somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শাওন রাইডার
আমি ভীষন মাত্রায় পাগল । আমার কাছে এক অর্থে জীবন মানে যুদ্ধ । আমার প্রাপ্তি আমি বাংলায় কথা বলতে পারি । আমার স্বাধীন ভূখন্ডে আমি মরতে পারবো । আমার কাছে ধর্ম হলো মানবতা আর রাজনৈতিক মতাদর্শ মানে আমি মানবতা দল এর সমর্থক । আমি খুবই সরল তবে এক অর্থে সরল মানুষরাই

তারা সচেতন ভারতীয় হতে পারলে, আমরা কি সচেতন বাংলাদেশী হতে পারি না?

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

“স্যার নিয়ে যান। খুব ভালো প্রোডাক্ট। ইন্ডিয়ান। ইউজ করে আরাম পাবেন।” দোকানী কথাগুলোবলছিল আমার সহকর্মী ............কে। কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ দেখেই গেলাম কি ঘটে তা বোঝার জন্য। শেষমেশ আমাকে ভুল প্রমান করে সহকর্মী কিনে ফেললেন পণ্যটি। অথচ পাশেই ছিল তারচেয়েও ভালো দেশী একটি পণ্য। সহজাত প্রবৃত্তি থেকেই চোখ এড়িয়ে গেলো তার। এতোক্ষণ নিশ্চই নাক সিটকানো শুরু করেছেন? ভাবছেন “একটা প্রোডাক্ট কিনবো। এখানে এতো দেশপ্রেম দেখাচ্ছেন কেন?” কিন্তু, আপনাকে একটু হতাশ করে বলতে চাইছি ব্যপারটা দেশপ্রেমের নয়। কথা হচ্ছে যুক্তির এবং এর পেছনের কারণ নিয়ে।
মনে মনে হয়তো বলছেন “আরে ভাই, যুক্তির কিছু তো আপনি বললেনই না!” হ্যা, যুক্তিতে এখনো প্রবেশ করিনি। একটা ছোটগল্প দিয়ে মূল ঘটনায় আসি-
“এক বিদেশী গেলেন দোকানে। একের পর এক বিদেশী পণ্য দেখানো শুরু করলেন বিদেশীকে। ধৈর্য নিয়ে হাস্যোজ্জ্বল মুখে দোকানীর সব পণ্য খারিজ করে বললেন “মশাই, আমার দেশ কি আপনার অপছন্দ?” দোকান সামান্য ইতস্তত হয়ে বললো “দুঃখিত, তবে আমি আসলে আপনার কথার অভ্যন্তরীন সারমর্ম বুঝতে পারছিনা।”
বিদেশীর হাসসি প্রসারিত হলো এবং তার জবাব এলো – “আমার দেশের সেরা পণ্যটি আপনার পাশে। অথচ পণ্যের কথা আপনার মুখে একবারও শুনলাম না।”
এখনো যারা গল্পের সারমর্ম ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন তাদেরকে একটু পরিষ্কার করে বোঝাই। ক্ষুদ্র পরিসরে উপরের ঘটনাটি হয়তো কিছুই না, কিন্তু বৃহৎ পরিসরে খুবই গুরুত্ববহ। জাতি হিসেবে আমরা অনুকরণ দেখে অভ্যস্ত। নিজেদের সংস্কৃতিতে মনের অজান্তেই ঠাই দিয়েছি ভারতীয় সংস্কৃতিকে। এর ফলে অজান্তেই ভারতীয় পণ্যটিই সবার আগে চলে আসে পছন্দের তালিকায়। অথচ দেশী পণ্যের ব্যপারে খোঁজ রাখিনা আমরা। বোকাবাক্সে ২৪ঘন্টা ভারতীয় চ্যানেল আড়াল করে দিয়েছে দেশী পণ্যকে। এর পেছনে ভালো পণ্যের অভাব দায়ী নয়, দায়ী আমাদের চেতনা এবং কান্ডজ্ঞানহীনতা। দেশী পণ্য খারাপ ভেবেই ধরে নিয়েছে আমরা। আর, ভারতীয় পণ্যের চাহিদা, চ্যানেলগুলোর দৌরাত্ম্য এবং চাটুকার বিজ্ঞাপন দোকানীদের মনে সহজেই আচড় কেটে যায়। এই কারণেই দোকানী দেশী পণ্য থাকা সত্বেও ভারতীয় পণ্যটি সবার আগে মাথায় আনে। সেই হিসেব করেই সে তার বিজ্ঞাপনী ভাষা সাজায়। সেক্ষেত্রে একজন ঘোর দেশপ্রেমিকও দোকানীর চাটুকারিতায় সহজে প্রলুব্ধ হয়ে যায়। এভাবেই শেকড় থেকে শিখড় পর্যন্ত সবাই দেশী পণ্যকে অবহেলা করে চলেছে।
সমাধান কি? অনেকেই বলবেন যেই পণ্য ভারত রপ্তানী করে তারচেয়ে ভালো পণ্য কি আদৌ বাংলাদেশ উৎপাদন হয়? উত্তরটা আপনিই খুঁজে দেখুন? সব না পেলেও অন্ততঃ ৬০ শতাংশ দেশী পণ্য আছে যা গুনগত মানের দিক থেকে ভারতীয় পণ্যের তুলনায় যথেষ্ট ভালো। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে যদি এই ব্যপারে নিজে থেকেই পদক্ষেপ নেয় দেশের অভ্যন্তরীন বাজারে ভারতীয় পণ্যের দোরাত্ম্য অনেক হারেই কমে যায়। কোন ভালো বিকল্প না পেলে ভারতীয় পণ্য ছাড়া গতি নেই তা আমিও জানি, আপনিও জানেন। কিন্তু যেখানে দেশী পণ্যের মান ভারতীয় পণ্যের থেকে ভালো হয় তা মুখে মুখে ছড়িয়ে দেয়াটা তো আমাদেরই দায়িত্ব।
যখন দোকানীকে আপনি বোঝাবেন যতো যাই হোক, আপনি দেশী পণ্যই নিবেন তখন দোকানীও তার ব্যবসার খাতিরে আগে দেশী পণ্যকেই প্রাধাণ্য দেবেন।
ভারতীয়রা তাদের নিজেদের পণ্য ব্যবহার করে, দেশের টাকা দেশে রাখার জন্য নয়। বরং, তারা তাদের পণ্যের মান নিয়ে সচেতন। পাশের দেশই যখন নিজেদের পণ্য নিয়ে সচেতন, সেক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী দেশ হিসেবে কি আমাদের উচিত নয় আমাদের পণ্যকেই প্রাধান্য দেয়া? তারা যদি দেশী পণ্য ব্যবহার করে বিশ্বের চোখে সচেতন ভারতীয় হতে পারে আমরা কি অন্ততঃ সচেতন বাংলাদেশী হতে পারবোনা? এখন সময় ভেবে দেখার।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০১
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×