somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কসমিক সিম্ফোনি... (সায়েন্স-ফিকশান) পর্ব-১৫

২৬ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মহাকাশযানটা পৃথিবীতে অবতরণ করেছে আরো তিন ঘন্টা আগে। সেখান থেকে তুষারশুভ্র সুউচ্চ ভবনে অপেক্ষা করছে ইউডি। পৃথিবীর সকল দাপ্তরিক ও প্রশাসনিক কাজ নিয়ন্ত্রণ করা হয় এই ভবনটি থেকেই। সূর্যের আলোতে ভবনটির ধাতব নকশা চিকচিক করছে। ইউডি চোখ অন্যদিকে সরিয়ে নিল। আরামদায়ক লাল গদিটাতে মোটেও সাচ্ছন্দ বোধ করছে না সে।

একটা নিম্নশ্রেনীর ড্রয়েড তার সামনে উপস্থিত হলো। ভাইস চ্যান্সেলর ওরিয়ন আপনার জন্যে অপেক্ষা করছেন, জনাব…
গোল গোল হলুদ চোখে তার দিকে তাকিয়ে রইল ড্রয়েডটা।

পাত্তা না দিয়ে পাশ কাটিয়ে লম্বা হলঘরে প্রবেশ করল ইউডি। এখানেই পৃথিবীর অন্যতম রক্ষক ভাইস চ্যান্সেলর ওরিয়নের সদর দফতর। যদিও তার সমপর্যায়ের কোন পদে কেউ বসতে পারলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করবে কিন্তু দুঃখের ব্যপার হচ্ছে ভাইস চ্যান্সেলর ওরিয়ন মোটেও এমন মনোভাব প্রকাশ করে না। নিজেকে সে পৃথিবীর শাসনকর্তা হিসেবেই দেখতে চায়, মামুলি একজন চ্যান্সেলরের চাকর হিসেবে নয়। চ্যান্সেলরের প্রযুক্তি ও রোবটিক্স বিষয় দেখার ভার পরেছে ওরিয়নের উপর। এছাড়া ভাইস চ্যান্সেলর ওরিয়নের আরেকটি পরিচয় আছে। সে প্রাইভেট রোবটিক্স সংস্থা নেক্সট-জেন এর প্রধান ও সংস্থাটির প্রথম পরিকল্পনাকারী। সে ই মানুষের প্রতিটি প্রয়োজনে রবোটের ব্যবহার নিশ্চিত করে ও বিজ্ঞান একাডেমির প্রয়োজন মোতাবেক বুদ্ধিমত্তার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন গ্রেডের রোবট তৈরির নির্দেশ দেয়।

ইউডি লম্বা হলঘর পেরিয়ে উচু এক দরজার সামনে এসে দাড়ালো। আশেপাশের সবাই তার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কেউ কেউ মৃদু ফিসফাস করে যাচ্ছে যার মূল কারণ তার কিত্রিম ধাতব হাত, পা। ইউডি একবার চোখ ঘুরিয়ে তাকাতে সব গুঞ্জন সাথে সাথে থেমে গেল।

দরজাটা মৃদু গুঞ্জন করে খুলে যেতে দীপ্ত পায়ে ওরিয়নের কক্ষে প্রবেশ করলো ইউডি।

কর্নেলিয়াসের পাগল কুকুর! উচ্চসরে বলে উঠল ওরিয়ন। অবাক ব্যাপার যে সে নিজে আসতে পারলো না।

মাস্টারকে অলিম্পাসে ডাকা হয়েছে, জনাব। খসখসে গলায় বলল সে। সে কাউকে পদবী ধরে ডাকে না এমনকি যথাযথ সম্মানও দেখায়
না। শুধুমাত্র তার মাস্টার বাদে। তার চেহাড়া সবসময় গ্রানাইট পাথরের মত কঠিন আকারে থাকে।

হাহ, তাকে আর কি করতে পারবে বিজ্ঞান পরিষদ। সে শেয়ালের চেয়েও ধূর্ত!

