somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন জলদস্যুর গল্প

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বার্থোলুমিউ রবার্টস ছিলেন একজন ওয়েলস জলদস্যু যিনি ১৭১৯ থেকে ১৭২২ সালের মধ্যে আমেরিকা অঞ্চলও পশ্চিম আফ্রিকা উপকূলের জাহাজে আক্রমণ করতেন। তিনি জলদস্যুতার স্বর্ণযগের সবচেয়ে সফল জলদস্যু যিনি সর্বাধিক জাহাজে আক্রমণ করেছিলেন এবং তার কর্মজীবনে ৪৭০ এর বেশি উপঢৌকন গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ব্ল্যাক বার্ট নামেও পরিচিত কিন্তু তার জীবদ্দশায় এই নাম কখনো ব্যবহৃত হয়নি। তাছাড়াও এই নামের সঙ্গে পশ্চিমা আমেরিকান আউটল ব্ল্যাক বার্টের সাথে বিহ্বলতা হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।বার্থোলুমিউ রবার্টস ক্যাসনইড বাচবা লিটল নিউক্যাসল, পেমব্রুকসায়ার, ওয়েলস এর ফিসগার্ড এবং হ্যাভারফোর্ডওয়েস্টের মাঝামাঝি জায়গায় ১৬৮২ সালে জন্মগ্রহন করেন। তার আসল নাম জন রবার্টস এবং তার পিতার নাম খুব সম্ভবত জর্জ রবার্টস।এটি পরিস্কার নয় যে কি কারনে রবার্টস তার নাম জন থেকে বার্থোলুমিউতে পরিবর্তন করেছিল কিন্তু অন্যান্য জলদস্যুদের মত তিনিও সম্ভবত জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর এই নাম পরিবর্তন করেছিলেন। ধারনা করা হয় তিনি ১৬৯৫ সালে যখন তার বয়স ১৩ বছর তখন সমুদ্রে গিয়েছিলেন কিন্তু ১৭১৮ এর পূর্ব পর্যন্ত তার আর কোন তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যায় না। ১৭১৮ সালে তিনি বার্বাডোস স্লোপের ম্যাট ছিলেন।


১৭১৯ সালে তিনি ক্যাপ্টেন আব্রাহাম পামের অধীনে দাসদের জাহাজ প্রিন্সেসের তৃতীয় ম্যাট ছিলেন। একই বছর জুনের প্রথম দিকে প্রিন্সেস পশ্চিম আফ্রিকার গোল্ড কোস্ট আনুমাবুতে জলদস্যুদের দ্বারা আক্রান্ত হয়। ক্যাপ্টেন হুওয়েল ডেভিসের নেতৃত্তে জলদস্যুরা দুটি ভেসেল নিয়ে তাদের আক্রমণ করেছিল। জলদস্যুদের ক্যাপ্টেনও ওয়েলস এর অধীবাসী ছিলেন এবং তিনি রবার্টসকে পছন্দ করেন। রবার্টসসহ প্রিন্সেসের কিছু ক্রুকে জোড়পূর্বক জলদস্যুতে পরিনত করা হয়।ডেভিস শীঘ্রই আবিষ্কার করেন নেভিগেটর হিসেবে রবার্টসের দক্ষতা ও তার কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ শুরু করেন। তিনি ওয়েল্‌সে্‌র তথ্য সম্পর্কে রবার্টসের উপর নির্ভর করতেন যদিও অন্য ক্রুদের কাছ থেকে তথ্যটি গোপন রাখেন।বলা হয়ে থাকে রবার্টস প্রথম দিকে জলদস্যু হিসেবে কর্মজীবন শুরু করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করদেন কিন্তু তিনি এই নতুন জীবনধারা উপভোগও করতেন। ক্যাপ্টেন চার্লস জনসন বলেনঃ

