দেশের বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজের মানসিক রোগ বিভাগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ খালি রয়েছে। কিন্তু খালি পদের বিপরীতে বারবার আবেদন করা হলেও কোন এক অদৃশ্য কারণে লোকবল নিয়োগ করা হয় না।

বারবার আবেদন পত্র জমা দেয়ার পরেও তার ফলপ্রসু কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছেনা বলে মন্তব্য করেন ঢাকা মেডিকেলের মানসিক রোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. খালেদা বেগম। তিনি মনেরখবর.কমকে জানান, ‘এর আগেও বহুবার ‘খালি পদে লোক নিয়োগ প্রয়োজন’ সংক্রান্ত চাহিদাপত্র সাইকিয়াট্রি অ্যাসোসিয়েশনে জমা দিয়েছি কিন্তু তাতে কোন লাভ হয় নি।’

মনেরখবরের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজের মানসিক রোগ বিভাগে মোট ১৮টি পদ খালি রয়েছে। এদের মধ্যে, ঢাকা মেডিকেল কলেজের মানসিক রোগ বিভাগে ১ জন সহকারী রেজিস্টার্ডের পদ খালি রয়েছে, দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মনোরোগবিদ্যা বিভাগে ১ জন সহযোগী অধ্যাপক, ২ জন সহকারী অধ্যাপক, ১ জন রেজিস্টার, ২ জন সহকারী রেজিস্টারের পদ খালি আছে, যশোর মেডিকেল কলেজের মনোরোগ বিদ্যা বিভাগে কোন পদ নেই, শুধু একজন অধ্যাপকের পদ কয়েকদিন আগে পাশ হয়েছে, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ১ জন সহকারি অধ্যাপক ও ১ জন মেডিকেল অফিসারের পদ খালি আছে, রংপুর মেডিকেল কলেজে ১ জন সহকারি রেজিস্টার্ড পদটি খালি আছে, বগুড়া মেডিকেল কলেজে ১ জন সহযোগী অধ্যাপক ও ২ জন সহকারী অধ্যাপক ও ১ জন মেডিকেল অফিসারের পদ খালি রয়েছে, ওসমানী মেডিকেল কলেজে ২ জন অধ্যাপক ও ২ জন সহযোগী অধ্যাপকের পদ খালি রয়েছে।

এপর্যন্ত কোন সরকারি মেডিকেল কলেজের মানসিক রোগ বিভাগে ‘অধ্যাপক’ পদে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয় নি। তাছাড়া নতুন ১০টি সরকারি মেডিকেল কলেজে কোন মানসিক রোগ বিভাগই নেই।

মানসিক রোগ বিভাগে কাজের চাপ প্রকট। সেই তুলনায় কোন মেডিকেল কলেজের মানসিক রোগ বিভাগে যথেষ্ট লোকবল নেই। মনেরখবর.কমকে এমনটাই বলছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের মানসিক রোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. খালেদা বেগম, ‘কাজ যথেষ্ট আছে কিন্তু সে হিসেবে লোকবল নেই এবং খালি পদে লোকবল দরকার। এবং এখানে জায়গা সংকট। প্রতিদিন এতো রোগী আসে এবং অনেকের ভর্তি যোগ্য লোকবলের অভাবে সেবা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না।’

মনোরোগবিদ্যা বিভাগে খালি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা রয়েছে বলে মনে করছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ডিপার্টমেন্ট অব চাইল্ড বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. ফারুক আলম। তিনি মনেরখবর.কমকে জানান, দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজের মানসিক রোগ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের আবেদনের চাহিদানুযায়ী আমরা স্বাস্থ্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠাই। তবে সেক্ষেত্রে কিছু আমলাতান্ত্রিক জটিলতা রয়েছে।’

খালি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কলেজের মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের শিক্ষকদের দায়িত্বের অভাব রয়েছে বলে মনে করছেন এই অধ্যাপক। তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে মেডিকেল কলেজের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের দূরদর্শিতার অভাব রয়েছে। মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়ে তার সাথে লেগে থাকতে হয়। অনেক সময় সেই দায়িত্বের অভাব দেখা যায়।’

তবে আশার বাণীও শোনালেন এই অধ্যাপক, ‘মন্ত্রণালয় থেকে নতুন একটি ফরম এসেছে সেখানে পুনরায় খালি পদে নিয়োগ সংক্রান্ত প্রস্তাবও অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’