস্টাইনকে প্রাচীন গণিতের ইতিহাসবিদ অটো নিউগেব্যুর বলেছেন, ‘কিংবদন্তি’। কিন্তু এই কিংবদন্তি মানুষটি তুলনামূলক দেরিতে কথা বলতে শেখেন। ফলে তাঁর মা-বাবা খুব দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। তো, একদিন রাতে খাবার টেবিলে সবাই আছেন। আইনস্টাইনও। হঠাৎ তিনি চিত্কার করে বললেন, ‘এই স্যুপটা খুবই গরম।’ উহ্, হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন মা-বাবা। ছেলের মুখে প্রথম বুলি শুনে তাঁরা আইনস্টাইনকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘এর আগে কেন তুমি কোনো কথা বলোনি?’ জবাবে আইনস্টাইন বললেন, ‘কারণ, এর আগে সবকিছু ঠিকঠাক ছিল!’
ঘটনা ৫
মানুষ মাত্রই কি ভুল হয়? নিজের ভুলভ্রান্তি নিয়ে কী ভাবতেন আইনস্টাইন? ১৯৩৫ সালে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘পড়াশোনা ও গবেষণার জন্য আপনার কী কী দরকার?’ আইনস্টাইন বললেন, ‘একটা ডেস্ক, কিছু কাগজ আর একটা পেনসিল। সঙ্গে দরকার বড় একটা ডাস্টবিন, যেখানে আমার সব ভুল করা বা ভুলে ভরা কাগজগুলো ফেলব!’
ঘটনা ৬
অনেকের কাছে অঙ্কের সমার্থক শব্দ আতঙ্ক। তো, একবার ১৫ বছর বয়সী এক তরুণী আইনস্টাইনের কাছে সাহায্য চাইল। গণিতের ওপর বাড়ির কাজ বা হোম ওয়ার্ক সে সঠিকভাবে করতে পারছিল না। তরুণীর কাছে অঙ্ক এমনিতেই আতঙ্কের নাম। আইনস্টাইন ওই তরুণীকে বলেছিলেন,‘গণিতের সমস্যা নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তা করো না। তোমার কাছে গণিত যতটা কঠিন, আমার কাছে গণিত তার চেয়েও কঠিন।’
ঘটনা ৭
১৯২১ সালে ফিলিস্তিন ভ্রমণে বেরিয়েছেন আইনস্টাইন। সেখানে ‘যুব সংঘ’ নামের এক প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন ২২ বছর বয়সী এক তরুণী। সমাজের নানা বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করছিলেন আইনস্টাইন। একবার আইনস্টাইন তাঁর কাছে জানতে চাইলেন, ‘আচ্ছা, এখানে নারী-পুরুষে সম্পর্ক কেমন?’ এ প্রশ্নশুনে ওই তরুণী লজ্জায় পড়ে গেলেন। তিনি বললেন, ‘দেখুন অধ্যাপক, এখানে কিন্তু একজন পুরুষের একটিই স্ত্রী।’ একটু হেসে তাঁর হাতখানা ধরে আইনস্টাইন বললেন, ‘না, না। আমার প্রশ্নটা ওভাবে নিয়ো না। আমরা পদার্থবিজ্ঞানীরা “সম্পর্ক” কথাটা দিয়ে সহজ কিছুকে বোঝাই। আমি আসলে জানতে চেয়েছি, এখানে কতজন নারী আর কতজন পুরুষ মানুষ।’
ঘটনা ৮
এক সহকর্মী আইনস্টাইনের কাছে একবার তাঁর টেলিফোন নম্বরটা চাইলেন। তখন আইনস্টাইন একটা টেলিফোন বই খুঁজেবের করলেন এবং সে বইতে তাঁর নম্বরটা খুঁজতে লাগলেন। তখন সহকর্মীটি বললেন,‘কী ব্যাপার, নিজের টেলিফোন নম্বরটাও মনে নেই আপনার?’ আইনস্টাইন বললেন, ‘না। তার দরকারই বা কী? যেটা আপনি বইতে পাবেন, সে তথ্যটা মুখস্থ করে মস্তিষ্ক খরচ করবেন কেন?’
