somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

" দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ ১৮ "

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"প্লিজ , তুই থামবি?" "তোর কি মনে হচ্ছে যে আমি ফান করছি? আমি সত্যি বলছি দোস্ত। আমার কাজিন তোর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। আমার খালা আমাকে খুউব ধরছে দোস্ত। এখন বল তুই আগে কথা বলবি ভাইয়ার সাথে নাকি আন্টি বলবে আমার খালার সাথে?" তনু বোকার মত বসে থাকে। ওর ভার্সিটির ভালো ফ্রেন্ড শান্তা। শান্তার সাথে ওর অনেক ছবি আছে। সেই ছবি ফেসবুকে দেখেই শান্তার কাজিন পাগল হয়ে গেছে ওর প্রেমে শান্তার ভাষ্য মতে। তনু বলে," দেখ তুই তো জানিস আমার ব্যাপারটা। আর আমি আসলে হাইয়ার স্টাডিজের জন্য চিন্তা করছি। বিয়ের কথা আমি মাথাতেও আনতে চাই না।" " দেখ, তনু আমি জানি তুই কেন না করছিস। পৃথিবীতে সব মানুষ কি আর এক নাকি? আর আমি ভাইয়াকে তোর পাস্টের কথা বলেছি। এখন আফতাব চাইলেও ভাইয়ার কাছে গিয়ে তোর নামে বদনাম করতে পারবে না। ভাইয়া সে সুযোগই দিবে না। তুই শুধু একবার ভাইয়ার সাথে দেখা কর। আমার বিশ্বাস রাহাত ভাইকে তোর ভালো লাগবে। উনি অনেক হ্যান্ডসাম। আর সবথেকে ভালো ব্যাপার উনি মেয়েদের অনেক রেসপেক্ট করে। ঠিক যেমনটা তোর পছন্দ। আর অনেক ভদ্র উনি।" তনুর মাথায় ওসব কথা ঢুকে না। ও জানে ভদ্র মানুষের মুখোশ পরে কত ধোঁকাবাজও ঘুরে বেড়ায় এ শহরে। পুরোনো সব ক্ষতগুলো মনে হয় যেন জ্যান্ত হয়ে উঠে।
শেষ পর্যন্ত শান্তার জেদের কাছে হার মানে তনু। আর মিতুও অনেক বুঝায় তনুকে। এখন সামনে দেখা উচিত ওর। যা হয়েছে সব ভুলে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। একটা সাদা রংযের ড্রেস পরেছে ও। রিকশায় বসে হাজার চিন্তা করতে করতেই কখন যে ও কেএফসির সামনে চলে এল বুঝতেই পারেনি। মিতুকে কত করে বলল ওর সাথে আসতে কিন্তু মেয়েটা আসলোই না। খুব আনইজি লাগছে ওর। রিকশা থেকে নামতেই রাহাত ওর সামনে এসে দাঁড়াল। "স্যরি। একটু লেট হয়ে গেলো। অনেকক্ষন ধরে ওয়েট করছেন নাকি?"" আরেহ নাহ। এই অপেক্ষাটাও আমার জন্য অনেক ভালো কিছু। তোমাকে তুমি করে বলতে পারি তো? শান্তার বয়সী তুমি।" "হ্যা। তুমি করেই বলুন। চলুন বসা যাক।" দুজনে একটা টেবিলে বসল। একটু কোনার দিকে। রাহাত অর্ডার দিয়ে আসল। তনু কিছুতেই যেন নরমাল হতে পারছে না। খুব খারাপ লাগছে ওর। রাহাত কেনো জানি ব্যাপারটা আঁচ করে ফেললো। "আমি জানি, তোমার আমার সাথে দেখা করার কোনো ইচ্ছাই ছিলো না। তুমি মনে হয় অনেক বেশি আনইজি ফিল করছ। কিন্তু দেখ, মানুষ যদি তার সামনে চলার রাস্তাটাই বন্ধ করে ফেলে তাহলে তো আর সামনে এগুতে পারে না। তোমাকেও সামনে যেতে হবে।" তনু চুপ করে থাকে। রাহাত প্রসংগ পাল্টে দেয়। "এ্যাই দেখ ঐ বাচ্চাটা তোমার দিকে তাকিয়ে হাসছে।" তনু তাকিয়ে দেখে সত্যিই একটা ছোট্ট বাচ্চা ওর দিকে তাকিয়ে কি সুন্দর করে হাসছে। তনুর নিজের মুখেও হাসির রেখা পড়ল। খাবার নিয়ে এল রাহাত। দুজন দু একটা কথা বলে খাওয়া শেষ করল। রাহাত খুউব বুঝতে পারলো তনু এখনও স্বাভাবিক হতে পারেনি। ও বলল," দেখো তনু, আমি জানি এটা খুব কঠিন একটা কাজ। কিন্তু একদিন না একদিন তো তোমাকে কারো উপর বিশ্বাস করতেই হবে। আমাকে একটা সুযোগ দাও। আমি একটু চেষ্টা করে দেখি পারি কি না। প্লিজ।" তনু আর নিজেকে আটকাতে পারলো না। বাচ্চা মেয়ের মতো অঝোরে কাঁদতে শুরু করল। রাহাত প্রথমে ভ্যাবাচ্যাকে খেয়ে গেলেও বুঝতে পারলো ওর কি করতে হবে। টিস্যু দিয়ে তনুর চোখ মুছে দিল। ওর হাতটা ধরে বলল, " চলো, কোথাও থেকে ঘুরে আসি। তোমার ভালো লাগবে। আর যাওয়ার সময় আইসক্রীম খেতে খেতে যাব। " এমনভাবে বলল যেনো তনু একটা বাচ্চা । তনু এই প্রথম রাহাতের দিকে তাকালো। বুঝতে পারলো, এই মানুষটা খুব তাড়াতাড়িই ওর জীবনের সব থেকে বড় অবলম্বন হতে যাচ্ছে।

" দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ ১৭ "
" দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ ১৬ "
" দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ ১৫ "
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

ছবি এআই জেনারেটেড।

ভিনদেশী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সত্যের বজ্রনিনাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে। সেদিন আবরারের রক্তে লাল হয়েছিল বুয়েটের পবিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকারের বিয়াইন

লিখেছেন প্রামানিক, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

রাজাকারের বিয়াইন তিনি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
ওদের সাথে দুস্তি করায়
যায় না রে সম্মান?

কিন্তু যদি মুক্তিযোদ্ধাও
বিপক্ষতে যায়
রাজাকারের ধুয়া তুলে
আচ্ছা পেটন খায়।

রাজাকাররা বিয়াই হলে
নয়তো তখন দুষি
মেয়ের শ্বশুর হওয়ার ফলে
মুক্তিযোদ্ধাও খুশি।

রচনা কালঃ ১৮-০৪-২০১৪ইং... ...বাকিটুকু পড়ুন

দাসত্বের শিকল ভাঙার স্বপ্ন দেখা এক ক্রান্তদর্শী ধূমকেতু ওসমান হাদী।

লিখেছেন মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল), ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪২

বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশে যে ধরণের রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু হয়েছে, তাহলো বিদেশী প্রভুরদের দাসত্ব বরণ করে রাজনৈতিক দলগুলোর রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের উপর প্রভুত্ব করা , আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×