আমার ও অপ্সরার রিলেশনের বয়স হয়েছিলো ছয় বছর।মন থেকে ভালোবাসতাম অপ্সরাকে। লোকে মুখে শুনে আসছি,জীবনে ভালবাসা নাকী একবারই আসে! হয়ত তাই অপ্সরাকে এতো ভালোবাসি আমি।আমাদের মাঝে প্রতিদান মিষ্টি ঝগড়া হতো।আমার সাথে ঝগড়া না করলে নাকী ভালোই লাগে না! প্রতিদিন দুঘণ্টা করে রিকশা করে ঘুরতাম দুজন। অপ্সরা ভাল ঘরের মেয়ে ও ভাল মেয়ে।পড়াশুনাতে ফাস্ট ক্লাস।আমার মেধা ও উদাস চাহনিতে সহজেই আকৃষ্ট হয় অপ্সরা। আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসে! তার জীবনে আমি প্রথম পুরুষ ছিলাম।দুজন রমনায় বসে কত যে দশ টাকার বাদাম কিনে খেয়েছি! বৃষ্টির মধ্যে কত যে, সংসদ ভবনের সামনে খালি পায়ে দুজন দুজনার হাত ধরে হেটেছি।আমাকে না দেখে থাকতেই পাড়তো না। একদিন মজা করে বলেছিলাম,আমি আর ১০ বছর বাঁঁচবো।এই কথা শুনে শিশুদের মতো ফুঁপিয়ে, ফুঁপিয়ে কান্না শুরু করে দিলো।অনেক কষ্ট করে কান্না থামিয়েছিলাম। আমার সাথে বসে"চা"খেতে ভালোবাসতো অনেক।ঘুরতে বের হলেই "চা"খেতাম দুজন দাঁড়িয়ে থেকে।
আমি অপ্সরাকে ভালোবাসাতাম অনেক এটা ঠিক ছিলো। কিন্তু আমি চারিত্রিক দিগ থেকে ভাল ছিলাম না। আমি অপ্সরাকে ছাড়াও অনেক মেয়ের সাথে মেলামেশা করে বেড়াতাম। অপ্সরা তা জানতো।এসব কথা জেনেও কখনো রাগ করেনি। শুধু বলতো, শুধু -শুধু মেয়েগুলোকে এভাবে কষ্ট দাও কেন? ওরা কিন্তু অনেক কষ্ট পাই।অভিশাপ লাগবে।
আমি যতো যাই কিছুই করিনা কেন,দিনশেষে অপ্সরাকে এসে সব বলতাম। কোন মেয়ের সাথে কি করছি, কোথায় ঘুরছি সব। অপ্সরা জানতো,আমি তাকে ছাড়া কাউকেই ভালোবাসি না।তাই কখনো রাগ করেনি। তবে অনেক বলেছে,এগুলা ছেড়ে দাও মামুন। এগুলা ভাল না। আমি তখন মাথা নাড়িয়ে নিশ্চুপ থাকতাম। মাসে ২-৩বার ফ্লাটিং না করলে আমার চলতো না। আমি মাসে ১-২বার করে পতিতালয়ে যেতাম।আমার এটা বদ অভ্যাস। তবে অপ্সরাকে কখনওই ওই চোখে দেখিনি। এমনকি বিয়ের আগে তার সাথে ফ্লাটিং করার কথা ভুলেও ভাবিনি কখনো। অপ্সরা ছাড়া যতগুলো মেয়ের সাথে মেলামেশা করেছি তাদের সবার সাথেই ফ্লাটিং করেছি।
একদিন বিকেলবেলা রমনায় বসে আমার বদ অভ্যাসের সব কথা বলে দিলাম অপ্সরাকে। অপ্সরা নিশ্চুপ ছিলো।চোখের কোণে জল জমে ছিল।অপ্সরা কোন কথা না বলে উঠে চলে গেল।পরে অনেকবার কল দিয়েছি কিন্তু ধরেনি। দুদিন পড় মোবাইল অফ পেলাম! তাই সাহস করে বাসায় খোজ করতে গিয়ে শুনি, দুদিন হলো অপ্সরাকে পাওয়া যাচ্ছে না।আমার গলা শুকিয়ে গেল।অনেক খুজলাম কিন্তু কোথাও পেলাম না! ভালোবাসার মানুষকে হারালে কত কষ্ট লাগে সেদিন অনুভব করলাম।আমি কত মেয়েকে না এভাবে কষ্ট দিয়ে আসছি।
৪ বছর পর................
এখনো আমার বদ অভ্যাস বদলায়নি! এখনো মাসে ২-৩ বার করে পতিতালয়ে যায়। কত পতিতাকে যে এখন পযন্ত ভোগ করেছি তার হিসেব নেই! আর দিতেও পারবো না।বরাবরের মতো আজকেও পতিতালয়ে এসেছি। টিকেট কেটে সোজা রুমের মধ্যে ঢুকে পড়লাম।রুমের মধ্যে ঢুকেই সবকিছু নিশ্চুপ হয়ে গেল! আমার অপ্সরা। কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলাম না।অনেক শুকিয়ে গেছে। অপ্সরাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুর করলাম।অনেক আকুতি-মিনতি করলাম কিন্তু ফেরাতে পাড়লাম না। আমার যে বদ অভ্যাসের জন্য অপ্সরা আমাকে আর পরিবারকে রেখে ৪ বছর আগে চলে এসেছে আজ সেই খানেই দেখা।কোন মুখে তাকে ফিরিয়ে নিতে চাইছি? হয়ত সেদিন অভিমান করে চলে এসেছিলো। কিন্তু সেদিন আমার পতিতালয়ে আসার কথা শুনে এতোটা কষ্ট পাবে জানতাম না! কাছের মানুষ অন্যের সাথে বিছানা শেয়ার করলে কেমন লাগে সেটা বুঝাতেই হয়ত আজ এই পথ বেছে নিয়েছে অপ্সরা। আমি যেমন তাকে ভার্জিন হিসেবে পেতে চেয়েছিলাম। অপ্সরা হয়তো আমাকে ভার্জিন হিসেবে পেতে চেয়েছিলো। নিজের ঘরের মানুষ অন্য মেয়ের সাথে রাত কাটাবে এটা পৃথিবীর কোন নাড়ী শয্য করে নিতে পাড়বে না। অপ্সরাও পাড়েনি..............................।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৭