somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আর বি এম টুটুল
সহজ মানুষ,সহজ মন,সহজ কথা,সহজ সত্য আমার মতামত । প্রচার করুন যদি একটি মাত্র আয়াতও হয়....লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ । ৫ ওয়াক্ত নামাজ মানুষের জীবনকে বদলে দেয় ইসলামিক বিধান মেনে একটি সুন্দর জীবন চায়।আল্লাহ্‌ আপনি সব কিছুর মালিক ।

শিক্ষা , কুশিক্ষা, সুশিক্ষা আর সঠিক দীক্ষা কি আমরা শিখছি !

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

উচ্চশিক্ষার নামে কুশিক্ষা এবং সুশিক্ষা আর সঠিক দীক্ষা
কি আমরা শিখছি আমরা নিজের ভিতর কি বীজ বপন করছি!
এ যুগে শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড কথাটা ঠিক নয়। শ্লোগান হবে ‘সুশিক্ষাই জাতীয় মেরুদন্ড’।
সেক্রিফাইস নামক ইংরেজি শব্দটা শিক্ষিত মানুষদের জন্য সৃষ্টি হলেও,
ত্যাগ নামক অশিক্ষিতদের বাংলা শব্দটার কাছে বার বার হেরে যায়।
কারন অশিক্ষিত অজপাড়ার মানুষ গুলি শিক্ষিতদের প্রানের সব টুকু দিতে জানে,
কিন্তু উচ্চ শিক্ষিত মানুষটি তা জানেনা।
আর এটাই হচ্ছে সুশিক্ষা আর উচ্চ শিক্ষা নামে কুশিক্ষার মধ্যে ছোট্ট একটি পার্থক্য।

খুব পুরোনো একটা প্রবাদবাক্য নিয়ে আমার মতো সবাই বোধ করি স্কুল জীবনে ভাব-সম্প্রসারণ লিখতেন,
‘ দূর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যাজ্য, সর্পের মস্তকে মণি থাকলেও সে কি ভয়ংকর নহে ?
এরসাথে আরো একটি যোগ না করে পারছিনা ‘গুরুজনে করো নতি, সেবা করো কায়মনে।
শিক্ষা দীক্ষা একই সূত্রে গাঁথা অনেকে সন্তানদের পুঁথিগত শিক্ষা হয়তো দিয়েছেন,
দীক্ষা তারা কতটুকু পেয়েছে, নিজেকেই প্রশ্ন করুন। অনেকেই সে শিক্ষায় বড় মর্যাদায় আসীন
হয়েছেন। কিন্তু দীক্ষারা আসনে কি স্থান করে নিতে পেরেছেন ?
যদি পেত তবে একজন স্কুলের হেড মাস্টার উনার স্কুলের পিয়ন যে কিনা উনার থেকে ১০ বছরের
সিনিয়র তাকে বলতনা, এই রমিজ এদিকে আসো তো, অন্তত রমিজ ভাই বা চাচা শব্দটা ব্যবহার
শিখত । আর সেই হেড মাস্টার উনার স্কুলের শিক্ষার্থীদের পুথিগত বিদ্যায় শিক্ষা দিলেও
কত টুকু দীক্ষা দিবেন তা এ সমাজেই আজ প্রতিফলিত।
হয়তো সেই স্যার আজ সমাজের নামিদামী ,বিত্তবান,কিংবা প্রভাবশালী হতে
পেরেছেন,সেই স্যার কিন্তু সচেতন সমাজ গড়ার জন্য উনি কতটুকু প্রভাব বিস্তার করেছেন এটা
সমাজের মানুষেই ভাল জানেন, যদি ভাল বিবেক না থাকে,যদি সুশিক্ষা নিয়ে সুদীক্ষার কারিগর
হতে না পারেন, শুধু ভাল সার্টিফিকেট থাকলেই কি ভাল মানুষ হওয়া যায় ।
উচ্চ শিক্ষিত হলেই কি উচ্চ মনের অধিকারী হওয়া যায় ?
জানিনা এই শিক্ষাকে কি উচ্চ শিক্ষা না কুশিক্ষা বলা হয়,যখন একজন শিক্ষককে
তারই ছাত্র লাঠির আঘাতে ক্ষত বিক্ষত করে।
যখন একজন শিক্ষক তার কাম লালসার নগ্ন টার্গেট বানায় তারই ছাত্রীর পরীক্ষার খাতা।
সন্তান,মা,বাবা যার যার মত করে আধুনিকতার জোয়ারে,কিংবা স্মার্ট কালচারের জোয়ারে,কিংবা ভিলাসীতার
জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে তথাকথিত,ইয়াবা,মদ,নাইট ক্লাব,কিংবা হিরোইনের মত আসরে।
আধুনিকতার নামে নিজের সব কিছু বিকিয়ে দিচ্ছে স্মার্ট ভাবে স্মার্ট দেহ শিকারীদের
কাছে,এটাই কি উচ্চ শিক্ষা । এটাই কি আধুনিকতা ।মা বাবা নিজ সন্তানকে আধুনিকতার নামে
নিজেই সপে দেয় স্মার্ট অন্ধকার জগতে। মা বাবা যখন নিজেই অশালীন চলাফেরা
করবে,অশালীন ড্রেস পরিধান করে তখন সন্তান অতি উতসাহী হয়ে আরও একটু অশালীন হবে এটাই
কি স্বাভাবিক নয়।

