somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রমযান নিয়ে কিছু কথা

৩০ শে মে, ২০১৭ দুপুর ২:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রমযান মাস আল্লাহর রহমতের মাস। রমহমত, বরকত আর মাগফিরাত নিয়েই রমযান মাস। মহান আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘আমি পবিত্র আল-কুরআন রমযান মাসে নাজিল করেছি’। রমযান মাসের এত গুরুত্ব , এত মাহাত্ন্য যে, শুধু এই মাসে কুরআন নাজিল হয়েছে সে জন্য। অন্য কোন কারনে নয়। রমযান মাস অন্য ১১ টি মাসের মত না। রমযান মাসে রোজা রাখা ফরয। ফরয হচ্ছে অবশ্য কর্তব্য। এক জন মুসলমানকে অবশ্যই অবশ্যই রোযা রাখতে হয়। না হলে সে কাফির হয়ে যায় ।মানে অবিশ্বাসীদের দলে সে অন্তর্ভুক্ত হয়। মুমিন ব্যক্তি তারাই যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সব করতে পারে। সন্তুষ্টি মানে সকল ভাল কাজ করা।

শান্তির মাস হচ্ছে রমযান মাস। রোজা রাখলে মনে প্রশান্তি আসে। ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করলে যেমন মনে প্রশান্তি আসে। ঠিক তেমনি রমযান মাসে রোজা রাখলে মন শান্তিতে থাকে।

রোযা হচ্ছে ঢাল স্বরূপ। জাহান্নামে আগুন যখন ব্যক্তিকে গ্রাস করতে চাইবে তখন কেবল রোজাই জাহান্নামের আগুন থেকে তাকে বাঁচাতে পারে। কাউকে তীর ছুঁড়া হলে সে যেমন ঢাল কে ব্যবহার করে নিজেকে বাঁচায়। এবং তীরকে প্রতিরোধ করে ঠিক তেমনি রোজা ও জাহান্নামের আগুনকে প্রতিরোধ করে। আর জাহান্নামের আগুন দুনিয়ার আগুনের ৭০/৭১ গূণ বেশি শক্তিশালী। বেশি ক্ষমতাধর।

আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

‘ইয়া আইয়ু হাল্লাজিনা আমানু কুতিবা আলাইকুসসুম সিয়াম ক্বা‌মা কুতিবা আলাল্লাজিনা মিন কাবলিকুম লাআল্লাকুম তাত্তাকুন। ( সুরাঃ আল-বাক্বা‌রা -১৮৩)

অর্থাৎ ঃ হে মুমিনগণ তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে , যেমন তোমাদের পূর্ব পুরুষদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।

খাতামুন ন্যাবিয়ীন হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর যামানা থেকেই আমাদের ওপর রোযা ফরজ করা হয়েছে এমনটি না, অনেক আগে থেকেই মুসলমানরা রোজা রাখতেন । তবে তখন রোজা সবার ওপর ফরজ হয়নি। মহান আল্লাহ তাআলা এই আয়াতটি নাজিল করার পরই কেবল গোটা মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে , উদ্দেশ্যঃ- আমরা যাতে আল্লাহ কে ভয় করতে পারি । তার হুকুম আহকামকে ভয় করতে পারি ।

আয়াতটিতে মহান আল্লাহ তাআলা বলেছেন কেবল মুমিনদের জন্য রোজা ফরজ করা হয়াছে। সকল মানুষের ওপর নয়।

আল্লাহ তাআলা রোজার প্রতিদান নিজ হাতে বান্দার হাতে তুলে দেবেন। অন্য সকল ক্ষেত্রে সেটা বলা হয়নি, কেবল রোজার বেলায়ই । কেননা রোজাতে ফাঁকি দেয়া যায়না। অন্য সকল কিছুতে ফাঁকি দেয়া গেলেও । রোজাদার ব্যক্তির আল্লাহ ভীতি আধিক থাকে । কেননা তিনি যানেন যে মানুষকে ফাঁকি দিয়ে অনেক কিছু খাওয়া যায় কিন্তু আল্লাহকে ফাঁকি দিয়ে কোনো কিছু খাওয়া যাবেনা। নিশ্চয়ই তিনি সকল কিছু দেখছেন। সব কিছুই তার গোচরে। তিনি মনের খবর ও জানেন। তার মতো বিজ্ঞ কে আছে?