এনক্রিপটেড ক্যাপ্স্যুলটা তার হাত থেকে নিল ভাইস চ্যান্সেলর। মনোপডে একবার দেখে বিরক্ত চোখে তার দিকে তাকালো।

তোমার এই মাস্টার, নিজেকে কি বিশ্বের প্রধান ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে ভাবে? পাগল কুকুর? সবকিছু ঠিকভাবে এগুচ্ছে? এই ম্যাসেজটা সে পাঠালো এনক্রিপ্ট করে যার কিছুই ঠিক নেই এখন!

তুমি যদি ভেবে থাকো তোমার মাস্টারই একমাত্র সব জানেন তাহলে তুমি বিশ্বের সবচেয়ে বড় হাদা! তার মিশনটা যে এতটা সহজে ভেস্তে যাবে তা আমি কখনো কল্পনাও করি নি! পরিকল্পনার প্রথম ধাপই এভাবে ভেস্তে গেল! তারা কেউ মরে নি ইডিয়ট! নতুন খবর পাওয়া পর্যন্ত তারা কোন এক ট্রান্সপোর্ট শীপে করে পালিয়েছে! মাঝখান দিয়ে আমার দশম প্রজাতির রোবটটা গেল!

প্রচন্ড রাগে হাতের ক্যাপ্সুলটা ছুড়ে মারল মেঝেতে। ইউডির সামনে পরে সেটা চৌচির হয়ে গেল। অবশ্য ইউডির চেহাড়া দেখে বোঝার কোন উপায়ই রইলো না। ভাবলেশহীন হিমশীতল তার চোখজোড়া লক্ষ করছে ওরিয়নকে।

পেছনের দড়জাটা এমন সময় খুলে গেল। একটা দশম প্রজাতির রোবট প্রবেশ করলো সেখানে। ইউডিকে দেখে ইতস্তত করতে থাকলো। মাস্টার আপনাকে একটা বিষয় জানানো দরকার।

বলে ফেলো। এটাকে গুরুত্ব দিয়ে লাভ নেই। আংগুল তুলে ইউডিকে দেখালো সে। কর্নেলিয়াসের দাস সে। আমাদের দলেরই লোক।

মাস্টার, হাটু গেড়ে বসল রোবটটি, ভাইসরয়ের উপর নজর রাখা হয়েছে। সুপ্রিম কমান্ডার ট্রায়ালে জয়ী হয়েছেন এবং তার পদে পুনর্বহাল আছেন। আমরা এবার পরবর্তি পদক্ষেপ নিতে পারি।

ধূর্ত শেয়াল, বিড়বিড় করল সে। মোটেও বিশ্বাস করি না। তাদের দিকে তাকালে আবার সৎবিত ফিরলো তার। এখনি না, রোবটটাকে নির্দেশ দিলো সে। কর্নেলিয়াসের পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। যদিও ছাড় পেয়ে গেছে সে কাউন্সিল থেকে কিন্তু এই খবরটা আর চাপা থাকবে না যে তারা পালিয়ে গেছে। আমাদের দেখে শুনে সীদ্ধান্ত নিতে হবে!

জ্বী মাস্টার, এখনো হাটূগেড়ে আছে রোবটটা। দশম প্রজাতির অন্যান্য রোবটের মত তার শরীরে মানুষের মতো কোন কোটিং নেই বরং ধাতব আবরণ প্রকাশ পাচ্ছে। ধাতব চেহাড়াতে বোঝা যায় না তার অভিব্যক্তি। উজ্জ্বল লাল চোখদুটো জ্বলে উঠছে।

ট্রাটো, রোবটটাকে বলল ওরিয়ন। তুমি অলিম্পাসে যাবে। ভাইসরয় কোন ফন্দি আটছে। তার পেছনে ঘুরঘুর করো। সেই আমাদের অনেক অজানা তথ্য দিয়ে সাহায্য করবে।

অবশ্যই মাস্টার, তাকে নড করে কক্ষ থেকে বের হয়ে গেল দশম প্রজাতির রোবট ট্রাটো।

কর্নেলিয়াস কোন দিন আমার কথা শুনে নি! কি সব বায়োটিক রোবট বানানোতে উন্মুখ সে, তাচ্ছিল্যভরে তাকালো সে ইউডির দিকে। আমার স্কয়ার, ট্রাটো, দশম প্রজাতির রোবট, মানুষের মত বুদ্ধিমত্তা তার, যে কোন সময়ে মানুষের চেয়ে ক্ষুদ্র সময়ের মাঝে সঠিক সীদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু কখনোই আমার আদেশ অমান্য করতে পারবে না। রোবটিক্সের আইনে বাধা সে। বাইরে একপলক তাকিয়ে হাসলো সে।

