somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুক্তমনা ব্লগার
কেহ বিশ্বাস করে, কেহ করে না। যে বিশ্বাস করে সেও সত্য-মিথ্যা যাচাই করে না, যে অবিশ্বাস করে সেও না। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রশ্নটা নির্ভর করে মানুষের খুশির উপর। ধর্মান্ধতা নিপাত যাক, মুক্তচিন্তা মুক্তি পাক।

স্থির গতির বিচার ব্যবস্থা

৩১ শে মে, ২০১৬ রাত ১১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ যারা তনুর ধর্ষণ নিয়ে সোচ্চার, তাদের একটা কথা মনে করিয়ে দিতে চাই। আজকাল তরুণ আম ফেসবুকারদের তখনো জন্মই হয় নি, হলেও খুবই বয়স অল্প। ফেসবুকের আইডিয়াও স্বয়ং জুকারবার্গের মাথায় আসে নি হয়ত। সেই সময় এইরকম কীবোর্ডের যুদ্ধ হত না, সরাসরি প্রকাশ্যে প্রতিবাদ হত।
ইয়াসমিন বেরিয়েছিল মাকে না জানিয়ে দিনাজপুরের উদ্দেশ্য। মাকে দেখে না প্রায় তিন বছর। ২৩ আগস্ট ১৯৯৫ এ বেরিয়ে ২৪ তারিখ ভোরে দিনাজপুরের দশ মাইলে পৌছায়। এমন সময় পেট্রোল পুলিশ উপস্থিত হয়। বাড়ি পৌঁছে দেবার আশ্বাসে পিক আপে তুলে নেয় তৎকালীন এএসআই মইনুল হক, কনস্টেবল আব্দুস সাত্তার ও চালক অমৃতলাল। ধর্ষণ শেষে রাস্তায় ফেলে দেয়। ধামাচাপা দিতে পুলিশই আঞ্জুমানে মফিদুল মারফত দাফন করে। এমনকি পতিতা ডেকে পতিতা প্রমাণের চেষ্টা করে। দুইদিন পরে ইয়াসমিনের মা শরীফা বেগম জানতে পারেন এক মেয়েকে পুলিশ ধর্ষণ শেষে হত্যা করে ফেলে রেখেছে , বিক্ষুব্ধ হচ্ছে জনতা। জানতে পারলেন যে মেয়েকে তিন বছর দেখেন না, সেই হতভাগ্য মেয়েই তাঁর মেয়ে, সেই মেয়ের মৃত মুখ দেখলেন উনি। ফুঁসে উঠে জনতা। ২৭ মার্চ বিচার চাওয়া উত্তেজিত জনতার উপরে গুলি চালায় পুলিশ। মারা যায় ৭ জন।
প্রকৃত ধর্ষক জানার পরেও তাদের ফাঁসি হয় ২০০৪ সালে ১ সেপ্টেম্বর। প্রায় নয় বছর। আরো করুণ কথা হল, সেই সাত জনকে হত্যা সংশ্লিষ্ট মামলার কিন্তু আজো বিচার হয় নি।
২০০১ সালে ক্লাস এইটে পড়ুয়া পূর্নিমা রানী শীলের কথা অনেকেই হয়ত ভুলে গেছে। মাত্র ক্লাস এইট। কতটুকুই বা বয়স। অক্টোবরের এক রাত্রে ২২ দুর্বৃত্ত চড়াও হয় সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার শীলদের বাড়িতে। তাদের মনোবৃত্তি জেনেই পূর্নিমার মা তাদের পা ধরে বলেছিল -" বাবারা তোমরা একজন একজন করে যাও, আমার মেয়েটা অনেক ছোট"
শুধু সেই ঐ বাড়িতেই না, বাড়ির উৎসব শেষে তুলে নিয়ে দূরের পাটক্ষেতে আবার উৎসব হয়। পূর্নিমা বেঁচে আছে, বিচার হয়েছে, বিভিন্ন মেয়াদের সাজা হয়। রায় হল কত সালে জানেন? ১০ বছর পর ২০১১ এ। মামলার বাদী পূর্নিমার বাবা মারাই গেছেন রায় না দেখেই। মামলার বর্তমান বাদী পূর্নিমা নিজে
এইগুলা কেবল "চাঞ্চল্যকর"। পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসীদের নির্যাতন করা হচ্ছে অহরহ। আদিবাসীরা যেন সেইখানে বাঙ্গালীদের ভোগ্যপণ্য , ঠিক যেমন ৭১ এ পাকিরা আমাদের সাথে করেছে। আমরা কিন্তু খুবই "কিউট" জাতি
আর সমতলে তো ভিন্ন চিত্র। মিডিয়ায় এলে অন্য ফ্লেভার। না হলে গ্রাম্য সালিশ। কিছু দেন দরবারে আর টাকার বিনিময়ে মামলা খতম। সামান্য ২০ -৩০ হাজার টাকায় একটা মেয়ের সম্মান। ভালই তো।
চক্ষুলজ্জার ভয়ে অনেক কিছু প্রকাশ্যেই আসে না। ধামাচাপা পড়ে যায়।
তনুর ঘটনায় হয়ত মামলা হবে। সেই মামলা চলবে অনন্তকাল জূড়ে। গোল্ডফিস মেমোরির বাঙ্গালী ভুলে যাবে খুব তাড়াতাড়িই। তারপরে একদিন অনাদরে টিভি স্ক্রলে আসবে "তনু ধর্ষণ মামলার রায় প্রদান ... "
মানুষ বাঁচেই ৬০-৭০ বছর। পূর্ণাঙ্গ বিচার পেতেই লাগে ১৫-২০ বছর। বিচার প্রার্থীর কথা কি কেউ মনে রাখে?
তনুরা ধর্ষিত হবেই। কারণ এই সমাজ কাঠামোই জন্মের পরে ছেলেদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় মেয়েরা ভোগের বস্তু, আর মেয়েদের শিখানো হয় তোমরা পুরুষের মনোরঞ্জনের জন্যই এসেছ। তাই তো আসে তেঁতুল তত্ত্ব, আসে পোষাক তত্ত্ব।
সমাজ দাঁড়ায় ধর্ষকদের পক্ষেই। তারপরে পত্রিকার কোণায় আসে - "ধর্ষণের শিকার হলেন ...... "

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০১৬ রাত ১১:০৬
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×