পাহাড়ি একটি মেয়ে ধর্ষিতা হয়েছে । এ ঘটনার জের ধরে গুটি কয়েক নারী-পুরুষ ও মিডিয়ায় টকশো বক্তারা বাংলাদেশের পুরো পুরুষ সমাজকে দায়ী করছে । এক নারীকে তো দেখলাম কলাম লিখছেন, তিনি সকল পুরুষের পুরুষাঙ্গ কর্তনে নেমেছেন । কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না - সকল পুরুষ ধর্ষক নন । কোন কিছু নিয়ে অতি আবেগে কাঁথা ছেড়ার কিছু নেই । যারা এই ধর্ষণের ঘটনাটি নিয়ে অতি উৎসাহ দেখাচ্ছেন তাদের এই উৎসাহ দেখানোর পেছনে কিন্তু আছে । শুধু একটি ধর্ষণের ঘটনা নয় - প্রতিটি ধর্ষণের ঘটনার বিচার চাই এবং তা নিশ্চিত করতে হবে ।
পহেলা বৈশাখের ঘটনায় দেখেছি এক যুবকের পোশাক খুলে মারার ছবি দিয়ে সেটিকে নারী নির্যাতনের ছবি হিসাবে চালিয়ে অনেক হৈই চৈই করা হয়েছে । যার ফলে পহেলা বৈশাখের প্রকৃত নারী নির্যাতনকারীরা ধরা ছোঁয়ার বাহিরে চলে গেছে । ধর্ষণ একটি জগন্ন্য অপরাধ । অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত । আর এ ব্যাপারটা একটি রাষ্ট্র ই নিশ্চিত করতে পারে । এমন নিউজ ও দৈনিকে ছাপা হয়েছে - একটি মেয়েকে বখাটেদের হাত থেকে বাচাতে গিয়ে নিহত হয়েছে এক ছেলে । কৈই সেই ছেলেটির হত্যাকারীদের ধরার জন্য তো মানব বন্ধন করেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা ? মেয়েটিও এখন বিয়ে থা করে দিব্যি সংসার করছে ।
ভারতীয় চ্যানেল,ফেসবুক,ইউটিউব এর কল্যাণে এদেশে এখন ছোট ছোট পোশাক, এক বুকের উপর ওড়নার রেখে চলাচলের রেওয়াজ শুরু হয়েছে । ছেলেদের প্যান্ট কোমরের নীচে নামতে নামতে শেষ প্রান্ত গিয়ে আটকে আছে । বিষয়টা সত্যিই দৃষ্টিকটু এবং পারিবারিক শিক্ষার অভাবেই হচ্ছে । একজন পুরুষের সামনে পোশাক খুলে নাচা নাচি করলেও তার মধ্যে ধর্ষণের সাধ জাগার কথা নয় । যদি সে প্রকৃত পুরুষ হয়ে থাকে । মনে রাখতে হবে যে, সব পুরুষ কিন্তু এক নয় । ছেলে মেয়েদের পোশাক আশাক যেমন শালীন হওয়া উচিত ঠিক তেমনি নারী-পুরুষের দৃষ্টিও শালীন হওয়া দরকার । উ-শৃঙ্খল পোশাক না পরেও অনেক মেয়েও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে । আর এটা হচ্ছে গোটা সমাজের অবক্ষয়ের কারণে । অপসংস্কৃতি আর আধুনিকতার নামে আলটা মডার্ন অনুসরণের কারণে । এক হাতে তালি বাজে না এটা যেমন সঠিক তেমনি সঠিক সবাই তালি বাজাবার জন্য হাতে হাত মেলায় না । রুচি বোধের ব্যাপার আছে । পোশাক মানুষকে আধুনিক করে না । মানুষকে আধুনিক করে তার কর্ম এবং আচরণ ।
যারা ধর্ষণ করে তারা তারা অসুস্থ বিকৃত মস্তিষ্কের অধিকারী ঠিক তেমনি যারা গোটা পুরুষ জাতিকে একই পাল্লায় মাপেন তারাও তাই । ছোট বেলায় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেছি । তর্কের খাতিরে অনেক তর্ক করা যায় । তাতে ফলের ফল কিছু হবে না । সমাজে রাষ্ট্রে ধর্ষণ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে । সেই সঙ্গে নারীদের নিরাপত্তার কথা পিতা-মাতার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের ও ভাবতে হবে । তাই বলে নিরাপত্তার কথা ভেবে তো আর ঘরে বসে থাকা চলবে না । এগিয়ে যেতে হবে । প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে । এবং সেটা করতে হবে নারী-পুরুষ উভয়কে মিলেই । সকল পুরুষের পুরুষাঙ্গ কর্তন করে নয় ।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৪:২৩