somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাম্প্রতিক বাংলাদেশ একটি সমীক্ষা

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




একটি দেশের অধিকাংশ মানুষের কাছে যখন দেশের থেকেও, আপন স্বদেশবাসীর থেকেও, জাতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য থেকেও কোন একটি নির্দিষ্ট ধর্মগ্রন্থ বড়ো হয়ে ওঠে; বেশি মূল্যবান হয়ে দাঁড়ায় এবং যদি সেইটি আবার ভিনদেশী গ্রন্থ হয় তবে যে কোন দেশের ক্ষেত্রেই সে বড়ো সুখের সময় নয়। যে কোন জাতির পক্ষেই তা আত্মহত্যার নামান্তর। এই সাধারণ সত্যটি আজ আমরা বাঙালিরা বিস্মৃত হয়েছি। আর সেইটিই আমাদের জাতীয় জীবনের মূল অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই বলবেন তা কেন? অনেকেই প্রতিবাদে মুখর হবেন। অনেকেই যুক্তির পর যুক্তি সাজাতে থাকবেন। কিন্তু ইতিহাস চলবে তার নিয়েমে। যা সত্য তা সবসময়েই সত্য। এবং বাঙালির পক্ষেও সেই সত্য, সত্যই থাকবে চিরকাল। আজকের বাংলাদেশের দিকে তাকালে এই সত্যটি আর কোনভাবেই ধামাচাপা দেওয়ার উপায় নাই। শাহবাগ আন্দোলনের গোড়ায় ব্লগার রাজীব হায়দারকে চাপাতির কোপে ক্ষতবিক্ষত করে খুন করার ঘটনায় বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ যখন ধর্ম রক্ষায় যুক্তিতে খুনিদের নৈতিক সমর্থন জানিয়েছিলেন তখন তারাও কল্পনা করতে পারেননি, তাদের এই নৈতিক অধঃপতন বাংলাদেশের পক্ষে কতটা ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। রাজীবের পর অভিজিতের নৃশংস খুনে যারা উল্লসিত হয়ে উঠেছিলেন বিধর্মীদের উচিৎ শিক্ষা দেওয়া গেল ভেবে, তারও কল্পনা করতে পারেননি নিজের দেশটিকে কতো বড়ো বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন এই ভাবে অনৈতিক দুষ্কর্মে নৈতিক সমর্থন জানিয়ে। এরপর তো শুধুই ভয়াবহ চাপাতি আরতি। ডাইনে বাঁয়ে সামনে পিছনে শুধুই চাপাতির নৃশংস উল্লাস। আর একে একে ভুলুন্ঠিত দেশের তরতাজা মেধাগুলি। যারা দেশের ভবিষ্যৎ হয়ে উঠতে পারতো, তারাই অকালে অতীত হয়ে যেতে লাগলো। আর বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ নিশ্চিন্ত হতে থাকলেন বিধর্মী এবং নাস্তিকগুলির থেকে দেশকে ও ধর্মকে রক্ষা করা গেল ভেবে। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ গোটা দেশেকে ধার্মিক করে তোলার বিষয়ে সোৎসাহে নৈতিক সমর্থন জুগিয়ে যেতে লাগলেন চাপাতির কারবারিদের সমস্ত অনৈতিক কর্মকাণ্ডে। দেশকে নাস্তিক মুক্ত করতে হবে। দেশকে বিধর্মী মুক্ত করতে হবে। দেশকে ধর্মের পোশাক পড়াতে হবে। এই ছিল তাদের উৎসাহ। সেই উৎসাহে একটিমাত্র বিদেশী ধর্মপুস্তককে শিরোধার্য করে তারা গোটা দেশটাকেই যে অন্ধকারের দিকে পতনের অভিমুখে ঠেলতে লাগলেন নিরন্তর- সেই সত্যটি অনুধাবনের কোন সামর্থ্যই ছিল না তাদের। কারণ সেই সামর্থ্য অর্জনের জন্যে ন্যূনতম শিক্ষার পরিসরটিই স্বাধীন বাংলাদেশের বিগত সাড়ে চারদশকের রাজনীতিতে সম্পূর্ণ অবলুপ্ত করে দেওয়া হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশের এইটি সব থেকে বড়ো প্রাপ্তি।