কিন্তু কর্নেলিয়াস তোমার মত কুকুরের প্রতি বেশি আগ্রহী! মানুষ আর যন্ত্রের অদ্ভুত খিচুরীই তার সবচেয়ে আস্থাভাজন! সে আর তার পাগলা ডক্টর উঠে পরে লেগেছে বায়োবট বানানোর জন্যে। ভ্রু নাচালো সে। কারণটা কি?

বায়োবট রোবটের চেয়েও উন্নত, খসখসে গলায় বললো ইউডি। আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের কোন দরকার নেই, মানুষের মস্তিষ্কই সকল সীদ্ধান্ত গ্রহণ করে কিন্তু রবোটিক পার্টস দ্রুততার সাথে কাজ সম্পন্ন করতে পারে। বায়োবট মানুষের মত বুদ্ধিমান, রোবটের মতো উন্নত!

যা বলেছ! নাক সিটকালো ওরিয়ন। হয়তো তোমার কথা ঠিক কিন্তু বায়োবট কি আমার রোবটদের মতো বিশ্বাসী? মাস্টারের আদেশ কখনোই ফেলবে না?

কোথায় তোমাদের সাবজেক্ট ৪? সে এতই আনস্ট্যাবল ছিল যে উন্মাদ ডক্টরের ল্যাব ভেঙ্গে পালালো! উন্মাদটা তাকে কন্ট্রোলই করতে পারে নি বরং সেই তার মস্তিষ্ক দিয়ে তার রোবটিক অংশগুলো কন্ট্রোল করছে। যেন মহান কোন উপহার দেয়া হয়েছে তাকে… কি নাম টেস্ট সাবজেক্টটার?

জেমস… ধাতব শব্দ বের হলো যেন ইউডির মুখ থেকে।

হ্যা জেমস… যার জন্যে মিশনের কম্পিউটার প্রোগ্রামারটা পাগলের মতো সব ক্লাসিফাইড ফাইলগুলো খুলে ফেলেছে… ঐ মেয়ে এখন এটাও জানে যে জেমস ল্যাব ভেঙ্গে পালিয়েছে এবং কর্নেলিয়াসের গোপন বায়োবট প্রকল্পও সে হাইপার ওয়েভে হ্যাক করে বের করে ফেলেছে… এবং সে এখনো বেচে আছে! চিৎকার করলো সে।

তুমি তোমার মাস্টারের কাছে ফিরে যাও আর বলো, গমগম করে উঠল ওরিয়নের কণ্ঠস্বর। যতক্ষণ পর্যন্ত সে তার পুরো পরিকল্পনা আমাদের সাথে আলোচনা না করছে, আমরা নতুন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছি না। পরের বার আমি তাকে দেখতে চাই এখানে, তার পাগল কুকুরকে না! যাও!

ধীরে ঘুরে বের হয়ে আসল ইউডি। তার চলার পথে চেয়ে থাকল ভাইস চ্যান্সেলর ওরিয়ন।

****

মাঝরাত পেরিয়ে গেছে অনেক আগেই। স্টোভের মাঝে তখনো কাঠ কয়লার অঙ্কার ধিকিধিকি জ্বলছে। বাইরের তাপমাত্রা তখন হীমাঙ্কের ২০ ডিগ্রি নিচে। এখানে রাতে প্রচন্ড ঠান্ডা পরে, বৈরী এক পরিবেশ।

ঘুম ভেঙ্গে গেল জেমসের। মুখ ভিজে গেছে ঘামে। এই শীতের মাঝেও ঘেমে উঠল সে। চিরচেনা সেই দুঃস্বপ্নটা আবার দেখেছে। এখনো মানিয়ে নিতে পারছে না সবকিছুর সাথে। ফেলে আসা ভয়ঙ্কর দিনগুলো যেন এখনো তাড়া করে বেড়ায় স্বপ্নের মাঝে।

