১. হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে পারমানবিক বোমার ধ্বংসযজ্ঞ দেখে আতকে উঠেছিল সারা পৃথিবী। আইনস্টাইনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল “ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে কি ধরনের অস্ত্র ব্যবহার হতে পারে?” আইনস্টাইনের উত্তর ছিল “ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে জানি না , তবে চতুর্থ বিশ্বযুদ্ধ যে লাঠি এবং পাথর দিয়ে হবে তা বলতে পারি”।" অথচ কঠিন হলেও সত্য এটাই যে, আইনস্টাইন স্বয়ং এই ধ্বংসযজ্ঞের দায় কোনভাবেই এড়াতে পারেন না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার অল্প কিছুদিন আগে ১৯৩৯ সালের ২রা আগস্ট পদার্থ বিজ্ঞানী আইনস্টাইন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টকে চিঠি লিখেন। সে চিঠিতে তিনি ইউরেনিয়াম-২৩৫ সম্বৃদ্ধকরনে নাজী জার্মানীর অগ্রগতি সম্পর্কে আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে সতর্ক করে দেন এবং তাকে পারমানবিক বোমা তৈরীর উদ্যোগ নিতে বলেন। যার ফলে ১৯৩৯ সাল থেকে শুরু করে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত ছয় বছর ২০০ কোটি ডলারের ও বেশী খরচ করে প্রথম সাফল্যজনক ভাবে যে প্রকল্প তৈরী করল পরমানু বোমা, তার নাম ছিল “মানহাটান প্রজেক্ট” আর এর প্রধান ছিলেন রবার্ট ওপেনহাইমার। আর এই বোমা কতটা ধংসাত্বক ছিল তা দেখার জন্য হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে যেতে হবে।
২. ডিনামাইটের মত মারাত্বক বিস্ফোরকের আবিস্কারক, তাঁর সময়ে যাকে ‘মার্চেন্ট অব ডেথ বা মৃত্যুর সওদাগর’ হিসাবে অভিহিত করা হতো সেই আলফ্রেড নোবেল মানুষ হত্যার বিভিন্ন অস্ত্র তৈরি করে প্রচুর টাকা উপার্জন করেছিলেন। কিন্তু সেই টাকা মানব জাতির কল্যাণের কোনো কাজে ব্যয় করেননি বলে তার প্রচন্ড নিন্দা হয়েছিল।তিনি উপলদ্ধি করলেন তিনি নিজেকে একজন "মৃত্যু ব্যবসায়ী" হিসেবে পরিচিত করে মরতে দিতে পারেন না। মানুষের মনে তাঁর সম্পর্কে সম্মানজনক ইতিবাচক পরিচয় রেখেই মরতে হবে। কী করা যায় ?
অনেক চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেন তাঁর উপার্জিত অর্থ মানব কল্যানের কাজে ব্যয় করবেন। এরপর ১৮৯৫ সালের নভেম্বর মাসে আলফ্রেড নোবেল তার মোট উপার্জনের ৯৪% (৩ কোটি সুইডিশ ক্রোনার) দিয়ে তার উইলের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করেন নোবেল পুরষ্কার। এই বিপুল অর্থ দিয়েই শুরু হয় পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাবিজ্ঞান, সাহিত্য ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রদান। ১৯৬৮ যোগ হয় অর্থনীতিতে।
৩. ‘মিসাইল ম্যান’ নামে খ্যাত প্রখ্যাত বিজ্ঞানী এবং ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ড. এপিজে আবদুল কালাম।তিনিই ভারতে প্রথম পারমানবিক বোমা বহনযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণ করেন। অগ্নি, পৃথ্বী, আকাশ, ত্রিশূল, নাগা ইত্যাদি ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণে তাঁর অবদান ও কৃতিত্ব অপরিসীম | ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষনা ও বিজ্ঞানচর্চায় তাঁর ভূমিকা বহুক্ষেত্রেই পথিকৃতের।
একদা মারণাস্ত্রের কারিগরেরা শেষ জীবনে কি সুন্দর শান্তির দূত হয়ে শান্তির বাণী আওড়াচ্ছেন!! আইন্সটাইন ধ্বংসযজ্ঞ দেখে শিউরে উঠছেন; মিঃ আলফ্রেড নোবেল নিজের নাম ফোটানোর ভালই ব্যবস্থা করেছেন আর এ যুগের ‘মিসাইল ম্যান’ বলছেন, ‘পরমানু মুক্ত বিশ্ব চাই’।
কি সুন্দর!! কি সুন্দর!!!
N.B. লেখাটি বিভিন্ন জায়গা থেকে জোড়াতালি দিয়ে তৈরী করা
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৪