ঘটনা ৯
১৯৩১ সালে চার্লি চাপলিন আমন্ত্রণ জানালেন আইনস্টাইনকে। তখন সিটি লাইটস সিনেমার স্কিনিং চলছিল চাপলিনের। তো যখন চাপলিন ও আইনস্টাইনশহরের পথ ধরে যাচ্ছিলেন, অনেক মানুষ ভিড় জমায়। চাপলিন আইনস্টাইনকে বললেন,‘সবাই আমাকে সহজেই বোঝে। এজন্যই আমার যত জনপ্রিয়তা। তা আপনাকে মানুষ এত পছন্দ করে কেন, বলতে পারেন?’ ‘আসলে’, আইনস্টাইন বলছেন, ‘কেউ আমাকে সহজে বুঝতেই পারে না বলে আমাকে এত বেশি পছন্দ করে!’
ঘটনা ১০
স্বামী সম্পর্কে কেমন ধারণা ছিল আইনস্টাইনের স্ত্রীর? তাঁর স্ত্রীকেএকবার জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্ব কি বুঝতে পারেন?’ জবাবে তিনি বললেন, ‘না, কিন্তু আমার স্বামীকে বুঝি। আমি জানি, তাঁকে বিশ্বাস করা যায়।’
ঘটনা ১১
বিখ্যাত ভাষ্কর জেকব এপস্টিন একবার আইনস্টাইনের একটি আবক্ষ মূর্তি খোদাই করছিলেন। আইনস্টাইন নিজেই মডেল হয়ে ধৈর্য ধরে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থেকে শিল্পীকে সাহায্য করতেন। সে সময় একদিন তিনি জেকবকে বলেন,’’ প্রায় শ’খানেক বিজ্ঞানী বই লিখে আমার আপেক্ষিকতা তত্ত্বটি ভুল প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে। আমার থিওরী যদি ভুল হয়, তবে এতজনের দরকারটা কী? একজন বললেই যথেষ্ট।
ঘটনা ১২
একবার বেলজিয়ামের রাণী আইনস্টাইনকে আমন্ত্রণ জানালেন তাঁর দেশ সফরের। নির্দিষ্ট দিনে আইনস্টাইনকে রাজপ্রাসাদে নিয়ে যাবার জন্য রেল স্টেশনে হাজির হল গাড়ির বহর। কিন্তু কোথায় কী? রেল স্টেশনে আইনস্টাইনকে খুঁজেই পাওয়া গেল না। ফিরে চলল গাড়্রির বহর রাজপ্রাসাদের দিকে। কিছুক্ষণ পর সাদাসিধে পোশাকে বেহালা বাজাতে বাজাতে রাজপ্রাসাদে হাজির হলেন বিজ্ঞানী আইনস্টাইন। রাণী ব্যাপারটাতে লজ্জিত হলেন। সাথে সাথে ক্ষমা প্রার্থণা করে জানালেন যে, বিজ্ঞানীকে নিয়ে আসার জন্য গাড়ি বহর রেল স্টেশনে গিয়েছিল। কিন্তু তাঁকে না পেয়ে ফিরে এসেছে। আইনস্টাইন বললেন,’’আমি ইচ্ছে করেই গাড়ি বহরকে এড়িয়ে গেছি। আর পায়ে হেঁটে বেহালা বাজাতে বাজাতে এসেছি। যদি আপনার ঐ রাজকীয় গাড়িতে আসতাম, তবে কি এভাবে বেহালা বাজাতে পারতাম? সাধারণ মানুষের মত শহরটাকে দেখে নিতে পারতাম?’’ এমনই সহজ সরল আর সাধারণ ছিলেন বিজ্ঞানী আইনস্টাইন। এত বড় বিজ্ঞানী অথচ মনে এতটুকু অহংকার ছিল না।
ঘটনা ১৩
