- কেমন আছো?
- ভালো আছি, তুমি কেমন আছো?
- আছি কোনোরকম?
- কোনোরকম কেন?
- এমনি।
- এই যে আমার সাথে দেখা হল!
- তা তো হল
- তোমার এক্সাম কেমন হল?
- ভালো হয়েছে?
- ওই যে এক ছেলে দেখে গেলো? ওসব নিয়ে আর বাড়াবাড়ি হয়নিতো?
- আমার বিয়ে হয়ে গেছে।
- কি বল!!! কবে!!? কই আমাকে তো কিছু বলোনি। তোমার সাথে দেখা হয়নি মাত্র নয়দিন, এই নয়দিনের মধ্যে বিয়ে হয়ে গেলো অথচ আমাকে জানাওনি পর্যন্ত। রুবেল এর মনে হতে লাগলো ইভা ওকে মিথ্যা বলছে, একটু পরই দুষ্ট একটা হাসি দিয়ে বলবে, আরে যাও তোমার সাথে দেখি ফান করাও যাবেনা, সত্যি ভেবে বসে আছো দেখছি!!
কিন্তু তা হচ্ছেনা, ইভার কথার ধরন খারাপ দিকই ইঙ্গিত করছে।
- আসলে সবকিছু এত তাড়াতাড়ি হয়ে গেলো যে,
- এটা কোন কথা না ইভা, তুমি আমার সাথে commitment করে আরেকজন কে কি করে বিয়ে করলে? আর আমাকেই বা জানালেনা কেন? তুমি কি আমাকে মিথ্যা বলছ? বল তুমি আমাকে মিথ্যা বলছ,
- জানালে কি করতে?
- জানালে কি করতাম মানে? তোমাকে আমার কাছে নিয়ে আসতাম।
- খাওয়াতে কি? বেকার ঘুরছ দুই বছর ধরে। তোমার মা বাড়ি থেকে তোমাকে মাত্র পঁচিশশো টাকা হাত খরচ দেয় তাই দিয়ে পুরো এক্ মাস চল তুমি, আমাকে খাওয়াতে কি? দুবেলা দুমুঠো ভাত গাছের তলায় বসে দুজন মিলে ভাগ করে খাব এই রকম কথা সিনেমাতেই মানায় রুবেল বাস্তবে না। বাস্তব বড় কঠিন।
- হ্যাঁ তা তো ঠিকই, বাস্তব বড় কঠিন, ঠিকই করেছ তুমি, ভালো করেছ। বেদনায় কালচে হয়ে যায় রুবেলের চোখ মুখ, মাথা ঘুরতে শুরু করে, মন কিছুতেই বাস্তবকে মানতে চায় না,
একবার বলে ওঠে তুমি একটু বলেই দেখতা, আমি কিছু একটা ব্যবস্থা করতাম, একটা চাকরি আমার নিশ্চয়ই হত!!
দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে ইভার দিকে তাকায়, ওকে কেমন অচেনা লাগছে।
এক সময় ইভা উঠে চলে যায় ধীর পায়ে, ও চলে যেতেই, বাধ ভাঙা কান্নায় ভেঙ্গে পরে রুবেল। দারিদ্র্যতার কাছে ভালবাসা পরাজিত। দারিদ্র্য কেবল পরাজিতই করতে পারে মানুষকে। ভীষণ রোদ উঠেছে আজ। রুবেলের চোখের জল রোদের আলোয় চিক চিক করতে থাকে।
এই যে হিয়া থর থর কাঁপে আজি এমনতরো এই বেদনা ক্ষমা করো , ক্ষমা করো প্রভু। ক্লান্তি আমার ক্ষমা কর প্রভু।