সৌদি সরকার নারীদের গাড়ি চালাবার অনুমতি দিয়েছে । আজ থেকে নারীরা সৌদি আরবে গাড়ি চালাতে পারবে । ইজরাইল আর পশ্চিমা ঘেষা সংস্কারপন্থী যুবরাজ নারীদের সিনেমা দেখার, ষ্টিডিয়ামে বসে খেলা উপভোগেরও অনুমতি দিয়েছে । এই জন্য সৌদি আরবে সিনেমা হল তৈরি করা হয়েছে । বহি:বিশ্বে হই হই রব উঠেছে । অনেকে আহা আহা করছে । ফেসবুক টুইটার সোশাল মিডিয়ায় বলছে সৌদির নারীরা স্বাধীন হচ্ছে । এতো দিনে আলোর মুখ দেখল। এই ধরনের কথা বার্তা বলে বেড়াচ্ছে । আমার কথা হল, গাড়ী চালালে,সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখলে কিংবা ষ্টিডিয়ামে পুরুষ ঘেঁষা হয়ে খেলা দেখাই কি নারী স্বাধীনতা ?
ইসলাম কি নারীদের পরাধীন করে রেখেছে ? ইসলাম কি নারীদের জন্য আলাদা কোন আইন করেছে ? না করেনি । নারীদের জন্য যা নিষিদ্ধ পুরুষের জন্যও তা নিষিদ্ধ । ইসলাম নারী পুরুষকে আলাদা করে ফেলেনি । মহান স্রষ্টা উভয়কেই সমভাবে সৃষ্টি করেছেন । কোরআনের কোথাও তিনি বলেননি, আমি পুরুষদের নারীদের চেয়ে উত্তম করে সৃষ্টি করেছি । উল্টো মহান আল্লাহ্ কুরআনে বলেছেন, আমি তোমাদের হতেই তোমাদের সঙ্গিনীদের সৃষ্টি করেছি । যেনো তোমরা তাদের কাছে শান্তি পাও । অর্থাৎ নারী পুরুষ একে অপরের পরিপূরক । কেউ কারো চেয়ে উঁচু নিচু নয় । তবে যেহেতু নারীদের আল্লাহ্ কোমল, নরম অবয়বে সৃষ্টি করেছেন তাই তাদের ব্যাপারে পুরুষদেরকে সর্তক করে দিয়ে বলেছেন, তোমরা তাদের প্রতি কোনরুপ নির্যাতন, জুলুম করো না। দেহমোহর ছাড়া তাদের স্পর্শ পয়ন্ত করার হুকুম নেই । এটা নারীর হক । নারীর প্রতি আল্লাহ্ অনুগ্রহের প্রকাশ । আল্লাহ্ কোথাও বলেননি, নারীরা পরাধীন আর পুরুষেরা স্বাধীন।
শয়তানের কাজই হচ্ছে , কুমন্ত্রণা দেওয়া । তাই নারী পুরুষের পোশাক ব্যাপারে সর্তক করা হয়েছে । নারীদের পরপুরুষের সাথে ঢলাঢলি না করে কর্কশ স্বরে কথা বলতে বলা হয়েছে । দ্রুরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে । কারণ পুরুষের স্বভাবই হচ্ছে, জি আফা আফা বলে তেঁতুল খাওয়া । অনেক এলাকার হুজুর স্যান্ড গেঞ্জি পরে ঘুরে ঘুরে দাত মেসাহ্ করে আর মাথা কাপড় না দেওয়া মেয়েদের দিকে তাকিয়ে,তাদের বুকের দিকে তাকিয়ে, কোমরের ভাজের দিকে তাকিয়ে নাউজুবিল্লাহ্ নাউজুবিল্লাহ্ বলে ইসলাম রক্ষা করেছে মনে করে ঢেকুর তোলে ।
ইসলামে পর্দা নারী, পুরুষ উভয়ের জন্যই বাধ্যতামূলক । পুরুষকে দৃষ্টি নত রাখতে হুকুম দেওয়া হয়েছে । আমরা সেই হুকুমের কথা ভুলে গিয়ে নারীদের কাপড়ে প্যাচিয়ে প্যাচিয়ে মমি বানিয়ে ফেলছি । সৌদিরাই সেটা করেছে । চিন্তা করুণ চোদ্দশ বছর আগে হযরত আয়েশা রা: আনহা মসজিদ নির্মাণে হাত লাগিয়েছেন । তিনি ঘরের ভেতর বন্ধী হয়ে থাকেননি । আবার মুহাম্মদ স: ঘরে বসে তরকারী কুটেছেন । আমি কি হনুরে বলে পায়ের উপর পা তুলে বসে থাকে হুকুম চালালনি। সৃষ্টি থেকেই নারী পুরুষ পরস্পর পরস্পরের পরিপূরক । কেউ বড় ছোট নয় ।
নারীদের পুরুষের মতো সাট, জিন্স পরার অপরাধে শত শত মেয়েকে ইউরোপে এক সময় হত্যা করা হয়েছে । এখন ইউরোপে অনেক নারী শুধু অন্তর্বাস পরেও ঘুরে বেড়ায় । তাহলে তো সেখানকার নারীরাই বেশি স্বাধীন তাই না ? কিন্তু হায়! একটু খোজ নিয়ে দেখুন ইউরোপ আমেরিকাতেই নারীরা সব চেয়ে বেশি নির্যাতিত । সেটা কেন ? কোথায় নারী স্বাধীনতার ফসল ?
স্বাধীনতার নামে নগ্নতা, যৌনাচার কোন ধর্মই সমর্থন করে না । ক্যাথলিক নারীরা নিজেদের এমন ভাবে কালো কাপড় দিয়ে মুড়ে ফেলে যে তাদের চোখ ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না । এমনকি ঈশ্বরের সেবায় তারা বিয়ে পর্যন্ত করে না । যৌবন উৎসগ করে । এটা যার যার ধর্মীয় অনুশাসন, ধর্মীয় বিশ্বাস । কিন্তু এটা নিয়ে কিন্তু কেউ কিছু বলে না । বলেনা, আহারে খৃষ্টানেরা নারীদের পরাধীন করে রেখেছে । মেয়েগুলো ভরা যৌবনে সাধু হলো ।
নারী স্বাধীনতা বলতে আমি যা বুঝি তা হচ্ছে, শালীনতার ভেতর থেকে নারীরা তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করবে । বাজার, হাট, অফিসে আদালতে কোথাও যেতে তাদের মানা নেই । একজন পুরুষ যা যা করতে পারে একজন নারীও তার প্রয়োজন তা করতে পারবে । কাঠমোল্লা আর সৌদিদের দিন শেষ । কোরআন হাদিস ছাড়া এখন আর কোন মতামত ই গ্রহণযোগ্য নয় ।
পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ধর্মীয় আইন মেনে চলাই হচ্ছে স্বাধীনতা । যারা নারীদের ঘরের ভেতর বন্ধী করে রাখা কিংবা শরীর দেখিয়ে চলাকে নারী স্বাধীনতা বলে মনে করে তাদের ব্যাপারে আমার আর কিছু বলার নেই । গাড়ী চালাতে অনুমতি দিয়েছেন ভাল কথা ঘরের ভেতর নারী নির্যাতনটাও বন্ধ করুণ ।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:২৪