আইনস্টাইন যে কত সহজ সরল ছিলেন তা বোঝা যায় তাঁর আরেকটি মজার ঘটনায়। আপেক্ষিকতা তত্ব আবিষ্কার করে তিনি তখন বিখ্যাত ও বিতর্কিত। সত্যি কথা বলতে কি, বিজ্ঞানী-অবিজ্ঞানী কারোর মগজের এন্টেনাই ব্যাপারটা ক্যাচ করতে পারছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা সেমিনারে, বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর উদ্ভাবিত তত্ত্বটি বোঝাতে লেকচার দিতে যেতেন। প্রায় সব সেমিনারে তিনি একই ধরনের আলোচনা করতেন। একবার এমনি এক সেমিনারে তিনি আমন্ত্রিত হয়েছেন, লেকচার দেবার জন্য। পথিমধ্যে তাঁর ড্রাইভার করে বসল এক আজব আবদার।বলল, ‘’স্যার, আপনার লেকচারগুলু শুনতে শুনতে আমার মুখস্থ হয়ে গেছে। আজ একদিনের জন্য আমি আইনস্টাইন সেজে সেমিনারে বক্তব্য চাই।‘’ মজার মানুষ আইনস্টাইনেরও কথাটা খুব মনে ধরল। তিনি এক কথায় রাজি। দেখাই যাক না, ব্যাপারটা কী হয়? তো, ড্রাইভার আইনস্টাইন সেজে অনুষ্ঠানে গেল বক্তব্য দিতে আর স্বয়ং আইনস্টাইন দর্শক সারিতে বসে রইলেন আইনস্টাইনেরই ড্রাইভার হয়ে। তখন তো আর মিডিয়ার এত দৌরাত্ন্য ছিল না। তাই ব্যপারটা কেউ বুঝতে পারল না। আইনস্টাইনরূপী ড্রাইভার মঞ্চে বক্তব্য রাখল এবং চমৎকার বক্তব্য রাখল।দর্শক সারিতে বসে মুগ্ধ আইনস্টাইন বার বার হাত তালি দিতে লাগলেন।অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত একজন আইনস্টাইনের ড্রাইভারের কাছে যেয়ে বললেন, ‘আপনার বক্তব্যটি আমার খুব ভাল লেগেছে। কিন্তু কি জানেন, আমি এই অমুক অমুক বিষয়গুলু একদম বুঝতে পারিনি। আপনি কি অনুগ্রহ করে আমাকে বিষয়গুলু বুঝিয়ে দেবেন?’ আইনস্টাইনের ড্রাইভার বিন্দু মাত্র না ঘাবড়ে উত্তর দিল,’ওহ! এই ব্যাপার? এই ব্যাপারটা তো আমার ড্রাইভারই বুঝিয়ে দিতে পারবে। চলুন, তার কাছেই যাই।
ঘটনা ১৪
একবার আইনস্টাইনকে সফলতা লাভের একটি গাণিতিক ফর্মুলা দিতে বলা হল। তিনি বলেছিলেন,’’ X+Y+Z=A, যেখানে X=কাজ, Y=খেলাধুলা আর A=সফলতা।‘ ‘আর মানে Z কী?’ আবারও জিজ্ঞেস করা হল তাঁকে। ’তোমার মুখ বন্ধ রাখা’, আইনস্টাইনের উত্তর।
ঘটনা ১৫
আইনস্টাইন তাঁর জটিল আপেক্ষিকতার তত্ত্বের একটি সহজ ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন ঠিক এইভাবে,’ যখন তুমি একজন সুন্দরী মহিলার পাশে বসে থাকো তখন দু’ঘণ্টাকে মনে হয় দু’ মিনিট; আর যখন তুমি দু’ মিনিট গরম চুলার পাশে বসে থাকো তখন দু’মিনিটকে মনে হয় দু ঘণ্টা। এটাই হল আপেক্ষিকতাবাদ। ‘আর রেডিও সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছেন, ‘তুমি টেলিগ্রাফের তার দেখেছ। মনে করো, এটা লম্বা, অনেক লম্বা একটা বিড়াল।তুমি নিউইয়র্কে বসে এর লেজে টান দেবে, ওদিকে লস এঞ্জেলেসে এর মাথা মিউ মিউ করে উঠবে।ব্যাপারটা বুঝতে পারছ? বেতার ঠিক এভাবেই কাজ করে। তুমি এদিকে ইশারা দাও, ওদিকে সাড়া পড়ে। পার্থক্য হল এই বেতারের ক্ষেত্রে বিড়াল বলে কিছু উপস্থিত নেই।
ঘটনা ১৬
