অভ্র, তুমি বাংলাকে পৌঁছে দিয়েছো; দিচ্ছো; দেশে-বিদেশে ইন্টারনেটে, অথচ তুমি জানো কী তোমার জন্য বাংলা একাডেমির কোনো পুরস্কার বরাদ্দ হবে না কোনোদিন।
অভ্র বাংলা কীবোর্ডের আবিষ্কারক, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ডা: মেহেদী হাসান খানের নাম ততোটা ছড়ায়নি, যতোটা ছড়িয়েছে অভ্র সফটওয়্যারের নাম। মেহেদী হচ্ছেন নতুন প্রজন্মের অহংকার, নতুন প্রজন্মের ভাষা সৈনিক। আর অভ্র হচ্ছে বাংলা ভাষার আরেক বিপ্লব। আমাদের মাতৃভাষা বাংলার অর্জন যেমন সহজ ও মসৃণ পথ ধরে চলে আসেনি, অভ্রের ইতিহাসও ঠিক তেমনি। অভ্র কীবোর্ডের সুবিধা এখন আমরা সবাই উপভোগ করি। কিন্তু অভ্র আবিষ্কারের পেছনের কষ্টটা আমরা কতোজন, কতোটুকু জানি?
অভ্র কিবোর্ড ২০০৩ সালে প্রথম যাত্রা শুরু করে। অভ্র ফনেটিকই সর্বপ্রথম বাংলাদেশে বাংলা ইউনিকোড নিয়ে আসে। মোস্তফা জব্বার এর 'বিজয়' কিবোর্ড ইউনিকোড সাপোর্ট করতো না, ইউনিকোড এর সুবিধা হলো ইউনিকোড সাপোর্টেড সকল ডিভাইস থেকে ফন্ট পড়া যাবে, যেখানে বিজয় কীবোর্ডের ক্ষেত্রে ফন্ট ইনস্টল করা না থাকলে সেটা কোনো ডিভাইসেই পড়া সম্ভব না।
প্রথমদিকে, অভ্র ছিল শুধুই ফনেটিক, কোনো ওয়ার্ড সাজেশন ছিল না। এখন আমরা দেখি অভ্রে লিখার সময় ওয়ার্ড সাজেশন আসে। এই ওয়ার্ড সাজেশন অ্যাড করার জন্য প্রয়োজন ছিল একটা ডিকশনারি অ্যাড করা। এজন্য অভ্র টিম বাংলা একাডেমীর দারস্থ হলেও তারা কপিরাইটের দোহাই দিয়ে কোনো সাহায্যই করেনি। তখন অভ্র টিমের সদস্যরা নিজেরাই দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে ডিকশনারি দাঁড় করিয়েছেন। সবার সুবিধার্থে এরপর অভ্র যোগ করে ইউনিবিজয় লেআউট, এখানেও জব্বার সাহেব তাঁর বিজয় এর কপিরাইট আইনে মামলা করেন, পরে অভ্র থেকে ইউনিবিজয় লেআউট বাদ দেওয়া হয়।
অভ্র ফ্রি সফটয়ার হওয়ায় বাংলাদেশ সরকার সকল মন্ত্রণালয়ে বাংলা লিখতে অভ্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন এবং আমাদের জাতীয় পরিচয়পত্রেও অভ্র ব্যবহার করা হয়েছে।