পাওয়ার সেলটা তার বিছানার পাশে চার্জ হচ্ছে। আয়নিক এই ব্যাটারিই তাকে সচল রাখে । রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে হাইবারনেট মুডে চলে যায়, পাওয়ার সেল চার্জ হতে থাকে পাশে। সকালে আবার শরীরে লাগিয়ে নেয়, বাইরে থেকে কেউ বুঝতেই পারে না যে তার রক্ত মাংশের শরীরটা বিসর্জন দিয়েছে অনেক আগেই।

আজ আর ঘুমাতে পারবে না বুঝতে পারলো জেমস। বুকের পাশে পাওয়ার স্লটটা খুলে চার্জ হওয়া সেলটা ঢুকিয়ে দিল। চোখের সামনে দেখতে পেল সিস্টেম রিব্যুট হচ্ছে। লাল একটা স্টেটাস বার পূর্ণ হতেই হাইবারনেট মুড চলে গিয়ে পুরো ফাংশনাল হয়ে গেল তার শরীর। চোখের সামনে সবুজ লেখা নানা ইনফরমেশন তাকে দেখাচ্ছে। যেদিকে তার চোখ ফোকাস করছে তার বিশদ বিশ্লেষণ তার মস্তিষ্কে বসানো স্পেশাল ন্যানো্চিপটা করে দিচ্ছে।

উঠে দাড়ালো সে। হালকা সামার জ্যাকেটটা পরে তার ছোট্র হাটটা থেকে বের হয়ে আসল। হিমশিতল বাতাসে তার লম্বা চুল মৃদু উড়ছে। প্রচন্ড ঠান্ডাকে পরোয়া করলো না সে। তার পোষা হাউন্ডটা তার পায়ের শব্দে জেগে উঠেছে, মৃদু লেজ নাড়ছে তার দিকে চেয়ে। ব্ল্যাক ফরেস্টে এক রাতে তাকে খুজে পেয়েছিল জেমস, এরপর বাড়িতে নিয়ে এসেছে সে তাকে। এখন তার সাথেই থাকে সে। তার চিরায়িত পথ নিঝুম ব্ল্যাক ফরেস্টের মাঝে ঢুকে পরলো। রাতের বেলা গাছগুলোতে যেন অন্ধকার জমাট বেধে আছেে

দ্রুত থেকে দ্রুততর হতে থাকলো তার ছোটার গতি। পায়ের আর্টিফিশিয়াল হাটুর গিয়ারগুলি সেলের পাওয়ার নিয়ে দ্রুতগতিতে ঘুরছে। সাধারাণ মানুষ কল্পনাও করতে পারে না এত দ্রুত কেউ ছুটতে পারে!

আর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করো, উন্মাদ ডক্টরের হেড়ে গলা কানে ভাসছে তার। তারপর দেখবে সব শেষ হয়ে যাবে। তার হাত পা বেল্ট দিয়ে আটকানো আছে এক্সপেরিমেন্ট চেয়ারের সাথে। মেঝে থেকে কয়েক ফুট উপরে চেয়ারের মাঝে আষ্টেপিষ্টে বাধা তার শরীরটা।

না, আমার চোখ না! চিৎকার করে উঠল জেমস। দুটো ধাতব কাটা তার চোখের দিকে এগিয়ে আসছে ধীরে ধীরে…

চোখটাই তো আসল সাবজেক্ট’৪! মাতালের মত শোনা গেল উন্মাদ ডক্টরের গলা। মানব চোখ খুবই দুর্বল, সে দৃশ্যমান আলোর বাইরে কিছু দেখতে পারে না! অন্ধকার তার জন্যে বিশাল বাধা, তুমি হবে সুপার সোলজার! সাধারণ একটা রেঞ্জারের চেয়ে হাজার গুণে উন্নত শক্তিশালী এক জীবে রুপান্তরিত হবে তুমি।

ধীরে ধীরে তার দিকে এগিয়ে আসছে ধাতব কাটাগুলো… বিষ্ফোরিত চোখে সে তাকিয়ে আছে কাটাদুটোর দিকে…

