somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সালেহ মতীন
ভাঙতে নয়, গড়তে চাই। গড়তে চাই সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের একটি বিশ্ব সৌধ। আগামী প্রজন্মকে হানাহানিমুক্ত একটি শান্তিময় সুন্দর পৃথিবী উপহার দিতে চাই। সুন্দরকে আরো সুন্দর করে সাজানো এবং পরিশীলিত ব্লগিং চর্চার মাধ্যমে পরিশুদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠনই আমার সাধনা।

নাতি সাইকেলের পরিচর্যা

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৭:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পারিবারিকভাবে ছোটকাল থেকেই বাইসাইকেলের সাথে আমার পরিচয়। সুস্পষ্ট মনে আছে সাইকেল চালানো শেখার জন্য ১ টাকা মানত করেছিলাম। আমাকে প্রশিক্ষণে সহযোগিতা করেছিল সমবয়সী দুই ভাতিজা তবিবর ও নূরুল্লাহ। আমি তাদের কাছে ঋণী। পরবর্তীতে দাখিল পাশের পর টিউশনির ১৫০০/- টাকা দিয়ে একটি হিরো (HERO) সাইকেল কিনি। সালটা ১৯৮৯, কেশবপুর থাকতাম। সাইকেলটা দৌঁড়াত ভালো কিন্তু এর বাইরের চেহারাটা আমার পছন্দসই না হওয়াতে বিক্রেতাকে বলে দুদিন পর এটি বদলিয়ে আরো ২০০/- অতিরিক্ত দিয়ে হাতে পেলাম BSA সাইকেল (ইন্ডিয়ান এ ব্রান্ডের সঠিক পূর্ণরূপ কী তা কারো কাছ থেকে জানতে না পারলেও আমি আদর করে বলতাম Bicycle of South Asia -BSA)।

সাইকেলটি আমার কাছ থেকে অনেক আদর-যত্ন পেতে থাকল। প্রতিদিন ধুয়ে-মুছে মবিল দিয়ে তাকে লালন পালন করতে থাকি। আদর-যত্নের মানদণ্ডে মনে করতাম ব্যবহৃত অন্যান্য জিনিসপত্রের ন্যায় সাইকেলটিও আমার আদরের সন্তান। ওকে ফুল দিয়ে সাজিয়ে রাখতাম। ওর শরীরের ময়লা-ধূলা নিজ হাতে পরিষ্কার করতাম, গোসল করিয়ে দিতাম। ওর প্রাণ থাকলে আমার যত্নে সে আপ্লূত হয়ে চোখের পানি না ফেলে পারত না। এভাবেই চলতে থাকে। ৯৩ সালে যখন কেশবপুর থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসি তখন সেটিকে বাসের ছাদে বহন করে এনেছিলাম ঝিনাইদহে। শহরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে সাইকেলে করে ছুটে বেড়িয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করে ৯৯ সালে যখন ঢাকা চলে আসি তখন অবশ্য তাকে আর সাথে আনা সম্ভব হয়নি। এক দরিদ্র ছেলেকে সেটি গিফ্ট করে এসেছিলাম।

১৭ বছর পর আমার ঘরে নাতি সাইকেল এসেছে। পুত্র রাতিব রিদওয়ান স্কুলে ভালো রেজাল্ট করার পুরস্কার স্বরূপ গত ৫ জানুয়ারি ২০১৬ তাকে একটি সাইকেল কিনে দেয়া হয়। বাস্তবে দাদা অনেক আগে হলেও (আমার বড় আরো দুই ভাই দাদা হওয়ার সুবাদে) যন্ত্রের দাদা হলাম সেদিন। দীর্ঘদিন পর ঘরে সাইকেল আসাতে ছেলের চাইতে আমিই বেশি খুশি হয়েছি। প্রথম ওর ৪ চাকা ছিল সপ্তাহ দুয়েক পর দুটি চাকা খুলে ফেলা হয়। এখন রাতিব দুই চাকাতেই চালাতে পারে। আমার চাইতে ওর কম সময় লেগেছে চালানো শিখতে। লক্ষ্য করছি সে এটাকে অনেক যত্নে রাখতে চাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর পর সে সাইকেলের কাছে গিয়ে সেটাতে বসে। সাইকেলের ওপর কিছু রাখলেই আপত্তি করে ইত্যাদি। তার সাইকেল তার কাছে পুত্রের মতো, আর আমার কাছে সেটি নাতি। এখন প্রতিদিন নাতি সাইকেলের পরিচর্যায় আমি সময় ব্যয় করি। অফিস শেষে রাতে ঘরে ফিরলে ছেলের পড়া শেষ হলেই সাইকেল নিয়ে দুজনে বের হই। ও চালায় আর আমি সাথে সাথে দৌঁড়াই। আর চালানো শেষে ঘরে ফিরে আমার ডিউটী, ব্রাশ দিয়ে চাকা ও বডি ক্লীন করি, ধূলাবলি জেড়ে বিয়ারিং-এ মবিল দিই আরো কত কি!

দাদা/নানা হওয়ার অভিজ্ঞতা একেবারে মন্দ না। অন্তত মানব সন্তানের আসল দাদা হওয়ার আগে যন্ত্রপিতামহ হওয়ার আনন্দ আমাকে বেশ মজা দিচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৪৫
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×