সৎ সেবায় মানুষকে হতে হয় সাধারন, মুজরি থাকে কম কিন্তু কাজ করতে হয় বেশি। এটাতে প্রাচুয্র্য এবং পরিতৃপ্তি, আনন্দ ও স্বাচ্ছন্দ্য, স্বাধীনতা এবং শক্তিমত্তা ও যারা এই কৃতিত্তে সামঞ্জস্য রাখতে না পারে, যখন সমস্ত বিপত্তি এসে জমা হয়, সবচেয়ে খারাপ সময়ে বিষম চেহারার লোক হতে হয়? না, তখন সুখী জীবন ও সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত পথটিই আমার জীবনের নীতিবাক্য।

৫ই ফেব্রুয়ারি তারিখে ক্যাপ্টেন ক্যালোনার ওগলের নেতৃত্তে সৈন্যরা এইসএমএস স্যালো জাহাজ নিয়ে তিনটি জলদস্যু জাহাজের উপর হঠাৎ আক্রমণ পরিচালনা করেন। তিনটি জলদস্যু জাহাজ হল, দ্য রয়াল ফরচুন, দ্য রেঞ্জার এবং দ্য লিটল রেঞ্জার যারা কেপ লোপেজ সাগরে আক্রমণের শিকার হন। স্যালো জলদস্যুদের বড় কোন দল এড়াতে দিক পরিবর্তন করে অন্য দিকে মোড় নেন যাতে জলদস্যুরা মনে করে এটি একটি পলায়নরত বণিক জাহাজ। দ্য রেঞ্জারের দ্বায়িত্বে ছিল জেমস স্কাইরম। যখন জলদস্যুরা গুলি ছুড়ে পরস্পরকে সংকেত দিতে শুরু করে তখন স্যালোর কামান পট খোলা হয় এবং গুলি শুরু করা হয়। দশজন জলদস্যু নিহত হয় এবং জেমস কামানের গোলার আঘাতে তার পা হারান কিন্তু জাহাজের ডেক ত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানান। অবশেষে, দ্য রেঞ্জারকে তার রং পরিবর্তনে বাধ্য করা হয় এবং জীবীত ক্রুদের আটক করা হয়।১০ই ফেব্রুয়ারি স্যালো কেপ লোপেজে ফিরে আসে এবং রয়াল ফরচুনকে সেখানে অবস্থান করতে দেখতে পায়। আগের দিন নেপচুন দখল করেছিল এবং ক্রুরা সকলেই মাতাল অবস্থায় ছিল কিন্তু এই সময়েই রবার্টসের ক্রুদের বেশি দরকার ছিল। প্রথমে জলদস্যুরা মনে করেছিল আগত জাহাজটি দ্য রেঞ্জার কিন্তু স্যালো থেকে পালিয়ে আসা এক নাবিক জাহাজটি দেখে চিনতে পারে এবং রবার্টসকে সংবাদটি পরিবেশন করে। রবার্টস তখন নেপচুনের মাস্টার ক্যাপ্টেন হিলের সাথে সকালের নাস্তা করছিলেন। সচরাচর যেমন তিনি যুদ্ধের পূর্বে সুন্দর পোশাক পরিধান করে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন তেমনি এই দিনও সুন্দর পোশাকে সজ্জিত হয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন।

জলদস্যুদের পরিকল্পনা ছিল স্যালোর পাশ দিয়ে নীরবে পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়া এবং যখন তারা একবার পাশ কাটাতে পারবে তখন তারা পালিয়ে যেতে পারবে। কিন্তু সারেংরা রয়াল ফরচুনকে ঠিক কোর্সে রাখতে ব্যার্থ হয়। ক্যাপ্টেন রবার্টস তখন জাহাজের ডেকে দাড়িয়ে ছিলেন এবং এমন সময় গ্রেপেপশটের একটি আঘাত তার গলায় বিদ্ধ হয় এবং তিনি মৃত্যুবরণ করেন। যকন ওগলি রবার্টসের মৃতদেহ খুঁজে পায় তখন তিনি বলেছিলেন রবার্টস নাকি সাগরে সমাহিত হতে চেয়েছিলেন। তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তার ক্রুরা তাকে সাগরে সমাহিত করেছিল। তারপর এটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৪০
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×