যে ভয়াবহ বারুদের স্তুপের উপর দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ, তার রাজনৈতিক হিসাব নিকেশ যাই থাকুক না কেন, আছে তো অবশ্যই; কিন্তু তার সামাজিক প্রক্রিয়াটি শুরু হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই। আর সেই প্রক্রিয়ার পেছনে সরাসরি মদত জুগিয়ছে বৈদেশিক অপশক্তি। সেটা রাজনীতির বিষয়। কিন্তু সামাজিক ভাবে এই যে একটি বিদেশী ধর্মপুস্তককে দেশেরও উপরে স্থান দেওয়া এই সামাজিক অবক্ষয়টি স্বাধীন বাংলাদেশের অবদান। এমনটি যদি পাকিস্তান আমলে হতো, তবে একাত্তরে কখনোই স্বাধীন হতো না দেশ। সেটা ইতিহাসের বিধান। যে লক্ষ্য নিয়ে স্বাধীন হয়েছিল দেশ, স্বাধীনতার পর অতি দ্রুত সেই লক্ষ্য থেকে লক্ষ্যচ্যুত হয় বাংলাদেশ। দেশকে স্বাধীন করা এক ব্যাপার, কিন্তু দেশ গঠন আরও শক্ত কাজ। তার জন্যে প্রয়োজন ছিল সামাজিক আন্দোলনের। প্রয়োজন ছিল সঠিক সমাজবিপ্লবের। কিন্তু দুর্ভাগ্য বাংলাদেশের, দুর্ভাগ্য বাঙালির। স্বাধীন বাংলাদেশে এগোতে পারেনি সেই পথে। উল্টে একেবারে উল্টোপথে পরিচালিত হয়েছে, বিদেশী অপশক্তির মদতপুষ্ট হয়ে সামরিক উর্দ্দীর নির্দশনায়।

আর সেই অভিমুখ থেকে কোনদিনই মুক্ত হতে পারে নি বাংলাদেশের সমাজ বাস্তবতা। পারেনি বলেই ধীরে ধীরে কিন্তু নিশ্চিত ভাবেই বাংলাদেশ এগিয়ে গিয়েছে ঘোর সাম্প্রদায়িক অন্ধকারের দিকে। যায় অনিবার্য পরিণতি স্বরূপ বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী আজ এটি একটি ইসলামিক রাষ্ট্র। যেখানে ইসলামিক সংস্কৃতি দিনে দিনে গ্রাস করে নিচ্ছে বঙ্গসংস্কৃতিকেই। সেই প্রক্রিয়াটি ঘটে চলেছে সমাজের সর্বস্তরেই, কিন্তু ঘটে চলেছে দেশবাসীর সচেতন প্রজ্ঞার অন্তরালেই। সেটি খারাপ না ভালো সে প্রশ্নের থেকেও বড়ো কথা, তাতে বাংলার দুই হাজার বছরের গড়ে ওঠা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের শিকড় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে কি না আজকের প্রজন্ম। মূল প্রশ্নটি এইখানেই। যদি না পড়ে, তাহলে চিন্তার বিশেষ কিছু নাই। কিন্তু যদি সত্যই শিকড়হীন হয়ে পড়তে থাকে আধুনিক প্রজন্ম, তবে তার পরিণাম কিন্তু দেখা দেবে ভয়াবহ হয়েই। দুঃখের বিষয় ও দুশ্চিন্তার বিষয় ঠিক সেইটিই ঘটছে আজকের বাংলাদেশের সমাজবাস্তবতায়। ঘঠছে বলেই আজ নাস্তিক নিধনে নৈতিক সমর্থন পেয়ে যাচ্ছে চাপাতির কারবারিরা। ঘটছে বলেই আজ বিধর্মী সম্প্রদায়ের উপর নেমে আসছে নৃশংস তাণ্ডব। ঘটছে বলেই আজ দেশবাসীর এক বড়ো অংশই বিশ্বাস করছে বাংলাদেশ শুধুই নামাজী মুসলিমের স্বদেশ। ঘটছে বলেই আজ বাংলার নারীকে হিজাব পড়িয়ে ধর্ম রক্ষার এত বাড়বাড়ন্ত। ঘটছে বলেই আজ আল্লাহ আকবর বলে যে কোন জায়গায় যে কোন সময়ে মানুষের রক্তে মানুষের প্রাণ নিয়েই ছিনিমিনি খেলার জন্য মেতে উঠতে পারছে উন্মত্ত মুসলিমরাই। কি আশ্চর্য এই কি আমাদের ভালোবাসার বাংলাদেশ? এই কি তিরিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীন করা বাংলাদেশ? এই কি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন দেখানো বাংলাদেশ? আরও আশ্চর্যের কথা দেশের অধিকাংশ মানুষই এই ভাবে আশ্চর্য হচ্ছেন না। পরিস্থিতির মূল ভয়াবহতা এইখানেই।

