somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

মঙ্গল শোভা করলে কি হয়

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মঙ্গল শোভা যাত্রা নিয়ে পক্ষ বিপক্ষ দাঁড়িয়ে গেছে। বাঙালিদের স্বভাব যেন সব কিছু নিয়ে তর্ক করা । আজকাল হারাম আর হালালের সাথে যোগ হয়ে যাচ্ছে সংস্কৃতি। প্রতিটি ভৌগলিক অবস্থানে অবস্থানরত মানুষ নিজেদের মতন কিছু আচার আচরন করে এর সাথে ধর্মের কোন যোগ নেই।
অথচ নতুন জ্ঞানীরা সব কিছুতেই ভাগ করতে চায় ধর্মের ভিত্তিতে। যারা মনে প্রাণী ধার্মিক তারা থাকুক না ধর্ম নিয়ে অন্যদের ব্যাপারে তাদের এত নাক গলাতে হবে কেন?
ছোটবেলায় কফ কাশি হলে তুলসিপাতার রস খেতে দিতেন মা। । হাম, বসন্ত রোগ গরমে ঘামাচি হলে বা ধোয়া মোছার জন্য ব্যবহার করা হতো নিম পাতা। দাঁতের মাজন হিসাবেও ব্যবহার হয় নিমের ডাল। হিন্দু বাড়িতে তুলসি গা থাকে বলে কি এখন এড়িয়ে যেতে হবে গাছ? এসবের সাথে ধর্মের কোন শখ্যতা বা বিরোধীতা নেই। অথচ এখন দেখছি আদিকালের সব সংস্কৃতি মুছে ফেলে হালাল হারাম দিয়ে গাছ ফুল মাছ সবজি আচার আরচণ যাচাই করা হচ্ছে।
ধর্ম এতো ঠুনকো নাকি যে প্রকৃতির বিষয় ব্যবহারে শেষ হয়ে যাবে।
বিদেশে আলখাল্লা টুপি পরিহিত মানুষ দেখি সমুদ্র পাড়ে, যেখানে বিকিনি পরে ঘুরছে নারী। তাতে তাদের ধর্ম যায় না? অথচ দেশে কিছু মুখোশ বানিয়ে মঙ্গল শোভা করলে তা অপসংস্কৃতি কবে কার ইতিহাস অনেক প্রশ্ন বিদ্ধ করা হচ্ছে। কে কতটা ধর্ম কর্ম করে স্বর্গে যাবে না নরকে যাবে তা তার আর তার ঈশ্বরের বোঝা পড়ায় ঠিক হবে। মানুষ হয়ে আরেকজনের স্বর্গ নরকের হিসাব কি ভাবে নির্ধারিত করে ফেলছে মানুষ।
বাঙালিদের মুখ ভাড় করে থাকতে হবে। হাসা যাবে না আনন্দ করা যাবে না। করুণ গীত, কাব্য, গল্প লিখতে হবে শুধু।
কেউ যদি নিজের ইচ্ছায় আনন্দ করে। তাতে এর বিরুদ্ধে সোর তুলতে হবে কেন, এত গাত্রদাহ হয় কেন বুঝতে পারি না।
আনন্দ করার তেমন কিছুই বাঙালিদের নাই। নববর্ষ উপলক্ষে তারা যদি মঙ্গল শোভার মিছিল করে, রমনার বটমূলে গান শুনে। কেউ ট্রাকে ঘুরে গান করে সতেরো কোটি মানুষের কজনা সে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারে। কত লাখ মানুষ ঘুরতে যেতে পারে মঙ্গল শোভায় বা রমনায়। প্রত্যেকে আলাদা কিছু আনন্দ উৎসবের আয়োজন করে কিছু মানুষ একদিন ঘর থেকে বেড়িয়ে ঘুরতে যায় তাতে কাদের এত গা জ্বালা করে কেন করে ?
আমাদের ছোটবেলায় আমরা বৈশাখি মেলায় মাটির পুতুল চুড়ি, দুল, চুলের ফিতা, বেলুন বাঁশি, কত রকমের খেলনা কিনেছি। নাগর দোলা চড়েছি। হালখাতার অনুষ্ঠান হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খৃষ্টান সবাই করেছে। দোকানে ঘুরে যেমন মিষ্টি খেয়েছি। বাড়ি বাড়ি গেলেও ভালো খাবারের আয়োজন থেকেছে। আমরা যেমন ছোটবেলায় পেয়েছি বাবা মার কাছেও শুনেছি তাদের এমনই আনন্দ উৎসবের গল্প।
পুতুল নাচ, পালা গান, যাত্রা, ঘোর দৌড়, নৌকা বাইচ, মল্লযুদ্ধ, বলি খেলা, মাছধরা, ঘুড়ি উড়ানো এসব কিছুই বাঙলার উৎসব সংস্কৃতির অনুষ্ঠান । বান্নী স্নান, রাস উৎসব, চরকমেলা, সিন্নি, উরুস, ঈদ পূজা কোন উৎসবই কেবল কোন একক ধর্ম সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না কখনো। মহরমের মেলা থেকে কি অন্য ধর্মের মানুষ কিছু কিনে না?
সব সময়ই অন্যরা নিজের মতন অংশ গ্রহন করে আসছে আনন্দ উৎসবে। প্রকৃতির মতন বাংলা সংস্কৃতির ধারা হিসাবে মানুষ বালোলাগা নিয়ে অংশ গ্রহণ করে আসছে। এখন যারা করতে চায় না তারা ঘরে ঢুকে থাকলেই হয় এত্ত কথা বলা কেন আনন্দ উৎসব নিয়ে।
যারা উৎসব নিয়ে এত কথা বলে তারা অন্য অনেক কিছু থেকে নিজেদের বিরত রাখে কিনা জানতে ইচ্ছা করে। ছবি তোলা ছবি দেখা গান বাজনা টিভে সিনেমা দেখা। অন লাইনে ভিডিও ব্যবহার। ফেসবুক এ সবই তো নতুন সংযোজন তারা এসব থেকে বিরত থাকে কি?। অন লাইনে ঢুকলে কত্ত কিছু দেখতে হয় ইচ্ছায় অনিচ্ছায় তা নিয়ে কি তাদের অভিযোগ কেমন জানতে ইচ্ছা করে? কি ভাবে এড়িয়ে চলে অনাকাঙ্খিত বিষয়গুলো। যা ধর্মের পরিপন্থি তাদের জন্য।
ইহুদি ধর্মের যারা সত্যিকারে ধর্ম পালন করে কোন অভিযোগ ছাড়া তারা এখনও যান্ত্রিক অনেক বিষয় এড়িয়ে চলে নিষিদ্ধ দিনগুলোতে। যেমন না খেয়ে রোজা রাখে মুসলিমরা এক মাস ধরে। একাদশির দিন উপোস করে হিন্দুরা সব কিছুর মধ্যে থেকে নিজের ভালোলাগার বিষয়গুলো মানুষ পালন করে নিজের মনে সানন্দে। এর জন্য কোন জোড়ের প্রয়োজন হয় না।
তবে যা ধর্ম নয় আনন্দ সংস্কৃতি তা নিয়ে কেন এত চিন্তা হৈ চৈ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:১০
১৪টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×