চিত্রঃ ডি.এন.এ (গুগল)
পড়ছিলাম অ্যান্টিডোট যার লেখক আশরাফুল আলম সাকিফ ভাই। একটা শিরোনামে এসে খুব বেশী কষ্ট পোহাতে হল । শিরোনামটি "আমরা কি সত্যিই বিবর্তিত?" নামক। মোটামুটিভাবে লেখার বিষয়বস্তু বুঝেছি কিন্তু বায়োলোজিকাল টার্মগুলো আসলেই খুব কষ্ট দিয়েছে। এটা অবশ্য লেখকের দোষ নয়, আমারই দোষ। কারণ ইঞ্জিনিয়ারিং এর স্টুডেন্ট হিসাবে বায়োলোজিকে সবসময় ভয় পেয়ে এসেছি। অনেক আগে থেকেই বায়োলোজি নাম শুনলে ছিটকে পড়তাম ভয়ে। তো টপিক্সটা বুঝার জন্য যে টার্মগুলো অসুবিধা করছিল না জানার দরুন সেগুলোই জানতে চেয়ে লেখক সাকিফ ভাইকে নক করলাম আর তিনি নিচের লিস্টটা ধরিয়ে দিলেন। এগুলোর পাশাপাশি গুগলিং করে বিষয়গুলো আরও ক্লিয়ার হয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। মিউটেশনের দোহায় দিয়ে যে বিবর্তনবাদ দাঁড়িয়ে আছে তা কতটা খোঁড়া তা মোটামুটি বুঝতে পেরেছি। যাই হোক বিবর্তনবাদ কি বা কতটুকু যৌক্তিক তা আলোচনা করা আজকের উদ্দেশ্য নয়। আজকে এসেছি সেই টার্মগুলো নিয়ে। যারা ডারউইনের On the Origin of Species বা হারুন ইয়াহিয়ার Darwinism Refuted বা ড.স্টিফেন মেয়ারের SIGNATURE IN THE CELL বইগুলো পড়ে বুঝতে চান তাদের জন্য নিচের টার্মগুলো অত্যন্ত জরুরী।
মাইক্রো ইভোলিউশন:
পরিবেশের সাথে খাপ খায়িয়ে নিতে জীবের মধ্যে কিছু ছোট ছোট পরিবর্তন হয়, এবং একটি মাত্রার মধ্যে হয়-যেটা ক্রোমোজোমের মধ্যে জিন পুলে কোড করা থাকে। এই পরিবর্তনকে মাইক্রো ইভোলিউশন বলে। যেমন: একই পাখির ঠোট কিছু বড়-ছোট হওয়া, ব্যাকটেরিয়ার জিনে মিউটেশন হয়ে অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা ইত্যাদি।
ম্যাক্রো ইভোলিউশন:
এটা হলো ছোট ছোট পরিবর্তন মিলে এক সময় বড় এক পরিবর্তনের ধারণা। ধরুন বিবর্তনবাদীদের মতে হায়েনা জাতীয় প্রাণি থেকে বিবর্তিত হতে হতে আজকের তিমি মাছ। এরকম পরিবর্তনকে ম্যাক্রো ইভোলিউশন বলে।
মিউটেশন:
আমাদের দেহের প্রতিটি কোষের নিউক্লিয়াসে জেনেটিক তথ্যের বাহক হিসাবে ক্রোমোজোম থাকে। ক্রোমোজোমের মধ্যে ডি.এন.এ নামক নিউক্লিক এসিড থাকে। ডি.এন.এ এর মধ্যে থাকে জিন। জিন হোল, বংশগতির আণবিক একক, যা জীবের বৈশিষ্ঠ্য নির্ধারন করে। জিন প্রজাতির তথ্য ধারন করে এবং প্রাণীর কোষকে নিয়ন্ত্রন করে। এর মাধ্যমেই প্রজাতির গুন অব্যাহত থাকে। মিউটেশন হল এই জিনে কোন ধরনের পরিবর্তন বা ভাঙন । মিউটেশন কোষ বিভাজনের সময়, অতি বেগুনি রশ্মি বা রাসায়নিক পরিবর্তনের কারণে হতে পারে।
PCSK9 জিন:
ক্রোমোজোমের ভিতরে DNA থাকে। DNA হলো ডাবল স্ট্যান্ডার্ড স্ট্রাকচার। অনেকটা সর্পিল সিঁড়ির মতো। এখানে নাইট্রোজেন বেস, সুগার এবং ফসফেট দিয়ে নিউক্লিওটাইড তৈরি হয়। এগুলো পাশাপাশি যুক্ত হয়ে মনে করেন সিড়ির পাত গঠন করলো। এগুলো কয়েকটি মিলে আবার একটি জিন সিকুয়েন্স নির্দেশ করে। এই জিন দেহের কোন সেল কেমন হবে সেটা নিয়ন্ত্রণ করে। PCSK9 সেরকম একটি জিন।
ক্যাম্ব্রিয়ান পিরিয়ড:
পৃথিবীর বয়সকে বিভিন্ন স্তরে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে ক্যাম্ব্রিয়ান পিরিয়ড একটি পিরিয়ড। এই পিরিয়ডে হটাৎ করে ২০ টি পর্বের জটিল প্রানীর একসাথে আবির্ভাব হয়। একে ক্যাম্ব্রিয়ান এক্সপ্লোশান বলে।
ইউনিভার্সাল কমন অ্যানসেস্ট্রি:
একটি মাত্র কোষের হটাত করে উৎপত্তি হয়ে বিলয়ন বিলিয়ন বছর ধরে বিবর্তিত হয়ে আজকের এই সব প্রাণী তৈরি হয়েছে। এই তত্ত্বই ইউনিভার্সাল কমন অ্যান্সেস্ট্রি।
অ্যানসেস্ট্রাল স্পিশিস:
বিবর্তনবাদীদের মতে, এপ জাতীয় একটি প্রাণী থেকে একদিকে বিবর্তিত হয়ে মানুষ, এবং অন্যদিকে বিবর্তিত হয়ে বানর, শিম্পাঞ্জী, গোরিলা ইত্যাদি তৈরি হয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদের এবং বানরের পূর্বপুরুষ এক। সেটা হলো ওই এপ। তাই ওই এপ জাতীয় প্রাণি মানুষের এবং বানরের অ্যান্সেস্ট্রাল স্পিশিস।
অ্যান্টিবায়োটিক রেজিসট্রেন্স:
ব্যাকটেরিয়ার জিনে মিউটেশন হয়ে এর বিভিন্ন স্ট্রাকচারে সে চেঞ্জ আনে। ফলে অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। একে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স বলে।
বিঃদ্রঃ আপাতত বিবর্তনবাদ কি , কেন, আসলেই গ্রহনযোগ্য কিনা এই জাতীয় প্রশ্ন এড়িয়ে চলতে চাইছি। বিস্তারিত লেখব ইন-শা-আল্লাহ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মে, ২০১৮ রাত ১০:০৪