বাংলাদেশের সমাজবাস্তবতার এই ইসলামীকরণই অধিকাংশ মানুষের দৃষ্টিশক্তিকে ঝাপসা করে দিচ্ছে। বোধশক্তিকে অসাড় করে দিচ্ছে। কর্মশক্তিকে খোঁড়া করে দিচ্ছে। অধিকাংশ মানুষই ভাবতে চাইছেন, সারাদিন ধর্মগ্রন্থ আউরানোই ধার্মিক হয়ে ধর্ম পালনের প্রকৃষ্ট পথ। আর যারা সেই পথকে অস্বীকার করে, তাদের বেঁচে থাকারই কোন অধিকার নাই বাংলাদেশে। এইযে স্বৈরতান্ত্রিক মনোবৃত্তি, এই কি কোন ধর্ম পুস্তকের শিক্ষা হতে পারে? নিশ্চয়ই নয়। বিশ্বের কোন ধর্মগ্রন্থই সেই কুশিক্ষা দেয় না। দেয়ওনি। দিলে এই গ্রন্থগুলি কখনোই সহস্রাব্দ পার করতো না। তাহলে এমনটা ঘটছে কেন? ঘটছে এই কারণেই যে বাংলাদেশের মানুষ যে ধর্মগ্রন্থটিকে আপন করে নিয়েছেন, সেটি দেশজ নয়। সেটি ভিনদেশী। সেই গ্রন্থে বাংলার সাংস্কৃতিক সনাতনী ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকারের কোন ঐতিহাসিকতা নাই। কোন সম্পৃক্ততা নাই। সেই গ্রন্থটি বাঙালির পক্ষে সম্পূর্ণ বৈদেশিক সংস্কৃতি। একটি বৈদেশিক সংস্কৃতিকে নিজস্ব সংস্কৃতি বলে ভাবতে বাধ্য হলে যা যা ঘটতে পারে, তাই ঘটছে বাংলাদেশে। অনেকেই প্রশ্ন করবেন, বাঙালি তো এই ধর্মগ্রন্থটিকে আপন করেছে আজকে না। সেই আপন করে নেওয়ারও তো রয়েছে শত শত বছরের ইতিহাস। ফলে এই আপন করে নেওয়াটিও আজকের বাঙালির ঐতিহ্যও বটে। সেই ঐতিহাসিক বাস্তবতাকে অস্বীকার করা যায় নাকি। না কখনোই যায় না। সেই উত্তরাধিকারকে অস্বীকার করাও উচিত নয়। আমরা বলছি না সেই কথাও। কিন্তু একটু তলিয়ে দেখলেই দেখতে পাবো আমরা, বাঙালি মুসলিম সম্প্রদায়ের জীবনযাপনে এই বিদেশী ধর্মগ্রন্তের থেকেও বড়ো গুরুত্বপূর্ণ ছিল ইসলামী লোকাচার। সেই লোকাচারই তাকে পথ নির্দেশ দিত। তাই তার কাছে এই গ্রন্থের সম্মান ও কদর যথেষ্ঠই থাকলেও দেশের ওপরে এই গ্রন্থের স্থান ছিল না কখনোই। আসল দূর্ঘটনাটি ঘটেছে ঠিক এইখানেই। যে দিন থেকে বাঙালি মুসলিম ধর্মগ্রন্থকে দেশেরও উপরে স্থান দেওয়া শুরু করেছে, সেদিন থেকেই তার অধঃপতন শুরু হয়েছে। যে গ্রন্থের সাথে দেশ ও দেশাচারের কোন রকম সংযোগ ও সংশ্রব নাই, সেই ভিনদেশী গ্রন্থকে দেশেরও উপরে স্থান দিলে দেশেরই সর্বনাশ সাধন করা হয়। শুধু বাংলার বা বাঙালির জন্যেই এ কথা সত্য নয়, বিশ্বের প্রতিটি দেশের ক্ষেত্রেই, প্রতিটি জাতির ক্ষেত্রেই এই কথা সত্য ও অভ্রান্ত। আজকের বাঙালি বিস্মৃত হয়েছে সেই সত্য।

