somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি বানোয়াট ভূতের গল্প

২৫ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১২:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পরীক্ষা শেষ। এক মাসের মত বন্ধ। বাসায় ও যেতে ইচ্ছা করছে না। তাই কয়েকদিন হলে পড়ে আছি বাউন্ডুলের মত আমরা কজন।
সন্ধ্যায় বদরুল বলল,চল শহিদুল্লাহ হলের পুকুর পাড়ে গিয়ে বসি। সারাদিন রুমে বসে থেকে ল্যাপটপ আর মোবাইল টিপতে টিপতে হাত আর মাথা দুইটাই ব্যথা হয়ে গেছে।তাই আমরা চারজন বের হলাম। সন্ধ্যা থেকেই টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছিল। শহিদমিনারের আশেপাশে ঘোরাঘুরির পর রাতের খাবার সেরে যখন পুকুরপাড়ে বসলাম তখন রাত দশটার মত। পরিবেশটাই ছিল গল্প জমে উঠার মত। ভূতেরগল্প।একথা ওকথা বলতে তাই কখন যে ভূতের গল্পশুরু হয়ে গেল খেয়ালই করি নি।আর ভূতেরগল্প হল চেইনরিএকশনের মত। একজনেরটা শুনে আরেক জনের মনে পড়ে যায় তার খালার শাশুড়ীর ভায়ের ঘটনা, মামার বন্ধুর শালার ঘটনা, ফুফাতো বোনের জাএর বোনের ঘটনা ইত্যাদি ইত্যাদি। সবই এক্কেবারে সত্যি!!! ওদের নিজ চোখে দেখা! গল্পে গল্পে কখন যে সময় চলে যাচ্ছিল খেয়াল করিনি। হটাৎ লক্ষ্য হল যে আশপাশটা সুনসান হয়ে এসেছে। বদরুল বলল, রাততো কম হল না। এইবার উঠলে হয়না? তাছাড়া চারপাশটা ও খালি হয়ে এসেছে।
বদরুল আমাদের মধ্যে সবচেয়ে ভীতু। ওকে একটু ভয় পাইয়ে দেয়ার জন্য আমি বললাম, তাছাড়া এই পুকুরটারও কিন্তু বদনাম আছে, অলরেডি এখানে বেশ কয়েকজন মারা গিয়েছে। আমার কথায় বদরুল বেশ ভয় পাচ্ছিল দেখে স্যার*( আমাদের যে রুমমেটটা সবসময় একটু পন্ডিতের মত কথা বলে আর সব বিষয়ে সিরিয়াস ,ওকে আমরা স্যার ডাকি) বলল, আরে সাঁতার না জেনে পুকুরে নামলেতো মরবেই। এই কথাগুলো বলতে বলতে আমরা গেইটের দিকে যাচ্ছিলাম। গেইটে পৌঁছে দেখি গেইট বন্ধ। আমরা একটু অবাক হলাম ।ছেলেদের হলের গেইট সাধারণত বন্ধ থাকে না। একটু চিন্তিত হয়েও পড়লাম। তখন দেখি দূর থেকে একজন লোক আসছে। হাতে একটা পুটলি। অন্ধকারে চেহারা ঠিক দেখা যাচ্ছিল না। লোকটা এসে বলল, আপনারা ??
আমরা বললাম, আমরা পুকুরপারে ঘুরতে এসেছিলাম।এখন নিজেদের হলে ফিরে যেতে চাচ্ছি। কিন্তু গেইট বন্ধ। লোকটা বলল, আমি এইখানকার একজন দারোয়ান। এই গেইটতো রাতে আর খোলা যাবে না। তবে আমি কার্জন হলের ভিতর দিয়ে একটা রাস্তা জানি। আপনারা সেখান দিয়ে দেয়াল টপকিয়ে বেরিয়ে যেতে পারবেন। তবে আগে আমি রাতের খাবারটা সেরে নেই।
কি আর করা? লোকটা অই অন্ধকারের মধ্যেই একপাশে বসে পুটলি খুলে খাওয়া শুরু করল। আমাদের মধ্যে ,ছদরুলএর আবার খাই খাই স্বভাব। কাউকে খেতে দেখলেই ওর খিদা চাগিয়ে ওঠে। লোকটার খাবার শব্দ শুনে মনে হচ্ছিল লোকটা মনে হয় হাড় জাতীয় কিছু খাচ্ছিল।কিংবা চিপস। ছদরুল বলল, মামা কি খাচ্ছেন?আমাককে ও একটুদিন। আমি দাম দিয়ে দেব। লোকটা তখন বলে উঠলো, সব খাবার কি আর দাম দিয়ে কেনা যায়? আমার কাছে লোকটার আচরণটা অদ্ভুত লাগছিল। তাই ওকে আর না ঘাঁটাতে ছদরুলকে ইশারা করলাম। ভালোয় ভালোয় আমাদের কে বের করে দুক। খাওয়া শেষে লোকটা কিছু না বলেই হাঁটা শুরু করে দিল। কি আর করা। আমরা ও অনুসরণ করতে লাগলাম। কার্জন হলের জায়গাটা আলো আঁধারীতে ঘেরা। এর মধ্যে লোকটার পিছু পিছু হাঁটতে লাগলাম। লোকটা বেশ দ্রুত আর আগে আগে হাঁটছিল। এইভাবে আমারা অনেকক্ষণ হাঁটলাম। কার্জনহলে বেশকয়েকটা ভবন আছে জানতাম। তাই বলে এত্ত!! আমার মনে হচ্ছিল আমরা মনে হয় পঞ্চাশ ষাটটা ভবন ফেলে এসেছি। শেষে আর না পেরে বদরুল বলল, মামা আর কতদূর?
লোকটা কোন জবাব না দিয়ে বেশ গাছপালা ঘেরা একটা রাস্তার মধ্যে ঢুকল। আমরা ও দৌড়ে রাস্তাটাতে উঠলাম। কিন্তু লোকটাকে হারিয়ে ফেললাম। আশপাশে তাকাতেই খেয়াল হল যে আকাশ ফর্সা হয়ে এসেছে। দূরে কোথায় যেন ফজরের আযান ও শোনা গেলো। অই রাস্তা ধরে এগোতে থাকলাম। একটু পরেই একলোককে জগিং করতে দেখলাম। ছদরুল জিজ্ঞেস করল, ভাই এটা কোন জায়গা?
_" রমনা পার্ক!! কেন, ঘুরতে এলে আর নাম জানো না? সকাল বেলাতেই কি মালটাল খেলে নাকি? " লোকটা বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞেস করল।
বি ঃদ্রঃ গল্পের শিরোনামেই বলা হয়েছে এটা একটা বানোয়াট ভূতে গল্প। গল্পের কাহিনি আমার অনুর্বর মস্তিস্কের কল্পনা। গল্পে ব্যবহার করা পুকুরপাড় আমার দেখা সের পুকুরপাড় গুলোর মধ্যে একটি। সুতরাং এই কাহিনীকে বেশি গুরুত্ব দেবার কিছু নাই।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১২:৪০
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×