আজ জুয়েলের জন্মদিন।জুয়েলের সাথে
আমার পরিচয় হয় আনিসুল হকের বিখ্যাত
উপন্যাস " মা" পড়ার মধ্যে দিয়ে। ২০১৩
সালের জানুয়ারি মাসের শেষের
দিক রাবিতে নিয়মিত ক্লাস করছি,এরই
মধ্যে জানতে পারলাম পাবনা
টেক্সটাইলে চান্স পেয়েছি,
রাবিতে ভর্তি বাতিল করে, পাবনা
টেক্সটাইলে ভর্তি হলাম।পাবনা
টেক্সটাইলে ক্লাস শুরু হবে এপ্রিল
মাসে। হাতে প্রচুর সময়, শুরু করলাম
সাহিত্য পড়া।এ সময়েই একদিন পরিচয় হয়
জুয়েলের ( মা উপন্যাসের একটি চরিত্র)
সাথে।
জুয়েল মোহামেডানের হয়ে খেলত।
নিউজিলান্ড টিমের বিরুদ্ধে খেলার
জন্য অল পাকিস্তান ক্যাস্পেও ডাক
পেয়েছিল। জুয়েল ঢাকা শহরের তুফান
বলে খ্যাত। সে বাট করত ঝড়ের
গতিতে,যতক্ষণ সে উইকেটে থাকত
ততক্ষণ রানের চাকা ঘুরত।
একদিন আসমা জুয়েল কে বলে, রকিবুল
হাসান তো অল পাকিস্তান টিমে
চান্স পেয়েছে, তুমি পাবে না।জুয়েল
স্বভাব জন্ম রসিক।আরে আমারে এইবার
নিউজিলান্ড এগনেস্টে নিল না বলেই
তো আমি অল পাকিস্তান ভাইঙ্গা
দিতেছি। দেশটা স্বাধীন হলে আমরা
বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম বানাব।
এইটাতে আমি ঠিকই চান্স পাব।
একদিন কাজী কামালের সাথে
জুয়েলের পরিচয় করিয়ে দেন তার বন্ধু
আবুল খায়ের। আবুল খায়ের বলে জুয়েল
তো জোকসের হাড়ি।কিপিং করতে
করতে এমন সব জোকস বলে, বাটসম্যান
হাসতে হাসতে আউট হয়ে যায়। কামাল
বলে তাই নাকি একটা শুনাও না। আবুল
খায়ের বলে সুপার টা ক, সিপারটা ক।
জুয়েল গা মোড়ে দেয়।আরে এক জোক
কয়বার কমু।
★ইয়াহিয়া, আইয়ুব,ভুট্টো তিনজন গেছে
পরকালে।ওইখানে প্রত্যেক কে কওয়া
হইসে একটা কইরা ফল আনতে।আইয়ুব খান
নিয়া গেছে একটা সুপারি।তার পিছন
দিয়ে সুপারি দিছে ঢুকাইয়া।তারপর
আসছে ইয়াহিয়া।সে নিয়া গেছে
কদবেল।তখন হেরা কয় এত বড় ফল আনছ
সর্বনাশ করছ।এইটা তোমার পিছন দিয়ে
ঢুকাইকে হবে।তখন ইয়াহিয়া হাসে।
আরে বাক্কেল হাসিস কেন।ইয়াহিয়া
কয়,আমি তো কদবেল এনেছি।এরপর ভুট্টো
আসতেছে।সে আনছে নারকেল।
বাঙালিরা কেন পাকিস্তানেরর
সাথে যুদ্ধ করতে বিলম্ব করছে,
পাকিদের ফালতু প্যাচাল না শুনে
ডাইরেক্ট একশনে কেন যাচ্ছে না, তাই
তিনি বলেন-
★এক মাইয়া। আমাগো গাঁয়ের মাইয়া
তার সাথে বিয়ে হইসে এক
প্রফেসরেরর।মহাপন্ডিত।বাসর রাতে
প্রফেসর সাব খালি লেকচার দেই।কয়
ফ্রয়েড বলেছেন--- এইভাবে এক রাত
যায়,দুই রাত যায়,ফ্রয়েড শেষ হয় না।
মাইয়া কয় আপনার যন্ত্রপাতি ঠিক
আছে তো-- তাহলে লেকচার দেন
কেন?
প্রফেসর কয় এখন ও পূর্বরাগ চ্যাপটার শেষ
হয় নাই।তার পর আইব ফোরপে-- তারপর
আস্তে ধীরে আরও ২০০ পৃষ্টা পরে না
একশন।তা প্রফেসর ২০০ পৃষ্টা পড়ানো
শেষ করলেন।মাইয়া তখন ৮ মাসের
প্রেগন্যান্ট। প্রফেসর সাব কয় ক্যামনে
হলো? মাইয়া কয় আপনা যে পড়াইছেন,
এতেই হইয়া গেছে।প্রফেসর কই হইতে
পারে আমারই উচিত ছিল প্রিকশন।
নেওয়া।ফ্যামিলি প্ল্যানিং
চ্যাপটার
টা আগে না পড়ানোয় এই ভুলটা হইয়া
গেছে।
( ৪সেপ্টেম্বর রাতে ইয়াহিয়ার সাধরণ
ক্ষমার ঘোষনার আগের রাতে ঢাকার শ
খানেক মুক্তিযোদ্ধা কে গুলি করে
মেরে ফেলে হয়।এদের মধ্যেই ছিল
জুয়েলও তার বন্ধু বদি,রুমি,বাকের,
আজাদ,বাশার ও আমার ভাইয়ের রক্তে
রাঙানো গানের গীতিকারআল
মাহমুদ)