তাই ধর্মগ্রন্থের দিক নির্দেশনার সাথে বাঙালি মুসলিমের বিশেষ পরিচয় নাই। অধিকাংশ বাঙালি পড়েও দেখেনি সেই গ্রন্থে কি আছে। সবটাই তার শোনা কথা। অন্ধের মতো বিশ্বাস করা। যার ভাষা ও ভাব দুই বাঙালির কাছে সম্পূর্ণতঃই বৈদেশিক। সেই অপঠিত গ্রন্থকে অন্ধ মোহে বিশ্বাস করা ও তাকে দেশেরও ওপরে স্থান দেওয়ার মধ্যে কোন কৃতিত্ব নেই, আছে মস্ত অভিশাপ। বাংলাদেশ আজ সেই অভিশাপের বলিমাত্র।

আল্লাহ আকবর বলে ধর্মগ্রন্থের নামে শপথ নিয়ে মানুষ যখন নিরীহ নিরস্ত্র তারই স্বদেশীকে অতর্কিতে আক্রমন করে কাপুরষের মতো, বুঝতে হবে এইভাবে ধর্ম রক্ষা হয় না। এই ভাবে কোন ধর্মকে সম্মান জানানো যায় না। বুঝতে হবে এইভাবে ধর্মগ্রন্থকে পূজো করা ধর্ম পালনের অঙ্গ হতে পারে না। এবং তার সাথে এটাও বুঝতে হবে, যে ধর্মগ্রন্থ নিয়ে মানুষ এমন পৈশাচিক উল্লাসে উন্মত্ত হয়ে উঠতে পারে, সেই ধর্মগ্রন্থই কিন্তু এই মানুষগুলিকে প্রকৃত ধর্মের পথে টেনে রেখে ধার্মিক করে তুলতে পারেনি। তা সে যে কারণেই হোক না কেন। তাই ভিনদেশি সেই ধর্মগ্রন্থও বাঙালির পক্ষে আজও শুভ ও মঙ্গলজনক হয়ে উঠতে পারে নি আদৌ। আর পারেনি বলেই, এই ধর্মগ্রন্থের নামেই শপথ করিয়ে যে কোন অন্ধ বিশ্বাসীকে দিয়ে যে কোন অপকর্ম, নৃশংস নাশকতা, সন্ত্রাসী অত্যাচার, আত্মঘাতী হামলা করিয়ে নেওয়া যায়। ঠিক যা হচ্ছে আজকের বাংলাদেশে। অনেকেই যুক্তিতে শান দিতে উদ্যত হবেন এই বলে যে, এই পরিস্থিতি তো শুধু বাংলাদেশেই সৃষ্টি হয় নি। বরং আরও অনেক বেশি করে, আরও ভয়াবহ ও তীব্র ভাবেই এই পরিস্থিতি ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বেই। ঠিক কথা, কিন্তু তাই বলে সেই অশুভ পরিস্থিতির শিকার হতে হবে কেন আমাদের দেশকে? সবার আগে এই প্রশ্নটিই কি করবো না আমরা? কেন? কেন করবো না? কেন আজও ইসলামী এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে গর্জ্জে উঠছে না বাংলাদেশ? কেন আজও পথে নামছি না আমরা রংপুর থেকে রাঙামাটি, সাতক্ষীরা থেকে সিলেট? ডঃ হুমায়ুন আজাদের মতো মনস্বী মানুষের উপর বর্বরচিত আক্রমন থেকে শুরু করে সেদিনের শোলাকিয়ার আক্রমণের ঘটনা অব্দি কোন নৃশংস ঘটনাটির প্রতিবাদে ঝড় তুলেছে বাংলাদেশ? ঠিক যেমন গত নভেম্বরে ফ্রান্সে সন্ত্রাসী হামলায় গর্জ্জে উঠেছিল গোটা ফরাসীদেশ। বাঙালি কি আজ প্রতিবাদটুকু করতেও বিস্মৃত হয়েছে? আজকের প্রতিবাদ মানে তো শুধুই রাজনৈতিক কিংবা সাম্প্রদায়িক সংগঠনের সংঘঠিত কর্মসূচী। কিন্তু জাতি? জাতি কি আজকেও ঘুমিয়ে থাকবে? নিশ্চেষ্ট নিশ্চল হয়ে বসে থাকবে ধর্মগ্রন্থ আঁকড়িয়ে, আর বিড়বিড় করবে বিধর্মী আর নাস্তিকরা নিপাত যাক বলে?