অন্য ক্ষেত্রে লোক দেখানো কিছু কাজ করা যায় কিন্তু লোক দেখানো রোজা রাখা যায়না। যেমন – কাওকে দেখিয়ে সালাত আদায় করা যায় কিন্তু রোজা কাওকে দেখিয়ে রাখা যায়না। কেননা রোজাদার ব্যক্তিই কেবল জানেন যে, তিনি রোজাদার নাকি বেরোজাদার। অন্য ব্যক্তির পক্ষে বিচার করা সম্ভব না। এটা কেবল আল্লাহ তাআলাই বিচার করতে পারবেন। তাই তিনি বলেছেন কেবল রোজার প্রতিদান তিনি নিজ হাতে রোজাদার বান্দার হাতে তুলে দেবেন ।

বিশ্বের সকল মুসলিম দেশেই বর্তমানে সিয়াম সাধনা শুরু হয়ে গেছে। আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে ও সিয়াম সাধনা শুরু হয়ে গেছে। রমযানের আগের দিনগুলোতে অনেক তাপমাত্রা ছিল। মাঝেমধ্যে সহ্য করা অনেক কঠিন ছিল, কিন্তু আল্লাহর বড় নিয়ামত রমযান শুরু হবার সাথে সাথে আর্দ্র‌তা বারতে থাকে আবহাওয়ার তাপমাত্রা কমতে থাকে । বৃষ্টিপাত হয় । আল্লাহর অশেষ নিয়ামত। তিনি যা কিছু করেন তার বান্দাদের উত্তম এর জন্যই করেন ।

বাংলাদেশ একটি মুসলিম প্রধান দেশ । শতকরা ৯০/৯১ জনই মুসলিম । তবে সাম্রদায়িক স্মপ্রীতির দেশ। আমরা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান সবাই প্রয়োজনে একসাথে ইফতার করি যা অন্য দেশের জন্য আদর্শ । জাতি, ধর্ম , বর্ণ নির্বিশেষে সবাই বাংলাদেশের সন্তান। আমরা সহযোগিতা, সহমর্মিতা দিয়ে বিশ্ব জয় করতে পারি।

আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য একজন মুসলিম কে সালাত, রোজা , যাকাত ,হজ্ব অর্থাৎ ইসলামের মূল খুঁটি ছাড়াও অন্যান্য সমাজসেবা মূলক কাজকর্ম , সহযোগিতামূলক কাজকর্ম করতে হয়।

মুহম্মদ (সঃ) বলেছেন, ‘ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সকল কাজকর্মই ইবাদতের সামিল। ‘

সুতরাং শুধু রোজা বা সালাত বা যাকাত বা হজ্বই কেবল ইবাদতের সামিল নয় বরং ভালো সকল কাজই ইবাদতের সামিল।

রমযান মাসে একটি ভাল কাজ করলে অন্য সময়ের তুলনায় ৭০ গূণ বেশি সাওয়াব পাওয়া যাবে। নফল নামাজ রমযান মাসে পড়লে অন্য সময়ের ফরয নামজের ঘাটতি পূরণ করবে। রমযান মাসের অনেক মাহাত্ম্য । কোন ব্যক্তি যদি কোন মন্দ কাজ করে এবং সে দিন সে যতক্ষণ পর্যন্ত তাওবা না করে ততক্ষণ পর্যন্ত তার মন্দ কাজটির হিসাব লিপিবদ্ধ করা হয়না। ফেরেশতারা তার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে যে , ‘এই বুঝি ব্যক্তিটি তাওবা করলো’ দিন শেষ হয়ে গেলে যখন ব্যক্তি তাওবা না করে তখন তার মন্দ কাজটির হিসাব লিপিবদ্ধ করা হয়। কিন্তু সেটা ৭০ গূণ না হয় ১/১০ গূণ । আল্লাহ কত মেহেরবান। আবার কোন ব্যক্তি যদি কোন ভাল কাজ করে তবে সাথে সাথে তার আমল নামায় ৭০ গূণ নেকী লিপিবদ্ধ করা হয়। রমযান মাসের কত মাহাত্ন্য !

আসুন আমরা রমযান মসের গুরুত্ব ও মাহাত্ন্য বুঝি এবং সে অনুযায়ী জীবন গড়ি।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০১৭ দুপুর ২:২২
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×