somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাইয়িদ রফিকুল হক
আমি মানুষ। আমি ত্বরীকতপন্থী-মুসলমান। আমি মানুষ বলে আমার ভুলত্রুটি হতেই পারে। বইপড়তে আমার ভালো লাগে। সাহিত্য ভালোবাসি। লেখালেখি আমার খুব শখের বিষয়। বাংলাদেশরাষ্ট্র ও গণমানুষের জন্য আমি লেখনিশক্তিধারণ করেছি।

মহান একুশে ফেব্রুআরির দিনেই বাংলাদেশে বসে মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা করলেন প্রধান বিচারপতি! মাতৃভাষা বাংলার ভবিষ্যৎ কী?

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মহান একুশে ফেব্রুআরির দিনেই বাংলাদেশে বসে মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা করলেন প্রধান বিচারপতি! মাতৃভাষা বাংলার ভবিষ্যৎ কী?
সাইয়িদ রফিকুল হক

দেশে সর্বস্তরে মাতৃভাষা বাংলা প্রচলনের ক্ষেত্রে বিরাট বাধা রয়েছে। আর সেটি বুঝা গেল গতকাল ভাষা-শহীদদিবসে। কোথায় মাতৃভাষার পক্ষে কথা বলা হবে, তা-না-করে আরও এর সার্বজনীন ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাসৃষ্টির অশুভ-ইঙ্গিত! দেশের প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা গতকাল শহীদদিবসে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, “বিচারাধীন মামলার সংখ্যা প্রচুর। কিন্তু এর বিপরীতে বিচারকের সংকট রয়েছে। এজন্য উচ্চ আদালতের সব রায় বাংলায় দেওয়া কঠিন।”
বাংলায় কঠিন! আর ইংরেজিতে খুব সহজ? আসলে, এটা একটা অজুহাত মাত্র। এতে বাংলাভাষার প্রতি অবজ্ঞাই প্রদর্শন করা হয়েছে। অথচ, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “বাংলাভাষার বিকৃতি চাই না।” কিন্তু কীভাবে?
যদি এভাবে দেশের একজন প্রধান বিচারপতি বাংলাভাষা-সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করে থাকেন, তাহলে, আজ বাংলাভাষার ভবিষ্যৎ কী? নিজের ভাষাকে আমরা মায়ের মতো ভালো না বাসলে আর কে এই ভাষাকে ভালোবাসবে? আমরা মনে হয় বুঝেশুনে নিজের সঙ্গে নিজেই শত্রুতাসৃষ্টি করছি। আর ক্রমাগত নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারছি!

বাংলাদেশের সংবিধান বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় রচিত। এতে কোনো সমস্যা নাই। আর এভাবে, আগে বাংলায় রায় দিতে হবে, রায় লিখতে হবে, আর রায় কার্যকর করতে হবে। তারপর ইংরেজি বিবেচনা করতে হবে। আর ধীরে-ধীরে ইংরেজিতে রায় লিখতে হবে। এব্যাপারে কোনো গড়িমসি করলে চলবে না। কিন্তু আগে বাংলাভাষায় রায় লিখে খুব দ্রুত রায় কার্যকর করতে হবে। আর বাংলার চেয়ে কোনো কার্যকরী ভাষা এই পৃথিবীতে নাই।

আমাদের এযাবৎকালের বাঙালির ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, যখনই আমরা বাংলাভাষাকে ধারণ করে অগ্রসর হতে চাই, তখনই একটা বাধার দেওয়াল তৈরি হতে থাকে।
আর এরজন্য একমাত্র দায়ী আমাদের দুর্বল মানসিকতা। আমরা শুধু মুখে-মুখে এখন ভাষাকে ভালোবাসি। আমাদের মৌখিকপ্রেম এতো গভীর যে, বাস্তবে তা আর খুঁজে পাওয়া যায় না। আসলে, বাংলাভাষা সর্বস্তরে চালু করার প্রসঙ্গটি উত্থাপিত হলেই চারদিক থেকে অমনি শুরু হয়ে যায় বাংলা কায়েমের বিপক্ষে যুক্তিউপস্থাপন। অথচ, এগুলো কোনো প্রকার বাঙালিয়ানা নয়। বরং এগুলো হচ্ছে পরিকল্পিত দুরভিসন্ধি, আর পাকিস্তানীভাবধারা দ্বারা তাড়িত চিন্তাভাবনা বা বিকৃত মানসিকতা। আর এই বিকৃত মানসিকতা আমাদের অতিদ্রুত দূর করতে হবে। আর সবসময় বাংলার পক্ষেই কথা বলতে হবে। আর বাইরে লোকদেখানোর জন্য পরোক্ষভাবে বাংলার পক্ষে থেকে আর ভিতরে-ভিতরে সবসময় প্রত্যক্ষভাবে বাংলার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে সমাজ-রাষ্ট্রে প্রচলিত ‘বাংলা-প্রেম-নাটক’ তাড়াতাড়ি বিসর্জন দিতে হবে। আর সমগ্র জাতিকে আজ এই বিকৃত মানসিকতা থেকে বের করে আনতে হবে। আর এই উদ্যোগ শাসকবর্গকেই নিতে হবে।

আমরা জানি, আমাদের দেশে একশ্রেণীর উচ্চবিত্তবান সবসময় বাংলাভাষার বিরুদ্ধে। কিন্তু এদের আর কেন প্রশ্রয় দেওয়া হবে? আমাদের জাতিসত্তার বিকাশেই বাংলাভাষাকে সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
জয় হোক আমাদের বাংলাভাষার।

সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৩
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×