একটি দেশের অধিকাংশ মানুষই যখন এইভাবে ধর্মগ্রন্থ আঁকড়িয়ে পড়ে থাকে, বিশেষ করে যে গ্রন্থের একবর্ণও অনুধাবনের ক্ষমতা তার নাই, সেই দেশের ওপরই শকুনের নজর পরে সবার আগে। সেই দেশেই বৈদেশিক অপশক্তি নানা ছলে সক্রিয় হয়ে ওঠে। নানা ভাবে সমগ্র দেশবাসীকে আরও বেশি করে প্ররোচিত করে ধর্মগ্রন্থ আঁকড়িয়ে ধরতে, উপাসনালয়ে মাথা খুঁড়ে মরতে। সারাটা দিন আরও বেশি করে ধর্মী‌য় আচারবিচার পালম করে কালাতিপাত করতে। আর এইভাবেই বৈদেশিক অপশক্তি বাংলাদেশকে আরও বেশি করে ধর্ম ও ধর্মগ্রন্থমুখী করে তুলতে সদা তৎপর। স্বাধীনতার সেই লগ্ন থেকেই। যে তৎপরতার কুফল ফলেছে আজ সারা বাংলায় বিগত সাড়ে চার দশকের নিরবচ্ছিন্ন ষড়যন্ত্রের পরিণামে। তাই বলছিলাম, ধর্মপালন আর কোন একটি বিদেশী ধর্মগ্রন্থকে দেশেরও উপরে স্থান দেওয়া এক জিনিস নয় আদৌ। স্বাধীনতার পর থেকে ধর্মপালন নয়, ধর্মগ্রন্থকে দেশেরও ওপরে স্থান দেওয়ানোর প্রক্রিয়াটিই বাংলাদেশে বৈদেশিক অপশক্তির সবচাইতে বড়ো সাফল্য। দুঃখের বিষয় আজকের বাংলাদেশে এই ভয়াবহ সত্যটিকে অনুধাবন করার মতো মানুষ আর বিশেষ অবশিষ্ট নাই। যে কজনও বা আছেন, স্বভাবতঃই তারাও প্রাণভয় নিশ্চুপ নির্বাক। কিন্তু ভয়াবহ এই অন্ধকারই আবার আলোর জন্ম দেয়। ইতিহাস বারংবার আমাদের সেই কথাই স্মরণ করিয়ে দিয়ে থাকে। আশা করতে সাধ হয়, আজকের অন্ধকার দশা কাটিয়ে আবারও আলোর সাধনায় দেশকে মুক্ত করার ব্রতে উৎসর্গকৃত প্রাণের সমাবেশ ঘটবে এই বাংলাতেই। কিন্তু তার জন্যে আরও কত প্রাণের বলি দেবে বাংলাদেশ সেটিই এখন দেখার বিষয়।

শ্রীশুভ্র



সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২২
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×