এত সুন্দর ব্যাখ্যা যিনি দিতে পারেন, তিনি কিন্তু অনেক সময় জীবনের সহজ ব্যাপারগুলো বুঝতে পারতেন না। একবার আইনস্টাইন বাড়ি বানালেন। একদিন তিনি বাড়িটা কেমন হল তা দেখতে গেলেন। ঘুরে ঘুরে সব দেখে তিনি জানতে চাইলেন, তাঁর ছোট্ট বিড়ালছানাটি ঘরে ঢুকবে কি করে? তার জন্য তো কোন আলাদা ছোট দরজা বানানো হয় নি। আসলে যাঁরা অনেক বড় মানুষ, তাঁরা সব সময় বড় বড় চিন্তায় মগ্ন থাকেন তো, তাই ছোট ছোট ব্যাপারগুলো তাঁরা অনেক সময় বুঝতে পারেন না। বিজ্ঞানী আইনস্টাইনও এই ছোট্ট ব্যাপারটা কিছুতেই বুঝতে পারলেন না।অবশেষে তাঁকে খুশি করার জন্য বড় দরজার পাশে আরেকটি ছোট দরজা তৈরি করে দেওয়া হল, যেন তাঁর আদরের বেড়ালছানাটি নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারে। অবশ্য শেষ পর্যন্ত বেড়ালছানাটি কোন দরজা ব্যবহার করত তা আইনস্টাইনই ভাল বলতে পারবেন।
ঘটনা ১৭
গুজব আছে, সুন্দরী অভিনেত্রী মেরিলিন মনেরো আইনস্টাইনের প্রতি দুর্বল ছিলেন। তাই একদিন মনেরো আইনস্টাইনকে বিয়ের প্রস্তাব দিলেন এইভাবে, ‘’চলুন না, আমরা বিয়ে করে ফেলি? তাহলে আমাদের সন্তানেরা হবে সৌন্দর্য ও জ্ঞানে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সন্তান। ওরা দেখতে আমার মত আর বুদ্ধিতে আপনার মত।‘’ আইনস্টাইন তৎক্ষণাৎ বললেন, ‘’আর যদি উল্টোটা হয়? দেখতে আমার মত আর বুদ্ধিতে আপনার মত?‘’ এর উত্তরে মনেরো কী বলেছিলেন তা অবশ্য আমি অনেক চেষ্টা করেও জানতে পারিনি।
ঘটনা ১৮
তিন হাজার শব্দের মধ্যে আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব যে সবচেয়ে ভালো ব্যাখ্যা করতে পারবে, তার জন্য মোটা অঙ্কের পুরস্কার ঘোষণা করে সায়েন্টিফিক আমেরিকান। ‘বন্ধুদের মধ্যে কেবল আমিই অংশ নিইনি। আমার বিশ্বাস হয়নি তিন হাজার শব্দে এটা ভালো বোঝাতে পারতাম আমি’−মন্তব্য করেন আইনস্টাইন।
ঘটনা ১৯
কাজে যাওয়ার আগে প্রায়ই ভালো পোশাক পরে যাওয়ার আইনস্টাইনকে অনুরোধ-উপরোধ করতেন তাঁর স্ত্রী। বেশির ভাগ সময়ই তিনি জবাব দিতেন, ‘আমি কেন এটা করব? সেখানে সবাই আমাকে চেনে।’ তারপর আইনস্টাইনের প্রথম বড় ধরনের আলোচনা সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় যখন ঘনিয়ে এল, তখন আবার তাঁকে একটু ভালো কাপড়চোপড় পরে সেখানে যাওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করতে লাগলেন তাঁর স্ত্রী। এবার তিনি জবাব দিলেন, ‘কেন আমি এটা করব? সেখানে কেউই তো আমাকে চেনে না।’
ঘটনা ২০
১৯৩৫ সালে প্রিন্সটনে পৌঁছানোর পর গবেষণার জন্য তাঁর কী কী প্রয়োজন হবে জিজ্ঞেস করা হলে আইনস্টাইন জানালেন, ‘একটি ডেস্ক, কিছু প্যাড, একটা পেন্সিল আর সব শেষে আমার ভুলগুলো ফেলার জন্য বিশাল একটা ময়লার ঝুড়ি।
ঘটনা ২১
