somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবীর কিছু ভয়ংকর আগ্নেয়গিরির কথা (পর্ব ১)

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আগ্নেয়গিরি হলো বিশেষ ধরনের পাহাড় যার ভেতর দিয়ে ভূ-অভ্যান্তরের উত্তপ্ত এবং গলিত পাথর, ছাই এবং গ্যাস বেরিয়ে আসতে পারে। এটি একটি ভৌগোলিক প্রক্রিয়া। কোনো কোনো ফাটল অথবা ছিদ্রপথ দিয়ে ভূগর্ভস্থ গরম বাতাস, জলীয় বাষ্প, গলিত শিলা, কাদা, ছাই, গ্যাস প্রবল বেগে বেরিয়ে আসে। নির্গত এই সকল পদার্থ ভূপৃষ্ঠের শীতল বায়ুর সংস্পর্শে এসে দ্রুত ঠান্ডা হয়ে কঠিন আকার ধারণ করে যার কিছুটা ফাটলের চারপাশে এসে ধীরে ধীরে জমা হয়ে মোচাকৃতি লাভ করে। তখন একে আগ্নেয়গিরি বলে। আগ্নেয়গিরি হতে ভূগর্ভস্থ পদার্থের নির্গমনকে বলা হয় অগ্ন্যুৎপাত।একটি আগ্নেয়গিরি ভয়ানক এবং আকর্ষক দৃষ্টিশক্তি উভয়ের অধিকারী হয়। বিশ্বে অনেক আশ্চর্যজনক আগ্নেয়গিরি আছে যা তাদের সৌন্দর্য ও মারাত্মক প্রকৃতির জন্য বিখ্যাত। এরা ক্লাইমবার্স এবং হাজার হাজার দর্শকদের আকর্ষণ করে থাকে। দুঃসাহসিক একটি স্বাদ নেওয়ার জন্য যে কেউ একটি আগ্নেয়গিরি পরিদর্শন করতে পারেন।


ইতালির দক্ষিণে বড়সড় একটা দ্বীপ সিসিলি। তার পাশেই ছোট ছোট কয়েকটি দ্বীপ নিয়ে এওলিয়ান দ্বীপপুঞ্জ। সাধারণ মাপের মানচিত্রে এগুলো চোখেই পড়ে না। এওলীয় দ্বীপগুলো প্রায় সবই আগ্নেয়গিরি, তার মধ্যে কয়েকটি রীতিমতো জাগ্রত। ক্যাটানিয়া বিমানবন্দর থেকে মাউন্ট এট্না দেখেই পর্যটকরা বুঝতে পারেন আগ্নেয়গিরির দেশে এসে পড়েছেন।


২০১২ তে একটা সুপার ভলক্যানো বা মহা আগ্নেয়গিরি দেখান হয়েছিল ইয়েলোস্টোন পার্কের নিচে। এটা সত্যি কথাই যে এই ইয়েলোস্টোনে এক সময় একটা ভয়ঙ্কর আগ্নেয়গিরির অস্তিত্ব ছিল যা একবার বিস্ফোরিত হলেই সমস্ত ইউ এস এ তার ছাইয়ের নিচে অন্ধকার হয়ে যেত।


মেগাটন ভিসুভিয়াস ইতালি
নেপালের বে শহরের মধ্যে অবস্থিত ভিসুভিয়াস তার অগ্ন্যুত্পাত এর জন্য ৭৯ খ্রিস্টাব্দে পম্পেই এবং হারকিউলানিয়াম শহর মুছে ফেলার জন্য সর্বক্ষেত্রে পরিচিতি পায়। এটা মহাদেশীয় ইউরোপের শুধুমাত্র একটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি এবং শেষ ১৯৪৪ সালে এর অগ্নিগর্ভ থেকে অগ্নি বের হয়। বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল আগ্নেয় অঞ্চল হিসেবে এর পার্শ্ববর্তী এলাকা পরিচিত। আগ্নেয়গিরি এখন ভিসুভিয়াস ন্যাশনাল পার্ক এর একটি অংশ। ভিসুভিয়াসের পুরাণ এবং স্থানীয় সংস্কৃতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আগ্নেয় শক্তি অনুভব করার জন্য এটি একটি নিখুঁত জায়গা এবং এখানে আপনি ধূমায়মান জ্বালামুখ দেখতে পারবেন। পম্পেই এর ধ্বংসাবশেষ, লাভার বর্জ্যে এবং পিয়াল বে এর সুন্দর দৃশ্য দর্শকদের আকৃষ্ট করতে যথেষ্ট। ভিসুভিয়াস নিঃসন্দেহে আকর্ষণীয় আগ্নেয়গিরির তালিকায় শীর্ষ স্থান দখল করে।


