somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা"

১৬ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গতকাল সেন্ট পিটার্সবার্গ এর জন্য ছিল প্রথম খেলা। ইরান বনাম মরোক্কো। সাধারনতই এটাই ছিল বিশ্বকাপের জন্য করা আমার প্রথম ডিউটি। এদিকে আবার গতকাল ঈদ ও ছিল রাশিয়াতে। মুলত তার্কির হিসেবে আমি ঈদ করেছি এবং সেই হিসেবে ৩০ টি রোজা শেষ ঘটেছিল আগের দিন।

আমি, মারিয়া, আনিল এবং ইন্ডিয়ার সেই ভাইঃ


আমার দায়িত্ব পড়েছিল মাঠের ৩য় তলায় পূর্ব দিকের গেটে। দর্শকদের টিকেট চেক করে তাদের সিটে পাঠিয়ে দেয়া। ঈদ, দুটি মুসলিম দেশের খেলা সব মিলে আগত দর্শকদের সাথে খুব ভাল সময় কেটেছে। স্বাগত জানানোর ভাষা হিসেবে “ঈদ মোবারক” বলাকেও বেছে নিলাম আমি। খেলায় আত্মঘাতি গোলের ফলাফলে ইরান জিতেছে। তবে ভাল খেলেছে আফ্রিকার দেশ মরোক্কো।

খেলা শেষে দর্শদের বিদায় দিতে দিতে স্থানীয় সময় সন্ধা/বিকেল ৯ টা। সন্ধা/বিকেল বলেছি কারন এখানে সূর্য ডোবে হয় ১১ টায়। শুরু করেছিলাম সেই সকাল ১২ টায়। মাঠ ফাকা হওয়ার পর এবার টিম মিটিং শেষ করে হোটেলে ফিরব। সাথে রাশিয়ান একটা ফ্রেন্ড মারিয়া। স্টডিয়াম এর সামনে আমরা তবে ভেতর থেকে। ঠিক তখনই নেপালের আনিল লামা এসে আমাকে বলল, “মশিউর ভাইয়া ওখানে ইন্ডিয়ান একটা ছেলে তার ব্যাগ হারিয়ে ফেলেছে। সেখানে তার পাসপোর্ট এবং সব ডকুমেন্টস ছিল। কি করা যায়?” আমি রাশিয়ান মেয়েটিকে ঘটনা বললাম। তার সাহায্য নিয়ে মাঠের সব খানে তল্লাশি করা হল। কিন্তু কোথাও পাওয়া গেল না। এদিকে মস্কোর জন্য তার টিকেট রাত ১২ টায়।ও ছেলেটি, কোলকাতা শহরের। বাংলা বলে। আমার টানও এবং দায়িত্ব আরো বেড়ে গেল।

ইন্ডিয়ার ভিসা নেয়ার জন্য আমি ২ দিন আগে এই শহরের হাই কমিশনার খুজছিলাম। ঠিক তখনই মনে পরে গেল এটার কথা। সাথে ফোন করলাম। তবে ততক্ষনে বন্ধ হয়ে গেলেও ফোন রিসিভ করল। ঘটনা সব বর্ননা করার পর যেতে বললেন। তবে তার আগে একটা পুলিশ ডায়েরি করতে বললেন। এগুলো করতে সন্ধা ১১ টা প্রায়। এদিকে ছেলেটির ভাই ও আবার তার জন্য অপেক্ষা করছিল। আমরা বের হয়ে তাকে আবার খুজে না পেয়ে অনেক সময় কেটে গেল।
মেট্রো পুলিশের কাছে গেলাম। তারা ডায়েরি না নিয়ে পাঠালেন আরেক পুলিশ ষ্টেশনে। এদিকে হাই কমিশনার অপেক্ষা করছেন অফিসে। রাত প্রায় ১২ টা। আমরা পুলিশ ষ্টেশনে গেলাম।




সেখানে অপেক্ষমান এক আমেরিকান এবং এক পাকিস্তানি। ভাষা সমস্যার কারনে তারা অপেক্ষা করছিলেন অনেক সময়। এবার মারিয়া তাদের সাহায্যে লেগে গেলেন। সমস্যা পাকিস্তানি ছেলেটির। তিনি যে হোটেছে ছিলেন সেই হোটেল তার রেজিষ্টেশন না নিয়েই তাকে এখানে রেখেছে। আর ফিরে আসার সময় রেজিষ্টেশন এর টাকা ফেরত দিয়ে “সরি, আমরা ভুলে গিয়েছিলাম” বলে পাঠিয়ে দিয়েছে। কিন্তু রাশিয়ার কানুন মত আপনি ২য় বার কোন হোটেলে প্রবেশ করতে হলে আগে কোথায় ছিল সেটা খুব দরকারি। তা হলে দেশ থেকে বের হতে গেলে তাকে ব্যান করে দিবে ৫ বছরের জন্য। যাই হোক তার ডায়েরি করে ইন্ডিয়ান ছেলেটার ডায়েরিও শেষ হল। রাত তখন প্রায় ২ টা। আমরা তখন গেলাম ইন্ডিয়ান হাই কমিশনে।

হাই কমিশনার অপেক্ষা করছিলেন। বেশ ভাল মানুষ। রাত ২ টায় অনেক কিছুতে হেল্প করে পরের দিন মানে আজ সকালে যেতে বলেছেন। এবার আমাদের ফেরার পালা। তখন রাত প্রায় ৩.৩০। মেট্রো আর নেই এখন। নাইট বাস ও নেই বলা চলে। ইন্ডিয়াতে ঘুরতে যাওয়ার দাওয়ার নিয়ে তাদের ২ জন কে বিদায় দিয়ে আবার আমরা ৩ দিন। নেপালএর আনিল লামা, রাশিয়ার মারিয়া আর আমি। মারিয়া তার বাসায় যাবে। আমরা হোটেলে। অনেক পথ হেটেছি বাস পাওয়ার জন্য। কিন্তু পেলাম না। শেষে রাত ৪ টায় ট্যাক্সি নিয়ে হোটেলে ফিরলাম। ফেরার পথে মারিয়াকে তার বাসায় নামিয়ে দিলাম।

রাশিয়ানরা হাসতে পারে না। তারা খুব গম্ভীর হয়। এটাই শুনে এসেছি। মারিয়া তার ব্যতিক্রম দেখিয়েছেন।।
ধন্যবাদ
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:২৭
৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×