somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

" দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ ১৭ "

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"এই যে ! থামান। গাড়ি থামান।" মেয়ের গলায় চিৎকার শুনে হার্ডব্রেক কষল ইফতি। জানালা খুলে দেখল একটা মারমুখো মেয়েকে। " কি হলো? চোখে দেখেন না? নাকি গাড়িতে বসলে হুঁশ থাকে না? আমার জামাটা দেখতে পাচ্ছেন?" "নাহ। আসলে আপনার মুখের দিকেই তাকিয়ে ছিলাম। আপনি এতো বেশি রেগে গেছেন যে আপনাকে দেখতে খুএব সুন্দর লাগছে।" মুচকি হাসলো ইফতি। মিতুর মাথায় রাগ উঠে গেছে। বলে কি বাঁদর ছেলেটা? একেতো ওর জামাটাতে কাঁদা লাগিয়েছে তার উপর আবার হাসছে? রাস্তাটা ওর বাসার কাছাকাছি হলে ও এই ছেলেকে আজকে বাঁশ দিয়ে পিটাতো। "স্যরি। আই অ্যাম ভেরী ভেরী স্যরি। আমাকে মাফ করে দিন প্লিঈঈঈজজজজ!" ওমা! এই ছেলে আবার আহ্লাদ করে!! মিতু বেজায় ক্ষেপে গেলো। কিন্তু আশেপাশের মানুষ দাঁড়িয়ে গেছে আর এই পাগল ছেলের বিশ্বাস নেই। কি না কি করে বসে। ও বলল,"ঠিক আছে। গাড়ি একটু দেখে শুনে চালাবেন।" " আপনার মতো করে তো কেউ আগে বলে নাই। এবার থেকে দেখে চালাবো।" হাসলো ইফতি। ও জানে ওর হাসি দেখে মেয়েটা আরো ক্ষেপে যাবে। হলোও তাই। মিতু গটগট করে নিজের রাস্তায় চলে গেলো। পাগল মেয়ে ! ভাবলো ইফতি।
"কিছু ভাবছেন?" "হুমম। নাহতো। কি ভাববো?" মিতুর কথায় বাস্তবে ফিরলো ইফতি। মিতুকে ও প্রথম দেখেছিল রাস্তায় ২ বছর আগে। ঐ মারমুখী চেহারাটা কখনোই ভুলতে পারেনি ইফতি। ওর জীবনের মজার ঘটনাগুলোর একটি ওটা। অনেকদিন থেকেই মা ওর জন্য পাত্রী দেখছে উঠে পড়ে। শেষ পর্যন্ত ও পাত্রীদের সাথে দেখা করতে রাজি হলো। কখনো ভাবেওনি ও যে এই মেয়েটার সাথে এভাবে ওর আবারও দেখা হবে। মেয়েটাকে দেখলে মনে হয় না যে এরকম সুইট মেয়েরও অ্যারেন্জড ম্যরেজ হতে পারে। এই মেয়ের পিছনে না হলেও ১০ টা ছেলেতো ঘুরেছেই। " আপনার আমাকে পছন্দ হয়নি, তাই না?" "কেনো? আপনার এমন কেনোকদিন রাস্তায় আপনার সাথে খারাপ ব্যভার করেছিলাম। আপনি কি ভুলে গেছেন?" " ভুলবো কেনো? দোষ তো আমারই ছিল । তাইনা? আর আপনি তো কত্ত সুন্দর করে আমাকে গাড়ি সাবধানে চালাতে বলেছিলেন!!" বলে কি পাগলটা!! মনে মনে ভাবে মিতু। মুখে বলে," আপনি কি আমাকে খোঁচা দিলেন?" ইফতি হাসে মিতুর কথার জবাবে। " নাহ। দেখুন, পুরানো কথা বাদ দিন। এখন বলুন আপনি কেন অ্যারেন্জড ম্যারেজ করতে চান।" " দেখুন আমি মিথ্যা কথা বলবো না। আমার রিলেশান ছিল আগে কিন্তু খুব কম সময়ের জন্য , বনিবনা হয়নি, তাই টিকেনি। আর এরপর আমি আর রিলেশানে যাওয়ার কথা ভাবিওনি। বাবা-মার বড় সন্তান , তাই তাদের পছন্দতেই বিয়ে করবো। ব্যস। আমার বাসাতে অবশ্য আমার পছন্দই প্রথম প্রায়োরিটি পাবে।" এক নিঃশ্বাসে বলে গেলো মিতু নিচের দিকে তাকিয়ে। মুখ তুললে অবশ্য দেখতে পেত ইফতি ওর দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। " দেখুন এটা আমরা সবাই জানি যে এই যুগে যারা ফ্যামিলির পছন্দে বিয়ে করে আসলে তাদের সবার জীবনেই একটা অতীত থাকে। আমি অতীত নিয়ে ঘাটাঘাটি করি না। আমি জানি বর্তমান আর ভবিষ্যত। আপনার কেমন মানুষ চাই জীবনসংগী হিসেবে?" " সবাই যা চায়। একটা নরমাল মানুষ। দিনশেষে বাড়ি আসবে, দুজন মিলে একটু মন খুলে কথা বলতে পারবো, ছুটির দিনগুলোতে হুট করে রিকশায় ঘুরতে যাবো। আমার উপর বিশ্বাস রাখবে। আমাকে একটু বুঝবে এমন। এর বেশি আর কি চাই মানুষের জীবনে? আপনার কেমন চাই?" " অনেক কথা বলবে। পচা রান্না খাইয়ে আমাকে জোর করে ভালো বলিয়ে নিবে। আমার উপর কর্তৃত্ব ফলাবে। কথায় কথায় কান্না করবে। ঝগড়া করে দুম করে মায়ের বাসায় চলে যাবে সকালবেলা। আর আমি অফিস শেষে এসে দেখবো নিজেই চলে এসেছে থাকতে না পেরে। একটা পাগল হলেই চলবে। ভালো রান্না করা লাগবে না, রান্না করার জন্য তো বুয়া আছে। শুধু ভালো মানুষ হলেই চলবে।" মিতুর চোখের দিকে তাকায় ইফতি। কেমন একটা থেমে যাওয়া নদী লাগে ওর চোখটাকে ইফতির। মনে হয় কত জন্মের খরাতে ঐ নদীটা মরে গেছে। দুবছর আগের যে একটা মারমুখো মেয়েকে দেখেছিল সে জানি কোথায় এই চরে আটকা পড়ে আছে। তাকিয়ে থাকে ইফতি। মিতুই চোখ সরিয়ে নেয়। লোকটার চোখ দুটোতে তাকালে মনে হয় যেন চোখ দিয়ে ওর মনের সবটুকু পড়ে নিচ্ছে। ওর থেকে বয়সে ৫ বছরের বড় হলেও চেহারায় কোথায় জানি একটা বাচ্চা ভাব আছে এই লোকটার। ভয় পায় মিতু। এর আগের কয়েকজনকে ও দেখেই না করে দিয়েছে। এইবার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা খুব কঠিন হয়ে যাবে ওর জন্যে। মনে হয় এখুনি দৌঁড়ে গিয়ে তনুকে বলে সব। আর এক মুহূর্তও এখানে থাকতে মনে চাচ্ছে না ওর। ওর মনের কথা যেনো পড়ে নেয় ইফতি। বলে," চলো তোমাকে বাসায় ড্রপ করে দিই। তুমি একটু ভাবো, আমিও একটু ভাবি। আর ফোন নাম্বার তো আছেই। কথাও বলতে পারবো।" বিল পে করে দেয় ইফতি। তারপর মিতুকে বাসায় রেখে আসে। অনেক ভাবতে হবে আজকে ওকে।
(** খুব তাড়াতাড়িই হয়তো শেষ হবে গল্পটা। কিন্তু আসলে বুঝতে পারছি না কিভাবে শেষ করবো । আমাকে প্লিজ জানান কিভাবে এটাকে শেষ করবো। কেমন পরিণতি চান আপনারা?** )

" দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ ১৬ "
" দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ ১৫ "
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কথা: দাদার কাছে—একজন বাবার কিছু প্রশ্ন

লিখেছেন সুম১৪৩২, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৫



দাদা,
কেমন আছেন? আশা করি খুবই ভালো আছেন। দিন দিন আপনার ভাই–ব্রাদারের সংখ্যা বাড়ছে—ভালো তো থাকারই কথা।
আমি একজন খুবই সাধারণ নাগরিক। ছোটখাটো একটা চাকরি করি, আর নিজের ছেলে–মেয়ে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×