একজন উচ্চ শিক্ষিত মানুষ যেমন,ইঞ্জিনিয়ার ,ডাক্তার,শিক্ষক, হয়তো তার বউ সন্তানকে সব
সময় নিরাপদ জীবন যাপন করাতে যা যা দরকার তাই করেন,কিন্তু সেই ইঞ্জিনিয়ার,সেই
ডাক্তার,সেই মাস্টার মশাইয়ের কাছে তার পাশের মহিলাটি নিরাপদ না।
তার পাশের ভাইটি তার কুটকৌশলের কারনে এখন দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে ।
প্রতিনিয়ত সেই সব অহংকার দাম্ভিকতার ভরা ,শিক্ষিত,উচ্চ সার্টিফিকেটদারী মানুষদের
কুটকৌশলের কাছে এ সমাজের মানুষ গুলি অসহায় হয়ে যাচ্ছে।
আপনি অবাক হচ্ছেন আজ, যে ভাই,যে বোন,যে সন্তানকে সারা জীবনের পরিশ্রম দিয়ে উচ্চ
শিক্ষিত বানিয়েছেন,সেই ভাই,সেই বোন,সেই মেয়ে আজ আপনাকে গেয়ো,আর বেকডেটেড মনে
করে আপনাকে ছেড়ে ক্যারিয়ার আর স্মার্ট আধুনিকতার জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে।
যে সন্তান,যে ভাই,বোন ভাল ভাবে ড্রেস পড়া জানতনা সে আজ আপনার ড্রেস নিয়ে মুচকি
হাসে,কারন আপনার ড্রেসআপ তার স্ট্যাটাসে বড় বেমানান ।
সেই শিক্ষিত মেয়ে ছেলের স্ট্যাটাসের সঙ্গে আপনি মানিয়ে নিতে পারছেন না, ওদের সঙ্গে
এখন আর আপনাকে মানায় না। ওরা উচ্চ জ্ঞান সম্পন্ন মানুষ ।ওদের লাইফ স্টাইল আর আপনার
সহজ লাইফ স্টাইলের সঙ্গে বড় বেমানান ।
তাই ওদের সঙ্গে মিলাতে গেলে আপনাকে আপমানিত হতে হয় প্রতিনিয়ত।

মনে হয় আপনি এ পৃথিবীর সবচেয়ে আনকালচার,গেয়ো,আন স্মার্ট মানুষ ।
কারন ওরা আর আপনার অনেক দুরত্ব, কেন জানেন তারা উচ্চ শিক্ষিত।
সেই অশিক্ষিত মা বাবা কি কখনো ভেবেছিল যার জন্য জীবনের সব সম্ভল বিসর্জন দিয়ে অনেক
উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত বানাবে,সেই একদিন শিক্ষার অহংকারে চুরমার করে দিবে।
জন্মের পর হতেই মানবশিশুর শিক্ষা শুরু হয় পরিবারে। এই জন্য পরিবারকে বলা হয় শ্রেষ্ঠ
প্রাথমিক বিদ্যালয়।
সেখানে লব্ধ এই মৌলিক শিক্ষাই পরবর্তী জীবনের সকল শিক্ষার ভিত্তি।
সুতরাং যে কোন শিশুর মনোদৈহিক বিকাশের জন্য প্রথম ও প্রধান বিদ্যালয় হচ্ছে পরিবার এবং
মা-বাবা হচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাদের স্নেহ-ভালবাসা, জীবনাদর্শ ও আদর-যত্ন
পেয়েই বয়সে বেড়ে ওঠার সাথে সাথে মানবশিশু জ্ঞানে এবং মানবিক ও নৈতিক গুণাবলীতে বৃদ্ধি
পেতে থাকে; আর এই বিকাশের প্রক্রিয়া চলে জীবনভর। সুবিশাল মহীরুহ যেমন ক্ষুদ্র একটি
বীজের মধ্যে সুপ্ত অবস্থায় থাকে এবং সেই বীজ উর্বর মাটিতে রোপিত হলে এবং অনুকূল পরিবেশ
ও পরিচর্যা পেলে ক্রমে ক্রমে বিশাল বৃক্ষে পরিণত হয়, সেভাবে মানবশিশুও জন্মগ্রহণ করে
অপার সম্ভাবনা নিয়ে, “হওয়া”র প্রক্রিয়াধীন হয়ে। সেই সম্ভাবনা বাস্তবে রূপ নেয়
শুভাকাংখী ও গুরুজনদের প্রতিপালন ও পরিচর্যা এবং ব্যক্তির নিজ সাধনার গুণে।