একটা গাছে হেলান দিয়ে দাড়ালো জেমস। জোরে জোরে হাপাচ্ছে সে। কতদূর চলে এসেছে জানে না সে। সাথে সাথেই চোখের সামনে দেখতে পেল লেখা ফুটে উঠেছে ১৭ কিলোমিটার ৩,৪৩ মিনিটে।

আবার স্বপ্নটার কথা ভাবল সে। ধীরে ধীরে জ্ঞান ফিরে আসছে তার। দুইজন ল্যাব-মনিটর তার দিকে ঝুকে আছে। ঝাপসা দৃষ্টিতে দেখল একজন আরেকজনকে বলছে, মস্তিষ্কে ন্যানোচিপ ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়েছে, হাত পায়ের সব জয়েন্ট ফেলে দিয়ে মেটালিক গিয়ার বসানো হয়েছে, চোখে সংবেদনশীল সেন্সর বসানো হয়েছে ৫০x অপটিকাল জুম সংবেলিত, সাথে সিস্টেম সফটওয়ার আপ্লোড করে দেয়া হয়েছে… ন্যানোচিপটা এখন সাবজেক্ট ফোরকে কন্ট্রোল করার কথা।

আস্তে আস্তে তীব্র ব্যাথা ছড়িয়ে পরছে তার শরীরের সমস্ত জায়গায়। মাথার ভেতর থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত ব্যাথাটা ছড়িয়ে পরছে। চোখের সামনে সবুজ কতগুলো লিখা ফুটে উঠল। কমান্ডের পর কমান্ড তার ফাংশনালিটি চেক করে যাচ্ছে।

কোন ভার্সনটা আপলোড করেছো সাবজেক্ট ফোরের মাঝে? আরেকজন ল্যাব-মনিটরের গলা শুনতে পেল সে। হাতে একটা ধাতব ডিস্ক ধরে আছে।

ভার্সন ১৩.৮ সি।

ভার্সন ১৩.৮ সি! চিৎকার করে উঠলো ল্যাব-মনিটর। ঐ সিস্টেম সফটওয়ার তো আনস্টেবল ভার্সন! থরথর করে কাপছে সে। এটা তো তার মস্তিষ্কের প্যাটার্ণ ব্রেক করতে পারবে না! তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না!

আরেকজন ল্যাব-মনিটর বড় বড় চোখে তাকিয়ে আছে। বড় একটা ভূল হয়ে গেছে তার। পালাতে চাইলো সে। কিন্তু ততক্ষণে বহু দেরি হয়ে গেছে।

জেমসের শক্ত কঠিন হাত তার কণ্ঠ ধরে ফেলল। হাতটা উচু করতে অনায়েসেই মেঝে থেকে উপরে উঠে গেল ল্যাব-মনিটর, হাত-পা দুদিকে ছুড়ছে। হাতটা বাকাতেই ঘাড়টা ভেঙ্গে গেল তার, ধপাস করে মেঝেতে পরল তার প্রাণহীন দেহ। আরেকজন দরজার দিকে ছুটছে। কিন্তু তার আগেই তাকে ধরে ফেলল জেমস। আগের জনের মতই একই পরিণতি ভোগ করল সে…

চোখ তুলে আকাশের দিকে তাকালো জেমস। এখানকার আকাশ পৃথিবীর মত নীলচে নয় বরং সবসময় সবুজ-লালের আরোরা খেলা করে এখানে। তার চোখ দূরতম তারাও স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করতে পারে। জীবনটা তার কাছে আর দশটা মানুষের চেয়ে ভিন্ন হয়ে গেছে।

এক্সপেরিমেন্ট ল্যাব থেকে পালিয়ে এসে এখানে দুর্গম একটা গ্রহে লুকিয়েছে সে। কেউ তাকে এখানে খুজে পাবে না।

আগের জীবন থেকে দূরে থাকতে চায় সে। কিন্তু একজন তাকে তা ভূলতে দেয় না। মাথায় বসানো সূক্ষ্ণ চিপটা তার নিয়ন্ত্রণ মাঝে মাঝে হারিয়ে ফেলে। হাহাকার করে তাকে খুজে…

তার একমাত্র ছোটবোন জেনাকে।

আগের পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৩৯
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×