মেগাটন ফুজি জাপান অবস্থিত
টোকিও থেকে ১০০ কিলোমিটার উত্তর পূর্বদিকে অবস্থিত মাউন্ট ফুজি জাপানের সাংস্কৃতিক প্রতীকের মধ্যে একটি। দেশের ইতিহাস এবং সংস্কৃতির এই আগ্নেয়গিরির একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা রয়েছে ও পাহাড়ের উপর তার উপস্থিতি দর্শকদের আরও আকৃষ্ট করে তোলে। তুষারাবৃত শিখরের নাটুকে সৌন্দর্য এবং পার্শ্ববর্তী পাঁচটি হ্রদ এর প্রধান আকর্ষণীয় ফ্যাক্টর। ফুজি একটি সক্রিয় স্ট্রাটো আগ্নেয়গিরি, যা থেকে গত ১৭০৭ সালে অগ্ন্যুত্পাত হয়েছিল এবং এটি জাপানের সবচেয়ে লম্বা শিখর। এটা এখন ফুজি হাকোন ইজু ন্যাশনাল পার্ক এর একটি অংশ এবং প্রতি বছর প্রায় ৩,০০,০০০ ক্লাইমবার্সকে আকর্ষণ করে। জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত এখানে সেরা ঋতু থাকে। ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে এখানে একটি প্রাচীন সংস্কৃতির দেহাবশেষ রয়েছে এবং সেইসাথে অনেক পুরানো কুঠিও আছে।


মেগাটন ইটনা ইতালি অবস্থিত
সিসিলি দ্বীপের হৃদয়ের মধ্যে অবস্থিত। এই সক্রিয় আগ্নেয়গিরি হতে ক্রমাগত ছাই এবং লাভা বের হয়। এটা কাল্পনিক জীব সাইক্লপ্স এর বাড়িতে অবস্থিত। তুষারাবৃত শিখর এবং প্রায় ৪০০ অবিস্মরণীয় সংখ্যায়ন গর্ত এর দৃশ্যপট আরও সুন্দর করে তোলে। ৩,৩২৯ মিটার উচ্চতার সঙ্গে এটি ইউরোপের সবচেয়ে লম্বা পীকগুলোর মধ্যে একটি। তাছাড়া এখানে আরোহণ করা ছাড়াও পর্যটকদের জন্য জিপ ট্যুর ও কেবল গাড়ির সেবা রয়েছে। এটি ভ্রমণের জন্য সেরা ঋতু হল এপ্রিল থেকে নভেম্বর মাস। এটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।


আরেনাল আগ্নেয়গিরি কোস্টারিকায় অবস্থিত
আরেনাল লাভা একটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি যা থেকে ঘন ঘন বিস্ফোরণ সংঘটন হয়। তার শেষ অগ্ন্যুত্পাত হয়েছিল ১৯৬৮ সালে তখন টাবাকন শহরের অধিকাংশ স্থান ধ্বংস হয়ে যায়। লাভার প্রবাহ দেখার জন্য এটি একটি আদর্শ গন্তব্যস্থান। এই আগ্নেয়গিরিটি আরেনাল আগ্নেয়গিরি ন্যাশনাল পার্ক দ্বারা বেষ্টিত। উদ্ভিদকুল এবং প্রাণিকুল ভোগবিলাসপূর্ণ ছাড়াও পর্যটকরা এখানে ট্রেকিং ও সাঁতার এবং পর্বতে সাইকেল অশ্বারোহণ এর মত বিভিন্ন কার্যক্রম উপভোগ করতে পারেন। পার্কের অনেক স্থানে গরম পানির স্নানের ব্যবস্থাও আছে যা পর্যটকদের মধ্যে একটি প্রিয় কার্যকলাপ।


থিরিনুকাগিগুর আইসল্যান্ড অবস্থিত
আইসল্যান্ড থেকে ২১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।এই আগ্নেয়গিরি ৪০০০ বছর ধরে সুপ্ত রয়েছে এবং অদূর ভবিষ্যতে সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। থিরিনুকাগিগুর সম্পর্কে সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক বৈশিষ্ট্য হল যে এটি বিশ্বের একমাত্র আগ্নেয়গিরি যা ভিতরে অন্বেষণ করা যাবে। এর ভিতরে ১২০ মিটার গভীর পর্যন্ত যাবার সুবিধা আছে। আগ্নেয়গিরিটির নাম তিনটি গর্তের নামের মিলিত রূপ। এটা এখন ব্লাফজল দেশ পার্কের একটি অংশ হিসাবে সুরক্ষিত রয়েছে। এটি দেখার জন্য সেরা সময় হল জুন থেকে আগস্ট মাস।

সূত্রঃ ইন্টারনেট।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৩১
১১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

লিখেছেন আবু ছােলহ, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৮

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

গুগল থেকে নেয়া ছবি।

সামুতে মাল্টি নিক নিয়ে অনেকেই কথা বলেন। অনেকের কাছে মাল্টি যন্ত্রণারও কারণ। শুধু যন্ত্রণা নয়, নরক যন্ত্রণাও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×