somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফাঁদ (২য় পর্ব)

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


তারেক লক্ষ্য করে বাবর সাহেব চা পিরিচে ঢেলে নেন আর বেশ শব্দ করে চুমুক দেন।বেশ বিরক্তিকর একটা ব্যাপার।
-চা তো বেশ স্বাদের কালুমিঞ।
তারেক বলে।
-সবই আপনাদের দোয়া স্যার।
-কালুমিঞা আপনি অতদূর ওই ঝোপে কি করতে গিয়েছিলেন?
-স্যার কি আর বলবো,সবই কপাল।ওই স্থান হতে আর একটু দূর গেলেই এই গরীবের বাড়ি।আমি স্যার ডায়বেটিকসের রুগী।ডাক্তার পরামর্শ দিয়েছে হাঁটার।তাই রোজ সকালে হেঁটেই চলে আসি।রাতে ফিরবার সময় বাসে অথবা ভ্যানে চলে যাই।ওইদিন আসার সময় টয়লেট খুব বেগ দেয়।আমি দিশামিশা না পেয়ে ওই ঝোপের ভেতর যাই।তারপর যা দেখলাম স্যার কি আর বলবো।কিসের টয়লেট আর কিসের কি। আমি খুব জোরে হেঁটে দোকানে চলে আসি।তারপর থানায় খবর দিই।
কালুমিঞার কথা শুনার পর তারেক চুপ হয়ে যায়।সিগারেট ধরিয়ে টানতে থাকে।ফেরার পথে বাবর সাহেবকে বলে,বাবর সাহেব এই ধরণের কেস কতগুলি আছে আমাদের থানায়?দেখে জানাতে হবে স্যার-বাবর সাহেব বলেন।তারেকের কাছে মনে হতে থাকে এই লোকটা একটা অকর্মা।

থানায় ফিরে তারেক ভিসেরা রিপোর্ট পেয়ে যায়।ভিকটিমকে ঘুমের ঔষধ খাওয়ানো হয়েছে।তারপর মেরে ফেলা হয়েছে।পঁয়ত্রিশের আশেপাশে হবে ভিকটিমের বয়স।
-বাবর সাহেব সব থানায় রিপোর্ট করেন আর রিসেন্ট কতগুলি মিসিং কেস হয়েছে তার একটি ফাইল তৈরি করে দেন।ও হ্যাঁ,সব পত্রিকাতেই এই খবর বেরিয়েছে তো?
-জ্বি স্যার।

(৩)
-তুমি কবে আমাদের ঢাকায় নিয়ে যাবে?
সুলতানা কান্না জড়ানো কন্ঠে আজাদের কাছে জানতে চায়।
-আর একটা বছর।একটু গুছিয়ে নিতে দাও।আর জানোইতো ঢাকায় যে খরচ তার উপর টিউশন ফি যা,এখন যে বেতন পাই চলা খুব মুশকিল।
-তুমি গতমাসে কম টাকা পাঠিয়েছো।আমার সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয়েছে।মেয়েদের জামা লাগবে কিনতে পারিনি।আমার পড়ার শাড়ি লাগবে।
-হঠাৎ করেই ইনকাম কম হওয়াতে এই সমস্যা হয়েছে।
-তোমার না ফিক্সড বেতন?তাহলে ইনকাম কমলো কিভাবে?
-আরে এদিক-ওদিক দিয়ে কিছু ইনকাম আছেনা?
-এইটা কি ভালো হচ্ছে?
-আরে রাখো।কাছে আসো।
-দাঁড়াও বাপু মেয়ে এখনও ঘুমায়নি।

পাক্কা তিন মাস পর আজাদ বাড়ি ফিরেছে।দুই দিনের ছুটি নিয়ে এসেছে।আর দেখতে দেখতে দিন কেটে যায়।যাবার আগের দিন রাতে সুলতানা খুব কান্নাকাটি করে।আজাদের কাছে জানতে চায় প্রতিমাসে আসলে সমস্যা কোথায়।আজাদ কোন মতে শান্ত করে সুলতানাকে।
-জানো আমি কযেকদিন আগে খুব বাজে স্বপ্ন দেখেছি।
সুলতানা আজাদকে জড়িয়ে ধরে বলে।
-কি স্বপ্ন?
-রাতে স্বপ্নের কথা বলতে নেই।
-তবে জানালে কেন?
-না থাক।
আজাদ শুনবে বলে গোঁ ধরে।শেষে সুলতানা স্বপ্নের কথা বলেই ফেলে।

ঢাকায় ফেরার পথে আজাদ সুলতানার স্বপ্ন নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে।মেয়েদের ষষ্ঠ ইন্দ্রীয় খুব স্ট্রং হয়।তা না হলে সুলতানা এমন স্বপ্ন কিভাবে দেখলো?হ্যাঁ বিয়ের আগে পাশের বাড়ির ভাবীর সাথে ওর একবার শারীরীক মিলন হয়েছে এটা ঠিক।কিন্তু সেটা ছিল দুর্ঘটনা।আর বিষয়টা ওর তখন ভালো মনে হয়নি।তবে বিয়ের এতোদিন পর ওর চিন্তাধারায়,মানসিকতায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।এটা কি শুধুই শারীরীক ক্ষুধা।না অন্যকিছু।তা নাহলে রিতীকার আহবানে ও সাড়া দিলো কিভাবে।এবার সুলতানার অনেক প্রশ্নেই আজাদ ভেতরে ভেতরে ঘেমেছে। গতমাসে রিতীকা ওর কাছে দশ হাজার টাকা নিয়েছে।রিতীকা এমনভাবে চাইলো যে আজাদ আর না বলতে পারেনি।বিকেল পাঁচটায় আজাদ ঢাকায় ফেরে।

-কি কেমন আছেন ভাই?বাড়ির সবাই ভালো তো?
-জ্বি সবাই ভালো আছে।
রিতীকার ভাই রিটুর কথায় আজাদ উত্তর করে।
রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে আজাদ মুভি দেখতে বসে।রিটু আজাদের ঘরে আসে।
-কি সিনেমা দেখছেন?
-তামিল।
-তামিল সিনেমাগুলি খুব একশন নির্ভর হয়।
-জ্বি।
-ভাই কিভাবে যে বলি?
রিটু কাচুমাচু ভঙ্গিতে বলে।
আজাদ ভালোভাবে লক্ষ্য করে রিটুকে।
-কোন সমস্যা?
আজাদ জানতে চায়।
-আসলে হয়েছি হঠাৎ একটা প্রয়োজনে কিছু টাকার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।আর আব্বাও চিকিৎসার কারণে ভারতে।টাকাটা কোন ভাবেই ম্যানেজ করতে পারছিনা।আগামী পরশুর মধ্যে টাকাটা জোগাড় করতে হবে।
-ও।
আজাদ বলে।
-ভাই বলছিলাম কি আপনি যদি হেল্প করতেন।
-কতটাকা?
আজাদ জানতে চায়।
-এই পনেরো হাজার।আব্বা আসলেই দিয়ে দেবো।
আজাদ কিছুক্ষণভাবে।তারপর রিটুকে আগামীকাল রাত্রে আসতে বলে দেয়।

প্রথম পর্ব (Click This Link)
চলবে......

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:০৯
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×