মাউন্ট উইলসন মানমন্দির পরিদর্শনে গেছেন আইনস্টাইনের স্ত্রী। সেখানকার বিশাল অপটিক্যাল টেলিস্কোপটি ছিল পৃথিবীর বৃহত্তম। এক জ্যোতির্বিদ তাঁকে জানালেন, এসব স্পর্শকাতর যন্ত্রপাতির প্রধান কাজ মহাবিশ্বের বিস্তার, আকৃতি নির্ণয়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বলে উঠলেন, ‘ও! আমার স্বামী তো পুরোনো একটা খামের পেছনেই এটা করে।
ঘটনা ২২
অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথিদের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার চমৎকার এক বুদ্ধি বের করেন আইনস্টাইন। বাড়িতে কেউ আসার কিছু সময় পরই এক বাটি স্যুপ নিয়ে কামরায় ঢোকে এক গৃহপরিচারক। যদি তিনি এটা গ্রহণ করেন, তবে অতিথি ধরে নেন তিনি এখন খাবেন এবং মানে মানে কেটে পড়াই তাঁর জন্য শ্রেয়। অন্যদিকে আইনস্টাইনের যদি কথা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা হয়, তবে স্যুপটা এক পাশে সরিয়ে দেন, যেন-বা এটা এখানে ছিলই না।
ঘটনা ২৩
১৯৩০ সালে আমেরিকার উদ্দেশে বার্লিন ত্যাগ করেন আইনস্টাইন। বার্লিন রেলস্টেশনে পৌঁছেই স্ত্রীকে হারিয়ে ফেলেন তিনি। যা হোক, একসময় খুঁজে পেলেন তাঁকে। তারপরই টিকিট জোড়া হারিয়ে বসলেন। শেষ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া গেল তাও, আর এভাবেই শুরু হলো তাঁর দ্বিতীয় আমেরিকা যাত্রা।
ঘটনা ২৪
ভবিষ্যতে কী আছে? আলবার্ট আইনস্টাইনের কাছে একবার জানতে চাওয়া হয়েছিল। জবাবে নিরাসক্ত ভঙ্গিতে আইনস্টাইন বলেছিলেন, ‘ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি কখনোই চিন্তা করি না। কারণ, এটা এমনিতেও তাড়াতাড়িই আসে।
ঘটনা ২৫
বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মেধাবীদের অন্যতম আলবার্ট আইনস্টাইন। আপেক্ষিকতা তত্ত্ব (The Theory of Relativity) আবিষ্কারের জন্য তিনি আমাদের কাছে সর্বাধিক পরিচিত। মজার ব্যাপার তিনি কিন্তু তাঁর এই আবিষ্কারের জন্য নোবেল পুরষ্কার পাননি। বলা হয়ে থাকে পৃথিবীতে হাতে গোণা কয়েকজন মাত্র বিজ্ঞানী তাঁর এই তত্ত্বটি বুঝতে পারেন। কেউ যদি এই আপেক্ষিকতার তত্ত্বটি পড়ে বলে, ‘’বুঝেছি’’ তাহলে নাকি বুঝতে হবে যে, সে কিছুই বুঝেনি। তত্ত্বটি এত গোলমেলে যে, এটি না বোঝাই স্বাভাবিক, বুঝতে পারাটাই যেন অস্বাভাবিক। আর তাই হয়ত রয়েল সুইডিশ একাডেমির জুরিবোর্ড আইন্সটাইনের তত্ত্বটির নিগূঢ় অর্থটি বুঝাতে পারেনি। তাই সে বছর নোবেল পুরষ্কার আইনস্টাইনের কপালে না জুটলেও ১৯২১ সালে আলোক তড়িৎ ক্রিয়া (Photo Electric Effect) ব্যাখ্যা করে, তিনি পেলেন পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার।
ঘটনা ২৬
এক পার্টিতে আইনস্টাইনকে চিনতে না পেরে এক তরুণী প্রশ্ন করলেন, আপনি কি করেন? আইনস্টাইন উত্তর দিলেন, আমি পদার্থ বিঙ্গানের ছাত্র। তরুণী অবাক হয়ে বললেন, আপনি এখনও ছাত্র! আর আমি গত বছর পাশ করেছি..