মা-বাবা হচ্ছেন সন্তানের শ্রেষ্ঠ শুভাকাংখী।
তারা কোন প্রতিদান আশা না করেই সন্তানের মঙ্গলের জন্য সাধ্যমতো সবকিছুই
করে থাকেন। কোন একটি সন্তান দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে তার সুচিকিৎসার জন্য
প্রয়োজনবোধে তারা অন্যান্য সন্তানের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য সঞ্চিত ধনসম্পদ ও সহায়-সম্বল
পর্যন্ত নিঃশেষে ব্যয় করতে দ্বিধা করেন না। মা-বাবার এই অকুণ্ঠ স্নেহ-ভালবাসার কারণেই
শিশুর মধ্যে সার্বিক বিকাশ ঘটতে শুরু করে। শিশুর পিতামাতা পিতৃস্নেহ-মাতৃস্নেহ, আদর-
যত্ন দিয়ে শিশুকে লালন-পালন করেন। সন্তানকে তারা শুধু জৈবিক ও দৈহিক দিক দিয়ে নয় বরং
মানবিক, নৈতিক, আধ্যাত্মিক, এক কথায় সার্বিক দিক দিয়ে বিকশিত হতে সহায়তা করতে
আপ্রাণ চেষ্টা করেন। শ্রেষ্ঠ শুভাকাংখী বলেই সন্তানের পিতামাতা নিজেরা যা উত্তম বলে জানেন ও
মানেন তাই সন্তানের মধ্যে হস্তান্তরিত করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। অবোধ শিশুকে তারা
অনেক আদেশ ও নির্দেশ দেন, আবার অমঙ্গলকর কিছু করা থেকে বিরত থাকারও আদশ বা পরামর্শ
দেন। বয়োবৃদ্ধির সাথে সাথে তারা এই আদেশ ও নির্দেশ দেন আরও সুস্পষ্টভাবে। অনেক সময়ই
তাদেরকে বলতে শোনা যায়, ‘এটা করো, ওটা করো না।” মা-বাবা তাদের নিজেদের জীবনের
অভিজ্ঞতা থেকে যা অমঙ্গলকর বলে জানেন তা করা থেকে সন্তানকে বিরত রাখেন, আর যা
মঙ্গলজনক বলে জানেন তা করতে অনুপ্রাণিত করেন এবং প্রয়োজনবোধে তা করার আদেশ ও
নির্দেশ দেন। এগুলোই সন্তানের জন্যে মাতাপিতার নীতিশিক্ষা। তারা তাদেরকে
ভাল এবং মন্দ-এই দু’য়ের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে এবং মন্দকে পরিহার করে ভালকে গ্রহণ করতে
শেখান। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, সন্তান যেন পরিণত বয়সে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে, কেননা মা-
বাবা সব সময় সন্তানের সঙ্গে সঙ্গে থাকবেন না। সুতরাং তাদের অনুপস্থিতিতে সন্তান যাতেস্বাবলম্বী হয়ে
ব্যক্তিগতভাবে যে কোন পরিস্থিতিতে স্বজ্ঞানে ও স্বেচ্ছায় জীবনের
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে তার জন্য তাদেরকে প্রস্তুত করে তুলতে
চেষ্টা করেন। সুতরাং মানুষের এই হওয়ার প্রক্রিয়ায় “শিক্ষা” অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
এই শিক্ষার গুণেই মানুষ প্রকৃত অর্থে অন্যান্য প্রাণী
হতে শুধু স্বতন্ত্রই নয় বরং শ্রেষ্ঠ।

ভুল হলে,ক্ষমা করবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৩০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×