ঘটনা ২৭
আইনস্টাইন এর মেয়ের বিয়ে। সবাই চার্চে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে উনি উনার মেয়েকে বললেন তুমি চার্চের দিকে যাও আমি ল্যাবে আমার কলমটা রেখে আসতাছি। মেয়ে অনেক বারন করা সত্বেও উনি গেলেন, ৩০ মিনিটের কথা বলে উনি যখন না এলেন তখন সবাই মিলে উনার মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিলেন। ৭ দিন পর উনার মেয়ে যখন বাসায় এসে মাকে জিজ্ঞাস করলো বাবা কোথায় তখন তার মা বলল ওই যে গেল আর আসে নাই। তখন উনি আইনস্টাইন এর খোজে ল্যাবে গেল। ল্যাবে গিয়ে দেখল যে তার বাবা একটা কলম নিয়ে বোর্ড এর সামনে গিয়ে কি জানি চিন্তা করছিল। মেয়ে বাবা কে বলল বাবা কি কর। তখন উনি বলল যে মা তুমি চার্চে যাও আমি এই কাজ টা ১০ মিনিটের মধ্যে শেষ করে আসছি।
ঘটনা ২৮
আপেক্ষিকতা তত্ত্বের মত রহস্যময়তার মধ্যেই মৃত্যু ঘটে বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের। তাঁর মৃত্যুর সময় তিনি তাঁর মাতৃভাষা জার্মানে কিছু একটা বলে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।তখন তাঁর পাশে থাকা আমেরিকান নার্স কথাটির বিন্দু বিসর্গও বুঝতে পারেনি। মৃত্যুর আগে শেষ কী কথা তিনি বলে গেছেন, তা আমাদের জানা হবে না আর কোন দিন।

আইনস্টাইন সাহেবের লাইফে অনেক মজার মজার ঘটনা আছে। যদিও ব্যাক্তি আইনস্টাইন কে আমার যতটা না কঠীন মনে হত আমার কাছে, কয়দিন ধরে উনার উপর গবেষনা করে অনেক সহজ লোক মনে হচ্ছে। যদিও ব্যাক্তি অনির্ণেয় উনার বিশ্বখ্যাত আপেক্ষিক তত্ত্বের ক’টা ও বুঝতে পারি নি।






সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:৫১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

টের পেলে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৭

টের পেলে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

টের পেলে গুটিয়ে যায় লজ্জাবতী/ পরিপূর্ণ যৌবনে যুবতীর নিখুঁত অনুভূতি। আমার চাওয়া, ইচ্ছে, স্বপ্ন! আমার পছন্দ বুঝদার, সুন্দর হৃদয়ের রূপ! সৌন্দর্য সুন্দর যা চিরন্তন সত্য। কিন্তু সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের চার খলিফার ধারাবাহিকতা কে নির্ধারণ করেছেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৭




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব)... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×